ব্রিটেনের ইতিহাসকে কয়েকটা এরা বা টাইমলাইনে ভাগ করা হয়। এগুলো হলঃ ১) প্রাগৈতিহাসিক যুগ (43AD) ২) রোমান পিরিয়ড (৪৩AD) ৩)মধ্য যুগ (১০৬৬-১৪৮৫) ,মধ্য যুগের দুই ভাগ অন্ধকার এরা এবং পরবর্তি অন্ধকার যুগের পর ৪) টিউডর(১৪৮৫- ১৬০৩) ৫) ষ্টরুআর্ট যুগ (১৬০৩-১৭১৪) ৬) জর্জিয়ান (১৭১৪-১৮৩৭) ৭) ভিক্টোরিয়ান (১৮৩৭-১৯০১) ৮) Edwordian (১৯০১_১৯১৪) ৯) এবং বর্তমান কাল The cenozic
এই সময় গুলোতে বিভিন্ন সময়া কিছু উল্লেখ যোগ্য ঘটনা ঘটেছিল যা আজও মানুষের মনে গেঁথে আছে।বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া উল্লেখ যোগ্য ঘটনা গুলো এক এক করে উল্লেখ করা হবে। তা ছাড়া বিভিন্ন সময়ে সমাজ কেমন ছিল, নারীর অবস্থান কেমন ছিল এবং ক্রমাগত ভাবে একটু একটু করে সব কিছুতে পরিবর্তন আসলো । সব চেয়ে বেশি যুগান্তকারী টেকনোলজির আবিষ্কার কি ভাবে শুধু ব্রিটেন নয় সমস্ত পৃথিবীকে তা নুতুন যুগে নিয়ে গেল তাই উল্লেখ হবে এখানে । টেকনোলজির আবিষ্কার আর রাজতন্ত্র থেকে বের হয়ে গণতন্ত্রে প্রবেশ তার সাথে সমাজ কল্যাণ রীতিনীতি পাস এবং মানুষের মনের বিবর্তন সবই ইতিহাসের গল্প ।
ব্ল্যাক ডেথ বা প্লেগের মহামারী
লাশ আর লাশ । চারদিকে লাশের স্তূপ । এমন পরিবার আছে যেখানে সবায় মারা গেছে। কবর দেয়ার জন্য কেউ বেঁচে নাই । প্রতি সপ্তাহে ৭১৬৫ বা তারও বেশি মানুষ মারা যেত। গ্রাম কে গ্রাম উজাড় হয়ে গিয়েছিল । রাস্তা ঘাট সব জায়গাতে মানুষ মরে পড়ে থাকতো।
সময় টা ১৬৬৫ এর বসন্ত কাল বা স্প্রিং । এই মহামারীকে বলা হয় “গ্রেট প্লেগ” ।
প্রথমে প্লেগ আরম্ভ হয় “St Giles -in-the-Fields”এ যা কিনা শহরের সীমানার বাইরে। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে সব খানে এবং দ্রুত ।
প্লেগের কারনঃ
প্লেগের প্রধান কারন অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশ। মানুষের ফেলে দেয়া আবর্জনার স্তূপে পোচে দুর্গন্ধ হয় যা কিনা ইঁদুরের আস্তানা।ইঁদুরের পপুলেসান দ্রুতহারে বেড়ে যায় । আর সেই ইঁদুরের কাছ থেকে মানুষের মধ্যে চলে আসে। ছোঁয়াচে হিসেবে। তাদের কামড়ে বা তাদের এঁটো খাবারের মাধ্যমে ।
আবর্জনা সরানোর ব্যাবস্থা ছিলনা এবং মানুষ জানতও না জীবাণু কি ভাবে ছড়ায় । ড্রেনের নোংরা পানি মলমূত্র থেমস নদীতে গিয়ে পড়তো এবং মানুষ তা পান করতো ।কারন পানি বিশুদ্ধ করার ব্যাবস্থা ছিলনা এবং মানুষের ধারনাও ছিল না, কি থেকে কি হতে পারে। যার ফলে প্লেগ মহামারী রূপে আসতো ।
এর আগেও মহামারী হয়েছিলো ১৩৪৮,১৩৪৫,১৩৫১, এ । তবে ১৬৬৫ এর মহামারী অনেক ব্যাপক। ১০০০ গ্রাম মানুষ শূন্য হয়ে গিয়েছিল।এক লাখ মানুষের মৃত্যু হয় ।
রেকর্ড ঃ
মৃত্যু রেকর্ড রাখার ব্যাবস্থা করা হয় । দেখা যায় প্রতি সপ্তাহে ৭,১৬৫ বা তার কাছাকাছি মানুষ মারা গেলেও এর সংখ্যা আরও বেশি ছিল।
লাশ দাফন
এতো লাশ কে দাফন করবে? তাই মানুষ নিয়োগ করা হল যাদের কাজ সন্ধ্যা হলেই সারা রাত ধরে ঘোরা গাড়ী ভর্তি করে লাশ এনে স্তূপ করা এবং বিরাট গর্তে শত শত লাশ এক সঙ্গে কবর দেয়া।
বেকারত্ব বেড়ে যায়
শহর থেকে আদালত দূরে সরানো হল ,পার্লামেন্ট অক্সফর্ডে সরানো হল ,চার্লস ২ প্রথমে হ্যামসায়ার পরে অক্সফর্ডে চলে যায় । অর্ডার দেয়া হয় দরিদ্র শ্রেণী যারা প্লেগে আক্রান্ত তারা শহরেই থাকুক যাতে প্লেগ না ছড়িয়ে পড়ে ।
ব্যাবসা বাণিজ্য ,কাজ সব বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে বেকার বেড়ে যায়।
হুসনুন নাহার নার্গিস,লন্ডন
তথ্য সূত্রঃ
The Great Plague in London ,1665 , Bell Walter George
The Great Plague of London ,Porter Stephen
History of the Plague in London , Daniel Defoe
17th Century Plaque,Porte ,Scephen ,Gresham college