আরো একটি বছর অতিবাহিত হলো, অথচ হিসাব অনুযায়ী এ বছর আমাদের বিয়ে হবার কথা ছিলো। কি অদ্ভুত অদিতি, তুমি বলেছিলে ” ছেলে হোক মেয়ে হোক বদের হাড্ডি একটাই যথেষ্ট ” আর আমরা বাবা মা ডাক শুনবো 2018 এর কোনো এক দিনে, এসব তোমার কথা ছিলো অদিতি। দেখো না আজ সাত তারিখ, আমি আর তুমি পাশাপাশি থাকলে আজ বিয়ের ষষ্ঠ দিন হত, কিন্তু নিয়তি বড়ই অদ্ভুত, কি অদ্ভুত নয় অদিতি? অদিতি আজ আমি জীবিত থেকে বিবাহিত হতাম, কিন্তু আজো জীবিত আছি এ যে স্রষ্টার নিকট শুক্রিয়া অদিতি। তুমি চলে গেছো আজ দু বছরের অধিক, বিশ্বাস করো কোনো প্রকার ঘৃণা জন্মাইনি তোমার প্রতি, বরং এ ভেবে মজা লাগছে যে মেয়ের আজকে গায়ে হলুদ, বৌভাত, কন্যা দান ও বেড়ানো শেষে এখন আমার পাশে ফুলের পাপড়ির মত চাদর বিছিয়ে ঘুমানোর কথা, আমি তাকে অপ্রকাশিত চিরকুট লিখে চলেছি, যে টেবিল ল্যাম্পের আলোতে বসে এ চিঠি লিখা সেটা হয়তো বন্ধ করে দিতে অদিতি যদি পাশে থাকতে। এটাই নিয়তির পরিহাস অদিতি, কি অদ্ভুত তাইনা?
তোমার বিয়ের পর জব করার খুব শখ ছিল, বলেছিলে দুজনে জব করে সংসার গুছিয়ে বাচ্চার অভিভাবক হবো, তারপর তুমি গৃহিণী আর আমি চাকুরীজীবী। জানো অদিতি তুমি ছেড়ে যাবার পর আমি মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম, বেচে থাকার স্বাদ আগ্রহ সব চলে গিয়েছিলো, জব টা আর রিটার্ন পাইনি, এখন ছোট্ট একটা ব্যাবসা করছি, মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট শুক্রিয়া, তিনি আমায় সুস্থ করে তুলেছেন। অদিতি জব তো আর করা হয়নি তোমার, ব্যাপার না, সব ইচ্ছার পূরন হলে আজ হয়তো আমি আর তুমি এখানে উফ ভাবতে পারছিনা, সেসব বাদ দাও অদিতি, তোমার সন্তান টা কি একদম দুষ্টামি করেনা? ভাবছো এ কথা কেন বলেছি? আরে বোকা ছেলে হোক মেয়ে হোক বদের হাড্ডি যদি একটাই যথেষ্ট হয় তবে বিয়ের অল্প দিনেই কেনো দুটো সন্তানের জননী তুমি? স্বামীর টাকা আছে জব নাই করলে কিন্তু ….
আচ্ছা তোমার স্বামী কি তোমার সাথে আলোচনা করে কাল কি খাবে? এটা জিজ্ঞাসা করার কারণ তো জানই অদিতি, আমি তোমার দেয়া রেসিপি বাজার থেকে এনে রাখতাম এক সপ্তাহ আগে, বেলায় বেলায় তোমার ফোন পেয়ে স্বিদ্ধান্ত পরিবর্তন হত কি খাবো, যে আফসোস ছিলো আমার মেস ফুড ভাত উইথ ডিম ভাজি দু বেলা তা হতনা বলে, এখন বেশ লাগে আমার। ভালো থাকো অদিতি, পরের চিঠিতে না হয় আরো কিছু মনে করাবো, যা ভুলোমনা তুমি, সোমবার চটপটি খেয়েই বুধবার বাহানা গত এক মাস চটপটি খাওনা, সেই তুমি দু বছর আগের পাচ বছরের ইতিহাস মনে রাখা আমার নিকট অবিশ্বাস্য, ঠিক এ কারনেই না হয় লেখা হবে বাকি চিরকুট।
৬টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
আজ বিয়ের ষষ্ঠ দিন হতো। অনেক ভাবেন আপনি অনাগত দিনগুলোর কথা ভেবে। চিরকুট প্রকাশিত হোক বা না হোক সুন্দর শুভময় দিনগুলো হোক আপনার। অদিতির জায়গায় অনন্যা কিংবা দিতি হলেই বা।
নুসরাত মৌরিন
ভাল থাকুন ভাইয়া…সুখে কিংবা অ-সুখে।
অদিতি থাকা কিংবা না থাকাতে-সব সময় ভাল থাকুন।
সুন্দর চিরকুট। 🙂
ছারপোকা
ভালই লেগেছে অদিতি কে হারিয়েই তাকে নিয়েই এত্ত এত্ত গুলা স্বপ্ন বুনে ফেলেছেন ।যদি ও বা অদিতি নেই তাতে কি সব চাওয়া তো আর পূর্ণ হয় না ।অদিতির জায়গায় অন্য কাউকে ভেবে নিবেন ।
ফাতেমা জোহরা
কোন কথা আসছে না ভেতর থেকে। ভালো থাকুক আপনার ভালোবাসা।
খেয়ালী মেয়ে
আপনার অদিতি কি অন্য কারো হয়ে গেছে?–নাকি দূরে কোথাও চলে গেছে?–এটা ঠিক বুঝলাম না 🙁
লীলাবতী
ভালো থাকুন আপনি। ভালো লিখেছেন।