ছোটোবেলা থেকে আমি কিছু কিছু ব্যাপারে ভীষণ গোঁয়ার। বিনা কারনেই হোক আর যুক্তিহীন কারনেই হোক। মায়া’দির বাবা খাবার পানি সরবরাহ করেন বাসায়।আমাদের অঞ্চলে বলে ভাড়ওয়ালা।টিনের জারে করে দূরবর্তী টিউবওয়েল থেকে খাবার পানি আর রান্না করার জন্য পুকুর থেকে পানি সরবরাহ করতেন। মাসিক রোজকার টাকা রোজ পরিষোধ হতো। আম্মা রান্নাঘর থেকে একটা ডাক দিলেন, মায়া’দির বাবা আমার নাম ধরে ডেকে বললেন, ‘এ লিপি তোরে তোর আম্মায় ডাকে ‘ তখনি মাথায় রাগ ঝটকা মারলো হাইভোল্টেজে! সে কেন আমাকে তুই করে বলবে? মায়া’দির মা সাহায্যকারী হিসেবে আম্মা’র কাজে সাহায্য করেন, দেখে আসছি সেই ছোটোবেলা থেকে। তিনিও আমাকে কখনো তুই করে সম্বোধন করেন না। ওই বয়সে বোঝার জ্ঞান হয়নি যে, কার কাছ থেকে সৌজন্য আচরন আশা করছি। খুব ছোটোবেলা থেকে তাঁরা আমাকে বেড়ে উঠতে দেখছেন! ভালবাসা, আদরের আতিশয্যে তুই করে বলতেই পারেন! এতটুকু বোঝার মতো জ্ঞান তখন ছিলো না। বেড়ে উঠেছি এরকম নানারকম সম্বোধনের টানাপোড়েনের ধাক্কাধাকিতে।
সম্বোধনের বিষয় নিয়ে কেন লিখছি? বর্তমান সময়ে আমাদের সৌজন্যবোধ গুলো কেমন যেন ক্রমশঃ সংকীর্ণ হয়ে আসতে আসতে একটা বিদঘুটে পরিস্থিতীর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমার আব্বার ভাই,বোনের সংখ্যা সারা শহর জুড়ে ছড়ানো।বাপ চাচারা ৮ ভাই তিনবোনের বিশাল পরিবার। বাবা আমার পেশায় শিক্ষক, সাংবাদিক,সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব। কলিগ,সহকর্মী,ছাত্র/ছাত্রী যেমন অসংখ্য। তেমনি চাচা’দের বন্ধু বান্ধবের তো কোনো হিসেবই নেই। বাবার বড় এবং দাদা’র বড় প্রথম সন্তান/নাতনী হবার সুবাদে সবার আমি ভাতিঝি /নাতীন। সম্পর্কগুলো এমনই। শুধু রক্ত বা আত্মীয়তার বন্ধনে নয়,এমনি এমনি গড়ে গ্যাছে মুখে মুখে। অমুক চাচার বন্ধু অমুক কাকা। ফুপুর বান্ধবী ফুপু। কখনো মনে হয়নি এরা আত্মীয় নয় কোনো রকম ভাবে। তাই তাঁদের সব সম্বোধনে কখনো মেজাজের পারদ ওঠানামা করেনি।
মজার ঘটনা বলি দু’একটা।
নতুন বিয়ে হয়েছে। একদিন সাহেবের একজন বন্ধু’র বাসায় নিমন্ত্রনে গিয়েছি। বন্ধুর শ্যালিকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রী। পরিচয়পর্বের পালা শেষ। বন্ধুপত্নী এবং বন্ধুর কোনোরকম অসুবিধা হলোনা ভাবী আপনি বলে সম্বোধন করতে। কিছুক্ষন বাদে শ্যালীকা ভেতর থেকে এসে পাশের সোফায় এসে শুরু করলেন চাঞ্চল্য ভরা আলাপ।প্রশংসার তুবড়ির কথা আর নাইবা উল্লেখ করলাম! একফাঁকে ঠাস্ করে বলে বসলেন, তোমার বয়স তো অনেক কম! আমার থেকেও ছোটই হবে! আমি তোমাকে *তুমি*করে বলি?”
ভ্যাবাচেকা খেয়ে ফেললাম, খেতে না চাইলেও! মাত্র কয়েকঘন্টার জন্যই হয়তো আমাদের এই পরিচয়! এরপরে আর হয়তো আমাদের দেখাও হবেনা। দুলাভাইয়ের বন্ধুপত্নীকে আপনি সম্বোধনে তাঁর কি পরিমান কষ্ট হবে বা হচ্ছে? প্রশ্নটা করতে চেয়েও দমিয়ে রাখলাম কোনোরকম ইতিবাচক উত্তর না দিয়ে।
ঘটনা–২
তখন দুই বাচ্চার মা। মেয়েটার বয়স সাড়ে তিন বছর।ছেলটার বয়স মাত্র কয়েকমাস।
ঝালকাঠিতেই আছি অনেকদিন। বান্ধবীর সাথে মেয়েকে নিয়ে পার্কে বেড়াতে গেছি।বান্ধবী বললো তাঁর একজন বন্ধু জুটেছে কিছুদিন হলো। তিনিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। পার্কের পাশেই তাঁর বাড়ি।ঝর্না চাইছে আমার সাথে তাঁর পরিচয় করিয়ে দিতে।যেন আমি সেই বন্ধু,যার নাম আনন্দ,তাঁকে দু’কথা শোনাই। কারন সেই আনন্দ সাহেব আমার বান্ধবির প্রেমে পড়েছেন। যদিও বান্ধবির স্বামী আছেন। স্বামী দেশের বাইরে থাকেন। এক জন্মদিনের পার্টিতে দেখা তাহাদের দুইজনের। কিছুতেই মানতে চাইছেন না যে বান্ধবি বিবাহিত। ঝর্না আমার সাহায্য চাইছে। যথারিতী তিনি এলেন। ভদ্রতার নমুনা দেখে আমার পিত্তিজ্বলা শুরু হয়ে গেছে। এসেই খুব ওভারস্মার্টের সাথে আমাদের সামনে সিগারেট ধরালেন। এবং কথা বলা শুরুই করলেন তিনি আমার মাথায় বারুদের ঘসা দিয়ে… অর্থাৎ তুমি সম্বোধন করে। দাঁত কামড়ে সহ্য করছি।
কিন্তু মেনে নিচ্ছিনা। চাতুরী’র আশ্রয় নিতে হবে মনে মনে ঠিক করে নিলাম।
আনন্দবাবু তখনও ক্লিয়ার না যে আমিও বিবাহিত এবং দুই বাচ্চার মা, সাথে আমার মেয়ে। ঝর্না ইন্ট্রো দেবার পরও আনন্দ বাবু যথাবিহিত অবিশ্বাসের তকমায় স্মার্টনেস দেখিয়ে যাচ্ছেন। ঝর্না বললো, এইটা (আমার মেয়েকে দেখিয়ে) ওর মেয়ে, ” আনন্দ বাবু মনে হলো আমাকে চোর ডাকাতের চেয়েও অপরাধী ভাবলেন!
ডানে বামে মাথা প্রবল ভাবে ঝাঁকিয়ে বলে বসলেন ” অসম্ভব! হতেই পারেনা।”
লাজলজ্জার মাথা খেয়ে আমিও তাঁকে বোঝালাম একটা মেয়ের যদি একুশ/২২ বছর বয়সে মা হওয়াটা মোটেই অসম্ভব কোনো ব্যাপার না। আর মেয়েটা এই, ছেলেটা এখন নানির কাছে। আনন্দ বাবু চোখ কপালে রাখবেন না আকাশের ঠিকানা খুঁজবেন? ভেবে না পেয়ে ঘন ঘন সিগারেট ফুঁকতে আরম্ভ করলেন। কিন্তু দমলেন বলে মনে হলো না।
জানতে চাইলাম এস এস সি’র সন কতো? এবার ধরা!টেনেটুনে যা বললেন, তাতেও দু’বছরের জুনিয়র। আমিও সুযোগ না দিয়েই বলে বসলাম। “ওওও তাই? তুমিতো আমাদের দু’বছরের জুনিয়র, তো তোমাকে তুমি করেই বলা যায়। কিন্তু তুমি কেন আমাদের ‘তুমি’করে বলছো?
বেহায়া আনন্দ বাবু জবাব দেবার তাগিদ অনুভব করলেন না।
ঘটনা–৩
সেবারও ওই একই পার্কে চাচাতো বোনদের আর আমার দুই ছেলে মেয়ে’কে নিয়ে বিকেলে ঘুরতে গেছি।পার্কের ভেতরে বিশাল পুকুর।পুকুরের মাঝবরাবর কাঠের পাটাতন বেছানো ভাসমান মঞ্চ।ওখান থেকে পুকুরের মাছেদের খাবার ছুঁড়ে মারলে মাছগুলো পানির অ-গভীরে উঠে আসে।আমার বাচ্চারা মজা পাচ্ছিলো। মেয়ে বায়না ধরলো ওই পুকুরে নৌভ্রমন করবে। রঙিন দুটো নৌকা রাখা আছে বিনোদনের জন্য।কিন্তু চালক নেই।মেয়েকে বোঝাচ্ছি, “আম্মু কিভাবে নৌকায় চড়বে, আমি তো আর নৌকা চালাতে জানিনা”, খেয়াল করলাম হাত দু’য়েক দূরেই কয়েকটা বড়জোড় স্কুল অথবা কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আমার কথার নকল করছে। আমি এখানেও হতবাক!
এই পিচ্চি পিচ্চি মেয়েগুলোর মধ্যে কোনো জড়তা নেই, সংকোচ নেই, অপরিচিত কাউকে এভাবে ভ্যাঙাচ্ছে?
সেধে কথা বললাম,পরিচয় দিলাম। মনে হলো না তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া হলো।
ওখান থেকে চলে এসে শহিদ মিনারের সিঁড়িতে বসেছি। বাচ্চারা খেলছে। বোনেরা মিলে গল্প করছি। মেয়ে গুলো ওখানেও চলে এলো। এবং আমাকে রাগিয়ে দিয়ে বলে উঠলো প্রথমবারের মতো,”এখানে কোথাও একটা চেইন খুঁজে পেয়েছো”?
আমি টাস্কি! এই পুঁচকে মেয়ে আমাকে “তুমি”করে বলছে? গলা চড়িয়ে বললাম, দেখো! তিন বাচ্চা’র মা হয়ে যাবার পরে তোমার মতো কলেজ পড়ুয়া মেয়ের তুমি ডাক শুনতে ভালো লাগছে না।আমি তোমার কোনো আত্মীয় বা বান্ধবী কেউ না” আমাকে এবং আমার চাচাতো বোনদের আরো একধাপ রাগিয়ে দিয়ে মেয়েটা বলে উঠলো….. “তুমি বললা আর আমি বিশ্বাস করলাম যে তুমি তিন বাচ্চার মা? এ মেয়ে কয়কি? আমি মেয়ে ছেলেকে এগিয়ে দিলাম। আমার মেয়েকে প্রশ্ন করে বসলো “বাবুমনি বলোতো এইটা তোমার খালামনি তাইনা!”
বোঝা গেলো মেয়েটা আমাকে কম বয়সি অথবা তাঁর নিজের সমবয়সী ভেবেছে বলেই হয়তো তুমি করে বলতে ইচ্ছে হয়েছে। কিন্তু এখনো ভদ্রতা বলে যে ব্যাপার গুলো আমরা সামলে চলার যথষ্ঠ চেষ্টা করি, সেখান থেকে বলা যেতে পারে আমরা সহজেই কাউকে তুমি বলে ডাকাডাকি করে বসতে পারিনা। কয়েকমাস আগেই সোনেলা গ্রুপে একজন এরকম আচরন করেছবলেন একজন নারী ব্লগারের সাথে কমেন্টে। তখনই কিন্তু প্রতিবাদ করেছিলেন অন্য ব্লগাররাও।কিভাবে কেউ একজন সহজেই অপরিচিত কাউকে তুমি বলে সম্বোধন করেন। এটা ভদ্রতার আওতায় পরেনা।এই লেখাটা আমি তখনই লিখতে চেয়েছিলাম।যে কোনো কারনেই হোক, লেখাটা লিখতে দেরি হলো।
শেষ করবো সাম্প্রতিক আরেকটা ঘটনা দিয়ে। মাত্র কয়েকদিন আগে একজন সাংবাদিকের রিকোঃ আসছে। দুদিন পর এ্যাক্সেপ্ট করেছি। এ্যাক্সেপ্ট করার কিছুক্ষনের মধ্যে ইনবক্সে নক্।
–ধন্যবাদ।
আমিঃ স্বাগতম
–কি নামে ডাকবো? বন্যা ইসলাম না বন্যা লিপি?
কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলাম মেসেজটার দিকে।আমি বন্যা লিপি নাম ব্লগে ব্যাবহার করি এ ব্যাটা জানলো কিভাবে,যে আমি ব্লগার বন্যা লিপি? যাই হোক…….
আমিঃ যেটা ইচ্ছা।
–আপনি/তুমি/তুই কোনটা বলে সম্বোধন করবো?
একবার ভাবুনতো পাঠকবৃন্দ! ব্যাটা আমাকে কি প্রশ্ন করছে? আর আমার চান্দি কোন পর্যায়ে থাকার কথা?
আমিঃ আপনি কি আমার পরিচিত? তুই তুমি করে ডাকার কারন কি?
—-ওকে আপনি ডান।
সিরিয়াসলি?? ভাবা যায়?
২৯টি মন্তব্য
শিরিন হক
কেউ ভুল করে, কেউ ভুলে মরে,আমার হয়েছে কোনটা,
যানেনা এই মনটা।
একটা বাজে শব্দ তুই আবার অতি আদরের ডাক। আমার বাচ্চাকে আমি ছাড়া কেউ তুই বল্লে গা জ্বলে যায়।তেমনি কেউ খুব কাছের তাকে আপনি তুমিও বলতে ইচ্ছে করেনা সোজা তু…..ই।
তবে অপরিচিত কেউ তুই বা তুমি বল্লে তার সাথে বন্ধ্যত্ব নাও হতে পারে তার স্বভাবের জন্য।
একটি বাচ্চার মনে কতটা প্রভাব ফেলে তুই আমরা বুঝতে পারিনা সহজেই বলে দেই তুমি খুব সুন্দর করে খোঁচাটা দিলে যেমনি তোমার মনে দাগ কেটেছিলো।
সম্মান,শ্রদ্ধা,আদব কায়দা তো বাচ্চারা বড়দের কাছ থেকেই শিখে নেয়।
তোমার এ শিক্ষা যেনো কারো কানে পানি ঢেলে দিলো। জয় হো মিতা।
বন্যা লিপি
এই সম্বোধনের কারনেই কিন্তু অনাত্মীয় আত্মার কাছের মানুষ হয়।আবার ভদ্রতার প্রশ্নে আত্মা তো দুরে থাক পুরো মানুষটার মুখটাও দ্বিতীয়বার আর দেখতে মন চায়না।
তুমি আমি যতোই কারো কানে পানি ঢালার ব্যাবস্থা করিনা কেন….. অভদ্র পাবলিক কান পকেটে গুঁজে বিচরন করে সদা।
বেটার আমরাই বরং বিচ্ছিন্ন হই এদের থেকে।
সুরাইয়া পারভিন
সত্যিই ভাবা যায় না ইনবক্সে বা কমেন্ট বক্সে অপরিচিত কারো তুমি সম্বোধন। মেজাজ সেই লেভেলে উঠে।মন চায় ঠাসিয়ে কানের নিচে দিই।
তুই/তুমি তে আমারও এলার্জি আছে।
চমৎকার লিখেছেন
বন্যা লিপি
মন যে কতকিছু চায় এগোরে!! আবদারের ঘটা দেখলে/শুনলে কানের নিচে বাজানোর চেয়েও বেশি কিছু করতে মন চায়।
পড়েছেন / মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা সহ শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভিন
দারুণ বলেছেন আপু ❤
ছাইরাছ হেলাল
এমন কিছু বিড়ম্বনা নিয়েই আমাদের আনন্দ/কষ্ট জীবন।
এইতো জীবন এমন-ই জীবন।
বন্যা লিপি
আসলেই, আনন্দ/কষ্টের বিরম্বনা একজীবনে নিয়েই আমাদের বেঁচে যাওয়া নিয়তঃ। এই তো জীবন, এমনই জীবন!
বরাবরই আপনি একইরকম রয়ে গেলেন।
জিসান শা ইকরাম
ওভার স্মার্ট দেখাতে গিয়ে অনেকেই তুমি বলে সম্মোধন করে থাকেন। এরা আসলে ছাগলের মস্তিস্কধারী। সম্মোধন কিভাবে কখন তুমি, তুইতে যায় তা এরা বুঝে না।
আমরা পারিবারিক ভাবেই এই সিস্টাচার শিখেছি, কাকে কি সম্মোধন করতে হবে।
ফেইসবুকের ছাগলদের ব্লক করা দর্কার।
লেখা খুবই ভাল হয়েছে।
শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
মূলত আমি শিষ্টাচারের দিকেই আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি।প্রাপ্তবয়স্ক কেউ অনায়াসে আমাকে আপা বলে সম্বোধন করছেন,শত অনুরোধেও তাঁকে তুমি বলানো যায়না কখনো। আবার কেউ আমাকে তাঁর কম বয়সী ভাবছে বলে তুমি করো বলে যাচ্ছে। দুটো বিষয়ের ব্যাবধানের মাঝখানেই রয়ে যায় লাপাত্তা শিষ্টাচার।
শুভ কামনা।
এস.জেড বাবু
তুমিতো আমাদের দু’বছরের জুনিয়র, তো তোমাকে তুমি করেই বলা যায়। কিন্তু তুমি কেন আমাদের ‘তুমি’করে বলছো?
হাহাহা
বেহায়া আনন্দ বাবুর মুখটা দেখতে মন চাইলো-
চমৎকার লিখে যাচ্ছেন এই টপিক নিয়ে-
শুভকামনা ও অভিনন্দন
বন্যা লিপি
ওই যে বললাম! বেহায়া বাবু তখন ঘন ঘন নিকোটিন টেনে নিচ্ছিলেন ফুসফুসে!
মজার বিষয় হচ্ছে এই জাতীয় বেহায়া ওভারস্মার্ট ছাগলগুলো মেয়েদের সামনে ধরা খাইলেই বেহায়ার মাত্রাটা বাড়িয়ে ফেলে অজান্তেই।
ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভ কামনা।
এস.জেড বাবু
ঠিক বলেছেন, ওভারস্মার্ট
এই জিনিষটা উভয় পক্ষের ক্ষেত্রে বিব্রতকর হয়ে যায় প্রায়ই।
শুভকামনা
মনির হোসেন মমি
হা হা হা আপনি দেখছি এই তুই তুমি নিয়ে বেশ ঝামেলায় ছিলেন। ভাল থাকবেন।
বন্যা লিপি
ভাই,এখানে তো মাত্র এইটুকু! সব কি আর পৃষ্ঠায় ধরে? এই নিয়ে বাড়াতে চাইনা, তাই শেষ করে দিলাম।
ঝামেলা চলছে /চলবে, আর আমিও রাগের ডিপো হয়েই থেকে যাবো, তবু মেনে নেবো না এসব বিরম্বনা।
সিকদার সাদ রহমান
ম্যাম, আই লিভ উইথ কনফিউশন। আপনাকে তুমি বললে কি খুশি হবেন নাকি আপনি? তা যাই হোন আমি যখন যা মনে আপন ভাবে তাই বলি। আপনার আপনি তুমি তুই যাই হউক আনন্দের হউক, সুখের হউক। তবে আমার জীবনে তুই মার্কা সম্পর্ক গুলোই বেশি আনন্দের!
বন্যা লিপি
জনাব সাদ,প্রথমত আপনি ঝাড়ি খাবার মতো অপরাধী।আজ এত এতদিন পরে আপনার দেখা দিলেন ব্লগে।
লেখাটার মধ্যেই কিন্তু আমি বিশ্লেষন করে দিয়েছি। যাদের এবং কাদের কাছ তুই/তুমি ডাকে মেজাজের পারদ মোটেও ওঠানামা করে না। আমার ছোট ছোট ভাই বোনরা আমাকে তুমি বলেই সম্বোধন করে। এদের মধ্যে কেউ আপনি করে সম্বোধন করলে বরং মন খারাপ হবে আমার। মনে হয় এরা আমাকে আপন ভাবেনা বলেই তুমিকরে বলছে না।
আচ্ছা, জেনে রাখলাম, এরপর তোমাকে তুই করেই সম্বোধন করবো। তুমি আবার তখন মাইন্ড খাইও না যেন!
তৌহিদ
সম্পর্কের তুমি তুই এসব আসে মন থেকে, একধরনের ভালো লাগা থেকে। হুট করে কেউ আমাকে তুমি বললে আমার তা মোটেও পছন্দ নয়। আপনি তুমি তুই এর বিড়ম্বনায় ভালোভাবেই পড়েছিলেন দেখছি!!
বন্যা লিপি
অপরিচিত অথবা মাত্র নতুন কারো সাথে পরিচয় হলেই তুমি করে বলার কিছু এক্সপ্রেশন কিন্তু থাকে! যেমন গত দুমাস আগে একটা সাহিত্য গ্রুপ সদস্যদের আড্ডায় গিয়েছি। যাবার সাথে সাথে দেখলাম নারী সদস্যারা একে একে এসে আলিঙ্গন করে স্বাগতে জানাচ্ছে।এবং সবাই সবাইকে তুমি করেই সম্বোধন করছে।মোটেই ভাববার অবকাশ দিলোনা আমাকে, যে তুমি এখানে নতুন। সহজ হয়ে গেলো এদের সবাইকে আপন ভাবতে।
পরিবরশ পরিস্থিতীর ব্যাপার থাকে আপনি/তুমি/ তুইএর মানিয়ে মেনে নেয়াটা।
ওখানে যদি কোনো পুরুষ সদস্য হঠাৎ করে আমাকে তুমি করে বলে বসতেন! নির্ঘাত আমার মেজাজ চড়ে যেত।
সে জায়গা থেকে সবার ক্ষেত্রেই বোধকরি বিষয়টা একই অনুভূতি হবে।
তৌহিদ
ফেসবুকে কিংবা ব্লগে ছ্যাবলামো জিনিসটি আমি মোটেই পছন্দ করিনা। সাংবাদিক যেটি করেছেন সেটি হয় অতি আবেগে করেছেন কারন একজন মেয়ে তাএ রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট করেছে বলে অথবা সে ফেসবুকে সবার সাথেই এরকম করে। এমন মানুষ এড়িয়ে চলাই উত্তম।
বন্যা লিপি
ফেসবুকিয় আচরন মেনটেইন করা জানেনা মনে শতকরা ৮০% মানুষ।এমনিতেই আমার ফ্রেন্ডলিষ্ট ভীষন খাটো।সতর্কতা অবলম্বন করেই রিকোয়েষ্ট এ্যাক্সেপ্ট করি।
ছাগুমস্তিস্কের লাফালাফি টের পেলেই খোঁয়ারে পাঠাতে দ্বিধা করিনা মোটেই।
খোঁয়ারে পাঠাবার আগে ধুতরাফল গেলাইয়া দিতেও ভুল করিনা।
ইনবক্স কাহিনী নিয়েও কিছু লিখতে মন চায়। দেখি কি করা যায়?
হালিম নজরুল
বর্তমান সময়ে আমাদের সৌজন্যবোধ গুলো কেমন যেন ক্রমশঃ সংকীর্ণ হয়ে আসতে আসতে একটা বিদঘুটে পরিস্থিতীর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
————-আসলেই তাই।
বন্যা লিপি
সৌজন্যবোধের রকমারী বিবর্তনে কতিপয় বোদ্ধা, বোধবুদ্ধির শাখামৃগের নাচনে প্রবৃত্ত।
আসলেই—–
চাটিগাঁ থেকে বাহার
ছোট হলেও অপরিচিত কাউকে তুমি করে বলিনা। তুই তো দূরের কথা। অবশ্য নিজে থেকে অনুমতি দিলে সেটা ভিন্ন কথা।
অপরের মন মেজাজ বুঝে আলাপ চারিতা চালিয়ে যাওয়া শালিনতার মধ্যে পড়ে।
বন্যা লিপি
নিজ থেকে অনুমতি দিয়ে/নিয়ে তবেই ভালো সম্পর্কের সম্বোধন বিনিময় হতেই পারে। সেটাও সৌজন্যমূলক আচরন থেকেই শুরু হয়।
ধন্যবাদ জানবেন।
রেহানা বীথি
প্রথমেই বলি, চমৎকার লেখা।
এই সম্বোধনের বিড়ম্বনা কমবেশি আমরা পোহাই। কাউকে সম্বোধন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই অনুমতি নেয়া প্রয়োজন অপরিচিত কিংবা অল্প পরিচিতের। এটা সাধারণ ভদ্রতা। সম্পর্ক যখন একটা পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায়, তখন তা এগোয় সম্বোধনের হাত ধরেই।
বন্যা লিপি
অপরিচিত, নতুন কারো সাথে আমরা হুট করেই তুমি/তুই করে সম্বোধন করে বসতে পারিনা। এতটা উদার মানসিকতা হিতে বিপরীতই হয়। আপনজনের মধ্যেও এমনটা ঘটতে পারে। ভদ্রতা, শিষ্টাচারিতা অনুকরনযোগ্য হওয়া উচিত আমাদের সকলের। অতি স্মার্টনেস আসলেই উচ্ছন্ন মস্তিস্কের পরিচায়ক মাত্র।
অসংখ্য কৃতজ্ঞতা ভালবাসা আপনাকে।
অনেকদিন পরে এলেন উঠোনে।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমি সবচেয়ে অনভ্যস্ত তুই সম্বোধনে। খুব খুব কাছের মানুষ মাঝে মধ্যে তুই বলে, কিন্তু এরা সংখ্যায় অত্যন্ত নগণ্য। বেশি পরিচিত না হলে বা মোটামুটি আলাপচারীতায়ও তুমি বলতে বিব্রত বোধ করি। কিন্তু অন লাইনে তুমি ডাকটাই মনেহয় স্মার্টনেস। অনেক সময়েই বিরক্ত লাগে এটা। আমাদের দুই বন্ধুর কথাই ভাবো, আমরা দুজনেই মেয়ে। অথচ আমাদের আপনি থেকে তুমিতে আসতে কত সময় লেগেছে… 🙂 লজ্জা পেয়েছি নতুন সম্বোধনে মানিয়ে নিতে।
– ওকে আপনি ডান ” এই কথার মানে বুঝিনি। লোকটা আসলে কি বোঝালো?
বন্যা লিপি
আমার ব্যাপারটা ভিন্ন এখানে।ক্লাশমেট, বন্ধু অনেককেই আমি তুই করে বলি, অনেককেই আবার এখনো তুমি করেই বলি।যাকে মন থেকে তুমি বলতে ইচ্ছে করে, অনুমতি নিয়ে নেই। তোমার আমার ক্ষেত্রেও কিন্তু তেমনটাই হয়েছে।
আমার কথা হলো একেবারেই অপরিচিত, নতুন পরিচয়ে তুমি আমি কখনোই পারবো হুট করে তুমি সম্বোধন করতে? এটা ভদ্রআচরনের মধ্যে পরেনা।
–ওকে “আপনি”ডান।
আমি যখন প্রশ্ন করলামঃ আশ্চর্য! তুই তুমি কেন বলবেন? আমি আপনার পরিচিত না আত্মীয়,বন্ধু? তার জবাবে তিনি বলেছেন এই কথা।
কি করেন? কোথায় থাকেন? কয় বাচ্চা? বাচ্চারা কে কি পড়ছে ইত্যাদি।
ইনবক্স নিয়ে আমারো ইচ্ছে আছে কিছু লিখবো।ওভারলোডেড মনে হলেই ব্লক। ভদ্র মানুষের অভাব নেই। অভদ্রতা সহ্য করার ধৈর্যে আমি আবার মহা আইলসা😊
ভালবাসা…..ওহ হ্যাঁ বলতে ভুলে গেছি,
মডুর দায়িত্বে তুমি কিন্তু আলসেমী করছো😊 জরিমানা জমেছে তোমার।
ভালবাসা জেনো❤❤
সাবিনা ইয়াসমিন
সম্পূর্ন অপরিচিত অবস্থায় তুই/ তুমি সম্বোধন আমার কাছে অশালীন মনে হয়। বিশেষ করে বিপরীত লিঙের কারো কাছ থেকে একেবারেই অপ্রত্যাশিত লাগে। কই থাকেন, কি করেন, বাচ্চা কয়টা, কি করে, কি খায় ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্নের ইন্টার্ভিউ দিতে হয় মেয়ে ফ্রেন্ডদের বেলাও। বিশ্রি একটা অবস্থা। 😡😡
লেখ তোমার ইনবক্স কথন।
মডুর দায়ীত্ব কবে পেলাম সেটাইতো জানলাম না। ঐ আন্দোলনের রেজাল্ট আউট করলো কে!!!