স্ত্রী হোক কিংবা অফিসের বস- সম্পর্কে কি ইদানীং খুব ঝামেলা হচ্ছে? বুঝতে পারছেন না সামলাবেন কি করে? ঝামেলার মাঝে কখনও কি মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন? সম্পর্কের ঝামেলা সামলানোর কিছু সহজ উপায়।
আমাদের সাথে যা কিছু ঘটে চলছে তার সমস্তকিছু আমাদের কর্ম। আমাদের সকল ভালো-খারাপের বার্তাবাহক আমরা নিজেরাই। আপনি ভালো আছেন এবং মঙ্গল ও সুন্দর যা কিছুই করুন, অধিকাংশ মানুষের কাছে আপনার অস্তিত্বটাই একটা বিপদজনক বস্তু। সমাজের মানুষ আপনার সাথে খারাপ যা কিছু করে চলছে, যতসব নিন্দা কথা রটিয়ে বেড়াচ্ছে, তারচেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আপনি নিজেই, আপনার মন কি চায়। আপনার উন্নত মননশীলতাই আপনাকে সুখে রাখতে পারে।
আপনার সাথে ঘটে যাওয়া সকল খারাপ ব্যবহারগুলো সহ্য করার ক্ষমতা আপনাকে আরও বেশি শক্তিশালী করবে। আপনাকে গড়ে তুলবে অসীম এক সম্ভাবনার দিকে। আপনার আহত মন বিপুল পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে অর্জন করতে পারে আত্মশুদ্ধির প্রকৃত বোধলব্ধ জ্ঞান। আপনি এতো এতো অসভ্য আচরণে ভীষণ ক্ষিপ্ত, এতো নোংরামি আর সামলে নিতে পারছেন না। আপনার ভেতর রেগে-মেগে বিশ্রী একটা অবস্থা হয়ে আছে। মানুষগুলোর প্রত্যুত্তরে একের পর এক শুধু বিনয় দেখিয়ে যাচ্ছেন।
যদিও আপনি খুব সহজে মানুষ চিনেন, তাদের মনের ভেতরের জটিলতাগুলো খুব সহজে পড়তে জানেন। আপনি আসলে অনেক কিছু বুঝেন এবং মনস্তাত্ত্বিকভাবে অত্যন্ত ক্ষমতাবান একজন মানুষ। আপনি চাইলেই বিপরীত মানুষগুলোকে উড়িয়ে দিতে পারেন, থতমত খাইয়ে দিতে পারেন কথার ফাঁদে যারা নানান ভাবে আপনার ক্ষতি করতে চায়। আপনি কারো চিন্তাভাবনায় বিস্তর আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেন, একটা বিধ্বংসী সংলাপ ছুঁড়ে ক্ষতবিক্ষত করতে পারেন, আর যাই করুন আপনি ওসবের কিছুই করছেন না, বরং তাদের প্রতি বরাবরই ক্ষমাশীল, একই সাথে আপনি বড্ড ক্লান্ত।
দয়া করে বিশ্বাস করুন, দিনশেষে আপনিই জয়ী, শান্তিতে গভীর ঘুমে তলীয়ে যেতে পারছেন, কারণ আপনি কাউকে আঘাত করেননি, কারো মনে কষ্ট দেননি, কেউকে প্রতিহিংসার বশে দুয়েকটা শক্ত কথা শুনিয়ে দেননি কিংবা পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ থাকা সত্যেও কেউকে তুচ্ছ করেননি, সর্বদাই সর্বোচ্চ বিনম্রতা প্রদর্শন করেছেন। তারপরেও দুনিয়ার মানুষ এক দিকে আর আপনি অন্যদিকে, যেন অন্য এক বিচিত্র জীবন বয়ে চলছেন, যাদের সংস্পর্শে আপনার প্রতিনিয়ত ড্রেনেজ হচ্ছে, হৃদয় ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মত।
এতো কিছু বলতে এইটাই বুঝায় যে, আপনার জীবন আপনারই কর্ম। আপনি যেভাবে আছেন তার একশভাগ আপনার, অন্যকারো নয়। কেউ ঠিক করতে পারেনা এই মূহুর্তে আপনি কেমন থাকবেন, বরং আপনি ঠিক করেন আপনি কেমন থাকবেন, যখন আপনি সিদ্ধান্ত নিবেন আপনি কেমন থাকবেন, মনমরা নাকি স্বতঃস্ফূর্ত? অবশ্যই আনন্দময় প্রফুল্ল জীবন চাইবেন। আপনার প্রতিটি সম্পর্কে আর যা কিছুই ঘটে চলছে তার সমস্তকিছু আপনার উপর নির্ভর করছে। তাই আপনাকে আরও বেশি হুঁশিয়ার হতে হবে, যথাসম্ভব স্বচ্ছ ও সুন্দরের ন্যায়।
-সাফায়েতুল ইসলাম
৫টি মন্তব্য
বন্যা লিপি
বিচিত্রানুভূতির ধারক বাহক মনুষ্য জাতীর জন্য আবেগীয় সম্পর্কগুলোর কাছে এ জাতীয় মোটিভেশনাল বক্তব্য মাঝে মাঝে সর্বসংহা হওয়া ওঠে না। এই পোষ্ট বা লেখন শুধু মাত্র বিশেষ এক শ্রেনীর জন্য বলে আমার ব্যাক্তিগত মতামত। নইলে ভাববার বিষয় এটাই…..কেউ কেউ কি শুধু সহ্যই করে যাবে নিভৃতে নিজস্ব আত্মজয় অনুভব করে তৃপ্ত হতে?
প্রতিটি মানুষ পরিবার এবং সমাজ বেষ্টিত। আমি আলাদা মানসিকতা ধারন করি বলে আমাকে বাস করতে হচ্ছে বিপরীত মনোভাবের সমাজ এবং পরিবারের মাঝে। তাহলে কি আমি একাই লড়ে যাব আত্মজয় ভোগ করতে স্বর্বসংহা হয়ে!!
আসলে এরকম মোটিভেশনাল স্পিচ দেয়া যেমন সহজ তেমনি গ্রহন করাটাও কারো কারো জন্য ততধিক কষ্টদায়ক। যারা সত্যিকারে পেরে যান এ সয়ে গিয়ে নিজেকে নিয়ে জয় ভোগ করতে! তারা অবশ্যই দৃষ্টান্ত।
ভালো লিখেছেন।
পূনশ্চঃ নিজের লেখা যেমন পড়াতে চাই পাঠককে! আমিও আশা করি অথবা বলতে চাই….আপনি পাঠক ও হন। আমরাও তো নগন্য হলেও কিছু না কিছু লিখি! আপনার মতামত আমরাও তো পেতে চাই!!!
সাফায়েতুল ইসলাম
আপনি অসম্ভব তীব্র মাত্রার অনুভূতি সম্পন্ন অভিমত প্রকাশ করেছেন, এমন হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া মন্তব্যে আমি সত্যি অভিভূত।
গভীর অভ্যর্থনায় আপনার প্রতিটি অভিব্যক্তির প্রতি সাধুবাদ জানাই।
যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
মোঃ মজিবর রহমান
জানিনা বুঝিনা কাজ করে যায় খারাপ হলে খারাপ ভালো হলে ভালো। এরই মাঝে বেঁচে থাকা নিরন্তর চেষ্টা।
আলমগীর সরকার লিটন
খুব সুন্দর লেখেছেন কথায় আছে
যেমন কর্ম তেমন ফল—————
ভাল ও সুস্থ থাকবেন
হালিমা আক্তার
সুখ আবেগীয় অনুভূতি। অনেকটা আপেক্ষিক। সুখ বা দুঃখ একেক জনের কাছে একেক ভাবে ধরা দেয়। কোন হিসেবের সমীকরণ দিয়ে একে ধরা যায় না। শুভ কামনা রইলো।