হঠাৎ কৃষ্ণা বেমক্কা একটা প্রশ্ন করে বসে। কৃষ্ণার সে প্রশ্ন শুনে শ্রীপদ কেমন যেনো বিমর্ষ হয়ে যায়। লাশকাটা এই পাষণ্ড মানুষটি কেমন করে যেনো দমে গিয়ে মোমের মতো নরম হয়ে যায়। গভীর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শ্রীপদ। এই ঈষদকুসুম দীর্ঘশ্বাস যেনো তার ভেতরের গুমড়ে ওঠা কান্নাবাষ্প।
কৃষ্ণা: আচ্ছা মালিক তুই লাশ কাটা প্রথম কে করছে শিখেবারো?
শ্রীপদ: ই অনেকদিন আগেকে বাত হ। হামার বাপ হরিচরণ ডোম আর মাই চারুবালা দেবী দু’জন জানদেকে খুব ভালোবাসতোরাহা। হঠাৎ কারকে হামার বাপ মারজায়েগা পর মাইয়ো আস্তে আস্তে অসুখ হোগা। হামরিহ্যা হামার বাপমাইকে একমাত্র বেটা আর ছোটকা বহিন রাম্বা। ডোমকে কামমে রূপিয়া পয়সা বায় কিন্তু ওকাম করতে হামার আচ্ছানা লাগোতরাহা। এ খাতির মাইয়ো হামরেকে ইকাম করে খাতির না বোলোতরাহা। আস্তে আস্তে মাইকে দে আরো খারাপ হতে লাগেছ্। সংসারমে আরো অভাব বাড়া শুরু করেছ্।
রামু: একের পর?
শ্রীপদ গল্পকথনের মতো বলতে থাকে তার অতীত।
শ্রীপদ: একদিন অনেক রাতিকে নিতাই ডোমকে ঘরছে ফিরকে আই। নিতাই কাকাকে বহিন বিয়া রাহা। খায়খাতির অনেক জোর করেক রাহা কিন্তু খাইনেকে। কারণ মাইকে বাদ দেকে খানা হামার গলছে না নামোল। ঘরে ফিরকে বহুত বোলাইকে পরও মাই কোনো জবাব না দিয়েছ্।
রামু: একের পর মালিক?
শ্রীপদ: ঘরমে ঢুককে দেখা মাই হামার বহুত নিনমে শুতাবায়, সাইডমে ছোটকা রাম্বা গুটিশুটি মারকে শুতাবায়। কিনারমে মাটিকে সানকিমে খানা ঢাকা রাহা। ও খানামে বাসি মকতরাহা। ভুখকে জ্বালামে সাইডমে রাখা এগো পিয়াজ আর এগো কাঁচা মরচা দেকে সব খা লিয়া। পেট ঠাণ্ডা হোগা দুনিয়াকে নিন চালা আয়েছ্।
কৃষ্ণা: হ মালিক ঠিকই বলেবারো। প্যাট ভরেসেই নিন আয়োল।
শ্রীপদ: কৃষ্ণা, তে এতনা বাতকে লেজ কাহে ধরলে!
কৃষ্ণা: মাফ করদো মালিক।
শ্রীপদ: কোনো। নিতাই কাকাকে বহিনকে জনমভারাহা ত খুব বরখাকে দিনমে। ওদিন বিকালেও বরখাভারাহা। যমুনা নদীছে জোরে জোরে উত্তর বাতাস আওতরাহা। কেসন জানি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাগতরাহা। হারিকেনঠো তেনি কমাকে দেকে বিছনামে খেতা মুড়ি দেকে শুয়েকে সনে সনে দুনিয়াকে নিন চালা আয়েছ্। কুচ্ছু মনে নেইখে।
রামু: একের পর কা হকেস মালিক ?
শ্রীপদ: হঠাৎ কারকে স্বপনমে দেখতিন এগো শুখ্খা গরু জবেহ করোতে। ফিনকিছে খুন নিকোলোতে। আধামরা গরুকে ঘর ঘর শব্দ। ছোটকা এগো লাল চুটিকে কাটেছো তো নিন তোরগা। কানমে তবিও ঘর ঘর শব্দ হগোতে। নিনকে ঘোর তবিও কাটে নেইখে। ঠিক বুঝেনা সকতনারিহা হাম জাগাবানি না শুতাবানি। ঘোর কাটেছে টের পাই বারান্দামে কে যেনো বমি করোতে।
কৃষ্ণা: হায় হায়! একের পর?
শ্রীপদ হাউমাউ করে কেঁদে ফেলে।
শ্রীপদ: একের পর হারিকেনঠো লেকে দোরকে বারেন্দামে গোই। দেখিতিন হামার মাই বমি করোতে। হারিকেনকে হলুদ আলোমে ও বমিকে রঙ সবুজ রাহা। হাম বুঝগোই মাই নিজে না খাকে হামার খাতির রাতিকে খানা রখে রাহা। হামার রোয়া চালায়েছো। মাইকে পুছা- মাই তে খায়াবারে! মাই কোনো বাত না বোলেছো।
(………………………..চলবে)
আগের পর্বগুলোর লিংক :
১. http://sonelablog.com/archives/12440
২. http://sonelablog.com/archives/12475
৬টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
আপনি তো চলবে বলেই খালাস ।
আমাদের দাঁত ভেংগে যাচ্ছে ।
সাতকাহন
একটু কষ্ট করে পড়েন ভাই।
খসড়া
ভাষা বুঝতে লারি। এ বড়া সাক্তি ভুলারে।
সাতকাহন
বুঝবেন ভাই
শুন্য শুন্যালয়
হুম হুম শিখে ফেলেছি কিন্তু, এবার বেশির ভাগ বুঝে ফেলেছি।।
চলুক চলুক, সাইরাছ ভাইয়ার সব দাঁত ভেঙ্গে যাক :p
সাতকাহন
ধন্যবাদ, শুন্য।