প্রথম আলোর রবিবারের ‘স্বপ্ন নিয়ে’ পেজটি আমি বাবুদের জন্য সাধারনত কেটে রাখি, ওদের সামনে এ পেজটি পড়ার চেষ্টা করি। সফল মানুষদের স্বপ্নগাথা আমার পড়তে ভালো লাগে। আমি গর্ব নিয়ে পড়ি, আমার দেশের মানুষের সাফল্যগাথা, নতুন প্রজন্মের নতুন নতুন স্বপ্ন ও তাদের ভবিষ্যৎ ভাবনা। পড়তে পড়তে অনেকসময়ই আমি আমার গতানুগতিক চিন্তা থেকে সরে আসি। আমিও স্বপ্ন দেখি প্রচুর আমার সন্তানদের নিয়ে। কারণ, স্বপ্ন দেখতে হয়, সে স্বপ্নকে যত্ন করতে হয়। একেকটা মানুষের একেকরকম স্বপ্ন থাকে। আমার স্বপ্নও অন্যরকম।
আজ ‘স্বপান নিয়ে’ পেজে আবু সায়ীদ স্যারের বক্তব্য তুলে ধরেছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আধ্যাপক আবদুল্লাহ্ আবু সায়ীদ স্যার আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ।
তিনি কেমন মানুষ, তা সবারই জানা। তিনি ষ্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
আসলেই, মানুষই একজন আর একজনকে ওভারটেক করছে। কোনো যান্ত্রীক জিনিস অন্য কোনো যান্ত্রীক জিনিসকে ওভারটেক করছে না। আমরা আসলেই একটা অস্থির সময় বা অস্থির যুগ পার করছি। একজন অন্যজনের সাথে পাল্লা, অমানবিকভাবে পাল্লা দেওয়া যাকে বলে। এটা আসলেই একটা উত্তেজনাপূর্ণ সময়। এই উত্তেজনা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,’উত্তেজনা এবং শক্তি এক নহে, ইহারা পরস্পরবিরোধী। কারণ, উত্তেজনার মুহূর্তে আমরা সবথেকে শক্তিহীন। তখন আমাদের মেধা কাজ করে না। আমাদের ইন্দ্রিয় গতিশীল, চঞ্চল, অস্থির। হৃদয় আজ একরকম আছে, কাল আরেকরকম। কিন্তু মনন চিরকাল একরকম, এটা স্থির। দুইয়ের এক সমন্বয় আমাদের চাই। স্যারের কথামতে আমি যদি বলি, তা এমন যে, আমরা এখন শুধুই উত্তেজনায় ছুটছি, তাই আমাদের মেধা কাজ করছে না। উত্তেজনাকে বাদ দিয়ে মেধার শক্তি দিয়ে ছুটতে হবে, ধীর স্থিরভাবে। মানুষ কখনো কি পারবে, মনের চিন্তার গতির সাথে সময় ও দুরত্বের গতির সমন্বয় করতে? যেমনঃ আমি মনে মনে ভাবলাম, এখন আমি অমুক যায়গা চলে যাব, পারব কি, সময় বা সে দূরত্ব কমাতে? পারব না। মনের সাথে সময়কে বেঁধে ফেলা কঠিন।
সেখানে স্যারের আর একটা কথা ‘থামো’ একটা চমৎকার গ্রীক উপকথার উদাহরন দিয়ে স্যার ‘থামো’ শব্দটার মানে বুঝিয়ে দিয়েছে। আসলে আমরা বা যাদের থামার কথা তারা কোথায় থামবো?
থামছে কি, কেউ? ছায়া কি দিচ্ছে কেউ কাউকে?
কেউ কেউ দিচ্ছে, কিন্তু সেও থেমে যাচ্ছে। আবার যারা দেবার চেষ্টা করছে তাদের ডালপালা ছেটে দিচ্ছে যান্ত্রিক মানুষগুলো।
ভালো থাকুন স্যার, ভালো রাখুন আমাদের আপনার ছায়াতলে। বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো।
,,,,,,,রিতু,,,,,,
৪/৬/১৮. কুড়িগ্রাম।
৭টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
স্যারকে আমারও খুব পছন্দ তার কথা উপস্থাপনার ধরণ আমাকে মুগ্ধ করে।উত্তেজনা অবশ্যই মেধা নিয়ে হলে এ জগৎ সংসার সবার জন্যই মঙ্গল।ভাল লিখেছেন।
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ মনির ভাই। কিছু মানুষের কথা আমি খুব মুগ্ধ হয়ে শুনি। তাদের মূল্যবান কথাগুলো ডায়রিতে টুকে রাখি। এটা স্টুডেন্ট জীবন থেকে। আমার মেমনও এটা করে।
মোঃ মজিবর রহমান
স্যার স্যারই। সুন্দর একটি উপস্থপনা। আমরা সুনামীর ন্যায় চলতে চাইছি।
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ মজিবর ভাই। আমরা স্যারদের মনে হয় সেই যোগ্য সন্মানটুকু দিতে পারলাম না। ভালো থাকুক এমন সব মানুষগুলো।
জিসান শা ইকরাম
খুব দারুন দুটো কথা শেয়ার করলে আজ
* উত্তেজনার মুহুর্তে মেধা কাজ করেনা, যেকারনে সিদ্ধান্তে ভুল হয়।
* থামতে হবে সঠিক সময়ে। যদিও অধিকাংশ মানুষ জানে না কোথায় এবং কখন থামতে হবে।
প্রচুর পড়াশুনা করো তুমি, সময় কিভাবে ম্যানেজ করো পড়াশুনার জন্য তাই ভাবছি।
শুভ কামনা।
মৌনতা রিতু
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। হঠাৎ করে যদি কখনো আমার বাসায় আসেন দেখবেন, ডাইনিং টেবিলে বই, বিছানায় বই, এলোমেলো। সাধারনত বাবুদের পড়ানোর সময় পড়ি, আর রাতে নিরিবিলি বেশি পড়ি।
আমার ভালো লাগে পড়তে, পাঠক না হলে ভালো বুঝব কি করে ভাইয়া।
দোয়া করবেন ভাইয়া।
আর আমার যদি কোনো বই ভালো লাগে তা বার বার পড়ি, এটা বদ অভ্যাস। ইদানিং বেশ ভালো লাগছে, “জওরাল নেহরুর দ্যা গ্লিম্পসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি’ ওনার জেলখানায় বসে মেয়ে ইন্দিরাগান্ধীকে লেখা তিনটি বই ই চমৎকার।
তৌহিদ ইসলাম
পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো আপু। খুব সুন্দর শিক্ষণীয় কিছু কথা রয়েছে। ইদানীং আমি এতই ব্যস্ত হয়ে গেছি যে বই পড়ার সময় পাচ্ছিনা। প্রতিদিন বইয়ে আলমিরার বইগুলি আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে, অথচ আমি পড়ার সময় পাচ্ছিনা। সে দিক দিয়ে আপনি প্রশংসার দাবীদার। আর স্যারের তুলনা স্যার নিজেই। যুগ যুগ বেচে থাকুন তিনি।
পুনঃশ্চ: আপনার বাড়ি কুড়িগ্রামে জেনে ভালো লাগলো। আমি রংপুরে থাকি। শুভকামনা আপু।