এই মুহূর্তে যারা এমন কোন স্থানে আছেন , যেথায় দুপুরে খাবারের কোন ব্যবস্থা নেই , আছে একটি ছোট গ্রাম্য চা বিস্কিট সিঙ্গারার দোকান , তাঁদের জন্য এই পোষ্ট ।
সিঙ্গাড়া…র অর্ডার দিন । কাঁচের প্লেট থাকলে তাতে পরিবেশন হতে পারে , নতুবা মেলামাইন । প্লেট আসলে ব্যাপার না , আমরা তো আর প্লেট খাবো না ।
আপনার সামনে সিঙ্গাড়া এসে গিয়েছে । তাকিয়ে দেখলেন , বাহ ! বিট লবন , পিয়াজ ও আছে । আমাদের চির শত্রু ইন্ডিয়ার পিয়াজ । খাবার সময় এখন , তাই শত্রু মিত্র বাদ , আগে খাবার পর্ব সমাপ্ত হোক ।
একটি সিঙ্গারা হাতে নিন । হালকা গড়ম , দিন কামড় । ওড়ে বাপরে ভিতরে তো হেভী গরম । জিব তো পুড়ে যাচ্ছে । যাক পুড়ে – মুখ থেকে ফেলবেন না । হা করে থাকুন – হাহাহাহাহা হাহাহাহা করে পেটের ভিতর থেকে বাতাস দিন মুখের মধ্যে থাকা সিঙ্গারায়। কামড় দেয়া সিঙ্গারা কাঁচের প্লেটে রাখুন , ঠিক এইভাবে [ চিত্রে দেখানো আছে ] ।
কি ? কেউ কেউ আপনার হা করা মুখের দিকে তাকিয়ে আছে ? স্মার্টলি এসব এড়িয়ে যান । ‘ করিতে পারিনা কাজ …………. পাছে লোকে কিছু বলে …….. ‘ কবিতাটি আপনি জানেনই , এর বাস্তব প্রয়োগ করুণ । সমালোচনা কোন কাজে হয়না ? যে কোন কাজ করুণ এই বাংগালীরা সমালোচনা করবেই । আপনি খাওয়ার দিকে মন দিন ।
মুখের ভিতর সিঙ্গারা ঠান্ডা হয়েছে । আরামছে কামড়াতে থাকুন । আয়েসি ভঙ্গিতে একটুকরা পিঁয়াজ মুখে নিক্ষেপ করুণ । এরপর পিরিচ থেকে সিঙ্গারা হাতে নিয়ে বিট লবনে হালকা ঘষা দিন , মুখে নিয়ে কামড়াতে থাকুন । পিয়াজ নিতে ভুলবেন না ।
খাওয়া শেষ , দোকানদারকে বলুন ‘ ভাই আপনার দোকানের সিঙ্গারা খুবই ভালোতো , শহরেও এত ভালো সিঙ্গারা খাইনি কখনো । সিঙ্গারার দাম দিন ১০ টাকা , আর ১০ টাকা দিন বকশিশ । দোকানদার সমস্ত দাঁত বেড় করে হেসে বলবে ‘ কি যে বলেন স্যার , আপনি আমার দোকানে এসে বসেছেন সিঙ্গারা খেয়েছেন , এতেই আমি খুশি , আপনি আমার মেহমান , মেহমান এর কাছ থেইক্যা টাহা নিমু ক্যান ? দোয়া কইর্যেন স্যার ‘ ।
খুশি মনে দোকান থেকে বেড় হয়ে গাড়িতে উঠুন ।
ভাবতে থাকুন ” এখনো কিছু আন্তরিক মানুষ আছে বলেই এই দেশটি এখনো সুন্দর ” ।
১৮টি মন্তব্য
প্রজন্ম ৭১
কি দিয়ে শুরু করলেন, আর সমাপ্তিতে এসে আবেগাপ্লুত।
জিসান শা ইকরাম
আমার লেখার কোন শুরু শেষ নেই ।
লেখা শুরু করি এক ভাবনা নিয়ে , শেষ হয় অন্য ভাবনায় ।
ছাইরাছ হেলাল
ভাবতে ভাল লাগে ,এই প্রান্তিক মানুষগুলো এখনও আমাদের আশে পাশেই আছে ।
বৃদ্ধকালে সিঙ্গারা নাস্তি ।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , মিটমিট করে জ্বলে প্রদীপের আলো ।
হুম , কিন্তু এর ঘ্রান টেনে নিলো আমাকে এর কাছে ।
অপরাজিতা সারাহ
আপনার এই সিংগাড়ার ছবি দেখে তো সিঙ্গাড়ার খিদে পেয়ে গেল!এটা কি ঠিক হল?এই পোস্টের সাথে প্রত্যেক ব্লগারের বাসায় ১০ টি করে সিঙ্গাড়া পাঠিয়ে দেয়ার জোর দাবী জানালাম। :p
জিসান শা ইকরাম
খাইছে , কয়েক হাজার সিংগারা কিনতে হবে তাহলে । আপনি সিংগারা সাপ্লাইয়ের কন্ট্রাকট টা নিবেন নাকি ? সাপ্লাইয়ের পরে বিল যাচাই করে টাকা পরিশোধ করা হবে 🙂
মশাই
আগা থেকে গোড়া স্যরি গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত খোচা ভালই হইছে ভাইয়া। স্যালুট!!! ছবি দেখেই মনে মনে বলছিলাম গরম সিঙ্গারার ভিতর গরম কিছুই থাকবো। ..
শুন্য শুন্যালয়
এই ধরনের পোস্টের তীব্র বিরোধিতা করি, সারাহ আপুর সাথে ১০০% সহমত।। টাকা পয়সা পাবাড় চিন্তা ভুলেও করা যাবেনা ।।
জিসান শা ইকরাম
এত সিংগারা কে বানাবে ? আপনি দেশে আসুন , সবাই মিলে বানাবেন । আর আমরা খাবো 🙂
ফাঈলাসূফ
নাহ ভাই আপনি খুবই খ্রাপ। একা একা সিংগারা খেয়ে আবার সেটা নিয়া ছবি সহ পোস্ট দ্যান 😐
জিসান শা ইকরাম
অনুভুতি শেয়ার করলাম আর কি 🙂
আজিম
এই আন্তরিক মানুষগুলো আছে বলেই দেশটা এখনও টিকে আছে জিসান ভাই, তাইনা !
অনেক ধন্যবাদ এই মানুষদেরকে নিয়ে পোস্ট দেওয়ার জন্য ।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , আমার তাই মনে হয় ।
এদের কারনেই আছি এখনো এই দেশে
ভালোভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি ।
পুষ্পবতী
শুরুটা একরকম আর শেষটা অন্যরকম।ভালো লাগলো ,আসলেই এই রকম আন্তরিক কিছু মানুষ আছে আমাদের চারপাশে ,আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
সবাইকে মন্তব্য দিয়ে উৎসাহিত করার জন্য ।
মিসু
অনেক দিন সিংগাড়া খাইনা।
জিসান শা ইকরাম
কিনে খাওয়া শুরু করুন ।
প্রত্যাবর্তন
সিংগাড়া প্রিয় একটি খাবার ।