অনেক দিন ধরেই কোন কিছু লেখা হয় না। আজ কত দিন পর লিখতে বসেছি সেও জানি না। কি লিখবো ভেবে পাচ্ছি না। এখন এমন দিন এসেছে যে, কবিতার দুটি লাইন ও মনে পরে না। কেন এমন হচ্ছে কিছুই জানি না। আর জানার ইচ্ছেও আমার জাগে না। কারণ টা যে অতি সরল কেননা, তুমি আজ আমার পাশে নেই।
তুমি পাশে নেই সে ব্যাথাও যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনি রয়েছে তোমার থেকে আমার সীমাহীন দূরত্বে থাকার অসীম বেদনা। হয়ত বা তোমার সে উপলব্দি হচ্ছে না। কিন্তু আমি প্রতিনিয়ত সেই উপলব্দি করে যাচ্ছি। তোমাকে হারানোর পর আমি যেন ধৈর্য্যই হারিয়ে ফেলেছি। সব কিছু থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছি। নিজের মাঝে নিজেকে গুঁটিয়ে রেখেছি। নিজের মনের ভিতরে সীমাহীন যন্ত্রণা বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি। নির্জনতা আর নিঃসঙ্গতার মাঝে নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছি।
তোমার সাথে শেষ দেখাটা এতটা অপরিকল্পিত হবে আগে কখনো ভাবিনি। কেননা, তোমাকে দেখার পর আমি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছিলাম। নিজের মধ্যে প্রাণ ফিরে পেয়েছিলাম। আমার চারিদিক উৎফুল্লতায় ভরে উঠেছিল। কিন্তু আমার সেসব আনন্দ এক নিমিষে নিরানন্দ হয়ে গিয়েছিলো যখন তুমি আমায় অবজ্ঞা করে ফিরিয়ে দিলে। তুমি আমায় ফিরিয়ে দাওনি দিয়েছিলে আমার সমর্পন কে। আমার বিশ্বাস, আমার স্নেহাশীষ ভালবাসা কে। এরপরে ও আমি হাসি মুখে সে সব বরণ করে নিয়েছিলাম। কেননা, তোমাকে আমি আমার আরাধ্য হিসেবে ভালবেসেছিলাম।
তোমার থেকে দূরে সরে ও আমি এক মুর্হুতের জন্য ও তুমি ব্যতীত অন্য কিছু চিন্তা করি নি। চিন্তা করার অবকাশ ও আমার ছিলো না। আমার মনের চারিদিক জুড়ে শুধু ছিলো তোমারি বিচরণ। তোমার সেই সুমিষ্ট কন্ঠের কথামালা, অপরূপ সৌন্দর্য্যে মন্ডিত তোমার মুখ অবয়ব, নীল সাগরের মত নিলীমায় ভরা তোমার দুটি চোখ, রক্ত জবার মত লোহিত তোমার ঠোঁট, ঘনকালো মেঘমালার মত গঠিত তোমার দীঘল কালো কেশ। সব কিছু মিলিয়ে এমনই এক অপরূপ গঠনে সুসজ্জিত তুমি, যেন আমার মনের অধিষ্ঠিত সেই দেবী। এসব কিছু ভিড়ে আমি অন্য চিন্তায় মগ্ন না থেকে বরং তোমার অপরূপের স্বপ্নে বিভোর থাকতাম।
এখন আমার এই চিন্তাধারা, কল্প-কল্পনা সব কিছুই যে অম্লান হয়ে গিয়েছে। তোমার প্রস্থানের অন্তিম সময় যতই ঘনিয়ে আসছিলো আমার মনের ভিতর ততই উৎকন্ঠা বেড়েই চলছিলো। কোন দিন ভাবিনি যে তোমাকে এভাবে চিরতরে হারাতে হবে। অবশেষে তোমার প্রস্থানের অন্তিম দিন যখন উপস্থিত হল, আমি আর পারলাম না। সত্যিই আর পারলাম না তোমাকে শেষ বিদায় জানাতে, তোমার সাথে শেষ দেখাটুকু পর্যন্ত করতে। এতটাই যে দুর্বল হয়ে পরেছিলাম নিজের বাকশক্তি টুকু হারিয়ে ফেলেছিলাম। শুধু নিরবে কেঁদে গিয়েছিলাম। আমার মনের ভিতর সীমাহীন যন্ত্রণার আগুন প্রজ্বলিত হচ্ছিলো। আমি নিজেকে এই বলেই সান্ত্বনা দিয়ে গিয়েছিলাম, তুমি ফিরে আসবে কোন একদিন। তখন দেখা হবে আবার কথা বলে দুজনার ঠিক সেদিন। প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে আমাদের দুজনার জমানো আলাপন, ভালবাসায় সিক্ত হয়ে উঠবে দুজনার দুটি মন।
পরিশেষে,
যতই কষ্ট হোক না কেন করে যাবো আমি তো অপেক্ষা,
তোমাকেই প্রাপ্তির দ্বারা শেষ হবে আমার এই প্রতীক্ষা।
১০টি মন্তব্য
মায়াবতী
অপেক্ষা ভয়ানক ব্যাপার, খুব খুব কষ্ট হয়।
মিজভী বাপ্পা
হুমম। হু হু হু :v
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালোবাসা পূণ্যের কাজ। কিন্তু ভালোবেসে ভালোবাসাকে হারিয়ে ফেলা যন্ত্রণাময় শাস্তি।
নিয়মিত হউন। বহুদিন নয়, বহু বহু মাস পরে এলেন।
মিজভী বাপ্পা
আর পাপ পূণ্য। আবেগ সে সবই এখন সাবেক :p নতুন করে নিজেকে গুঁছিয়ে চলাটা এখন অনেকটা শিখে গিয়েছি। পিছুটানের ভয় নেই!!! :p \|/ \|/ \|/
জিসান শা ইকরাম
বিশেষ একজনের জন্য জীবন থমকে যেতেই পারে,
অপেক্ষার অবসান হোক।
মিজভী বাপ্পা
জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না দাদা। সময়ে আর্বতে নিজেকে ও বদলাতে হয় 🙁
রিতু জাহান
ভালবাসার অপেক্ষার মধ্যেও এক শান্তি আছে। এক অন্যরকম শান্তি। দেখা হবে কবে কখন কোথাও। কথা হোক বা না হোক।
সময়ই হয়তো অবজ্ঞার কারণ। হয়তো মন নয়।
ভালো লিখেছেন।
মিজভী বাপ্পা
ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য 🙂
সাবিনা ইয়াসমিন
অপেক্ষা,উপেক্ষা আর প্রতিক্ষার অপর নাম প্রেম।আপনার অপেক্ষার অবসান ঘটুক।শুভ কামনা রইলো। -{@
মিজভী বাপ্পা
ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য 🙂