মোবাইলটা বেজে উঠলো, স্ক্রিনে ভেসে উঠলো সেই চেনা নাম্বারটা…..
আমি কিছুক্ষণ অদ্ভুত হয়ে ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে রইলাম। অচেনা কোন এক অদৃশ্য স্পর্শ এসে আমাকে নাড়িয়ে দিয়ে গেলো। অনুভূতিগুলো কেমন যেন একটু ওলটপালট হয়ে গেল।
বছরখানেক সময় পার হয়ে গেছে। অনেককিছুই ইতিমধ্যেই ভুলতে শুরু করেছি। ভুলতে শুরু করেছি অতীতে ঘটে যাওয়া নানান অঘটন। তবুও কেন যে সময়গুলো বারবার এভাবে হাতছানি দিয়ে ডাকে, কেন যে বারবার আড়ালে ছদ্মবেশে অদৃশ্য হয়ে হাসে। নাকি শতবার ভোলার চেষ্টা করেও আরও বেশি আঁকড়ে ধরে আছি। জানিনা, মাথাটা কোনমতেই কাজ করেছ না।
গতবছর শেষবার শেলিনীর সাথে যেদিন দেখা হয়েছিল। সেদিন আকাশটাও বেশ ঘোমটা দিয়েছিল। মেঘলা আকাশ আর শেলিনীর মুখভার করা চেহারা সময়টাকে বিষাদে রূপান্তরিত করেছিলো। আমি কাছে যেতেই শেলিনী সেদিন —
তুমি এসেছো কেন? যাও চলে যাও। তোমাকে আসতে বলেছে কে? আমিতো তোমার জন্য অপেক্ষা করছি না। আমি সময়গুলোকে পাহারা দিতে এসেছি।
সরি জান। আমাকে মাফ করে দাও। আর হবে না। আমাকে কিছু বলতে দাও। প্লিজ শেলি, একটু দাঁড়াও। এরকম করার কোন মানে হয় কি?
হঠাৎই দুইতিন মিনিট পর। কোন একটা অজানা শব্দে রাস্তার মাঝখানে মানুষের হইচই বেঁধে গেল। ঠিক যেন বাসের টায়ার ফাটার শব্দের মতো। দূর থেকে বুঝলাম কোনকিছু ঘটেছে। কেমন যেন একটা কৌতুহল বাতাসের মতো দ্রুত এসে মনকে নাড়িয়ে দিলো। দৌড়ে ভিড়ের মধ্যে ঢুকতেই স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
বুকের ভেতরটা কেঁদে উঠলো মুহূর্তেই। হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলাম। ততক্ষণে মাথা থেঁতলে রাস্তা জুড়ে রক্ত সমারোহ। ডান পায়ের দিকেও রক্তের ছড়াছড়ি। ব্যাগে রাখা প্রসাধনী ও মোবাইল ফোন ভেঙে চুরমার। একেকটা একেক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে আছে। কয়েকজন মিলে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলাম।
শেলিনীর মায়ের নাম্বার মুখস্থ ছিলো। দূর্ঘটনার কথা বলতেই তিনিও কাঁদতে আরম্ভ করলেন। কি হয়েছে আমার শেলির? ও কেমন আছে? কোথায় আছে?
ঘন্টাখানেক পর শেলির পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এস পৌছালো। শেলির মা আর ছোটবোন কাঁদছে আর কাঁদছে। শেলির বাবা প্রথমে কিছুই বলেননি।
সপ্তাখানেক পরে শেলির বাবা আমাকে ডেকে খুব শাসিয়ে দিলেন। যেন আর কোনদিন শেলির সাথে দেখা না করি, কথা না বলি। আমার জন্যই নাকি শেলিনীর এমন দশা হয়েছে আজ। সেদিন থেকে শেলিনীর সাথে আমার কোন যোগাযোগ ছিলো না। তবে বেশকিছুদিন খোঁজখবর নিয়েছি।
কিন্তু আজকে হঠাৎ এতোদিন পরে কল দেখে রিসিভ না করে থাকতে পারলাম না। অনেকদিন পর মিষ্টি কন্ঠ শুনে বেশ ভালোই লাগলো। বললো, কেমন আছো? তারপর…….।
৮টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
প্রথম দেখার দিনেই এমন দুর্ঘটনা!
অভিমানেও ভালোবাসার তিব্রতা থাকে। তাইতো শেলিনী ভুলেনি। নিজেকে পেয়েই খুঁজে বের করেছে তার ভালোবাসার মানুষটিকে। সত্যিকারের ভালোবাসা এমনই হয়। ভোলা যায়না, ভুলতে দেয়না।
ইচ্ছে হলে গল্পটি বাড়ানো যায়, আবার এখানে বুঝে নেয়া যায় পরের গল্প। অনেক ভালো লেখেন আপনি।
শুভ কামনা 🌹🌹
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ, অনেক ভালো লাগলো। অনুপ্রেরণা পাই আপনাদের মন্তব্যে..
নিতাই বাবু
এবার চলতে থাকুক প্রেম সাগরে সাঁতার কাটা। কিন্তু আপনার সাঁতার শেখা আছে নাকি? না থাকলে কোনোএক সুইমিংপুলে গিয়ে নাহয় নিজেদের এলাকায় থাকা কোনও পুকুরে কারোর সাহায্যে সাঁঁতার শিখে নিবেন।
নৃ মাসুদ রানা
অভিজ্ঞতা হয়েছিল ৮ম’ তে।
সাখিয়ারা আক্তার তন্নী
তারপর কী………
নৃ মাসুদ রানা
এখানে প্রথম গল্পটি শেষ। দ্বিতীয় গল্পটি লেখার অপেক্ষায়…
আরজু মুক্তা
প্রথম প্রেম, প্রথম ভালোবাসা।
তারপর?
নৃ মাসুদ রানা
বাকীটা আবার নতুন গল্পে….