
প্রাচীনকাল থেকে আমি গ্রামীণফোন ইউজ করি। ঐ সময় গ্রামীণ এর সব সিম থেকে ISD এবং NWD কল আদান প্রদানের সুযোগ পাওয়া যেত না, এখন যেমন পাওয়া যায়। কিন্তু ঐসময় আমি ISD এবং NWD সুবিধা সম্বলিত সিম ক্রয় করি। বলতে গেলে বড়লোকি সিম ইউজ করতাম শুরু থেকেই। ইউজটা এমন ভাবে করি যে, গ্রামীণফোন কোম্পানি আমাকে ধাপে ধাপে সিলভার, গোল্ড এবং অবশেষে প্লাটিনাম স্টার বানিয়েছে। অবশ্য প্লাটিনাম স্টার হয়েছি বহু আগেই। মাঝে মাঝে এই অফার সেই অফারও দেয়। কিন্তু আমি এসব অফারের ধার ধারি না। দরকার হয় না। আমার দরকার কথা বলা আর ইন্টারনেট ইউজ করা।
গত দুই বছর আগে গ্রামীনফোনের এক কর্মকর্তা আমার অফিসে এসে আমার আগের 3G সিমকে 4G তে রূপান্তর করে দেয়। ভাবলাম ইন্টারনেট এর গতি হয়তো আগের চেয়ে বহুগুণে বেড়ে যাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গতিটা কিভাবে কোন দিক দিয়ে বাড়ল টের পেলাম না।
গ্রামীণফোনের বহুল প্রচলিত কিছু শ্লোগান আছে, “চল বহুদূর”, “দূরত্ব যতই হোক, কাছে থাকুন”, “4G যার দুনিয়া তার”। এই সমস্ত শ্লোগানের পাশাপাশি কিছু বাণীও আছে গ্রামীণফোনের। এই যেমন, “দেশজুড়ে সবচেয়ে বেশী 4G টাওয়ার নিয়ে সাথে আছি” কিংবা “সবচেয়ে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক আর ইন্টারনেট নিয়ে সাথে আছে গ্রামীণফোন, সবসময় সবখানে”।
আচ্ছা গ্রামীণফোনের এসব শ্লোগান এবং বাণী সমূহের সাথে বাস্তবতার মিল কতটা? আমার বাড়ির এক রুমে 4G পেলে পাশের রুমে পাই 3G, কখনও কখনও আবার 2G কিংবা H+। কখনও আবার এসব হয়ে যায় গায়েব হয়ে। করোনা কালীন অনলাইন একটিভিটি বেড়ে যাওয়ায় ইন্টারনেটের এমন ধীর গতির কারণে বহু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এদিকে আবার শুনলাম 5G ও নাকি চলে আসবে কিছুদিন পর।
কিছুদিন আগে গ্রামীণফোন হতে ৫০ জিবি ডাটা কিনলাম টাকা দিয়ে। মেয়াদ ১ মাস। ইন্টারনেট যে পরিমাণ স্লো তাতে এই একমাসে ১০ জিবি খরচ করতে পারবো কিনা সন্দেহ। ইন্টারনেট চালু করে কোনও ব্রাউজার ওপেন করলেই দেখি চাকা ঘুরে। ঘুরতেই থাকে মাগার লাইন আর পাওয়া যায় না। মোবাইল রিস্টার্ট করলেও কাজ হয় না। মোবাইল সেটিংস সব ঠিকঠাক মতই আছে। তবুও সমস্যা রয়েই যায়।
শুনলাম মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৭টি দেশের মধ্যে ১৩৫তম। সুদান এবং উগান্ডার চেয়েও নাকি পিছিয়ে আছে। অথচ এই উগান্ডাকে নিয়ে আমরা কতো ট্রল করি।
যাইহোক, সবচেয়ে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গ্রামীণফোনের যদি হয় এই হাল, তবে বিশ্বের সাথে কিভাবে চলবো আমরা মিলিয়ে তাল!
১২টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
গ্রামীণফোনের তাল এখনো ওদের গাছেই শোভা বাড়াচ্ছে। আমরা আমজনতা তাই এই তালের বেতালে খাবি খাচ্ছি। বেশি প্রশ্ন করলে তখন হয়তো আরেকটা বাণী আসবে ❝ যতদিন ঘুরবে গ্রামীণের চাকা, ফোনের ডাটা হবে নাকো ফাঁকা ❞
শুভ কামনা 🌹🌹
রুমন আশরাফ
ভালো বলেছেন আপু।
হালিমা আক্তার
শুধু গ্রামীণ সিম নয়।সব অপারেটর একই অবস্থা। ঘোষণা দিয়ে 5জি আসছে। অথচ অনেক জায়গায় এখনো নেটওয়ার্ক থাকেনা। শুভ কামনা রইলো।
রুমন আশরাফ
সত্যিই সব মোবাইল অপারেটরের একই দশা। ভালো থাকবেন।
রিতু জাহান
ডাটা কিনলে ফেসবুক চলে কোনোরকম,, হোয়াটসঅ্যাপ অন্য এ্যাপস্ গুলো চলে না।
এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া খুব জরুরি। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টা কে বাঁধবে!
তাই এখন আর হিসেব কষি না।
রুমন আশরাফ
আমি অভিযোগ করেছিলাম। কাল কাস্টমার ম্যানেজার ফোন দিয়ে বলল তাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।
রিতু জাহান
ধরে ওদের যদি থাপড়ানো যাইতো দারুন মজা পাইতাম আমি। দুই তিনটা কর্মীরে থাপড়াইলে মালিকের টনক নড়তো।
আমি ডাটা কিনি না।
খুব কম কিনি। তাতে অনেক কিছু ওপেন হয় না।
আরজু মুক্তা
সব চোরেরাই একই। এদের নিয়েই থাকতে হয়
রুমন আশরাফ
কি আর করা তাহলে!
নিতাই বাবু
সব চোরদের নিয়মনীতি একইরকম। বিশেষ করে ইন্টারনেট। আমার টাকায় ইন্টারনেট কেনা। অথচ এখানে তাদের দেয়া মেয়াদে শেষ করতেই হবে। নাহয় যা থাকবে, তা তাদেরই। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এরকম চুরিবিদ্যা স্বয়ং রাষ্ট্রের চোখেও পড়ে না।
রুমন আশরাফ
সত্যিই আফসোস হয়, কষ্ট লাগে।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
সব মোবাইল নেটওয়ার্কগুলোর অবস্থা তথৈবচ !