একজন তথাকথিত দুর্বৃত্ত (মিডিয়া যাদের নাম উচ্চারন করতেও ভয় পায়) পেট্রোলবোমা মেরে ৭ জনকে পুড়িয়ে মারলো, তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়না!
কিন্তু ঐ একজন দুর্বৃত্তকে (বিএনপি/জামায়াতে’র সন্ত্রাসী) গুলি করে পুলিশ যদি ৭ জনের প্রাণ রক্ষা করতে চায়, তাহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আর্তনাদ শুরু হয়ে যায়!
অবাক লাগে…..পশ্চিমা পৃষ্টপোষকতায় পালিত ঐসব মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভুমিকা দেখে!!
সুশীল থেকে আওয়াজ উঠেছে ‘সংলাপ’ এ বসো। প্রশ্ন হলো কার সাথে সংলাপ হবে? জনগণের জীবনকে জিম্মি করে যে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উম্মত্ত হয়ে উঠেছে তাঁর সাথে?
উম্মত্ততাকে প্রশ্রয় দিয়ে এই মুহুর্তে সংলাপে বসা মানে সহিংসতার কাছে মাথা নত করা, যা ভবিষ্যত রাজনীতিকে আরোও কদর্য করে তুলবে। জনগণের জীবনকে জিম্মি করে রাজনৈতিক উম্মত্ততা তৈরী করতে পারলেই ক্ষমতা হাতের মুঠোয় আনা সম্ভব; ভবিষতের জন্য এমন উদাহরন সৃস্টি হবে। উম্মত্ততাই হবে ক্ষমতার পালাবদলের একমাত্র পথ।
সুস্থ মাথায় কি তা ভাবা সম্ভব?
সংলাপ দরকার। তবে কিছু নীতি ও আদর্শকে মেনে তা হোক।
রাজনৈতিক নেতার কাছে জনগণের জীবনের নূন্যতম মূল্যও যদি না থাকে, তবে তিনি কি করে নেতা থাকেন? জনতার জান-মাল রক্ষার দায়িত্ব কি শুধুই সরকারের? হয়তো টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয়া সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু তা-বলে একজন নেতা যিনি পরপর ৩ বার প্রধামন্ত্রীত্বের পদও অলংকৃত করেছেন, জনতার বিরুদ্ধে তাঁর উম্মত্ততাকে প্রশ্রয় দিয়ে সমস্থ দায় সরকারের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে আমরা কি ভবিষ্যতের জন্য দেশকে আরোও গভীর সংকটের দিকে এগিয়ে দিচ্ছিনা?
সংলাপ তো ২০১৩’তেও হওয়ার কথা ছিলো!
হয়েছিলো কি? বরং একপক্ষের একগুয়েমির কারনে সংলাপের পথ তখন বন্ধ হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীতো উদ্যোগটা নিয়েছিলেন, ধৈর্য্য ধরে প্রলাপও শুনেছিলেন।
আর এবার যখন তথাকথিত ভোটারবিহীন নির্বাচনের পরে দেশ শান্তিতে এগিয়ে যাচ্ছিলো সমৃদ্ধির দিকে, মানুষ স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপনে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছিলো, তখন আচমকাই ৫ জানুয়ারীকে কেন্দ্র করে শুরু হলো তান্ডবলীলা। এ যেনো জাতির বিরুদ্ধেই যুদ্ধে নামা। অনেকটা এরকম, কেনো তোরা এ নির্বাচনকে মেনে নিয়েছিস।
আবারও রব উঠলো ‘সংলাপ’ এ বসো। ’সংলাপ’ করার যদি সদিচ্ছাই থাকতো, তাহলে ঈশ্বর জাতিকে কৃপা করে যে সুযোগ প্রতিপক্ষের দ্বারপ্রান্তে এনে দিয়েছিলেন, সর্বোচ্চ একগুয়েমির চুড়ান্ত রুপ দেখিয়ে সেদিনও তারা প্রধানমন্ত্রীকে দরজায় ৭ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পরও ঢুকতে না দিয়ে জাতিকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, তারা মুলতঃ সংলাপ চায়না। যদি চাইতো তাহলে সুযোগটা হাতের মুঠোয় এসে যাওয়ার পর সেটাকে লুফেই নিতো।
এখন প্রশ্ন হলো তারা আসলে কি চায়? তারা চায় দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বের বুকে পরিচিত করতে।
আমি এখনো সন্ধিহান যে, বেগম জিয়া আসলে তাইই চান কিনা! আমার ধারনা বেগম জিয়ার প্রয়োজন যেকোন মূল্যে ক্ষমতায় আরোহন আর তার সে ইচ্ছাকে তুরুপের তাস হিসাবে ব্যবহার করেই দেশী-বিদেশী চক্র এই খেলা খেলে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে নেপোলিয়ন বোনাপোর্টের সেই অমোঘ বাণীটি না বললেই নয় ”আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটা শিক্ষিত জাতি উপহার দেবো।”
একজন শিক্ষিত মা একটি শিক্ষিত জাতির জন্ম দিতে পারেন। কিন্তু মায়ের শিক্ষার ঘাটতি থাকলে কি হতে পারে, বেগম জিয়া যেনো তাই প্রমাণ করে যাচ্ছেন।
তারপরও কথা থাকে…. একাডেমিক শিক্ষা ছাড়াও অতীতে অনেক রাজা-মহারাজা তাদের আদর্শিক শিক্ষা, গুনগত শিক্ষা ও দূরদর্শিতা দিয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন।
বড়ই দুর্ভাগা জাতি আমরা! আমরা যাকে নেতা হিসাবে মেনে নিয়েছি, তাঁর মধ্যে সেই আদর্শিক শিক্ষা, গুনগত শিক্ষা ও দূরদর্শিতার বড়ই অভাব!!!
১৮টি মন্তব্য
লীলাবতী
আসলেই তারা চায় দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বের বুকে পরিচিত করতে।একটি সন্ত্রাসী দেশ হিসেবে পরিচিত করাতে।সন্ত্রাসীদের সাথে কোন সংলাপ নয়।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
দেশ নীরবে এগিয়ে যাচ্ছে, স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে আর্ন্তজাতিক দুষ্টচক্র তা মানতে পারছে না।
স্থিতিশীল অবস্থায় জনগণ শান্তিতে জীবন যাপন করছে, বেগম জিয়াও তা মানতে পারছেন না।
বেগম জিয়ার এই মনোজ্বালাকে কাজে লাগিয়ে আর্ন্তজাতিক দুষ্টচক্র রাজনীতিকে কলুসিত করে জনবিভ্রান্তি তৈরী করে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বের বুকে পরিচিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
আর আমাদের ঘরের শত্রু বিভীষন ক্রোধে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে তাতে সর্মথন ও নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।
খসড়া
সংলাপ ও প্রলাপ একাকার।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ঘরের শত্রু বিভীষনের সাথে কোন সংলাপই চলে না।
জিসান শা ইকরাম
অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন একটি পোষ্ট দিয়েছেন।
ঠান্ডা মাথায় মানুষ পুড়িয়ে মারছে একের পর এক,এতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না,এসব অমানবিক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আমাদের দেশের তথাকথিত সুশীলরা দেখছেনা।তারা বলছে সরকারকে সংলাপে বসতে,সমঝোতা করতে।
কাদের সাথে সংলাপ হবে? জঙ্গি সন্ত্রাসীদের সাথে?যারা ১৯৭১ এ এদেশের বিরুদ্ধে ছিলো সেই জামাতের সাথে?
অবরোধের নামে যা করা হচ্ছে,সমস্ত দেশে এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এমন কখনো আর হয়নি।
সাধারণ জনতাকে এই জঙ্গিরা প্রতিপক্ষ বানিয়েছে।
সারাদেশে বই বিতরণের দিন তারা হরতাল দিয়েছে,SSC পরীক্ষা যাতে অনুষ্ঠিত হতে না পারে এজন্য হরতাল দিচ্ছে। পেট্রল বোমা মেরে সাধারণ জনতাকে পুড়িয়ে মারছে। যেমন মেরেছে ১৯৭১ এ।
সংলাপ কোনভাবেই নয়,কঠিন ভাবে এইসব জঙ্গিদের দমন করতে হবে
নাহলে জাতি অন্ধকার গহবরে নিপতিত হবে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অনেককেই বলতে শুনি আগেও হরতাল/অবরোধ হয়েছে, পরীক্ষা পিছিয়েছে। কিন্তু একবারও তাঁদের মাথায় এ ব্যাপারটি আসেনা যে, আগের হরতাল/অবরোধে চলতো রাজনৈতিক কর্মকান্ড আর এবারের হরতালে চলছে জঙ্গী কার্যক্রম। আগে থাকতো পথ-ঘাট, অলি-গলি রাজনৈতিক মিছিল-মিটিংয়ে ভরপুর আর রাজপথ থাকতো জনতার পদচারনায় মুখর আর এখন মিছিল-মিটিংয়ের বালাই নেই আছে পেট্রোলবোমা, চোরাগুপ্তা হামলা; যা জঙ্গী কার্যক্রমের নিশানা বহন করে। তাহলে কেনো আগের সাথে এখনের তফাৎ খুঁজে পায়না?
মিছিল-মিটিং রাজনৈতিক কার্যক্রমের নমুনা। কিন্তু
পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ, চোরাগুপ্তা হামলা জঙ্গী কার্যক্রমের নিশানা।
আগুন রঙের শিমুল
তারা চায় কেবল ক্ষমতায় যেতে, দেশকে আবারো দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানাতে – খালেদা জিয়া আসলেই একটা অমানুষের নাম, যে নিজের নাতনীদের পরীক্ষা ঠিক রেখে পুরো দেশের ভবিষ্যৎ কে ঠেলে দিচ্ছে অন্ধকারে।
গুড পিস অফ রাইটিং – কীপ ইট আপ (y)
মারজানা ফেরদৌস রুবা
শুনেছি তিনি শনিবারেও হরতাল(পড়ার সময় পড়বেন মানুষ পোড়ানোর তাল)ডেকেছেন, শুক্রবারও দিতেন, কিন্তু পুত্রের মিলাদ-মাহমিল হবে সে উচিলায় জাতি একটা দিন শান্তি পাবে। এ পর্যন্ত জাতির প্রয়োজনে কোনকিছু ছাড় দিয়েছেন শুনিনি।
আগুন রঙের শিমুল
ফেসবুকে সেয়ার দিলাম
আগুন রঙের শিমুল
শেয়ার*
মারজানা ফেরদৌস রুবা
(y) ধন্যবাদ।
নওশিন মিশু
আবার নির্বাচন দিলে এবং BNP ক্ষমতায় আসলে জনগনের কি লাভ হবে কেউ কি বলতে পারেন ? আর মানুষ পুড়িয়ে মেরে ভোটাধিকার দিয়েই বা কি হবে? যা কিছু লাভ হবে সবই খালেদা এবং তার ইতিহাসবীদ ছেলের পকেটে যাবে। নিজেদের মামলাগুলো তুলে নিবে ও রাজাকারদের মুক্তি দিয়ে মন্ত্রী বানাবে। জনগনের কি লাভ হবে? তাই ওদের সাথে সংলাপের প্রশ্নই আসেনা…..
মারজানা ফেরদৌস রুবা
তাইতো, আবার নির্বাচনের প্রশ্ন আসছে কোন যুক্তিতে? এমন তো নয় যে বর্তমানে যারা সরকার পরিচালনা করছে তাঁরা ব্যর্থ অথবা জনতা তাঁদের উপর ফুঁসে আছে। বরং দেশ আগের তুলনায় আরো বেশি দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে সমৃদ্ধির পথে।
পাবলিকতো অতো বোকা নয়। শাসনতন্ত্র পরিচালনায় কে তুলনামুলক দক্ষ, তা ঠিকই বুজতে পারে।
আর গোল্ডফিসের মেমোরী বলা হলেও ২০০১ সালের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কথা জাতি এখনো সেভাবে ভুলতে পারেনি। ভুলতে পারেনি রাজাকারদের হাতে পতাকার অপমান।
সংলাপের আগে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার বিচার চাই।
প্রজন্ম ৭১
নারীরা মমতাময়ী হয়।এনার মাঝে মমত্বের কিছুই নেই।বর্তমান বিশ্বে এমন হিংস্র নারী আর আছে কিনা সন্দেহ।এমন ভাবে মানুষ পোড়ানোর ইতিহাস আর আছে কিনা জানা নেই।এই হিংস্র শয়তানীর সাথে কোন সংলাপ নয়।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ঠিক বলেছেন। এমন হিংস্রতা নারীদের মধ্যে সচরাচর দেখা যায় না। হিংস্রতাকে থামানোর জন্য ‘সংলাপ’ মানে হিংস্রতাকে অনুমোদন দেয়া।
বরং দরকার হিংস্রতাকে ‘না’ বলা আর যারা জনসর্মথনকে বাদ দিয়ে হিংস্রতাকে অবলম্বন করে রাজনীতি করতে চায় তাঁদের বয়কট করা।
সিনথিয়া খোন্দকার
অনেক দিন পর ব্লগে ঢুকা সার্থক হলো এমন সাবলীল একটা লেখা পড়ে। সমসাময়িক অবস্থা নিয়ে আমরা এলোমেলোভাবে যা ভাবি তারই গোছানো একটা রূপ আপনার এই লেখাটি। অনেক ভালো লাগলো।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ।
আপনার ব্লগে ঢুকা স্বার্থক হলো এ লেখাটি পড়ার মাধ্যমে জেনে আমি অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হলাম।
লিখার স্বার্থকতা খুঁজে পেলাম।
অনেক ভালো লাগলো আমারও।
ভুল জায়গায় জবাব চলে গেছে বলে আবার লিখলাম।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ।
আপনার ব্লগে ঢুকা স্বার্থক হলো এ লেখাটি পড়ার মাধ্যমে জেনে আমি অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হলাম।
লিখার স্বার্থকতা খুঁজে পেলাম।
অনেক ভালো লাগলো আমারও।