“ আমাদের সাথে যে সাংবাদিক ছিলেন, তিনি কালো মতো একটা প্যান্ট পরেছিলেন। সাদা জামা এবং তার ওপর হলুদ রঙের সোয়েটার ছিল তার গায়ে। আমাদের উপর যখন হামলা হয়, তখন দেখলাম বুকে হাত চেপে ধরে-ওখানে একটা দেয়াল ছিল, তার গায়ে পড়ে গেলেন। দেখলাম, ওনার কাপড় রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তারপর আমি কিছুদূরে একটা গাছের পেছনে আশ্রয় নিয়ে দেখি কয়েকশো বিহারী ড্যাগার আর কিরিচ নিয়ে আল্লাহু আকবর স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে আসল। তারপর তারা মাটিতে পড়ে থাকা দেহগুলো কোপাতে কোপাতে টেনে পানির ট্যাংকের পশ্চিম দিকে টেনে নিয়ে গেল। তারপর আর আমি সেই লাশগুলোকে খুজে পাইনি ”
হ্যাঁ সেদিনের পরে আসলেই তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি, কোত্থাও খুঁজে পাওয়া যায় নি। কিন্তু, তিনি নিখোঁজের ১৫-১৬ বছর পর সারা মুখে দাড়ি-গোঁফ ভর্তি ভিখিরি বেশের এক লোক তাঁর বাড়ির কাজের লোকের কাছে গিয়ে বলেন-“ তিনি ফিরে এসেছে, আজকেই কোন এক সময়ে তিনি ফিরে আসবে…”
পাঠক, আশান্বিত হচ্ছেন কি ? ভাবছেন কি যে তিনি সত্যিই কি ফিরে এসেছিলো ? হ্যাঁ, সেটাই স্বাভাবিক। সুমীতা দেবীও সেদিন আশান্বিত হয়েছিলেন। তাঁর সন্তানেরাও আবারো কিছুটা সময়ের জন্য বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলো তিনি ফিরবেন। সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর থেকে রাত হল আবারো সকাল হল তিনি ফিরলেন নাহ্। দেখা মিললো না সেই আগন্তুকেরও…
১৫ বছর এভাবেই কেটে গেলো তিনি ফিরলেন নাহ্। সুমীতা,অনল ধরেই নিলেন তিনি আর ফিরবেন নাহ্। কিন্তু… কিন্তু, আবারো শোনা গেল ২৮-২৯ বছর আগের নিখোঁজ অনেকের সন্ধান মিলেছে, কিছু হারিয়ে যাওয়া মানুষের অস্থি’ র সন্ধান মিলেছে। আপনজনের অস্থি’ র সন্ধানে সেদিন অনেকেই ছুটে গিয়েছিলো মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের মুসলিম বাজারের সেই পুরনো কুয়োর কাছে। যেখান থেকে উদ্ধার করা হচ্ছিলো শত মানুষের মাথার খুলি, হাড়গোড়।
হয়তো সেই মানুষটিকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না কিন্তু এরপরেও তো সে তাঁর বাবার অস্তিত্ব অনুভব করতে পারবে ! এই আশায় অনল ছুটে গিয়েছিলেন সেখানে। সেই সাদা শার্ট, হলুদ রঙের সোয়েটার দেখে সনাক্ত করেছিলেন তাঁর বাবার অস্থি কে। ২৭ বছর পরে সে ফিরে পেয়েছিলো বাবার অস্তিত্বকে। কিন্তু নিয়তির কি অদ্ভুত খেলা দেখুন, এতো বছর পরেও বাবাকে ফিরে পেয়েও অনল চিৎকার করে “বাবা” বলে ডাকতে পারছে নাহ্ , বাবাকে জড়িয়ে ধরতে পারছে না । শুধু কিছু ক্ষয়ে যাওয়া হাড়গোড় আর পোশাক দেখেই সে বুক ভরা কষ্টে,যন্ত্রণায় বাবাকে অনুভব করতে পারছে !!
আমি আর কিছু লিখতে পারছি নাহ্। প্রচণ্ড কষ্টে দিশেহারা লাগছে। আমি একবার আপনাকে দেখতে চাই, হোক সেটা অবাস্তব আবদার। কিন্তু এরপরেও সেই আবদারটা করতে ইচ্ছে হচ্ছে।জহির রায়হান স্যার, আপনি কি সেদিন সত্যিই সেই কুয়োর পানিতে মিশে গিয়েছিলেন? আপনি কি সত্যিই সেদিন চিরতরে হারিয়ে গিয়েছিলেন ? আপনি কি আসলেই আর ফিরে আসবেন নাহ্…(!)
৪৬টি মন্তব্য
ব্লগার সজীব
অনন্ত কষ্টের এক লেখা,এক প্রশ্ন। আপনাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি আপু।প্রতিটি পোষ্ট আপনি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক দিচ্ছেন।জানতে পারছি অনেক কিছু।
ফাতেমা জোহরা
কিন্তু, আমি কিছুতেই যেন হালকা হতে পারছি নাহ্। প্রতিনিয়ত একটা আক্ষেপের মধ্যে দিনাতিপাত করছি। জানি না এই আক্ষেপের শেষ কোথায় !! আজকে একটা বিষয় জেনে আক্ষেপের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। এরশাদ সাহেব ক্ষমতায় এসে যুদ্ধের পরে জহির রায়হান স্যারের স্ত্রী সন্তনাদের দেয়া বাড়িটি থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করে দেয়। আর যেই নোটিশের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হয় সেখানে লেখা ছিল- “বাহাত্তর সালে(মুক্তিযুদ্ধের পরে) মারা যাবার কারণে তিনি শহীদ নন। তাই এই জায়গায় তাঁর পরিবার থাকার অধিকার রাখে না।”
আমি বোঝাতে পারছি না যে কি পরিমান মারাত্মক অপরাধ, অপমান আর ভুল সিধান্ত ছিলা সেটা !! কারণ ১৬ই ডিসেম্বর পুরো বাংলা মুক্ত হলেও মিরপুর মুক্ত হয় নি।মিরপুর মুক্ত হয় ৭২ এর ৩০ জানুয়ারী একটা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মাধ্যমে যার পরিনামে স্যারের করুণ মৃত্যু হয়। এবং আমার জানামতে সকল তথ্য বলছে তাঁকে সেদিন প্ল্যান করে হত্যা করা হয়েছিলো কারণ তাঁর কাছে এমন কিছু ডকুমেন্ট ছিল যা দেশে ঘাপটি দিয়ে থাকা রাজাকারদের স্বরূপ উন্মোচন করতে পারে। তারমানে, মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করেই তাঁকে হত্যা করা হয় এবং বলতে গেলে বাংলার মাটিতে এটাই ছিল পাকি আর ওদের দোসরদের শেষ চাল !!
কিন্তু তাঁকে কেন শহীদ বলা হবে না !! আমি কিছুই মেলাতে পারছি না !! প্রচণ্ড অস্বস্তিতে আছি এবং এসব কিছু থেকে বিরতিতে যাবার চেষ্টায় আছি। একটু স্বাভাবিক হতে চাচ্ছি 🙁
শিশির কনা
আপনার লেখা পড়ে আর এই মন্তব্যের জবাব পড়ে খুব অসহায় লাগছে নিজকে।এ কোন দেশে বসবাস আমাদের? মন খারাপ হয়ে গেলো আপু।
ফাতেমা জোহরা
দেশটা তো আমাদের মায়ের মতো ঠিকই আগলে রেখেছে আপু। কিন্তু দেশের মানুষগুলোই মাকে সীমাহীন কষ্ট দিচ্ছে।
শাহানা আফরিন স্বর্ণা
কতকিছুর মধ্য দিয়ে যে এই দেশটা এ পর্যন্ত এসেছে। ইতিহাসের প্রত্যেকটি লাইন পড়ি আর অভিভূত হই।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আপু এরশাদ কর্তৃক যুদ্ধের পর জহির রায়হান স্যারের স্ত্রী সন্তানদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ সংক্রান্ত ঘটনা ও নোটিশের বিবরণ “বাহাত্তর সালে (মুক্তিযুদ্ধের পরে) মারা যাবার কারণে তিনি শহীদ নন। তাই এই জায়গায় তাঁর পরিবার থাকার অধিকার রাখে না।” পড়ে সত্যিই মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেলো।
ফাতেমা জোহরা
আমরা এমনই একটা অদ্ভুত জাতি যে , যাঁদের মূল্যায়ন করার তাঁদের যথার্থ মূল্যায়ন কখনোই করি না 🙁
আবু জাকারিয়া
কে বলেছে জহির রায়হান মরে গেছেন? জহির রায়হান এখন ও বেচে আছেন। বেচে আছেন গল্পে উপন্যাসে চলচিত্রে। সে বেচে রবেন আমাদের মাঝে। (ব্যাক্তিগত আবেগ)
ফাতেমা জোহরা
আমিও চাই তিনি বেঁচে থাকুক, তাঁর লেখা পড়ে , তাঁর সম্বন্ধে জানার পরে আমারও ইচ্ছে হয় তাঁকে একবার দেখতে। মনেহয় বাহাত্তরের ৩০ শে জানুয়ারী মিথ্যা হয়ে যেতো ক্যামন হতো তাহলে !! কিন্তু বাস্তব খুবই খারাপ একটা জিনিস…
মাহামুদ
তার লেখা গুলো এত্ত ঝকঝক ভাবলেই খারাপ লাগে..
আমাদের মেধাশূন্য করার জন্য ওনাদের মারা হয়েছিলো,।
ফাতেমা জোহরা
ঠিক , সেইসাথে ওদের কুকর্মগুলোর প্রমাণও নিঃশেষ করাও ছিল ওদের উদ্দেশ্য।
প্রহেলিকা
উহ!! হৃদয় ভেদ করে যায়, বিশ্বাস করুন এ যদি কোনো কল্পকাহিনী হতো তাহলে চোখ দিয়ে পানি চলে আসতো কিন্তু এ যে কোনো কল্পকাহিনী নয় সম্পূর্ণ এই সবুজ দেশের বাস্তব ঘটনা, চোখ দিয়ে কিভাবে পানি আসবে, আসে ক্ষোভ কেমন করে মানুষ পারে এমন নির্মম হত্যাযজ্ঞ ঘটাতে। পুরো লেখাটি পড়তে গিয়ে নিজের অজান্তেই ক্রমশ বেড়ে গিয়েছে হৃদস্পন্দন। অস্থির খোজ পাওয়া গেলেও তাকে যে আর তার সন্তান বাবা বলে ডাকতে পারবে না কোনদিন কোনদিন! কি যে কষ্ট।
ধন্যবাদ আপনাকে এমন লেখার জন্য, এই প্রজন্ম জানুক কতটুকু নির্মম অত্যাচার করেছে তারা আমাদের উপর।
ফাতেমা জোহরা
যদি এটা একটা কল্পকাহিনী হতো তাহলে, তাহলে কি করতাম বা কি হতো ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি নাহ্। আসলে এই মুহূর্তে আমি কিছুই লিখতে পারছি নাহ্। দুঃখিত।
শুন্য শুন্যালয়
এলেখা আসলেই সম্ভব নয়। দেশটির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিতে চেয়েছিল তারা এবং আমি মনে করি তারা তা পেরেছে। একজন জহির রায়হান আর কোনদিন এমন হতভাগা দেশে আসবেনা। নির্লজ্জ, অকৃতজ্ঞ জাতী আমরা, পারিনি তাদের রক্ষা করতে, পারিনি সামান্য শ্রদ্ধাও জানাতে।
মন্তব্য পড়ে মন তেতো হয়ে গেলো। আপু লিখুন আরো, এটুকুই যে এখন স্বান্তনা।
ফাতেমা জোহরা
আমরা এমন এক হতভাগা জাতি যে সব পেয়েও সব হারাইছি। এমনকি যথার্থ সম্মান, শ্রদ্ধাটুকু পর্যন্ত তাঁদের দিতে পারি নাই। আসলেই, আসলেই আমাদের মতো অভাগা জাতি আর দ্বিতীয়টি নাই। বড় বেশি দুর্ভাগ্য আমাদের।
খসড়া
স্যার সত্যিই আর ফিরবেন না।এটাই বাস্তবতা।
ফাতেমা জোহরা
হ্যাঁ সেটাই আর বাস্তবতাটা আসলেই খুবই নির্মম।
একজন আইজুদ্দিন
ফাতেমা, আপনার পোস্ট সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে চাই না।
কিন্তু, কিছু কথা তো না বললেই নয়। আপনার সাথে পরিচয় ইস্টিশনে, তারপর সেখান থেকে সভ্যতায়, আজ আপনি সোনেলায়। আমি আপনার নাম দেখেই পোস্ট সম্পর্কে আঁচ করতে পারি, কতটা পরম মমতায় আপনি ইতিহাসের কানাগলি ঘুরে সত্যটা সূর্যের কাছে নিয়ে আসেন, এটাও আমার অজানা নয়। নিরলস পরিশ্রম, অক্লান্ত প্রচেষ্টা, অফুরন্ত প্রাণশক্তি আর ব্যক্তিগত দায়বোধের এক স্ফুরন আপনার লেখার মাঝে ফুটিয়ে ওঠে। একজন পাঠকের তৃপ্তি মিটিয়ে দীর্ঘদিন একই বিষয়ে লাগাতার লিখে যাওয়ার ক্ষমতাও আপনার স্বভাবজাত, এটা পাঠক মাত্রই অনুধাবন করতে পারবেন।
সোনেলাতে খুব বেশি লেখালেখি করিনা, মাত্র কয়েকটি লেখা দিয়েছিলাম এখানে। এরমধ্য’ই আপনার শুভাগমন আমাকে নতুন করে প্রাণশক্তি যোগাচ্ছে। রাজনৈতিক এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পোস্ট এখানে খুব কম, আসা করি, আপনি সেই ঘাটতি মিটিয়ে আমাদের ইতিহাস শেখার অভীপ্সা বাস্তবায়নে অবদান রাখবেন। আপনার কাছে এই প্রত্যাশা করি।
এখানে আমার সুহৃদ খুব বেশি নেই, অবশ্য দায়টা পুরোপুরি আমার। তথাপিও অল্প দিনের মধ্যেই এখানকার ব্লগাররা যতটুকু ভালবাসায় জড়িয়েছেন তাতে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আপনাকে পেয়ে আজ নিজেকে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে। আসুন, এই দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়ে দেশ সেবায় ব্রতী হই।
আপনার জয় যাত্রা অব্যাহত থাকুক, এই প্রত্যাশা।
ফাতেমা জোহরা
অসংখ্য ধন্যবাদ আইজুদ্দিন ভাই -{@
আমি জানি না আমাদের ইতিহাসের ঠিক কতোটুকু আমি তুলে ধরতে পারবো কিন্তু আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম কে কেন্দ্র করে নয়, আমি চাই আমাদের ছাপান্ন হাজার বর্গ মাইলের এই দেশটার জন্মের ইতিহাস সম্পর্কে আমি যা যা জানি, সেটা কম হোক আর বেশি হোক সবার কাছে পৌঁছে দিতে। আর আপনাদের উৎসাহ, উদ্দীপনা আর সহযোগিতা ছাড়া সেটা অসম্ভব।
সোনেলাতে আমার বিচরণ খুবই কম সময়ের। বেঁচে থাকলে অবশ্যই এখানে লিখবো, সবাইকে এইটুকু হলেও জানাতে চেষ্টা করবো আমাদের রক্তাক্ত ইতিহাসের কথা। শুভকামনা আপনার জন্য এবং সোনেলার সকল ব্লগারদের জন্য যারা এই অল্প দিনেই আমাকে এতোটা উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়েছেন 🙂
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আসুন, এই দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়ে দেশ সেবায় ব্রতী হই।
শুভ হোক আমাদের জয় যাত্রা
আমরাও খুব খুশি। আপনি ছিলেন, আপু এসে যোগ দিয়েছেন।
ভালো থাকুন। কথা হবে প্রাণের সোনেলায়।
জিসান শা ইকরাম
লেখা প্রকাশের দিনই পড়েছি।
মন্তব্যে জানলাম একটি কঠিন সত্যকে–
লেখাটি হৃদয়কে স্পর্শ করে গেলো।
এমন লেখা লিখতে কষ্ট খুব, পড়তেও কষ্ট।
আপনার প্রতি শ্রদ্ধা …… প্রথম থেকেই এমন লেখা দেয়ার জন্য।
ফাতেমা জোহরা
আমি স্যারকে নিয়ে গতকাল প্রায় ৩–৪ ঘন্টা চেষ্টা করেও বড় একটা পোস্ট লিখতে পারি নি। এটা আমার সাধ্যের বাইরে। আমি স্যারকে নিয়ে গুছিয়ে আজ পর্যন্ত কিছু লিখতে পারি নি। আমি পারি না। সব এলোমেলো হয়ে যায়, যন্ত্রণায় তখন ঠিক কি করতে ইচ্ছে হয় তা আমি প্রকাশ করতে পারবো না।
বনলতা সেন
লেখাটি আগেই স্টিকি হলে ভাল হত ।এখন হয়েছে তাতেই অভিনন্দন মডারেটরদের।
ফিরে সে আসবেনা জেনেও মেনে নেয়া কঠিন।
ফাতেমা জোহরা
আমিও ধন্যবাদ জানাচ্ছি মডারেটরদের লেখাটি স্টিকি করার জন্য।
জহির রায়হানরা ফিরে আসে না ঠিক, কিন্তু বেঁচে থাকে তাঁদের কর্মের মাঝে হাজার হাজার বছর…
মোঃ মজিবর রহমান
কেন শহীদ বলা যাবেনা?
এই প্রশ্নের উত্তর খুব কঠিন না। আবার কঠিন। সময়ে সুর বাজে নাই এখন বাজান খুব কঠিন।
এই লেখা আত্মার আত্মীয় ভাবেই লেখা সম্ভব।
আপনাকে শুভেচ্ছা। জানতে সাহায্য করার জন্য।
ফাতেমা জোহরা
আসলেই কঠিন সেইসাথে বড্ড নির্মমও ।জহির রায়হান হয়তো রাইফেল হাতে যুদ্ধ করেনি কিন্তু কলম আর ক্যামেরা হাতে তিনি যেভাবে পাকি আর ওদের দোসরদের ঘায়েল করেছিলেন তাতে ওরা খুবই শঙ্কিত এবং ভীত হয়ে পড়েছিলো। আর সে কারণেই তাঁকে এই করুণ পরিণতির শিকার হতে হয়েছিলো।
ছাইরাছ হেলাল
আপনার লেখায় ঘটানাগুলো এ্মন জীবন্ত ওঠে যা ভাবা যায় না।
আমরাও শুনেছি যে এমন কিছু জেনে ফেলেছিলেন যা মারাত্মক ছিল ,তাই তাকে যেতে হয়েছে না ফেরার দেশে।
ফিরে না এলেও তিনি থাকবেন অনেক বিস্মৃতির মাঝে।
ফাতেমা জোহরা
হ্যাঁ, ঠিক জেনেছেন এবং অত্যন্ত আশ্চর্যজনক হলেও তিনি নিখোঁজ হবার সাথে সাথে তাঁর কাছে থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টও হারিয়ে যায়, সেগুলো আর পাওয়া যায় না !! অদ্ভুত এই রহস্যের কোন শেষ নেই…
নুসরাত মৌরিন
হৃদয়তন্ত্রী এফোঁড় ও-ফোঁড় করা এমন লেখা সত্যিই যেমন লেখা যায় না,পড়তে গিয়েও চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।গলার কাছে কি যেন একটা দলা পাকিয়ে যাচ্ছে!!
ফাতেমা জোহরা
আমারও হয়েছে এমন আপু !! কান্না না করলে সেই ভার নামবে না…
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
স্টিকি হওয়ায় ধন্যবাদ কর্তৃপক্ষকে।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যতই শুনছি ততই অবাক হচ্ছি হচ্ছি লজ্জিত।জহির রায়হান এর নিখোজের সূত্র উদ্ধারে আমরা অনেকটা উদাসীন।কিন্তু কেনো?আজ এতোগুলো বছর পরও তার নিখোজের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবনা। -{@ ধন্যবাদ আরো বেশী করে লিখুন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে।
ফাতেমা জোহরা
অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়বার জন্য 🙂
জিসান শা ইকরাম
আমাদের দেশটি মাঝে মাঝে থেমে যায় এই সব মহান শহীদের আত্মার হাহাকারে
স্বজন হাড়ানো সবার ক্রন্দনে।
ফাতেমা জোহরা
/আমাদের দেশটি মাঝে মাঝে থেমে যায় এই সব মহান শহীদের আত্মার হাহাকারে
স্বজন হাড়ানো সবার ক্রন্দনে/— আসলেই 🙁
শিশির কনা
পোষ্ট ষ্টিকি করায় সোনেলাকে ধন্যবাদ।
ফাতেমা জোহরা
আমিও কৃতজ্ঞ কর্তৃপক্ষের কাছে 🙂
আগুন রঙের শিমুল
আমি চাই উনি, উনারা আর ফিরে না আসুন। আজকের এই বাংলাদেশ উনারা দেখলে যে কষ্ট পাবেন তা উনাদের প্রাপ্য নয় – এই পাকি পতাকা গালে আকা কালার সাতা রাগ্নিতি মাসাবান না নির্লজ্জ বেহায়ার দল, রিকনশিলিয়েশন গেলাতে চাওয়া সুশীল বুদ্ধিবেশ্যার দলে ভরা এই জঙ্গল উনাদের স্বপ্নের দেশ নয় কিছুতেই, তাই আমি চাই প্রচণ্ড রকম চাই এরা কেউ ফিরে না আসুন
ফাতেমা জোহরা
আমিও আপনার সাথে একমত। অনেকসময় আবেগের বশে অনেক কিছুই চাই, কিন্তু বাস্তবটা দেখলে খুব খুব লজ্জায় পরে যাই !! এসবের জন্যই কি এতো ত্যাগ স্বীকার করেছিলো তাঁরা !!
নওশিন মিশু
লেখাটা পড়ে বেশ কিছু সময় স্তব্ধ হয়ে বসেছিলাম। কিছু বলার ভাষা খুঁজে পেলাম না। তবে আমার একান্ত একটি অনুভূতি আপনাকে বলতে চাই। সেটা হচ্ছে, যারা দেশ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলে তাদের কে আমার বড্ড আপনজন মনে হয়।
ফাতেমা জোহরা
হ্যাঁ, আমারও এরকমটাই মনেহয় 🙂 ধন্যবাদ আপু -{@
খেয়ালী মেয়ে
হৃদয়ছোঁয়া লেখা (y)
জহির রায়হান স্যার আজো বেঁচে আছে,বেঁচে থাকবে কোটি বাঙালীর হৃদয়ে (3
ফাতেমা জোহরা
ধন্যবাদ আপু -{@ সহমত আপনার সাথে 🙂
মারজানা ফেরদৌস রুবা
“১৫ বছর এভাবেই কেটে গেলো তিনি ফিরলেন নাহ্। সুমীতা,অনল ধরেই নিলেন তিনি আর ফিরবেন নাহ্। কিন্তু… কিন্তু, আবারো শোনা গেল ২৮-২৯ বছর আগের নিখোঁজ অনেকের সন্ধান মিলেছে, কিছু হারিয়ে যাওয়া মানুষের অস্থি’ র সন্ধান মিলেছে। আপনজনের অস্থি’ র সন্ধানে সেদিন অনেকেই ছুটে গিয়েছিলো মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের মুসলিম বাজারের সেই পুরনো কুয়োর কাছে। যেখান থেকে উদ্ধার করা হচ্ছিলো শত মানুষের মাথার খুলি, হাড়গোড়।“
…..এই লাইন কটা পড়াকালীন সময়ে আমার শরীরে রীতিমতো কাঁটা দিয়ে উঠছিলো! এমন যদি হয় আমার!! আপনি লিখতে গিয়ে প্রচণ্ড কষ্টে দিশেহারা!!
তাহলে তাঁদের কি অবস্থা!!!
খুব কৌশল করে এ জাতিটিকে মেধাশূণ্য করার উদ্দেশ্যে জহির রায়হানদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে, যার পরিনতিতে মাথাহীন এ জাতিটি আজ হানাহানি করে মরছে।
ফাতেমা জোহরা
আমি ধারণা করতে পারছি যে জহির রায়হানের পরিবারের সময়টা তখন কিরকম ছিল ! কিন্তু তা অনুভব করার শক্তি আমার নেই।
কৃন্তনিকা
জহির রায়হানের কথা মনে হলেই শুন্যতা অনুভব করি। কিছু মানুষের ক্লোন বানানো সম্ভব হলে, আমি চাইতাম ওনার একজন ক্লোন হোক। ওনার মত গুনী বাংলাদেশে আর জন্মাবেন কিনা জানি না। ওনাকে হারিয়ে দেশ কয়েক’শ বছর পিছিয়ে পড়েছে…
ফাতেমা জোহরা
জহির রায়হানরা একবারই আসে… 🙁