
বিজ্ঞানের আশীর্বাদ এবং লিফটের কারণে এখন আর উঁচু ভবনে বা বিল্ডিঙয়ে উঠতে কোন সমস্যা হয়না। ফলশ্রুতিতে শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ এবং অসুস্থ মানুষ যে লিফট ব্যবহারে বেশ উপকৃত হচ্ছেন তা অস্বীকার করার উপায় নেই । তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় লিফটের কারণে সব বয়সের মানুষের সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠার অভ্যাস লোপ পাচ্ছে দিন দিন। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে শারীরিক সুস্থতার জন্য তিন তলা/ চার তলা পর্যন্ত সিঁড়ি ভেঙ্গে উঠা উচিৎ। কেননা বিজ্ঞান প্রযুক্তির ব্যবহার কারণে আমাদের কায়িক বা শারীরিক পরিশ্রম ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। মানুষের কর্মব্যস্ততা, অলসতা, যানবাহনের সহজলভ্যতা, টিভি, স্মার্ট ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি প্রযুক্তির অতি বা অপ-ব্যবহারের কারণে মানুষের হাতে যেন সময় নেই। ফলশ্রুতিতে কায়িক বা শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়ার কুফল হিসেবে মানুষের শরীরে বাসা বাঁধছে নানান ধরণের জটিল রোগ ব্যাধি।
সুউচ্চ বিল্ডিং , শপিং মল ইত্যাদিতে গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে উপরের দিকে উঠুন নামুন কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের দেশে ক্লিনিক হসপিটালগুলোতে লিফট ব্যবহারের ব্যাপারে আমাদেরকে অবশ্যই সচেতন হওয়া জরুরী। অসুস্থ মানুষ, রোগী ছাড়া দর্শনার্থীসহ অন্যরা অনায়াসে ২/৩/৪ তলা পর্যন্ত অনায়াসে পায়ে সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠতে পারেন। অনুরূপভাবে ৩/৪ তলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামতে পারে। এতে কারো কোনো ধরণের শারীরিক বা মানসিক সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথচ প্রায়শ হসপিটাল বা ক্লিনিকে দেখা যায়, তাগড়া ছেলে কিশোর যুবকরা পর্যন্ত ৪/৩ তলা থেকে হেঁটে নামার পরিবর্তে লিফটের জন্য অপেক্ষা করে থাকে। আমরা সচেতনভাবেই যেন অসচেতন আচরণ করি। কেননা রোগী বা অসুস্থ মানুষের উঠানামার জন্য লিফট উন্মুক্ত না রেখে ব্যস্ত করে রাখি। সেদিন এক ভদ্রলোক আক্ষেপের সুরে বললেন আমাদের রথ বেটে হয়ে গেছে কষ্ট করতে ইচ্ছা করেনা এবং আরেক ভদ্র মহিলা বললেন সুযোগের সদ্ব্যবহার করা আর কি ! অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই লিফটে উঠছেন তখন কোন রোগীর উঠা বা নামার জন্য কেউ লিফটে জায়গা করে দিতে চায়না মানবিক কারণেও । এদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদেরকে অবশ্যই সচেতন, সংযত এবং যথাযথ আচরণ করা উচিৎ স্থান কাল পাত্র ভেদে। আশা করি মানুষের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।
ছবিঃ সংগৃহীত।
১৯টি মন্তব্য
উর্বশী
বাস্তবতার উপখ্যান মাত্র। সময়পোযোগীও বলা যেতে পারে,আবার কিছুটা শিক্ষনীয় পোষ্ট করেছেন। একটু সচেতন হলেই আমরা হয়তো এই কাজটি সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে পারি।কিন্তু আমরা তা করিনা। সকলেরই সঠিক নিয়ম কানুন মেনে চলা উচিৎ।
আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপা আপনার চমৎকার বিশ্লেষণধর্মী মতামতের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
যারা সক্ষম তারা দু এক তলা হেঁটেই উঠতে নামতে পারেন।
কিন্তু এরা তা করবে না।
পরামর্শঃ
আপনার পোষ্ট গুলোর ছবি পোস্টের মধ্যে থাকে, ফিচার ছবি হিসেবে দেখা যায় না।
” ফিচার ছবি নির্বাচন করুন ” এমন একটি লেখা সবুজ রঙে দেখবেন প্রথমেই। ওখানে ক্লিক করে ছবি দিলেই অন্যদের মত আপনার লেখার ছবিও ফিচার ছবি হিসেবে দেখা যাবে।
নিয়মিত লিখছেন দেখে ভালো লাগছে খুব।
শুভ কামনা।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
ভাইয়া আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার পরামর্শ অবশ্যই মেনে চলবো। সুস্থ আর ভালো থাকবেন।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
ভাইয়া, গুগল থেকে তো ছবি আপলোড করা যাচ্ছে না।
মোঃ মজিবর রহমান
ভাইসাব আমরা এখন সময়ের মত দৌড়াচ্ছি আরব্ল ডাক্তারের সরনাপন্ন হচ্ছি। লিফট সৌখিন ব্যবহারেত জন্য।
সুউন্দর একটি পোষ্ট। খুব ভালো লাগ্লো।
শুভ ব্লগিং ভাইজান।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
হ্যাঁ ভাই বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে একদিকে সহজ করে দিলেও অন্যদিকে আমাদেরকে শারীরিকভাবে অসুস্থ করে দিচ্ছে। ধন্যবাদ।
হালিমা আক্তার
সচেতনতা মূলক পোস্ট। আমি নিজে ২ বা ৩ তলায় উঠা নামার ক্ষেত্রে সাধারণত লিফট ব্যবহার করিনা। এর জন্য অনেকের টিজিং শুনতে হয়। নিজেদের প্রয়োজনে কিছুটা সিঁড়ি বেয়ে চলা উচিত। শুভ ব্লগিং।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপা মতামতের জন্য ধন্যবাদ। আমিও দুই তিন তলা পর্যন্ত হেঁটে উঠি। যদিও আমার কোমর এবং হাটুতে ব্যাথা তথাপি ৪/৫ তলা থেকে নামার সময় হেঁটে নামার চেষ্টা করি। হাসপাতালে লিফত ব্যবহারে সতর্কতার বিকল্প নেই। শুভ কামনা রইলো।
সাখাওয়াত হোসেন
চমৎকার একটি শিক্ষনীয় পোস্ট। লিফট ব্যবহার আজকাল একটি ফ্যাশন হয়ে দাড়িয়েছে। আমাদের সকলকে এখনই সচেতন হওয়া দরকার।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
লিফট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংযত এবং সতর্কতার বিকল্প নেই। ধন্যবাদ ভাইয়া।
সাবিনা ইয়াসমিন
বর্তমান সময়ে মানুষের মধ্যে থেকে স্বাভাবিক বোধ-ভাবনা যেন ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। যেখানে যেমন করা দরকার সেখানে সেটা না করে মানুষগুলো উল্টো কাজ করে। অনেক সময়ে লিফটের প্রয়োজন নেই, তবুও দেখা যায় মানুষ লম্বা সিরিয়াল দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার ওভারব্রিজ পারাপারের সময় পুরোই বিপরীত দৃশ্য দেখতে পাই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যস্ত রাস্তা পার হবে, কিন্তু ওভারব্রিজ ব্যবহার করবে না।
ভালো পোস্ট দিয়েছেন।
শুভ কামনা 🌹🌹
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপু আসলে আমরা কোনো বিষয়ে সচেতন সজাগ সতর্ক নই। অনেকটা যেমন খুশি তেমন চলো। পাশাপাশি আমরা হুজুগীও বটে। সুস্থ আর ভালো থাকবেন আপু।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ বাস্তমুখি লেখেছেন আলম দা
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ কামনা রইলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমরা আসলেই অলস হয়ে যাচ্ছি ভাই। লিফট ছাড়া বাসা ভাড়া, অফিস ভাড়াই হয় না আর সিঁড়ির ব্যবহার করবে কখন। কিছুদিন পর সিঁড়ি থাকবে না সব লিফট হয়ে যাবে।
ভালো থাকবেন।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
হ্যাঁ আপু আমরা ক্রমশ অলস হয়ে যাচ্ছি। আপনার আশঙ্কা যদি সত্য হয় এবং লিফট উঠে যায় তাহলে অল্প কায়িক পরিশ্রমের ক্ষেত্রও সঙ্কুচিত হয়ে যাবে। মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
শুধু দু-তিন তলা না মানুষ পাঁচ মিনিট হাঁটার রাস্তাও রিকশায় চড়ছে। গাড়িতে উঠে জগিং করতে যায়, শারীরিক পরিশ্রম থেকে নিজেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত করছি দিনশেষে হাজারো ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছি। সুন্দর পোস্ট। অফুরন্ত শুভকামনা রইলো
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
দিদি আপনি সুন্দর একটা বিষয় তুলে এনেছেন — “গাড়িতে উঠে জগিং করতে যায়, শারীরিক পরিশ্রম থেকে নিজেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত করছি দিনশেষে হাজারো ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছি”। এটা বাস্তব এবং অপ্রিয় সত্য। সুস্থ আর ভালো থাকবেন।