এ সময় অয়ন বাসায় আসে, বলে কিরে কি হয়েছে তোর কোনো খোজ খবর নাই, দেখা-সাক্ষাৎ নাই কল দিলে রিসিভ করিস না? সারাদিন বাসায় কি করিস? কি হইছে তো…
থাম থাম এক দমে এত্তগুলা প্রশ্ন এক সাথে করলে উত্তর দিবো কিভাবে বলেই হা হা করে হেসে উঠলো নাবিল।
দোস্ত অনেক কষ্ট দিছি তোকে, তাজকে। তোদের দুরে ঠেলে হীরা কে কাছে টেনে নিছিলাম আর ও ই আমার পিঠে ছুরি বসালো? পারলে মাফ করে দিস দোস্ত।
দেরি হলেও বুঝছিস এই ই অনেক। তাজ তোর উপর অনেক অভিমান বুঝতে দেয় না বয়সে ছোট তো। ও তর অনেক ভক্ত তুই জানিস, যদি পারিস একটু কথা বলে নিস ওর সাথে অয়ন বললো।
হুম বলা দরকার। আচ্ছা দোস্ত কিছু টাকা দিতে পারবি?
কত?
এই ধর হাজার দশেক। বাচ্চাদের জন্য কিছু জামা-কাপড় কিনা দরকার তার মধ্যে শীত আসছে। আমরা ই তো ওদের বাবা-মা। কে দিবে বল আমরা ছাড়া?
হঠাৎ করেই অয়ন নাবিল কে জরিয়ে ধরে বলে উঠলো তুই এত ইমোশনাল ক্যান? এইটার জন্যই অনেক ধরা খাইসিস ভবিষ্যতেও খাবি বলে দিলাম।
জানিস আজ মা’কে কল দিয়ে ছিলাম। আবেগে উত্তেজিত হয়ে অয়ন বলে উঠলো ক বলেছে মা?
এইতো ২৫ রমজান যেতে বললো এখন থেকে ওখানেই থাকতে বলেছে।
আলহামদুলিল্লাহ্ এত দিনে একটা সুন্দর খবর দিলিরে দোস্ত অনেক শান্তি লাগছে। দোস্ত আমি আসলে এসেছিলাম একটা খবর দিতে যা ই ঘটুক তোকে না জানিয়ে কাউকে আমি কিছু জানাই না তুই জানিস এমন কি বাসায় ও না। যদিওবা এই কাজ টা বাবা মা করেছে SSC এর পর আর পড়াশুনা হইলো না বাবা মা চায় আমি বিদেশ চলে যাই। আমিও রাজি এভাবে থেকে কি লাভ বল?
-ভাল কাজ করেছিস। তো কোন দেশে যাচ্ছিস?
-ফ্রান্সে এক মামা থাকেন উনি ই সব ব্যবস্থা করেছেনবলেই সিগারেটের প্যাকেটা টেনে নিলো নিজের কাছে। এদিকে নাবিল কয়েকটা স্টিক বানাতে ব্যস্ত হয়ে পরলো অয়ন সব দেখছে কিন্তু কিছু বললো না। নাবিল একটা স্টিক জালিয়ে বড় করে টান দিয়ে জিজ্ঞেস করলো কবে যাচ্ছিস?
এইত ঈদের তিন দিন পর ফ্লাইট। গাজা কবে ধরলি? তুই না এগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করতি?
এখন ও করি and “I will make sure that no one can sell drugs in my area”
তো তুই খাচ্ছিস কেন? এইগুলা ঠিক? নাবিল চুপ করে বসে থাকে কিছু বলে না।
সেহেরীর সময় হয়ে গেছে কিছু খাওয়া দরকার বলে বাইকের চাবি নিয়ে অয়ন কে নিয়ে বেরিয়ে পরে। বাসার নিচে নেমেই নাবিল তাজকে কল দেয়। একটা রিং হতেই তাজ সালাম দিয়ে বলে এত রাতে নাবিল ভাই? কোনো সমস্যা?
নাবিল হেসে বলে উঠে শুধু সমস্যা হলেই কি নাবিল তোকে মনে করে? কাচু মাচু করে তাজ বলে ঠিক তা না…
নিচে চলে আয় সেহেরী করবো তিন জন এক সাথে। বাবা-মা কে বলে আসিস কিন্তু আজ সারা দিন আমার সাথে ই থাকবি ঠিক আছে?
আচ্ছা ভাই দশ মিনিটেই আসছি বলে ফোনে রেখে দেয়ে পাঁচ মিনিটেই নিচে চলে এলো।
তোর এই পাংচুয়ালিটির জন্য তোকে আরও বেশি ভাল লাগেরে তাজ নাবিল মনে মনে বিড়বিড় করলো।
তিন জনে এক বাইকে করে তাদের পছন্দের রেস্টুরেন্টে গিয়ে সব চেয়ে প্রিয় খাবার হালিম, নান-রুটি আর নেহারির অর্ডার দিলো সাথে ঠান্ডা পানি। বলে দিলো খাবার শেষে তিনটা ক্যাপোচিনো আর দুই প্যাকেট বাংলা ফাইভ সিগারেট দিয়ে যায়।
খাবার চলে এলে খাওয়া শুরু করলো তিন জনে। নাবিল ই কথা শুরু করলো “তোর ভাই ফ্রান্স চলে যাচ্ছে শুনেছিস তাজ? চমকে উঠে না তো কে যাচ্ছে আপনি??
হা হা নারে বোকা আনি না অয়ন যাচ্ছে ঈদের পরে তাই এই ট্রিট দিচ্ছে। আরেকটা খবর আছে, আগামী কাল আমি বাসায় যাচ্ছি মা’কে কল দিয়ে ছিলাম। মুখের কথা কেড়ে নিয়ে তাজ বললো finally you have done such a great things really happy to hear that বলেই চোখ মোছা শুরু করছে। খুব ভাল করেছেন ভাই এই গ্রুপ/গ্যাং আপনাকে কিচ্ছু দিবে না। হীরা সোহেলের সাথে মিশে সব উলটা পালটা করে দিছে। সব টাকা খোর, শুনেছি এলাকায় আবার আসর বসানোর তাল-বাহানা করতেছে ওরা। আপনি অনেক ভাল কাজ করছেন ভাই খুব খুশি হয়েছি আমি।
-তাজ তওর অনেক অভিমান আমার উপর তাই না?
না ভাই কি বলেন? আজকের আগ পর্যন্ত ছিলো অস্বীকার করার কিছু নাই কিন্তু আজ থেকে কোনো অভিমা বা রাগ কিছুই নাই ভাই।
আজ আমি সারা দিন তোদের সাথে থাকতে চাই, ঘুরতে চাই, কাল কে সকালে বাড়ি যাবো থাকবি তোরা আমার সাথে?
অবশ্যয়ই এক সাথে অয়ন-তাজ উত্তর দিলো।
সেহেরী শেষ করে সবাই উঠে গেল বাহিরে এখনো আজানের ৭ মিনিট বাকি আছে তাই সবাই একটা করে সিগারেট জ্বালালো। সিগারেট শেষে মসজিদে গিয়ে ওযু করে তিন জনেই নামাজ পড়ে নাবিলের ফ্ল্যাটে চলে এলো একটু ঘুমাবে বলে।
নাবিল ঘুম থেকে উঠে দেখে দুপুর দুই টা বিশ। গোসল ওযু করে সে অয়ন-তাজ কে ডেকে তুলে নামাজের জন্য। দু জন ফ্রেস হয়ে এলে একসাথে জোহ্রের নামাজ পড়ে। তারপর প্ল্যান করতে বসে ঈদের তো মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। বাচ্চাদের জন্য কিছু কেনা দরকার। নাবিল ১০ হাজার অয়ন ৬ হাজার আর তাজ ৪ হাজার টাকা বের করে পকেট থেকে। ২০ হাজার টাকা নিয়ে অয়ন বলে ইফতারে এবং নামাজের পরে শপিং এ যাবো আমরা কি বলিস নাবিল?
আচ্ছা সমস্যা নাই।
নাম ও চরিত্র কাল্পনিক কিন্তু গ্রাম-বাংলার পরিপ্রেক্ষিতে অতি সাধারণ ঘটনা, কারো সাথে মিলে গেলে নিজ গুণে ক্ষমা করবেন”
to be continued…
১০টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
অত্যন্ত সহজ সরল ভাবে গল্পের উপস্থাপনা, এ যেন আমাদের অতি পরিচিত সমাজেরই গল্প।
ভাল হচ্ছে খুবই,
চলুক।
রেজওয়ান
thank you brother (3
ইঞ্জা
রেজওয়ান খুব ভালোই লিখেছো, ভাইয়ার জন্য দোয়া রেখো
রেজওয়ান
always i keep you in my prayes -{@
ইঞ্জা
thanks
মৌনতা রিতু
খুবই সহজ সরল উপস্থাপন।
আমরা পারতপক্ষে এসব ভবঘুরে গ্রুপ করে ছেলেদের সমাজের কিট মনে করি। আসলে এদের ভাল কাজগুলো আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়।
চলুক।
রেজওয়ান
thank you very much appi -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
দারুণ লিখেছেন। চলুক!
রেজওয়ান
thank you so much appi -{@
নিতাই বাবু
ভালো লাগলো দাদা, লিখতে থাকুন।