জিসান ভাই #স্বপ্ন দেখার মাঝে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে ঘুম ভেঙে নিজেকে খাটের তলায় আবিষ্কার করেছেন থ্রি স্টার মোটেল সোনালু’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ব্লগার ছাইরাছ হেলাল ভাইয়ের কাছ থেকে এমন খবরে বুকটা ধ্বক্ করে উঠলো। এই বয়সে কোমরে চোট লাগলে সমস্যা হবারই কথা। সোনেলার ব্লগারদের মিলনমেলা উপলক্ষে ঢাকায় যারা যাবো তারা অনেকেই হেলাল ভাইয়ের মোটেলেই উঠবো এমনটাই ঠিক হয়েছে। আজ বিকেল থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে তাই কখন রওনা হচ্ছি এটা জানার জন্যই তিনি ফোন দিয়েছেন। সেই সাথে জিসান ভাইয়ের এমন খবর শুনে কিঞ্চিত বিচলিত হলাম কারন তিনি মিলনমেলার মধ্যমণি হয়ে নিজে উপস্থিত হতে না পারলে আনন্দটাই মাটি হয়ে যাবে সবার।

এদিকে প্রিয় লেখকদের মিষ্টি মধুর আবদার রাখতে গিয়ে একেবারে নাকাল অবস্থা আমার। কেউ খাবেন গাইবান্ধার রসমঞ্জুরী, কেউ খাবেন রংপুরের গুড়ের জিলাপি। এসব কিছু কিনে প্যাকিং করে ব্যাগ গোছগাছ করেই ঊর্ধ্বশ্বাসে শবনমকে সাথে নিয়ে সকাল এগারোটা নাগাদ সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। নয় ঘণ্টার বাস জার্নিতে এসব মুখরোচক খাবার যে মুখে তোলা যাবেনা তা বলাই বাহুল্য। সেটা ভেবেই বিমানে আসার সিদ্ধান্ত আমাদের। তবে সাথে করে সারপ্রাইজ হিসেবে রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙ্গা মিষ্টি নিয়ে যাচ্ছি। সবাই এখানকার হাঁড়িভাঙ্গা আমের কথা শুনেছেন। আমি নিশ্চিত এই নামে যে মিষ্টিও আছে তা অনেকেই জানেন না এবং এর স্বাদও গ্রহণ করেননি।

বিমানে ওঠার পরে সুদর্শন ফ্লাইট এটেনডেন্ট চিরাচরিত রোবটিক কন্ঠে সিট বেল্ট বাধার নিয়ম বলে দিচ্ছেন। শবনম বলে উঠলো আরে এ তো ব্লগার প্রদীপ দাদা! আমিও তাকিয়ে দেখি আরে হ্যাঁ, তাইতো! স্পিকারে বাংলা এবং ইংরেজীতে পাইলটের কথা শুনতে পাচ্ছি, গলার আওয়াজটা খুব পরিচিত লাগলো। বিমান ছাড়ার কিছুক্ষণ পরে প্রদীপ কাছে আসতেই বললাম দাদা বিমানের কফি যা ইচ্ছে তাই মুখে দেয়া যায় না। ক্ষুধা পেয়েছে, পাইলটের জন্য বরাদ্দ স্পেশাল স্যান্ডউইচ আর কফি দাও।

প্রদীপ মুচকি হাসি দিয়ে বলল ইঞ্জা ভাই নাকি প্লেন চালাচ্ছেন! আজকের ফ্লাইটের তিনিই পাইলট। এই মানুষটা একজন লেখক, আবার বাবা তাকে ডাকতো ইঞ্জিনিয়ার, এখন শুনছি তিনি পাইলট! আর কি কি করতে পারেন তিনি এসব ভাবতে ভাবতেই এক সুন্দরী এয়ার হোস্টেস হাতে ট্রে নিয়ে এসে আমাকে বলছেন ভাই আপনার কফি! মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি বন্যা লিপি আপু! চশমার ফাঁক দিয়ে আমাদের দেখছেন আর মিষ্টি মিষ্টি মিটিমিটি হাসছেন। স্বপ্ন দেখছি নাকি! বন্যা আপুকে বললাম আপনার তো ঢাকায় থাকার কথা, প্লেনে কেন? জবাবে শুধু হাসি দিয়ে বললেন পরে বলব। সে হাসি বড্ড রহস্যময় লাগলো আমার কাছে।

বিমান ঢাকায় ল্যান্ড করতেই আমি পাইলট ইঞ্জা ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছি। দেখি তার সাথে কো-পাইলট মনির ভাইও আসছেন। আচ্ছা সত্যি আমি কি স্বপ্ন দেখছি নাকি, বিমানে এনারা কেন? রিমি রুম্মান আপু, রেজওয়ান আগেই ল্যান্ড করে শুধুমাত্র আমাদের জন্যই অপেক্ষায় করছিলেন। ব্লগারদের নিজেদের মধ্যে এই আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করে সবসময়।

ঢাকা বিমানবন্দরের চিরচেনা স্বাভাবিক সেই পরিবেশ নেই আজ। কেমন যেন চাপা উত্তেজনা চারপাশে। গার্ড, সিকিউরিটি, অভ্যার্থনা এসব মিলিয়ে অনেকটা ভিআইপিরা এলে যেমনটা হয় ঠিক তেমন। মনির ভাইয়ের কাছে শুনলাম কিছুদিন আগে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকায় বাঙালি লেখকদের যেকোনো মিলনমেলায় আগমন উপলক্ষে এখন থেকে তারা সবাই ভিআইপি সুবিধা পাবেন। বলাই বাহুল্য সোনেলার সব লেখকই ভিআইপি। আমরা সেই সুবিধা সবার আগে যেন পাই জিসান ভাই এবং পাখি শামীম ভাই উপরমহলে লবিং করে সব ব্যবস্থা করেছেন।

বড়ুয়া ট্রাভেলস এর গাড়িতে করে মোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দেবার সময় ড্রাইভারের দিকে চোখ পড়তেই দেখি তিনি আমাদের রুমন আশরাফ ভাই। গাড়িটি চল্লিশ সিটের লোকাল বাস। ট্রান্সপোর্ট এরেঞ্জমেন্ট করছেন সুপায়ন দাদা। আচ্ছা তিনি কি একটা ভালো গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারতেন না? এই লক্কড় ঝক্কড় বাসে গেলে পিকনিকের আমেজ পাওয়া যাবে বলেই তিনি নাকি এমনটা করেছেন। আসলে টাক মাথার এই কবি লোকটার মাথায় প্রচুর ঘিলু আছে। ভালো-মন্দ কুশলাদি জিজ্ঞেস করেই গাড়ি ছেড়ে দিলেন রুমন ভাই। আমার আশেপাশে বন্যা আপু ঘুরঘুর করছেন আর বাঁকা চোখে হাতে ধরা মিষ্টির ব্যাগের দিকে বারবার তাকাচ্ছেন দেখে মনে কুঁ ডাক দিল। মিষ্টির ব্যাগটি আরো শক্ত হাতে ধরে থাকলাম আমি।

ঢাকার রাস্তায় প্রচুর ট্রাফিক জ্যাম তবে আমরা ভিআইপি সুবিধা পাচ্ছি বলে আগে থেকে রাস্তা একদম পরিষ্কার, কোন যানজট নেই। সোনালু মোটেলটি নিউ পল্টনে। বাসটি নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় স্টপেজ দেয়া হবে। আমরা বিমানবন্দর ষ্টেশন দিয়ে বনানী হয়ে মহাখালী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহাবাগ এরপরে পল্টনে এই রুট ধরে যাচ্ছি। বিমানবন্দর ষ্টেশনে আগে থেকেই অপেক্ষায় আছেন সুরাইয়া পারভীন, সুরাইয়া নার্গিস, সাদিয়া শারমিন, রেজোয়ানা কবীর, মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী ভাই। তাদের তুলে নিয়ে বাস বনানীতে আসতেই হুড়মুড় করে উঠেছে মুক্তা মৃণালিনী, মনি কাশফিতা, পর্তুলিকা, শিরিন হক, মারজানা ফেরদৌস রুবা, ইকবাল কবীর ভাই। জানালার পাশে কে বসবে এই নিয়ে মনি এবং মুক্তার মাঝে কিছুক্ষণ মৃদুমধুর বাকবিতণ্ডা হলো। অবশেষে দুইজনেই আলাদা দুই জানালার পাশের সিট দখল করে নিয়েছে। রিমি রুম্মান আপু এসবই শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছেন।

আমাদের গাড়ি কারওয়ান বাজার পানির ফোয়ারার কাছাকাছি গিয়ে সাইড লেনে থামতেই সামনে দাঁড়ানো ট্রাফিক কনস্টেবলটি হম্বিতম্বি শুরু করে দিয়েছে। দেখতে অবিকল নৃ-মাসুদ রানার মত। সে বলছে এখানে নাকি বাস দাঁড়ানো যাবেনা। লেখদের জন্য বরাদ্দকৃত এই বাসে কিছু লেখক উঠবেন এবং আমাদের দাঁড়ানোর অনুমতি আছে একথা তাকে কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছেনা। বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড় আর কি!

রাস্তার ওপারে এক সুন্দরী ট্রাফিক সার্জেন্ট হাত তুলে পারাপারের জন্য অন্যান্য গাড়িগুলোকে ফুঁ ফুঁ করে বাঁশী বাজিয়ে দক্ষ হাতে ট্রাফিক সামলাচ্ছেন। ঝামেলা মিটাতে তিনি আমাদের এগিয়ে এলেন। আরে! এতো আমাদের প্রিয় ব্লগার সাবিনা আপু। তিনি কাছে আসতেই কাছুমাছু মুখ করে নৃ মাসুদ পালিয়ে গেলো।

এরইমধ্যে বাসে উঠলেন নীরা সাদিয়া, খাদিজাতুল কুবরা, রোকসানা খন্দকার রুকু, সাজেদুল হক, আলমগীর সরকার লিটন, ফয়জুল মহী, ইসিয়াক, দালান জাহান, ফজলে রাব্বী সোয়েব, আকবর হোসেন রবিন, মাছুম হাবিবী, নিরব সাগর, উর্বশী আপু। মাছুম বাসে উঠেই বেসুরো গলায় গান ছেড়ে দিয়েছে। রেজওয়ান বিরক্তি ভাব নিয়ে তাকিয়ে আছে। সাবিনা আপুকে ধন্যবাদ দিলাম আমি। তার দিকে তাকাতেই একবার মনে হল তিনি বন্যা আপুর দিকে তাকিয়ে চোখ টিপলেন। বুঝলাম ঘটনা যা ঘটার তা আজকেই ঘটবে। সমূহ বিপদ নিয়ে ঝড় আসতে চলেছে।

মোটেলে পৌঁছে দেখি এলাহি ব্যাপারস্যাপার।  মূল ফটকে জাকিয়া জেসমিন যূথী আপুর ডিজাইন করা বিশাল একটি ব্যানার টাঙানো হয়েছে। সেই গেটে দাঁড়িয়ে সুপর্ণা দিদিভাই ক্লাসের রোলকলের মত করে সবাইকে ডেকে ডেকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন আর সবাই ইয়েস ম্যাডাম বলে ভিতরে প্রবেশ করছেন। আরজু মুক্তা আপু আগেই পৌঁছে হলরুম সাজানোর দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন। তার সাথে আছেন মজিবর ভাই, শাহরীন আপু। মিলকরে লাল টুকটুকে শাড়ি এবং পাঞ্জাবি পড়ে রেহানা আপু আর দুলাভাই অনেকগুলি শপিংব্যাগ হাতে করে সবার জন্য গিফট নিয়ে মোটেলে এলেন। দুলাভাই এবং আপু দু’জনেই উদার মনের মানুষ আজ তার প্রমাণ নতুন করে পেলাম।

এখন দুপুরবেলা, হেলাল ভাই তার মোটেলেই খাবারের ব্যাবস্থা করেছেন। মাহবুবুল আলম ভাই, সিকদার সাদ রহমান এনারা খাবারের আয়োজন তদারকিতে ব্যস্ত। সাথে আছে আরজু মুক্তা আপুর রান্না করে নিয়ে আসা কচি বাঁশের তরকারি, মুক্তা আপুর পাটশাক, সুরাইয়া নার্গিস আপুর কাঁঠালের বিচি ভর্তা, সুরাইয়া পারভীন আপুর টকঝাল কচুর লতি রান্না, মণি আপুর স্নাকস, শিরিন আপুর ডেজার্ট এতসব খাবার মুহুর্তেই শেষ। জিসান ভাইয়ের ভাগেরটা হেলাল ভাই সাবাড় করেছেন। সঞ্জয় মালাকার দ্বিতীয়বার চাইতেই সুপর্ণা ফাল্গুনী তার দিকে কটমট করে তাকালো।

কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে আমাদের নির্ধারিত কামরায় গিয়ে নিতাই দাদার সাথে পরামর্শ করে আমার প্রিয় কম্পাউন্ডার নাজমুলকে সাহায্যকারী হিসেবে নিয়ে মিষ্টির ব্যাগটা দাদার রুমেই রাখলাম। আর সাবধানের মার নেই ভেবে শবনমকে দিয়ে স্পেশাল হাঁড়িভাঙ্গা মিষ্টির প্যাকেটগুলি আমার খাটের তলায় লুকিয়ে রাখতে বলেছি। আসলে নাজমুল আমার হয়ে আগে থেকেই সবার দিকে নজর রাখছে। তার কাছে জানলাম কবিতা আবৃতি প্রাকটিস করতে করতে হালিম নজরুল ভাইয়ের গলা বসে গিয়েছে। সেই গলা ঠিক করার জন্য নাসির সারওয়ার ভাই লবন দিয়ে কুসুম গরম পানির ব্যবস্থা করতে গম্ভীর গলায় বয় বেয়ারাদের সাথে চোটপাট শুরু করে দিয়েছেন।

মিলনমেলার অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ আগে তাগড়া জোয়ানের মত জিসান ভাই উবার নিয়ে চলে এলেন। কোমর ব্যথার কোন চিহ্নই নেই তার চোখেমুখে। সব আয়োজন সম্পন্ন, ব্লগারদের মিষ্টিমুখ করে মিলনমেলা শুরু হবে। আমি মিষ্টি আনার জন্য নিতাই দাদাকে ইশারা করে স্পেশাল হাঁড়িভাঙ্গা মিষ্টির প্যাকেট গুলো নিয়ে যেতে নিজের রুমে এলাম।

হঠাৎ দরজায় নক হলো। শবনম দরজা খুলতেই দেখি বন্যা আপু রাগান্বিত মূর্তিতে দাঁড়িয়ে আছেন। বললাম ঘটনা কি? তিনি যা বললেন শুনে আমার আক্কেল গুড়ুম! সাবিনা আপু এবং তিনি মিলে নিতাই বাবু দাদার ঘরে গিয়ে সব জিলাপি আগেই সাবার করার ফন্দি করেছিলেন। তবে সাবিনা আপুকে নাকি দুই সুরাইয়া বুদ্ধি করে নিজেদের দলে করে নিয়েছেন। বন্যা আপুর সাথে টেক্কা দেওয়া হয়েছে বুঝতে পেরে তিনি এখন আমার কাছে সব কথা ফাঁস করে দিতে এসেছেন।

তাহলে ঘটনা এই! এ কারণেই আমার ব্যাগের দিকে বিমানবন্দরে এভাবে তাকিয়ে ছিলেন বন্যা আপু! ভাগ্যিস হাঁড়িভাঙা মিষ্টিগুলি বুদ্ধিকরে নিজের কাছেই রেখেছিলাম। কম্পাউন্ডার নাজমুল ব্যাটা সাবিনা আপুদের কাছে তথ্য ফাঁস করেছে নিশ্চিত। কারওয়ান বাজার সিগনালে বন্যা আপুর দিকে তাকিয়ে সাবিনা আপুর চোখ টেপার রহস্য এখন বুঝতে পারলাম। আমি নির্বাক হয়ে তাকিয়ে আছি তার দিকে। তিনি চিৎকার করে বললেন- এ্যাই তৌহিদ ভাই শুনছেন! জিলাপিতো সব সাবার হয়ে যাচ্ছে এদিকে। তার মুখ থেকে পিচিৎ করে একফোঁটা রক্তলাল পানের পিচকারি আমার হাতে ছিঁটকে এলো।

প্রচন্ড রাগ হলো জিলাপি চোরদের উপর। রাগের মাথায় আমি হাত দিয়ে পানের পিচকারি লাগা সেই জায়গাটিতে ঘষতে লাগলাম, কেমন যেন চিনচিনে ব্যাথা করছে। বন্যা আপুর চিৎকারে সম্বিত ফিরে পেতেই দু’জনে মিলে নিতাই দাদার রুমের দিকে দিলাম দৌড়! জিলাপীগুলো কিছুতেই সাবাড় করতে দেয়া যাবেনা। চোর চোর চোর! গেলো সব জিলাপি চুরি হয়ে গেলো! ধর ধর! এসব বলতে বলতে বন্যা আপু ছুটছেন, আর তার পিছু পিছু নিজের ভাগের জিলাপি, রসমঞ্জুরী বাঁচাতে ছুটছেন বাকি সব ব্লগার! ঘুম ভেঙে গেল আমার।

হাঁড়িভাঙা মিষ্টি

ধড়মড়িয়ে বিছানায় উঠে বসে হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি পানের লাল পিচকারির জায়গায় একটা মশা রক্তাক্ত অবস্থায় মরে পড়ে আছে। এতক্ষণ তাহলে স্বপ্ন দেখছিলাম আমি!

স্বপ্ন || ৩ ( ব্লগারদের সম্মিলিত গল্প )

১৫৫৬জন ৮৬১জন
0 Shares

১২৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ