তড়িঘড়ি করে বাসে উঠেই বসে পড়লাম। পাশের সিটে একটা মেয়ে বসে আছে। ভদ্র এবং সুশীল মনে হচ্ছে। আমার দিকে ব্রু কুঁচকে বললো ….
– সমস্যা কি? এত নড়াচড়া করছেন কেন?
– আমি ব্রু কুচকে বললাম চুলকাচ্ছে।
– মানে?
-একটা লাল রংয়ের জাঙ্গিয়া কিনেছিলাম। সুপার ম্যান সাজবো বলে। কিন্তু শেষে ইচ্ছাটা মরে যায়! আজ প্যান্টের ভিতরে পড়েছি। খুব চুলকাচ্ছে! না ধুঁয়ে পরা উচিৎ হয় নাই।
– আজব লোক তো! আপনি কি পাগল!
– হুম! কয়দিন আগেই পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে আসছি।
– কেন?
– আমি সুস্থ হয়ে গেছি। তারা আমার বাসায় খবর পাঠায় না। উল্টা আমার পরিবার থেকে মাসে মাসে টাকা নেয়!
– এখন সুস্থ?
– হুম! পুরোপুরি সুস্থ! শুধু চুলকাচ্ছে! উফফ…উফফ …
– ধ্যাত! এই শব্দটা আমার সামনে বলবেন না।
– আচ্ছা! বলবো না।
– পাগল হলেন কি করে?
– আপনার জন্য।
– মানে?
-ওহ্! আপনার মতো একটা সুন্দরী মেয়ের কারনে।
-তাই? কি করলো আমার মতো সুন্দরী মেয়ে?
– সে অনেক কথা। শুনতে হলে মিস্টি খাওয়াতে হবে।
– কিহ্! মিস্টি! বাসে মিস্টি পাবো কোথায়!
– সামনে তো ফার্মগেট! ঐখানে নেমে যাই চলেন! ভালো মিস্টির দোকান আছে!
– আপনি মেয়ের জন্য পাগল হইছেন নাকি মিস্টি খাইতে খাইতে পাগল হইছেন?
– না! মেয়ের জন্যই হইছি! আপনি খাওয়াবেন না মিস্টি?
– না। খাওয়াবো না।
– ঠিকাছে। আমার খুব চুলকাচ্ছে! উফফ …উফফ …
– আজব! খাওয়াবো! এখন চুপ থাকেন।
ফার্মগেট এসে নেমে একটা মিস্টি দোকানে ঢুকলাম। মিস্টি আজ খেতে ইচ্ছা করছে অনেক গুলা। মেয়েটা এভাবে রাজি হবে ভাবি নি কখনো! মেয়েটা বললো…
– কয়টা মিস্টি খাবেন?
– আমি অনেক মিস্টি খাই। আপাতত কাহিনী শ্যাষ না হওয়া পর্যন্ত মিস্টি খেতে থাকবো। খাওয়াবেন?
– এত খেলে পেট খারাপ করবে। আমি পাঁচটার বেশি খাওয়াবো না।
– পাঁচটাতে তো পুরো কাহিনী শেষ হবে না।
– সংক্ষিপ্ত করে বলবেন। আমার সময় বেশি নেই।
– ঠিকআছে। কালো রংয়ের একটা মিস্টি মুখে দিয়ে বললাম
” বোওওঝলেন সেই অনেক দিন আগের কথা প্রায় 1460 দিন মানে চার বছর আগের কথা। আপনার মতো একটা সুন্দরী মেয়ে নাম নিলিমা আমাদের পাশের বাসায় থাকতো। হরীনির চোখ আপনার মতো, কাজল কালো চুল আপনার মতো।
– আমার মতো আমার মতো করছেন কেন?বলতে থাকুন।
– আহা! বলছি তো! ডিসটার্ব করেন কেন! সেই মেয়েটাকে প্রথম দেখাতেই আমার ভালো লেগে যায়। তারপর বাসায় গিয়ে আমি একটা চিঠি লিখলাম।
প্রিয় নিলিমা,
ইচ্ছে ছিলো আকাশের নীল রং দিয়ে তোমার কাছে একটা চিঠি লিখবো। যে চিঠি পড়ে তুমি মুগ্ধ হবে। আমার কথা ভাবা শুরু করবে। কিন্তু আকাশ তো আমার ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাই আমার কেনা নীল রংয়ের কলম দিয়েই লিখতে বসলাম।
তোমাকে প্রথম দেখাতেই আমি মুগ্ধ হই। তারপর তোমার সম্পর্কে সবকিছু জানার জন্য কঠোর পরিশ্রম ও করি। আলহামদুলিল্লাহ্! সবকিছু পজিটিভ পাইছি। এখন যে কথাটা বলতে চাই সেটা হলো তোমাকে আমি ভালোবাসি। আশাকরি তুমিও একই কথা বলবে।
ইতি
একজন ভালোবাসা প্রত্যাশী
পাশের বাসার তিন তলা।
– তারপর?
– মিস্টি তো আর দুইটা আছে। আমার মনে হয় না কাহিনী শেষ হবে!
– উফফ! এগুলা শেষ করেন আগে।
– ঠিকাছে, তারপর চিঠি দিলাম পাঠিয়ে নিলিমার কাছে। নিলিমা চিঠি পড়ে তার মায়ের কাছে দিয়ে দেয়। তার মা পড়ে তার বাবার কাছে দিয়ে দিয়ে। তার বাবা আমার বাবার কাছে দিয়ে দেয়, আমার বাবা আমার কাছে দিয়ে দেয়।
বাবা আমাকে খুব ধমকাচ্ছিলো। মা এসে বললো থাক। ও ছোট মানুষ! এই বয়সে একটু আধটু প্রেমের সাধ জাগেই। গায়ে হাত দিও না।
একথা বলতে না বলতেই বাবা বললো ” গায়ে হাত দিবো না মানে! আমার মাথা হেট করে দিলো সবার সামনে। ” বলেই কয়েকটা চড় থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। আমি তো সেদিন খুব রাগ! মা এটা কি করলো! মার দেয়ার কথা মনে করায়া দিলো!!
– হি হি হি হি! বেশ মজার তো!
– আপনার হাসিটাও অনেক সুন্দর ….
– থ্যাংকস। তারপর কি হইলো?
– তারপর মিস্টি শেষ!
– মানে?
– দুইটা মিস্টি আর কতক্ষন থাকে!
– ওহ্! আচ্ছা! আজকে সময় ও নেই আর। বাকী অংশ অন্যদিন শুনবো।
– অন্যদিন কিভাবে? আমাকে পাবেন কোথাও?
– নাম্বার দিয়ে যাচ্ছি। আপনার টাওও দেন। সময় করে জানাবো।
-ঠিকাছে।
(কি? চলবে? দৌড়াবে :D)
২৫টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
খুব মজায় মজা
খোঁচা ভায়ের মজা।
ভাল লাগলো আমিও আস্তেছি প রে র পর্বে।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
হে হে হে
মজা পেয়েছেন বোঝা যাচ্ছে।
পরের পর্বে অবশ্যই আসবেন।
ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
আসছি মানে আমিত আছিই ভাই
এটাই আমার বসতবাড়ি
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
🙂
লীলাবতী
মিষ্টি শেষ হয়ে ভালোই হয়েছে। এত কিউট গল্পটা এক পর্বেই শেষ হোক চাচ্ছিলামনা। শুধু চলবে কেন? দুরন্ত গতিতে দৌড়াবে 🙂
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
🙂
ধন্যবাদ লীলাবতী আপু।
লীলাবতী
পরের পর্ব কখন পড়বো ভাইয়া?
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
বালিকা ফোন দিয়ে খবর দিয়ে যখন জানতে চাইবে।
কিংবা মিস্টি যখন তৈরি হবে।
মিস্টি তো সব শ্যাষ! রেজাল্টের খুশিতে মিস্টি তো থাকে না।
লীলাবতী
মিষ্টি দেখেছি আজ মিষ্টির দোকানে। পরের পর্ব চাই, কোন অজুহাত চাই না 🙂
ইকবাল কবীর
ভাল শুরু করেছেন, শেষটার জন্য অপেক্ষায় রইলাম। ভাল থাকবেন।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
ধন্যবাদ।
শেষটাও যেন ভালো হয় দোয়া করবেন :D)
ভালো থাকবেন।
ব্লগার সজীব
ভাইয়া এত মজাদার গল্পের প্লটের আইডিয়া কিভাবে পান? গল্প লিখতে বসলে মাথায় আসে একযে ছিল রাজা, একযে ছিল রানী, এরপর আর কিছু মনে আসেনা।
অপেক্ষায় রইলাম। মোবাইল নাম্বার যখন বিনিময় হয়েই গিয়েছে, তখন আর…….
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
সুন্দর প্লট কিভাবে আসে জানি না।
এসে যায় জানি কেমন করে!!
হয়তো রম্যের প্রতি আগ্রহ দেখেই আসে।
রাজা রানীর গল্প আসা তো ভালো।
একদিন আমার আসছিলো,
একদেশে ছেলে এক রানি। তারছিলো সাতজন বর। একদিন রানীর একটি বাচ্চা হলো।
কিন্তু বাচ্চার বাবা কে তা জানা গেল না। এই নিয়া এক বিশাল লেখা :D)
কিন্তু এসব তো আর লেখা যায় না :p
ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
ছেলে = ছিলে
ইলিয়াস মাসুদ
খুব খুব সুন্দর, দারুণ লাগলো পড়ে 🙂
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আর্বনীল
হা হা হা… মজা পেলাম… চলুক আরো…
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
মজা যখন পেয়েছেন তখন তো চালাতেই হবে।
ধন্যবাদ ভাইয়া 🙂
জিসান শা ইকরাম
উপস্থাপনায় মুগ্ধ হইছি।
প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত সমান আগ্রহ নিয়ে পরলাম।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
🙂
আপনাদের থেকেই তো শিখছি।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
নীলাঞ্জনা নীলা
অবশ্যই চলবে এবং দৌঁড়ুবেও।
ভাই আপনি ভালো মানুষ না, শুধু হাসান। :D) :D)
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
আপনাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে রাখার জন্যইই তো আমার এত লেখা জোকা।
🙂
ধন্যবাদ আপু।
মৌনতা রিতু
হাজার মাইল স্পিডে দৌড়াক।
মায়েরা আসলেই মাইর দেওয়ার কথাটা মনে করিয়ে দেয়।
আমি কি মন্তব্য করব বুঝতেছি না। মনটা ভালো করে দিল।
শুভকামনা রইল।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
মায়েরা আসে সাদা মনে।
কিন্তু ভেজাল লেগে যাবে এ কথাটা মাথায় থাকে না।
আপনার মন ভালো হয়ে গেছে এটাই বেশি আপু। ধন্যবাদ।
খসড়া
আমি ফাঁকাই রাখলাম মন্তব্যের ঘর।