জানা অজানা বিলাতের গল্পঃব্রিটেন, শক্তিশালী দেশ হওয়ার পেছনের গল্প
যে প্রধান কয়টি  কারনে ব্রিটেন শক্তিশালী দেশে পরিণত হয়েছিল তা হল ১) পৃথিবী ব্যাপী উপনিবেশ সৃষ্টি ২) ব্যাবসা বাণিজ্যের প্রসার সারা  বিশ্বে  ৩) শিল্প বিপ্লব ৪) কৃষি বিপ্লব ৫) আধুনিক টেকনোলজির আবিষ্কার ৬)একদল সাহসী মানুষ ৭) সমাজ সংস্কার করার আইডিয়ার জন্ম  ৮) বিজ্ঞান এবং চিন্তাবিদ দের আবির্ভাব
ব্রিটিশ রাজত্ব বৃদ্ধি হতে হতে এশিয়া,আফ্রিকা,কানাডা,আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
প্রথমে সব জায়গাতে ব্যাবসা বাণিজ্য  স্থাপন করে। তারপরে ছলে  বলে কৌশলে রাজনীতিতে ঢুকে যায়।তারপরে রাজ্য স্থাপন করে।
টেকনোলোজির আবিষ্কারঃ ইঞ্জিন
নিজের দেশে বেশ কিছু টেকনোলোজি এবং মেশিনারীর আবিষ্কার তারাকে  দ্রুত টেকসই অর্থনীতি  গোড়তে সাহায্য করে। তার মধ্যে ছিল জেমস ওয়াট এর “ইঞ্জিন” ।১৮৫৪ সালে এই ইঞ্জিন ব্যাবহার করে টেক্সটাইল শিল্পে অভূত পুর্ব উন্নতি হয়। আগে ছিল হস্ত চালিত তাঁত এবং সুটা কাটা মেশিন ।সেই মেশিনে বেশি সময়ে অল্প উৎপাদন হতো ।
 আধুনিক ইঞ্জীন   চালিত টেকনোলোজি ব্যাবহার করে কমার্শিয়াল ভাবে দ্রুত এবং অধিক   পরিমাণে কাপড় সুতা  সব তৈরি হতে থাকে।
১৮৩৩ সালে Stott Park Bobbin Mill সর্ব প্রথম এই টেকনোলোজি ব্যাবহার করে উৎপাদনে যায়। প্রথমে পানির গতি ব্যাবহার করে পরে বাষ্প এবং ইলেক্ট্রিসিটি ব্যাবহার করে ক্রমাগত ভাবে কলকারখানার বিস্তার লাভ হয় । ব্রিটেন হয়েছিল “Work shop of the world” , কারন  ব্রিটেন ছিল পৃথিবীর প্রথম দেশ  যেখানে শিল্প বিপ্লব আরম্ভ হয় ।
কাঁচামাল সব যায় উপনিবেশ করা দেশ গুলো থাকে। সস্তায় কাঁচামাল সংগ্রহ করে নিজের দেশে মেশিন দিয়ে কমার্সিয়াল হারে উৎপাদন  করে  তা সব দেশে বিক্রি করে তারা লাভ করতে থাকে।
যেহেতু ইঞ্জিন তাদেরই আবিষ্কার তাই প্রথম দিকে একচেটিয়া ভাবে তারায় সব বাজার দখলে রাখতে পেরেছিল । তাই ইঞ্জিন আবিষ্কার কে  এদের সভ্যতার প্রথম সকাল বলা হয় ।
যোগাযোগে দ্রুত গতিঃ
তা ছাড়া টেলিগ্রামের আবিষ্কার যোগাযোগের ক্ষেত্রে অভূত পুর্ব সুবিধা করে দায় । ব্যাবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য ১৮৩২ সালে বিশ্ব  ব্যাপি যোগাযোগে টেলিগ্রাফের অবদান অনেক।
বাষ্প চালিত ইঞ্জিন দিয়ে জাহাজ বানায় এবং তা দিয়ে দুনিয়ে জুড়ে কাঁচামাল আনা আর তৈরি মাল বহন সহজ করে দায়।
ইঞ্জিন চালিত ট্রেন লাইনের নেটওয়ার্ক মাল আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
এছাড়া ভিক্টোরিয়ান আমলে ১৮৭০ সালে  বাড়ী গরম করার জন্য গরম পানি দিয়ে সেন্ট্রাল হিটিং, ইলেকট্রিক কেটেল এবং ইলেকট্রিক লাইট , ইলেকট্রিক বাল্ব, টেলিফোন, টাইপরাইটার, ঘাস কাটা মওয়ার ,  বাইসাইকেল,ফ্লাস টয়লেট এর   আবিষ্কার সভ্যতা আর  উন্নয়নের দ্বার খুলে দায় ।
পুরানো রীতি নীতির পরিবর্তন এবং সংস্কারঃ
‘পুরানো প্রথা’  সংস্কারের মাধ্যমে এবং আইনের মাধ্যমে তা প্রতিস্টা  করে মানব জীবনে পরিবর্তন আসে এই ভিক্টোরিয়ান আমলে। যেমন নারী উন্নয়ন, শিক্ষা , হেলথ কেয়ার, দারিদ্র দূরীকরণ,বৃদ্ধ কালীন পেনসন ,শিশু অধিকার আর ডিজাবিলিটি ভাতা আইন দ্বারা  নীতি নির্ধারণ করা হয় ।   স্লেভারি বা দাসত্ব বন্ধ করা হয় এই সময়ে।
নুতুন নুতুন চিন্তাবিদের আবির্ভাবঃ
 “চার্লস ডারউইন” এর ‘Evolution’ মানুষের ভাবনায় আসে। তা  ছাড়া  John Sturt Mill,John Ruskin, Herbert Spencer এবং লেখক Browninh,Hardy, চার্লস ডিকেন্স এর লেখা মানুষের চিন্তা ধারাকে আলোড়িত করে।
কৃষি বিপ্লবঃ
কৃষি বিপ্লব ব্রিটেন কে এগিয়ে নিয়ে যায় । কৃষিতে যন্ত্রপাতির ব্যাবহার, ডেইরী ফার্ম ,পোল্ট্রি ফার্ম, সিড্রিল দিয়ে বীজ বপন, ১৮৮০ সালে ভালো জাতের গরুর বীজ সংগ্রহ করে উন্নত গাভী উন্নয়ন ,  ল্যান্ড রিফর্ম এবং  জেনেটিক মোটিভেটেড বীজ উৎপাদন করে ব্রিটেনে কৃষি বিপ্লব সফল্য নিয়ে আসে ।
সব শেষে বলতে হয় শিল্প বিপ্লব,  কৃষি বিপ্লব এবং উপনিবেশ  করে  ব্রিটেন যেমন ক্ষমতাধারী দেশে পরিণত হয়েছিল  তার সাথে এটাও বলতে হবে এর খারাপ দিকও আছে আর  তা হল তাদের “উপনিবেশ” করে রাখার জন্য অনেক এনসিয়েন্ট বা পুরানো সভ্যতা এবং কালচার ধ্বংস প্রাপ্ত হয়।
হুসনুন নাহার নার্গিস ,লন্ডন
তথ্য সূত্রঃ
Victorian Britain,Abram S.L
Commonwealth 1870-1919 Cambridge History of the British Empire
Foreign relations ,Sandiford,Keith
The Cambridge history of the British empire,Holand Rose
National Geographic ,essential Visual History of the world.
১৫৮জন ৪৯জন
0 Shares

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ