সেই সব দিনে

রিমি রুম্মান ৭ নভেম্বর ২০১৪, শুক্রবার, ১১:৪৮:০০পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৬ মন্তব্য

আমি ভীষণ রকম উৎফুল্ল চিত্তে অপেক্ষা করছি। মা অফিস থেকে এসে আমাদের তিন ভাই-বোনকে নিয়ে স্টুডিওতে যাবেন ছবি তুলতে। কতো আয়োজন ! আমরা রেডি হয়ে থাকলাম। কিন্তু আমাকে দেখেই রেগে গেলো মা। মাথা ভর্তি তেল দিয়ে লেপ্‌টে চুল আঁচড়ে প্রতীক্ষায় থাকার নাম যে রেডি হওয়া নয়, তা কে জানতো ! কেউ কি কখনো আমায় বলেছে, রেডি হওয়া মানে মাথায় শ্যাম্পু করে ঝরঝরে হয়ে থাকা ?!

 

অতঃপর আমার আধুনিক মা কায়দা করে ক্যামন করে যেন হেয়ার ব্রাশ করে দিলো, তেল চিট্‌চিটে চুলগুলো ফোলাফোলা ঝরঝরে হয়ে এলো ! যদিও তীব্র বকুনি খেয়ে স্টুডিও যাবার পুরোটা পথ জুড়ে আমি গুমোট হয়ে থাকলাম।

 

আমার অন্য দুই ভাইবোন হাসি হাসি মুখে ক্যামেরার দিকে তাকায়। সমস্যা শুধু আমাকে নিয়ে। হাসিমুখ করার সীমাহীন প্রচেষ্টা আমার। সোজা-সটান থাকতে গিয়ে ঘাড় বারবার হেলে যায় একদিকে। ক্যামেরাম্যান এসে ঘাড় ঠিক করে দিয়ে যায়। যেই না ক্লিক করে, অমনি লাইটের ঝলসে যাওয়া আলোয় ধপাস্‌ করে চোখের পলক পড়ে যায় ! বিরক্ত ক্যামেরাম্যান সোজা তাকাতে বলে। আমি নাক বরাবর তাকিয়ে রই। এবার হয়ে যাই ট্যরা ! হাসিমুখ করে থাকা…ঘাড় সোজা রাখা… আর “পড়ে না চোখের পলক” হয়ে থাকা__ সব যেনো এক সাথে হতেই চায় না ! একটা হয় তো অন্যটা হয় না। এ যেনো এক যুদ্ধক্ষেত্র ! ভয়াবহ সেই প্রলয় শেষে অন্ধকার স্টুডিও থেকে বাইরের আলোকিত জগতে এসে শ্বাস নেয়া ছিল বিশাল এক স্বস্তিদায়ক ইতিহাস।

 

কালের বিবর্তনে কতো কি-ই তো বদলায়। বদলেছি আমিও। আপনি ?

৪৪০জন ৪৪০জন

২৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ