আমার এক ভাইয়ের ছেলে প্রবাল বর্তমানে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। এ মাসেই স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা। পড়ার সময়ে তার প্রশ্নের শেষ নেই। বাস্তবের সাথে অমিল এমন কিছু বইতে থাকলে গৃহ শিক্ষককে প্রশ্ন করতে করতে অস্থির করে ফেলে।
যেমন আজ ফাইনাল পরীক্ষার জন্য বাসায় বসে শিক্ষক পড়াচ্ছেন ‘ দরিদ্র তহবিল হতে অনুদান পাইবার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদন পত্র।’ শিক্ষক প্রবালকে যা যা লিখতে বলছেন লিখছে তা। বরাবর, বিষয় এর পরে যখনই লিখতে বললেন ‘ আমার পিতা একজন নিন্ম বেতন ভুক্ত চাকুরীজীবি। আমরা অত্যন্ত দরিদ্র। আমরা মোট চার ভাইবোন। দারিদ্র্যতার কারনে আমাদের পিতার পক্ষে আমাদের পড়াশুনার খরচ চালানো সম্ভব না।’
তীব্র আপত্তি প্রবালের কাছ হতে এলো। প্রবাল এসব লিখতে পারবে না। তার কথা ”আমার আব্বু তো ব্যবসা করেন, দরিদ্র না, আমরা তিন ভাই, পড়াশুনার খরচ না চালাতে পারলে আপনার বেতন দেন কিভাবে? আমি মিথ্যে লিখতে পারবো না।”
কোন অবস্থাতেই সে লিখতে পারবে না তার পিতা দরিদ্র। শিক্ষক হাল ছেড়ে দিয়ে বললেন আচ্ছা তুমি যা পারো লেখো।
এরপরে প্রবাল যা লিখলো তাতে অবাক সবাই। তার লেখার মাঝে এমন কথা লিখলো ‘ আমার পিতা একজন ব্যবসায়ী। আমরা তিন ভাই। আমার পিতা একজন সচ্ছল ব্যাক্তি। আমার দরিদ্র তহবিল হতে অর্থ সাহায্য নেয়ার প্রয়োজন নেই। ক্লাসের যারা অত্যন্ত দরীদ্র পিতা মাতার সন্তান,তাদেরকে যেন দরীদ্র তহবিলের টাকা দেয়া হয়। ……… এভাবে সুন্দর একটি দরখাস্ত লিখে ফেললো।
প্রশ্ন হচ্ছেঃ
১। উত্তর পত্রে প্রবাল যদি এই দরখাস্ত লেখে তবে সে কি নম্বর পাবে ?
২। যে বিষয় বস্তু পাঠ্য শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করে শিশুদের মিথ্যে কথা বলার শিক্ষা দেয়া হয়, তা কেন পাঠ্য পুস্তকে থাকবে?
৫৯টি মন্তব্য
ব্লগার সজীব
প্রবালের চিন্তা ভাবনার সাথে একমত।মিথ্যে কেন লিখবে সে?দোয়া করি প্রবাল যেন অনেক বড় একজন মানুষ হয়।
প্রবাল পরীক্ষার খাতায় এমন লিখলে সে নম্বর পাবে না।
শিশুরা মিথ্যে বলার প্রশিক্ষণ পায় এমন কোন কিছু পাঠ্য পুস্তকে রাখা উচিৎ না।
ভালো একটি পোষ্ট দিলেন লীলাপু -{@
লীলাবতী
ধন্যবাদ সজু ভাইয়া।এমন মিথ্যে কথা শেখানোর বিরুদ্ধে আমি।এটি থাকা উচিৎ নয়। এতে শিশু মনে প্রভাব পড়ে।
নীতেশ বড়ুয়া
১নং প্রশ্নের উত্তরঃ
উত্তরপত্রে এমন দরখাস্ত লিখলে সেই উত্তরপত্র হেডমাস্টারের কাছেই যাবে এবং তিনি গার্জেনশ ছাত্রকে ডেকে পুরো ঘটনা শুনে নিয়ে তবে বিচার করবেন কত নং দেওয়া যাবে। এই পরিস্থিতিতে দরখাস্তের পূর্ণ নং দিয়ে আবার উত্তরটি আলাদাভাবে নজর দিবেন বলেই বিশ্বাস করি।
২নং প্রশ্নের উত্তরঃ
এই উত্তরে আরো দুইট সম্পূরক প্রশ্ন চলে আসে, আর তা হচ্ছে-
ক) ছাত্রকে শিশু অবস্থায় মিথ্যে বলানোর শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে কেন?
খ) আদতে কি মিথ্যে শেখানো হচ্ছে নাকি শিশুকে প্রস্তুত করা হচ্ছে দরিদ্র ছাত্রদের অবস্থান জানার জন্য মানসিকতা তৈরী ও পরোপকরারের জন্য উৎসাহী করা?
‘ক’ সম্পূরক প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে- হ্যাঁ, সে শিশু হতেই মিথ্যে বলার কৌশল শিখে নিচ্ছে।
‘খ’ সম্পূরক প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে- ছাত্রের পাশাপাশি শিক্ষকসহ গুরুজনের কাছে এই দরখাস্তের মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে স্কুলে দরিদ্র ছাত্ররাও পড়ছেন এবং তাঁদের অবস্থান বিশেষে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে সবাই যেন সাহায্যের জন্য প্রস্তুত হয়। যে শিশুটি ভাবছে আমি তো দরিদ্র নই তবে কেন এমন করে আবেদন করবো অর্থাৎ শিশু মনে সততার মানসিক অবস্থান পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠছে যে সে কি ভাবতে পারে অদূর ভবিষ্যতে। সেই সাথে শিশুকে তৈরী করা হচ্ছে ভবিষ্যতে যদি সে এমন কোন আবেদনের নির্ণায়ক হয় তবে সে যেন যথোপযুক্ত সঠিক ব্যবস্থা নেয়।
পোস্টটি চমৎকার লীলাপু।
আবু খায়ের আনিছ
দাদা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, আমি মন্তব্য লিখতে লিখতে কোথা থেকে আগমন করলেন? দুইজনের মন্তব্য এখন একই হয়ে গেল। আমার মনে হয় দাদার সাথে আমার কোন ইন্টার লিংক আছে তাই এমন হচ্ছে। হা হা হা 😀 😀
নীতেশ বড়ুয়া
দুইজনেরই জবাব লেখার ভঙ্গি একই রকম হলেও দৃষ্টিভঙ্গির বিশ্লেষণ কিন্তু 😀
আবু খায়ের আনিছ
কিন্তু কি? হাস্যকর নাকি ভিন্ন?? হা হা হা 😀 😀
নীতেশ বড়ুয়া
একই পথের দুই পাশ দুইরকম :p
আবু খায়ের আনিছ
মিলে গেছে দাদার সাথে। হুররে ড্যান্স দে \|/ \|/
নীতেশ বড়ুয়া
:D)
লীলাবতী
১/ উত্তর পত্র সাধারণত হেড মাষ্টারের কাছে নেন না শিক্ষকরা।
২/ এই ধরনের প্রশ্ন এড়ানো যায় দাদা ভাই। শিশুদের আবেদন পত্র শেখান হচ্ছে উদ্দেশ্য।বাস্তবতার সাথে মেলে এমন আবেদন শেখানো যায়। আর দরিদ্রদের অবস্থা বুঝানোর জন্য রচনা দেয়া যায়।
আপনার মন্তব্যই একটি ভালো পোষ্ট হতে পারে 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
ভাবছি আপনার এই কয়েকটি লাইন আমাদের কতো ভাবালো!
নিয়মিত অর্থাৎ ২৪ ঘন্টা অন্তর অন্তর আপনার এমন কয়েকটি লাইন যদি নিয়মিত আসে তবে কি হবে ভেবে দেখেছেন?
না ভাবলে ভাবুন আর ২৪ ঘন্টা অন্তর অন্তর আমাদের এমন ভাবনার খোরাক দিতে থাকুন। 😀
লীলাবতী
সোনেলায় কিছুটা ভারমুক্ত হয়েছি আপাতত 🙂 নিয়মত আছি আবার আগের মত 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
এই রাতে এ আমি কাকে দেখছি 😮
হুররে \|/ \|/ \|/
নীতেশ বড়ুয়া
১ নং নিয়ে- আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি যে ছাত্র যখন এমনতরো উত্তর লিখে ফেলে উত্তরপত্রে তখন তা হেডমাষ্টারের কাছেই চলে যায় ছাত্রের অবস্থান জানতে।
২ নং নিয়ে- শিশুমনে আপনি বাতবতা শেখাতে পারবেন না উদাহরণ ছাড়া। এটা আসলে শিশুকে/ছাত্রকে যিনি পড়াচ্ছেন, যারা আছেন পরিবার পরিবেশ হয়ে তারাই হচ্ছেন বাস্তবতা। উনারাই দেখাবেন বাস্তবতার সাথে পড়ালেখার মিল কোথায় আর কিভাবে বাস্তবতাকে খুঁজে নিতে হয়। পুস্তক যখনই বাস্তবতা নিয়ে পুস্তক হয়ে ওঠে তখন সেটা শুধু পুস্তক নয় বরং ইতিহাস/দলিল বা গবেষণার জন্য হয়ে যায়। এইসব পুস্তক শিশু ছাত্রদের জন্য হয়ে ওঠে না আর।
কিন্তু বর্তমানের সাথে তাল মেলালে আপনার কথাই সত্য। বর্তমানে পুস্তকে বাস্তবতা শেখানো হয় আর তাই শিশুমনে মানুষ শিক্ষার বদলে বাস্তব শিক্ষা বেশী প্রয়োজনীয় হয়ে দেখা দিয়েছে।
লীলাবতী
আপনার মন্তব্য গুলো উপেক্ষা করার মত নয়।যুক্তি আছে কথায়। লেখাটি আমি বড় করতে পারতাম। তা না করে সরাসরি প্রসঙ্গে এসেছি 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
এ জন্যই বলেছি ‘অল্প কথায় সবাইকে ভাবানো’
অনেকেই পারে এমন তবে আপনি মানেই স্পেশাল 😀 😀
লীলাবতী
আমি স্পেশাল!!! খুশিতে নেচে উঠতে করছে 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
:@ থেকে থেকে উধাও হচ্ছে আবার বলে ^:^
আবু খায়ের আনিছ
প্রশ্নের উত্তর দেই আগে।
১। উত্তর পত্রে প্রবাল যদি এই দরখাস্ত লেখে তবে সে কি নম্বর পাবে ?
উত্তর: না সে নাম্বার পাবে না। শিক্ষক দরখাস্ত দেখেই কেটে দিবে।
২। যে বিষয় বস্তু পাঠ্য শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করে শিশুদের মিথ্যে কথা বলার শিক্ষা দেয়া হয়, তা কেন পাঠ্য পুস্তকে থাকবে?
উত্তর: বিষয়টা হল, প্রবাল চিন্তা করেছে তার নিজের অবস্থান থেকে। কিন্তু এই দরখাস্ত দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে কিভাবে অন্যের কাছে সাহায্য চাইতে হয় সেটা শিক্ষা দেওয়া। মিথ্যা বলে সাহায্য চাওয়াটা মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। এখানে দারিদ্র তহবিল থেকে অর্থ অনুদান পাওয়ার বিষয়টা দিয়ে পরবর্তী জীবনে উর্দ্ধতন কর্মকতা বা কারো কাছে সাহায্য চাওয়ার বিষয়টা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই বুঝানো হয়েছে। প্রথম প্রশ্নটা আবার ঘুরে ফিরে আসছে। নিরিক্ষক যদি শিক্ষাটাকে গ্রহণ করে তবে নাম্বার দেওয়া উচিৎ। কারণ এইটুকু বাচ্চা বুঝতে পেরেছে যে তার সাহায্য দরকার নেই, কিন্তু সে অন্যদের সাহায্য করার জন্য আবেদন করছে। শিক্ষাটা এখানে মূখ্য ছিল যা প্রবাল শিখেছে।
প্রবাল এর প্রাইভেট শিক্ষক মহাশয়, উনি উনার ছাত্রকে বুঝাতে ব্যার্থ হয়েছেন। এই ধরণের লেখার পিছনে আরেকটা কারণ থাকে। নিজেকে অন্যের জায়গায় চিন্তা করা।
তবে, আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে একটা কথা বলতে হয়। আমার এক পরিচিত আপু একদিন হঠাৎ পড়াশোনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলছে, আমি আমার সন্তানকে পড়াশোনা করাব না অনন্ত পক্ষে আমাদের দেশে। কারণ আমি নিজে পড়াশোনা করে জেনেছি এই দেশের পড়াশোনার মান কতটুকু। উল্লেখ্য যে,আপু অর্নাস,মাষ্টার্স শেষ করে পিএইচডি করার চেষ্টা করছে।
কিছুদিন আগে একটা সেমিনারে গিয়েছিলাম, Growth vs Development, Current Economical problem in Bangladesh নামের সেমিনারে বক্তরা সবচেয়ে বেশি যে কথাটা বলেছে, In Bangladesh Education Standard, World or India Eight class then Bangladesh Higher Secondary level. উল্লেখ্য এই মন্তব্যগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর একজন প্রফেসর করেছিল, আর সেখানে আরো অনেক শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ উপস্থিত ছিল। সবাই কথাটা এক বাক্যে মেনে নিয়েছিল, যার অর্থ দাড়ায় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থাটা প্রশ্ন বিদ্ধ থেকেই যাচ্ছে।
লীলাবতী
এমন সুন্দর গুছানো মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।এখানে অবশ্যই প্রবালের শিক্ষকের উচিৎ ছিল প্রবালকে বুঝানো।আসলে এ ধরনের বিষয় বস্তু ইচ্ছে করলেই পরিহার করা যায়। শিশুদের মন খুব নরম।তাদের মাঝে এসব দ্বৈততা আনা উচিৎ না।
আবু খায়ের আনিছ
বিষয়গুলো আমাদের দেশের শিক্ষাবিদরা ভালোই বুঝেন, এখন দেখার বিষয় উনারা কি করেন।স্বাগতম আপু।
লীলাবতী
কোন আশা দেখছি না আমি।যুগ যুগ ধরে এভাবেই চলে এসেছে।
আবু খায়ের আনিছ
তবু আমরা যে আশাবাদী মানুষ।
লীলাবতী
হ্যাঁ, আমরা আশা নিয়ে বেঁচে থাকি।
জিসান শা ইকরাম
প্রবালের চিন্তা ভাবনায় মুগ্ধ আমি।
নিজে একটি স্কুলের সাথে জড়িত আমি, অভিজ্ঞতার আলোকে-
১ নং প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে,নিরীক্ষক প্রবালকে নাম্বার দিবেন না। আমি নিরীক্ষক হলে তাকে পূর্ন নাম্বার দিতাম।
২ নং — গৃহ শিক্ষক তাকে বুঝাতে পারতেন গরীবরা কিভাবে আবেদন করে এটি তার শিক্ষা।
তবে শিক্ষা ব্যবস্থায় এসব পরিহার করা যায়।সেই ৪০ বছর পূর্বের প্রশ্ন এখনো চলছে।
অল্প কথায় একটি ভালো পোষ্ট দিলেন আপনি।
লীলাবতী
ধন্যবাদ ভাইয়া। আড্ডার পোষ্ট কেন জানি লিখতে পারছি না আজকাল।লিখতে চাই।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি সব সময় ই দারুণ কিছু নিয়ে হাজির হন, এবারেও তার ব্যতিক্রম নন, আসলে
শিশু শিক্ষা একটি জটিল বিষয়, আমাদের বিদ্যমান ব্যবস্থায় এ দিকটি ভাল করে উপেক্ষিত।
এখানে অনেক অনেক মনযোগ আমাদের দিতেই হবে ।
লীলাবতী
আমাদের পাসের হার বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু শিক্ষাকে আমরা কাজে লাগাতে পারছি না ভাইয়া।
শুন্য শুন্যালয়
লীলাবতী তোমার ভাইয়ের ছেলেতো দেখি খুব ট্যালেন্টেড, আমার ছেলের মতই। গড ব্লেস হিম। অনেক কিছু লেখার আছ এ পোস্টে। একটু সময় দাও।
লীলাবতী
তোমার ছেলের মত বলে কথা।আল্লাহ্ তোমার ছেলেকে ভালো রাখুক।মিস করছি আপু তোমাকে।
অপার্থিব
প্রথমত একজন শিশুর প্রশ্নপত্রে এই জাতীয় প্রশ্নই রাখা উচিত নয়। প্রধান শিক্ষকের কাছে দরখাস্ত লেখার আরো অনেক বিষয় আছে যেটার সাথে শুধুর তার একার ব্যক্তি স্বার্থই নয় বরং তার ক্লাসের কিংবা সামগ্রিক ভাবে স্কুলের স্বার্থ জড়িত। এই জাতীয় প্রশ্নের মাধ্যমে খুব ছোটবেলা থেকেই একটা শিশুর মাঝে ধনী ও গরীব নামে দুটো আলাদা আইডেন্টিটির বীজ বপন করা হচ্ছে । সে এই পরিচয় নিয়ে বড় হবে। এটার ফলে পরবর্তীতে তার মধ্যে জীবনের সবকিছুকে অর্থ দিয়ে বিচার করার মত মানসিকতাও তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। ধনী গরীব সব শ্রেনীর মানুষকে সে সমান ভাবে শ্রদ্ধা করবে কি না এই প্রশ্নও গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ভাইয়ের ছেলে হয়তো পারিবারিক শিক্ষার কারনে দরখাস্ত লেখার সময় বিষয়বস্তু কিছুটা সংশোধন করে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে কিন্ত সব শিশু এই কাজ করবে না কারণ সব শিশুকে একই মূল্যবোধগুলো নিয়ে বেড়ে উঠছে না। পড়াশোনার পাশাপাশি এই মূল্যবোধগুলো শেখানোও স্কুলের দায়িত্ব। আর কোন শিশুর যদি স্কুলের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন হয় তবে সে কেন এটার জন্য দরখাস্ত লিখবে? এই কাজটি করা উচিত বরং তার অভিভাবকের। মোট কথা কোন শিশুই যেন নিজেকে বিচ্ছিন্ন না ভাবে, সবাই যেন নিজেকে একটা কালেক্টিভ প্রসেসের অংশ ভাবে এটা নিশ্চিত করাও স্কুলের দায়িত্ব।
লীলাবতী
অত্যন্ত গুছানো এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।আপনার লেখা এবং মন্তব্যের ধরন দেখে মনে হচ্ছে,আপনি একজন অভিজ্ঞ ব্লগার। নিয়মিত হয়ে আপনাকে জানার সুযোগ দিন ভাইয়া।আন্তরিক ভাবে চাচ্ছি আপনি সোনেলায় নিয়মিত হোন।আমাদেরকে শিখান আপনি। ভালো থাকুন ভাইয়া -{@
অপার্থিব
আপনার বিনয় দেখে মুগ্ধ হলাম। চেষ্টা করব এখানে নিয়মিত হবার। সুন্দর উৎসাহের জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ ।
লীলাবতী
সোনেলায় আমি একটু কম বিনয়ী,অন্যরা আমার থেকেও বিনয়ী। থাকুন আমাদের সাথে,প্রমান পাবেন। স্বাগতম আপনি -{@
মরুভূমির জলদস্যু
এই ভাবে কিন্তু কখনো ভাবিনি!!
এটা ধরলে কিন্তু আরো শতশত মিথ্যার ট্রেনিং আমরা স্কিল-কলেজ থেকেই পাচ্ছি।
লীলাবতী
খুব ছোট একটি উদহারন দিলাম ভাইয়া।
কৃন্তনিকা
হুম…
আসলেই চিন্তার বিষয়। আমাদের দেশের শিক্ষা-ব্যবস্থা আমাদের সঠিক পথের পরিবর্তে কোথায় জ নিয়ে যাচ্ছে???
লীলাবতী
শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তনের কোন লক্ষণও দেখছি না আপু।
আপু আপনাকে দেখে কত ভাল লাগছে, জানেন আপনি?কিভাবে বুঝাই কতটা ভাল লাগছে? খুব মিস করি আপনাকে।
অরণ্য
লীলাবতীর লেখাসহ অনেকের মন্তব্য সংগতকারণেই পড়তে হলো। অনেকের মধ্যেই বেরিয়ে এসেছে ব্যাপারটি। তারপরেও মনে হলো কিছুটা সাড়া দেয়া যেতেই পারে।
প্রথমতঃ লেখাটির শিরোনাম বড্ড ভয়ানক যদিও আসল ব্যাপারটি তা নয়।
দ্বিতীয়তঃ হ্যাঁ, আমরা যে কোন ব্যাপারকেই আমরা আমাদের মত করেই দেখব এবং তা মিলিয়েও নেব যদি আমাদের সদিচ্ছা থাকে।
তৃতীয়তঃ শিক্ষার লক্ষ্য কি তা মনে হয় আমাদের অনেক শিক্ষকের মধ্যেও পরিষ্কার না। অনেকেই শিক্ষকতা করছেন নেহায়েত পেটের দায়ে। এত গভীরতা তাদের নেই এবং তারা এত গভীরভাবে ভাবতেও পারেন না; যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
চতুর্থতঃ আমি মনে করি এ পত্র লেখা শেখার প্রয়োজন আছে; এবং তা মিথ্যে বা ভুল শিক্ষা কোন কাতারেই পড়ে না। আমরা অনেক কিছু শিখি – কোথাও স্ট্রাকচার, কোথাও ফাঙ্কশন, কোথাও সিম্প্যাথি, কোথাও এম্প্যাথি, কোথাও কল্পনা, কোথাও ভাবতে শেখা, কোথাও ভাবতে শেখানোও বটে; যার কোন শেষ নেই। মুশকিল হয়েছে প্রবাল জানেনা ও কেন শিখছে তা এবং কেন লিখবে ওভাবে।
পঞ্চমতঃ লিটারেসি এবং এডুকেশনের তফাৎটা শিশুদের বা যে কাউকে বুঝিয়ে দেয়া স্কুল বা শিক্ষকদের পাশাপাশি বড়রকমভাবে বরতায় পরিবার ও সমাজের উপর।
প্রবালকে জানানো উচিৎ ও কেন শিখবে এমন দরখাস্ত লিখতে এবং তার গুরুত্ব কোথায়। এ কাজটা লীলাবতীকে এখন করতে হবে পরিবারকে সাথে নিয়ে, সম্ভব হলে স্কুলসহ।
প্রবালের জন্য অনেক শুভ কামনা।
লীলাবতী
অরণ্য ভাইয়া।আপনার মন্তব্যের উপরে অনেক আলোচনা করা যায়।আপাতত চতুর্থ নিয়ে বলি।শিশুরা সরাসরি শিখতে চায়।তাদের শিক্ষাটা এমন হওয়া উচিৎ যাতে তাদের মনে কোন প্রশ্ন না আসে।দারিদ্রতা নিয়ে তারা অবশ্যই শিখবে,তবে তা এমন দরখাস্তের মাঝে কেন? দারিদ্রতা নিয়ে রচনা শিক্ষা দেয়া যায়।যেখানে শিশুরা নিজের মত করে লিখবে।যা তারা নয়, তা তাদের দিয়ে লেখানো উচিৎ নয়।
প্রবালকে বুঝানো হয়েছেযে তার বাবা অনেক দরিদ্র ছেলেমেয়ে মানুষকে সাহায্য করেন।দরিদ্র মানুষেরা অনেক কষ্টে থাকে,আমাদের সবার উচিৎ এদের সাহায্য করা,এদের পাশে থাকতে হবে বন্ধুর মত।
এমন মন্তব্য এমনি লেখায় আমাকে উৎসাহ যুগিয়েছে,আরো লিখতে চাই এসব নিয়ে।
আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।
বনলতা সেন
আপনি তো জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে নিয়ে এসেছেন।
লীলাবতী
এটি আমার সামনে ঘটেছে বলে খুব সহজে লিখতে পেরেছি। আরো কিছু কিছু বিষয় লেখার ইচ্ছে আছে দিদি।
অরুনি মায়া
পিচ্চি তো অনেক গভীরে চিন্তা করেছে | নাহ ওকে দিয়েই হবে | পরিবর্তণ যদি আনতে হয় তবে প্রবালের মতই নক্ষত্রদের এগিয়ে আসতে হবে | প্রবালের জন্য অনেক আদর,,, (3
লীলাবতী
প্রবালকে পড়াতে গিয়ে শিক্ষককে কত যে প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়,তা যদি জানতে 🙂 প্রবালের জন্য দোয়া করো।
আপু তুমি কোথায় ছিলে? 🙁 কত মিস করেছি জানো? একা একা এই কদিন ব্লগে হেটে বেড়িয়েছি।একা চলা যায় বলো? (3
অরুনি মায়া
শুধু এটুকুই বলব আমি সময়ের তামাসায় অসহায়…
অবশেষে এলাম 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
ভয়ের আগে জয় আর সময়ের আগে সহায়। অতএব, সময়ের কাছে অসহায় না হয়ে সময়ের আগে সহায়ের জন্যে ছুটে চলুন আমাদের সাথে… :p
অরুনি মায়া
জি আবার সময়ের আগে বেশি এগিয়ে গেলেও হোচট খেতে হয় নীতেশ দা,,,
লীলাবতী
এসেছো যখন আর যেওনা কোনদিন।এটি তোমারও ব্লগ।তোমার বাড়ি। নিজের বাড়ি ফেলে কোথায় যাবে তুমি? আমরা বুঝি কেহ নয় তোমার মায়াপু?
অরুনি মায়া
তোমাদের প্রতি টান না থাকলে কি আর আসতাম বল ?
এসেছি তোমাদের টানে |…মাত্র কদিনেই অনেক গুলো ভাল বন্ধু পেয়েছি | তাই না এসে পারলাম না,,,
মারজানা ফেরদৌস রুবা
মাশআল্লাহ্! প্রবাল তার সততার আলো’কে আখড়ে ধরে বেড়ে উঠুক, তাই কামনা করি। তার চিন্তাশক্তির প্রশংসা করি।
গদবাঁধা প্রশ্ন যে আর কতোকাল চলতে থাকবে!
হ্যাঁ, গৃহশিক্ষক প্রবালকে বুঝিয়ে বলতে পারতেন, এটি দরিদ্র বাচ্চারা কিভাবে আবেদন করবে তার নমুনা।
লীলাবতী
গদবাঁধা প্রশ্ন আর পদ্ধতি হতে আমাদের মনে হয় আর মুক্তি নেই। আপনাকে আমার পোষ্টে দেখলে ভালো লাগে আপু আমার, প্রেরণা পাই।
ড্রথি চৌধুরী
চমৎকার লিখেছেন আপু
লীলাবতী
ধন্যবাদ আপু -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
সব কয়টি মন্তব্য পড়লাম। আমি প্রবালের মতামতকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু অরণ্যর মন্তব্যও ফেলে দেয়ার নয়। ছোট থেকেই এমন অনেক কিছু শিখি আমরা যা সত্যি না। কিন্তু তাও শিখতে হয়েছে। তবে প্রবালকে বোঝানো যেতে পারে এসব শুধুমাত্র পরীক্ষার জন্য, বাচ্চারা বোঝে ভালো।
লীলাবতীদি অনেক সুন্দর পোষ্ট আপনার। শুধু এই নয়, আপনি সবসময় নতূন নতূন ভাবনা সমৃদ্ধ পোষ্ট দিয়ে থাকেন বলেই খুব ভালো লাগে পড়তে। -{@
লীলাবতী
ধন্যবাদ আপনাকে নীলাদি -{@
শুন্য শুন্যালয়
শিশুরা যদি নিজের থেকে নিজ চিন্তাভাবনায় তাদের শিক্ষায় কিছু সম্পৃক্ত করেন, তবে শিক্ষকরা তাদের অনেক উৎসাহিত করেন, এটা ছোটবেলায় নিজের এবং অন্যদের অনেক উদাহরন থেকেই দেখেছি। আমার মনে হয় শিক্ষক অবশ্যই তাকে পূর্ন নাম্বার দেবেন, কারন আপনার অল্প কথাতেই আমরা শিশুটির প্রতি ইমপ্রেসড হয়েছি, আর তিনি তো শিক্ষক। আমাদের শিক্ষাপদ্ধতি এতো গদবাঁধা হয়ে গেছে, শিক্ষকরা এর থেকে চাইলেও বোধ হয় বের হতে পারেন না। রচনা লিখেছি, গ্রামার বই থেকে দেখে দেখে ঠোঁটস্থ করে, শিক্ষকরা চাইলেই পারেন, আজ তুমি নিজের মত করে কিছু লেখো। বই এর বাইরে নিজস্ব উৎকর্ষতা শিশুদের ছোটবেলা থেকেই শেখানো উচিৎ। আর মিথ্যে শেখানোর কথা কি বলবো? অইযে বইএর বাইরে শিক্ষকরা যেন যেতেই পারেন না। এখনতো আবার পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিলেও শিক্ষকদের উপর হুমকি আসে। আরেকটা ব্যাপার খেয়াল করেছি, শিশুরা বাবা-মায়ের চাইতে শিক্ষকদের থেকে বেশি প্রভাবিত হন, তাই তাদের আরো দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ, কিন্তু কিভাবে?
তোমার ভাইয়ের ছেলেটাকে আমার উম্মম্মম্মমা লীলাবতী। বিকশিত হোক ওর ভাবনাচিন্তা, অনেক বড় হোক। (3
লীলাবতী
শিক্ষা ব্যবস্থার কিছু পরিবর্তন খুবই জরুরী আপু।আপনার মন্তব্য সব সময়ই আমাকে প্রেরনা দেয়।অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে -{@
স্বপ্ন নীলা
আমরাই শিশুদেরকে মিথ্যা বলা শেখাচ্ছি, সেটা পরিবার হতে, সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে- তা জেনেই হোক কিংবা না জেনেই হোক, যেটা শিশুকে নেতিবাচক চিন্তা ভাবনার জগতে নিয়ে যাচ্ছে —-প্রবালের চিন্তাকে স্বাগত জানাই, ওর জন্য দোয়া রইল
লীলাবতী
আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত।ধন্যবাদ আপু -{@