
রাজকন্যার স্বপ্নে রাজপুত্র (পর্ব-৩)
জামান সাহেব খুশি হয়ে বললো ” আমিন” ধন্যবাদ স্যার।স্যার আমার মেয়েটা বড় ভাগ্যবতী আমি সৎ বলে অনেক বছর ধরে প্রমোশন হবে হবে বলেও হচ্ছিল না, ঘুষ দেই না বলে। আজ আমার মেয়ের জন্মের দিন এত বড় একটা সুখবর পেলাম আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই আমি আজ খুব খুশি।আচ্ছা রাখছি বলেই ডিপিও বিদায় নেয় জামান সাহেব সালাম দিয়ে মোবাইলের কল কেটে দেয়।আজ ১ মাস চলছে জান্নাত জামানের ঘরে নতুন অথিতি আসছে আমার মা কোথায় বলেই জামান রুমে ঢুকে। বাইরে থেকে আসছো আগে হাত ধুয়ে নাও পরে ফারিনকে কোলে নিও,আচ্চা আসছি বলেই জামান বেসিনে হাত ধুতে চলে যায়। কিছুক্ষনের মধ্যই জামান মেয়েকে কোলে নিতে ফিরে আসে সারাদিন ফারিনকে কোলে নিয়ে বসে থাকে আমার রাজকন্যা, ফারিন এক গালে হাসতে শিখেছে। জান্নাত বললো দেখছো একদম মায়ের মতো হাসিটা হুম আমার দ্বিতীয় মা বলেই হাসলো জামান, আমার কপি তো বলেই হা হা হা হা করে হাসলেন জামানের মা।আমার সারাদিন ওর পিচনে দৌঁড়াতে গিয়েই শেষ এত দুষ্ট হয়েছে ভাবতেই পারি না মা ফারিনকে দেখুন। বউমা আমার জামানও এমনি চঞ্চল ছিলো বলেই মুচকি হাসলেন ফারিনের দাদুমনি। জান্নাত হেসে বললো দেখলেন মা মেয়েটা ঠিক বাবার মতোই দুষ্টু হয়েছে হাসি আনন্দ ফারিনকে নিয়ে কেটে যায় বেলা।শিশু ফুল এই দুটো জিনিস সবাইকে আকৃষ্ট করে কারন এ দুটোই নিষ্পাপ জাতের হয়।
সারা বাসা বেলুন, ফুলের ঝার দিয়ে সাজানো, মেহমানে ভর্তি চারদিকে উৎসবমূখর পরিবেশ, জামানের অফিসের কলিগরা আসছে।পাশের বাসার নওরীন এর মা এসেছে অবাক কান্ড আজ কি ইউ.এন.ও সাহেবের মেয়ের বিয়ে না জন্মদিন। ভাবি আমিও বুঝতে পারছি না বাসা যেভাবে সাজিয়েছেন যে কেউ দেখলেই বলবে এটা বিয়ে বাড়ি পাশের বাসার দুজন ভাবী গল্প করছিলো । বউমারা বসো,আন্টি আসসালামু আলাইকুম, ওয়া আলাইকুম। কেমন আছো মা.? জ্বী ভালো আছি আন্টি। জান্নাত ফারিনকে নিয়ে এসো সবাই চলে আসছে বলেই জামানের মা সোফায় বসে পড়ল। আসছি মা বলেই জান্নাত ফারিনকে কোলে নিয়ে দু-তলা সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসছিলো, উপস্থিত সকলেই হাজির। সবার চোখ ওদের দিকে জামান অবাক হয়ে দেখছে বিয়ের এত বছর পরও জান্নাত কত সুন্দর, ফারিনও হয়েছে ঠিক মায়ের মতোই দুধে-আলতা গায়ের রং।
সবাই করতালি দিয়ে ফারিনকে স্বাগতম জানাল, কেক রেডি আত্মীয় স্বজন সবাই আসছে ফারিনের জন্মদিনে। একজন বললো জামান সাহেব মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে যান, জান্নাত ফারিনকে জামানের কোলে দিল।ফারিন ছোট তাই জান্নাত, জামান ফারিনের পক্ষে একে একে ১০টা জ্বলন্ত মোমবাতি ফুঁ দিয়ে নেভাল “হ্যাপি বার্থডে টু ইউ ফারিন” শব্দে চারপাশে মুখরিত হয়ে ওঠল। আমার ফারিন বলে জামান,জান্নাত কেক কাটল ফারিনের মুখে অল্প কেক দিল। জামান সবাইকে কেক,কলা,বিস্কুট,পায়েস ইত্যাদি নাস্তার ব্যবস্থা করলো।সন্ধ্যার পরে সবাই বিদায় হলো আজ ফারিনের ২বছর পূর্ন হলো ৩ বছরে পদার্পন করলো।
তিন বছর পর-
জামান ফারিনকে নিয়ে খেলা করছিলো, ওগো শোনছ তোমার রাজকন্যা তো লিখতে পড়তে পারে ওরে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলে কেমন হয়। পাগল নাকি এত কম বয়সে না ৬ বছর বয়সে স্কুলে ভর্তি করাব।বাসায় তুমি ওর পড়াশোনার দিকে একটু খেয়াল রেখো বলেই জামান রেডি হয়ে অফিসে চলে গেল। জান্নাত ও ঘরের কাছে মন দিল, ফারিন দাদুর কাছে বসে গল্প শোনায় মনযোগ দিল।
ফারিনের ৫ম জন্মদিন হয়ে গেল খেয়াল নেই জামানের বদলী বিভিন্ন ঝামেলায় ফারিনকে স্কুলে ভর্তি করানো হয়নি।ফারিন ৬ বছর ৪ মাস চলছে সকাল থেকেই সে নতুন জামা পড়ে রেডি। কখনো বাবার অফিসের গাড়ি আসবে সে বাবার হাত ধরে স্কুলে যাবে,আম্মু গাড়ীর হর্ন বেজে ওঠল গাড়ি আসছে বলেই ফারিন দৌড়ে দরজার বাইরে গিয়ে দাঁড়াল।জামান রেডি হয়ে ফারিনকে নিয়ে গেল স্কুলে ভর্তি করাতে ইউ.এন.ও সাহেবকে দেখা মাত্রই স্যার,মেমরা সবাই ভয়ে অস্তির।জামান সাহেব সবাইকে চিন্তা মুক্ত করলেন আমার রাজকন্যাকে স্কুলে ভর্তি করাব।
সবাই খুশি একজন শিক্ষক মামনি চল তোমাকে স্কুলটা ঘুরে দেখাই বলেই ফারিনকে নিয়ে চলে গেল। ফারিন খুব মিশুক সে মেম এর সাথে প্রথম ক্লাস ফোর ঢুকলো সব বড় বড় আপ্পি,ভাইয়া দেখে সে ভিষন খুশি। সে সবার সাথে মিশে গেল গল্প করছে হঠাৎ ওই শিক্ষক এসে বললেন জামান স্যার তাকে অফিস কক্ষে ডাকছে কিন্তু সে যাবে না। অবশেষে জামান সাহেব প্রধান শিক্ষককে নিয়ে ক্লাস ফোর আসলেন রাজকন্যা অফিসে চল তোমার নাম এন্টি করতে হবে। ফারিন জেদ করলো আমি এই ক্লাসেই পড়বো ক্লাসের সব ছাত্র/ছাত্রী হেসে ওঠল ফারিন…
…..চলবে।
১১টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
মনোমুগ্ধকর , সুনিপুণ লেখনশৈলী , বিমুগ্ধতা অন্তহীন।
সুরাইয়া নার্গিস
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইজান,সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।
গল্পটা আমার জীবনে থেকে নেওয়া বাস্তব ঘটনা গুলো গল্প আকারে লেখার চেষ্টা করছি।
ভালো থাকবেন,দোয়া রইল।
আরজু মুক্তা
মজা পেলাম। একবারেই ক্লাস ফোরে।
কৌতূহল থাকলো।
শুভকামনা
সুরাইয়া নার্গিস
অনেক ধন্যবাদ আপু, সুন্দর মতামতের জন্য।
আমার স্কুল জীবনটা শুরু হয় ক্লাস ফোর থেকে তাই ক্লাস,ওয়াস,টু,থ্রী ক্লাস গুলোকে আজোও মিস করি 😥
আপু গল্পটা আমার জীবন কাহীনি সবটা হয়ত লিখবো না তবে একটু লেখার চেষ্টা আম্মু,আব্বুর কাছে শোনা মাত্রই লিখতে শুরু করলাম।
আশাকরি সাথে থাকবেন।
ভালো থাকুন, দোয়া রইল আপু।
শামীম চৌধুরী
দারুন লাগলো।
সুরাইয়া নার্গিস
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইজান।
পাশে থাকবেন সব সময় এই কামনা রইল।
ভালো থাকুন দোয়া রইল আপনার জন্য।
সাবিনা ইয়াসমিন
স্কুল জীবনের অধ্যায় শুরু হয়ে গেলো।
আগামী পর্ব পড়ায় অপেক্ষায় রইলাম। শুভ কামনা 🌹🌹
সুরাইয়া নার্গিস
অনেক ভালোবাসা রইল মিষ্টি আপু আপনার জন্য।
গল্পটা রাজকন্যা মানে আলিফকে নিয়ে লেখা,এটা আমার জীবন থেকে নেওয়া সবটা বাস্তব আপু।
আশাকরি সবার ভালো লাগবে প্রতিটা পর্বেই কিছুটা অবাস্তব মনে হবে,তবে আলিফের সাথে এগুলো হয়েছিলো☺
ভালো থাকবেন আপু,শুভ কামনা রইল।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অসম্ভব আদুরে জেদি মেয়ে। একেবারে বড়দের সাথে পড়বে।
আমিও সরাসরি ক্লাস টুতে ভর্তি হয়েছিলাম কারন যারা আমার সাথে খেলত তারাও টুতে পড়ে।
গল্প ভালো হচ্ছে তবে কিছুটা বাস্তবতার সাথে মিল রাখতে হবে।
শুভ কামনা রইলো আপুনি।🌹🌹
সুরাইয়া নার্গিস
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মতামতের জন্য।
আপু গল্পের রাজকন্যাটা মূলত আলিফ, এটা আমার জীবনের একটা অংশ গল্প আকারে লিখতেছি।
গল্পটা বাস্তব জীবন নিয়ে তাই সব গুলো সত্যি ঘটনা গল্পে পাবেন সেটা অলৌকিক কিছু না।
তারপরও আমি চেষ্টা করছি গল্পের মতো করে লিখার।
ভালো থাকবেন,শুভ কামনা রইল আপু।
জিসান শা ইকরাম
রাজকন্যা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে,
বাইরের জগতে পা রাখলো, স্কুল জীবনে প্রবেশ করল,
ভালো হচ্ছে পর্বগুলো।