বান্দরবানের গহীন পাহাড়ি অরণ্যে কয়েকটি বাড়ি নিয়ে সুনশান ছোট্ট একটি গ্রাম সাজাই ভ্যালি। তিন দিকে খাড়া পাহাড় আর অন্য দিকটাতে পাথুরে খাল রেমাক্রি। পুব দিকের পাহাড়টায় একটা স্বর্পিল আঁকাবাঁকা পথ উঠে গেছে মেঘে ঢাকা আরো একটা ছোট্ট গ্রামে, যেন স্বর্গের পথ। আর দক্ষিণে ছোট্ট কয়েকটি ঝর্ণার পানি কলকলিয়ে ছুটে চলেছে রেমাক্রির পাথুরে পথ বেয়ে নাইক্ষংমুখ হয়ে স্বর্গিয় জলধারা আমিয়াখুমের দিকে। পশ্চিম দিকের ঢাল বেয়ে সামান্য একটু নামলেই আরো একটা পাহাড়ি গ্রাম আর পাহাড়ের নির্মোহ সহজ সরল মানুষগুলো, সব মিলিয়ে একে স্বর্গ বললে একটু কমই বলা হয়। সাজাই ভ্যালী থেকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া সাকাহাফং এর দূরত্ব ৫/৬ ঘন্টার পথ আর বাংলাদেশের সব চেয়ে সুন্দর ঝর্ণা আমিয়া খুমের দূরত্ব ঘন্টা তিনেকের। ক্যামেরার ব্যাটারি সাশ্রয় করতে গিয়ে ছবি খুবই কম উঠিয়েছি, তাই এখন দুঃখ হচ্ছে খুব। এবার দেখে নেয়া যাক সাজাই ভ্যলিকে।
(১) সাজাই ভ্যালি
(২) নেফিউ পাড়া থেকে সাজাই ভ্যালির দিকে যেতে কিছুটা পথ বেশ দূর্গম।
(৩/৪) কোথাও বা এমন সুড়ঙ্গের মতো ঝিরি পথ পাড়ি দিতে হয় সাজাই ভ্যালির দিকে গেলে।
(৫) সেই পথে যদি আবার এমন ভয়ঙ্কর দর্শন গয়াল ওত পেতে থাকে তাহলে কেমন ভয় লাগে তা এখন আর বলে বুজাতে পারবোনা।
(৬) আর এমন সোনা রঙা নাম না জানা সাপ দেখে তো ইচ্ছে হচ্ছিলো উল্টো দিকে ছুটে পালাই।
(৯/১০) সাজাই ভ্যালির চমৎকার মনের মানুষগুলো ইতিউতি আমাদের দেখে এগিয়ে এসেছিলো স্বাগত জানাইতে।
(১১/১২) ক্লান্ত আমরা যে যেখানে পারি বসে একটু জিড়িয়ে নিলাম।
(১৩) শিশুরা খেলছিলো আপন মনে।
(১৪) একজন আবার পাইপ টানছিলো।
(১৫) সবচেয়ে চমৎকৃত হয়েছিলাম ওনার পাইপটা দেখে।
(১৬/১৭) উঁচু পাহাড়গুলো থেকে এমন ছোট ছোট কিছু ঝর্ণা নেমে আসছিলো পাথুরে খাল রেমাক্রিতে, আর রেমাক্রি খাল সেই পানি পৌছে দিচ্ছিলো নাইক্ষংমুখ, আমিয়া খুম, নাফাখুম হয়ে সাঙ্গু নদীতে।
(১৮) সাজাই ভ্যালিতে এক রাত আমরা থেকেছিলাম এই ঘরটিতে।
(১৯) সাজাই ভ্যালির পূর্ব পাশের উঁচু পাহাড়টিতেও এখানের মতো কয়েকটি বাড়ি নিয়েই একটা গ্রাম।
(২০) আর পশ্চিম পাশের গ্রামটা বেশ জনবহুল এবং পুরোনো, এখন একটি গ্রামের নামও মনে পড়ছে না, কখনো মনে পড়লে নামগুলো এড করে দিবো।
সাজাই ভ্যালিতে কাটানো একটি রাতের কথা মনে হলে এখনো আমি রোমাঞ্চিত হই। নির্জন পাহাড়ের কোলে ছোট্ট একটা কুড়েতে শীতে কাপাকাপি করে থাকা, পাশের পাথুরে খালে সারা রাত ধরে পাথরের সাথে ঝর্ণা হতে মিলিত পানির কানাকানি, কখনো বা খাল পাড় হয়ে কোন বন্য প্রাণির চলে যাওয়ার সপ সপ শব্দ, সত্যিই এর তুলনা হয়না………..ইচ্ছে হয় আবার ছুটে যাই ঐ পাহাড়ি এ্যডভেঞ্চারে।
বিঃ দ্রঃ পুর্ব পশ্চিম দিক নিয়ে আমার কিছুটা সংশয় রয়েছে, আবার কখনো যাওয়া হলে সঠিক ভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো।
৫টি মন্তব্য
নার্গিস রশিদ
সুন্দর । অনেকটা নেপালের মোদী খোলা নদীর পাশ দিয়ে যাওয়া অর্নপুর্না থেকে পাহাড়ে উঠার দুই পাশের দৃশ্যের মতো ।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, নেপালের ওদিকটায় আমার যাওয়া হয়ে উঠেনি। আমি ফেওয়া লেক, কাঠমুন্ডু এসবে কিছুটা ঘুরেছি
নার্গিস রশিদ
একবার কষ্ট করে হলেও অন্নপুর্না ট্রেকিং আর তার সাথে অন্নপুর্না কন্সারভেসন এরিয়া ঘুরে আসুন। জীবনে ভুলবেন না।
হালিমা আক্তার
ছবির সাথে চমৎকার বর্ণনা। ভ্রমণ কাহিনী ও ভ্রমণের ছবির প্রতি আকর্ষণ সবসময়। ভালো লাগলো। শুভ রাত্রি।
কামাল উদ্দিন
আমারও এসবে বিস্তর ভালোলাগা, কিন্তু এখন সংসারের যাতাকলে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে আছি বলে সময়াভাব প্রকট……….ভালো থাকবেন।