পৃথিবীর পথে পথেঃ মিশর ( লাক্সর) সময় কাল ২০০৬ ( ৩য় পর্ব )
“Egypt is a place where every step feels like a journey through time”
কায়রোর পিরামিড দেখার পর আমাদের গ্রুপ যাত্রা আরম্ভ করলো লাক্সরের পথে। লাক্সরকে প্রাচীন কালে “থিভস” বলা হতো । কায়রো থেকে ট্রেনে সারা দিনের পথ । সেখানে সন্ধ্যায় আমরা এসে নামলাম । এবার নাইল ক্রুজ । এ এক মজার অভিজ্ঞতা । আমরা নীল নদীতে লাক্সারি জাহাজে ঘুরবো আর জায়গায় জায়গায় নেমে ঐতিহাসিক সাইট গুলো দেখে বেড়াবো । প্রতিরাতে মজার ডিনার ছিল মিশরের নিজস্ব স্টাইলের ।
প্রথম দিনেই ছিল করনাক টেম্পেল দেখা । প্রত্যেক বারেই আমরা গাইড নেই। কারন গাইডের নলেজ ছাড়া এগুলো বোঝা কঠিন । দলে দলে কত যে গ্রুপ একজন গাইড নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছে । কেউ ফ্রেঞ্চ speaking, কেউ জাপানীয speaking, কেউ জার্মানি speaking গাইড নিয়ে ঘুরছে। আর ইংলিশ তো আছেই।
কারনাক একটি ওপেন এয়ার মিউজিয়াম । ২০০ একর জায়গার উপর নীল নদের তীরে এর অবস্থান। মোট ৩০ জন ফ্যারোর টেম্পেল আছে এখানে। ২০০০ বছর ধরে এখানে মিশরীয়রা পূজা অর্চনা করেছিল।
প্রথম বিল্ডিং করার কাজ আরম্ভ হয় সেনুসরেট ফ্যারোর শাসন আমলে। মিডল কিংডমের সময়কালে সব চেয়ে বেশি টেম্পেল নির্মাণ হয়। চলতে থাকে টলেমীক পিরিয়ড ৩০ BC-১০০ AD পর্যন্ত । আমুন (সূর্য দেবতা) টেম্পেল কে শুধু দেখানো হয় ।আর বাকি দুটো যেমন মাট ( দেবী মা) এবং মনটু বা খন্সু ( চাঁদ দেবতা ) টেম্পেলে ভিজিটর আসা বন্ধ করা হয়। ।
প্রথমে ঢুকেই পড়ে গ্রেট হল ,১৩৪ টি ম্যাসিভ কলাম, ১৬ টি সারি, ২২ টি ৩৩ ফিট লম্বা। এগুলো দেখে মনে মনে ভাবি , কি ভাবে এগুলো এখানে এনে বসিয়েছে? কারন এতো ভারী আর লম্বা ,তখন তো কোনো টেকনোলজিও ছিলনা। প্রত্যেকটির মাথা রঙ্গিন পদ্ম ফুলের নক্সা দিয়ে করা।
প্রত্যেক ফ্যারো যার যার মতো করে একটি টেম্পেল নির্মাণ করে। ফিমেল ফ্যারো হ্যাতসেপস্যুট দুটো অবিলিক্স নির্মাণ করে। তবে এখন অনেক অবিলিস্ক পাচার হয়ে গেছে ফ্রান্স, ব্রিটেন, ইটালি আর তুরস্কে।
গাইড জানালো ৩২৩ ADটে রোমান ইম্পারার konstantain এর সময় এখানে সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং এখানে খ্রিস্টান ধর্মে র চার্চ তৈরির কাজ চালানর চেষ্টা করে।
করনাক টেম্পল কমপ্লেক্স পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড়ো টেম্পেল । আমুন তেম্পেল ৬১ একর জায়গার উপর তৈরি । ইউরোপিয়ান ১০ টি চার্চের সমান এই একটি চার্চ । সবচেয়ে বেশি টুরিস্ট আসে পিরামিড দেখতে তারপরেই করনাক টেম্পেল দেখতে আসে টুরিস্ট ।
১৯৭৯ সালে এটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেয সাইটে স্থান পায়।
তারপর আমরা অন্য টেম্পেল দেখে আসলাম যেমন উদফু,কমম্ব আর লাক্সর টেম্পেল ।সেদিনের মতো দেখা শেষ করে আমরা আমাদের জাহাজে চলে আসলাম এবং পুরো গ্রুপ মিলে রাতের খাবার আর গল্প গুজব চললো।
পরের দিন নীল নদের পশ্চিম পাড়ে চলবে অভিযানে । গাধার পিঠে করে হেটসসেপসুপ টেম্পেলে ভিজিট করতে যেতে হবে ।
ইন্টারপিড পারে বটে তার ভিজিটার কে নানা ভাবে আনন্দ দিতে।
লেখকঃ হুসনুন নাহার নার্গিস ,লন্ডন
২টি মন্তব্য
কামাল উদ্দিন
আপু আপনি এখানে রেজিষ্ট্রেশন করে লিখতে পারেন। এই ব্লগে এখন পাঠক খড়া চলছে https://www.somewhereinblog.net/
নার্গিস রশিদ
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া । কি ভাবে লেখা পাঠাতে হয় ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না । আমি তো অভ্র দিয়ে লিখে অভ্যস্থ । সেটা ব্যাবহার করে লেখতে গিয়ে অসুবিধা হয়। আপনি যদি kindly সাহায্য করেন খুব উপকার হতো । আমার মোবাইল নাম্বার 07763457696 whatsup এ যোগ দিয়ে হেল্প করতে পারলে সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো । আর আমার ফেসবুক এক্যাউন্ট নাম Husnun Rashid . এখানে ফ্রেন্ডস রিকুয়েস্ট পাঠালে ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দিয়ে হেল্প করলে ভালো হয়। আমি দেখতে পাচ্ছি এখানে আর কেউ লেখা পাঠায় না। খুব দুঃখজনক । অনেক ধন্যবাদ । যদি কেউ হেল্প করে দিতে চায় এখানে কিভাবে লেখা পাঠাতে হয় সে ব্যাপারে তবে সময় নষ্ট করার জন্য টাকা দিতে পারি ।