ইয়াহিয়া খানের এই চরিত্র অজানা নয় আমাদের। যুদ্ধকালীন সময়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম দেখানোর জন্য এরা মরিয়া হয়েছিল। আপনারা হয়ত জানেন মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তানে গঠিত হামিদুর রহমান কমিশন রিপোর্ট প্রকাশ করে যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে নিহত মানুষের সংখ্যা ২৬,০০০। তিরিশ লাখকে যারা ছাব্বিশ হাজার বানিয়ে দিতে পারে তারা এক কোটি শরণার্থীকে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ বললে আমরা বরং একটু অবাক হই, এতটা বড় ফিগার তারা স্বীকার করে নিলো কি করে!
৭১ সালে সমগ্র পৃথিবীর দৃষ্টি ছিল আমাদের দিকে দিকে। বিশ্বময় সংবাদপত্র গুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে আসলে যে কোন মানুষ স্বীকার করতে বাধ্য হবে ১৯৭১ সালে ভারতে বাঙ্গালী রিফিউজির সংখ্যা ছিলো এক কোটি কিংবা তার চেয়েও বেশী ছিলো।
@ ডেইলি টেলিগ্রাম ৩০ মার্চ ১৯৭১ লিখেছে; ২৫ মার্চ ১৫,০০০ মানুষ দেশ ছেড়ে পালায়।
@ নিউইয়র্ক টাইমসের ২৪ মে ১৯৭১ সালের তাদের পত্রিকায় বলেছে এখন ভারতে শরণার্থী সংখ্যা ১৫ লাখ।
@ একই পত্রিকা ৬ জুন ১৯৭১ লিখেছে ২০ লক্ষ।
@ এরপর একই পত্রিকার ১৩ জুন ১৯৭১ সালের সংখ্যায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানিয়েছে শরণার্থী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখ।
@ সাপ্তাহিক ইকোনমিস্ট বলেছে প্রতিদিন ৬০,০০০ মানুষ পালাচ্ছে।
@ দ্যা স্পেক্টেটর তাদের পত্রিকায় ১৯ জুন ১৯৭১ বলছে ৫০ লাখ।
@ সানডে টাইমস ২০ এবং ২১ জুন ১৯৭১ লিখেছে ৬০ লাখ
@ ইকোনমিস্টনিউজ উইক ২৬ জুন বলেছে ৬০ লাখ।
@ ওয়াশিংটন ডেইলি নিইউহ৩০ জুন ১৯৭১ লিখেছে ৬০ লক্ষ।
@ দ্যা পালাভার উইকলি ৮ জুন ১৯৭১ বলেছে প্রতিদিন ৫০,০০০ মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে
@১৭ জুলাই ১৯৭১ ইকনোমিস্ট বলছে ৬৮ লাখ।
@হেরাল্ড ট্রিবিউন ৯ আগস্ট ১৯৭১ বলেছে শরণার্থী এখন ৭০ লক্ষ।
@ কাইহান ইন্টারন্যাশনাল ২ আগস্ট ১৯৭১ রিপোর্ট করেছে ৭৫ লক্ষ।
@ সেনেগালের লে সেলাই ৭ সেপেম্বার বলেছে ৮০ লক্ষ।
@ টরেন্টো টেলিগ্রাম ১৩ই সেপ্টেম্বার বলছে ৮০ লক্ষ।
@ দ্যা ইভিনিং স্টার ৩০ সেপ্টেম্বর লিখেছে ৮০ লক্ষ শরণার্থীর কথা।
@ ফার ইস্টার্ন ইকনোমিক রিভিউ ২৫ সেপ্টেম্বার বলছে ৮৫ লক্ষ।
@ দ্যা এডভান্স মরিশাস ২৭ সেপ্টেম্বার বলেছে ৮৫ লক্ষ।
@ দ্যা ওয়েস্টার্ন মেইল ২৮ সেপ্টেম্বার বলেছে ৯০ লক্ষ
@ নিউইয়র্ক টাইমস ১১ই অক্টোবর বলছে ৯০ লক্ষ।
@ লস এঞ্জেলস টাইমস ১৮ই অক্টোবর বলেছে ৯০ লক্ষ।
@ লা লিবর বেলজিক ১৮ অক্টোবর বলছে সংখ্যাটা ১ কোটি ছাড়িয়েছে।
@ নিউজউইক ৬ ডিসেম্বর বলেছে ১ কোটি।
@ টাইমস ২০ ডিসেম্বর বলেছে ১ কোটি।
একটু বিশ্লেষণী দৃষ্টি নিয়ে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ২৫ মার্চ যুদ্ধের প্রথম প্রহর থেকেই শরণার্থীরা দেশ ত্যাগ শুরু করে। সংখ্যাটা মে মাসে এসে দাঁড়ায় ১৫ লক্ষ। জুনের মাঝামাঝি হয় প্রায় ৫০ লক্ষ। আগস্টে ৭০ থেকে ৭৫ লক্ষ। সেপ্টেম্বরে ৮৫ লক্ষ এবং শেষদিকে সংখ্যাটা গিয়ে পৌছে কোটির ঘরে। পৃথিবীর ইতিহাসে এত কম সময়ে এত বেশী শরণার্থী হবার ঘটনা বিরল।
পৃথিবীর কোন দেশই হঠাৎ করে এক কোটি শরণার্থীকে একসাথে খাওয়াতে-পরাতে পারে না। এটা এক কথায় অসম্ভব। যার ফলে মৃত্যুই ছিল অনিবার্য। এছাড়া গাদাগাদি করে থাকার কারণে মহামারির মত ছড়িয়ে পড়ে কলেরা প্রাণ হারায় লাখ লাখ শিশু। মাঝখানে শীতের প্রকোপেও অনেক শিশু মৃত্যু ঘটে।
নোবেল বিজয়ী আলফ্রেড কাস্টলার লা ফিগারো, ৮ অক্টোবর ১৯৭১ সালে প্যারিস পত্রিকায় বাংলাদেশের শরণার্থী সমস্যাকে হিরোশিমার পারমানবিক বোমা হামলার চেয়েও ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেন। তাঁর ভাষ্য হিরোশিমা ঘটনার শিকাররা ছিল ভাগ্যবান কারণ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে কিন্তু পাকিস্তানের শরণার্থীদের দুর্দশা তার মতে এর চেয়েও ভয়াবহ।
১৯৭১ সালে শরণার্থী ইস্যুতে জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ষাট জন বিশ্ব বরেণ্য মানুষের ভাষ্য নিয়ে প্রকাশিত ‘টেস্টিমনি অব সিক্সটি’ তে সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডির লেখাটি থেকে খানিকটা উদ্ধৃতি তুলে ধরলাম-
” গত তিরিশ বছরে পৃথিবী যত দুর্যোগ মোকাবেলা করেছে তার মধ্যে ভায়াবহটি হচ্ছে পাকিস্তানের সংকট।”
” ৩০ হাজার শরণার্থীর দিয়ারা ক্যাম্পের কথা যেখানে বন্যার পুরো ক্যাম্পটাই তলিয়ে যায়। সেখানকার পরিবার গুলো কাদায় ঢাকা, নিজেদের মল-মুত্র কখনোই ঠিকমত পরিস্কার করা সম্ভব হয় না।”
“…আমি দেখেছি এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পের অবস্থার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য। কিন্তু অধিকাংশই বর্ণনা দেয়া অসম্ভব। ক্যাম্প গুলোতে শিশু এবং বৃদ্ধের সংখ্যা মোট শরণার্থীর ৫০ শতাংশ। যাদের বয়স পাঁচ থেকে কম এবং যারা বয় বৃদ্ধ তারাই সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী, এরকম বয়সের মানুষের সংখ্যাই শিবির গুলোতে বেশী, এরা মোট শরণার্থীদের পঞ্চাশ শতাংশ। এদের বেশীরভাগই মৃত্যুবরণ করছে। শরণার্থী শিবিরের মাঝখান দিয়ে হেঁটে গেলে দেখে দেখে সনাক্ত করা সম্ভব এক ঘণ্টার মধ্যে কারা মারা যাবে আর কাদের ভোগান্তি চিরতরে শেষ হওয়াটা কেবল কয়েকদিনের ব্যাপার মাত্র। শিশুদের দিকে দেখুন, তাদের ছোট্ট হাড় থেকে আলগা হয়ে ভাঁজে ভাঁজে ঝুলে পড়া ত্বক, এমনকি তাদের মাথা তোলার শক্তিও নেই। শিশুদের পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখুন পা ও পায়ের পাতার পানি নেমে অপুষ্টিতে ফুলে আছে। তাদের মায়ের হাতও নিস্তেজ। ভিটামিনের অভাবে তারা অন্ধ হয়ে যাচ্ছে । আর সবচেয়ে সবচেয়ে বেশী কঠিন দৃশ্য, গতরাতে যে শিশুটি মারা গেছে, তার মৃতদেহও এখানেই”।… আমি যখন একজন শরণার্থী শিবিরের পরিচালককে জিজ্ঞাসা করলাম তার সবচেয়ে জরুরী প্রয়োজনটি কি। জবাব এল ‘একটি শব-চুল্লি’ !!!! পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ একটি ক্যাম্পের পরিচালক তিনি।“
সাংবাদিক জন পিলজার লিখেছেন–
‘ঝাঁকে ঝাঁকে শকুন নেমে এসেছে। তীক্ষ্ণ ঠোঁট দিয়ে ছিড়ে খুড়ে খাচ্ছে মরা মানুষের দেহ। তাদের চোখ চক চক করছে। কিন্তু মৃত মানুষের সংখ্যা এত বেশী যে শকুনের খেয়ে শেষ করতে পারছে না। শকুনদেরও খাওয়ায় অরুচি এসে গেছে। মরা মানুষের গা থেকে ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলেছে জামা কাপড়। তাদের অনেকের তখনো গা গরম। সবেমাত্র মরেছে। পথে ঘাটে নালা নর্দমায়—সর্বত্রই কলেরায় মরা মানুষ পড়ে আছে। জন সার দেখতে পেয়েছেন একটি শিশুর মৃতদেহ। শিশুটির গায়ে একটি শাড়ির অংশ পেঁচানো। তাঁর হতভাগী মা পেঁচিয়ে পুটুলি বানিয়েছে। ট্রাকের চলার সময় অসুস্থ শিশুটি মারা গেছে। চলন্ত ট্রাক থামেনি। মৃত ছেলের জন্য ট্রাক থামানো কোনো মানেই হয় না। আরও অনেক মৃতপ্রায় মানুষ এই ট্রাকেই ধুঁকছে। আগে পৌঁছাতে পারলে হয়তো কোনো হাসপাতাল পাওয়া যেতে পারে। তাদের সুযোগ মিলতে পারে চিকিৎসার। বেঁচেও যেতে পারে। এই আশায় সময় নষ্ট করতে কেউ চায় না। শিশুটির পুটুলী করা মৃতদেহটিকে ট্রাক থেকে রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে ছুড়ে ফেলা দেওয়া হয়েছে।
উপরের লিখাটি ত্রৈমাসিক ” স্ফুলিঙ্গ”-তে প্রকাশিত ব্লগার আরিফ রহমানের লিখা থেকে তুলে এনেছি।
সারা বিশ্বজুড়ে এতো এতো দলিল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার পরও যথাযথ প্রচারের অভাবে আমাদের আজকের প্রজন্ম জানতেই পারে না ১৯৭১ সালে এই বাঙলা মায়ের সন্তানদের উপর পাকিস্তানী শাসকচক্র কি নির্মম নির্যাতনই না করেছিল। নির্যাতনের মাত্রা এতোবেশি ছিলো যে, লাখ লাখ বাঙালী প্রতিবেশি রাষ্ট্রের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলো।
আজকের দিনে এসে তারা ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে যখন ভারতের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে, বিরুদ্ধবাদিরা তখন এই সুযোগকে লুপে নিতে একটুও দেরী করে না। প্রতিবেশি দেশ ভারতের প্রতি বাঙালী জাতির বিদ্বেষ বাড়াতে ভারত এবং পাকিস্তানকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়। তারা এটি করে মুলতঃ তাদের পূর্বেকার অপকর্মকে আড়াল করতে। হ্যাঁ, বিশ্বে সব দেশেই প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সাথে কমবেশি সমস্যা লেগেই থাকে, থাকতেই পারে। কিন্তু তুলনার বেলা দু-দেশকে এক পাল্লায় কিছুতেই আনা যায় না।
খেলা নিয়ে আমিও ভীষন মর্মাহত হয়েছি, ক্ষুব্ধ হয়েছি কিন্তু তাই বলে পাকিস্তানের সাথে তুলনা!!! একবার ভাবুন তো, ২৫শে মার্চ, ভয়াল সেই কালরাত্রি। ৯ মাস বাদ দিলাম, শুধু ২৫ শে মার্চ কালোরাত্রিতে পাকিস্তান বাঙালী জাতি নিধনে যে পোড়ামাটি নীতি গ্রহন করেছিলো বিশ্বের ইতিহাসে এতোবড় গণহত্যা আর একটিও কি আছে?
পাকিস্তানের প্রতি ঘৃনা তখনই কিঞ্চিত লাগব হতে পারে, যদি পাকিস্তান রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাদের কৃতকর্মের জন্য। কারন তাদের অপরাধটা ছিলো রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে। কিন্তু বর্তমান সময়েও দেখা যায়, পাকিস্তান রাষ্ট্রই শুধু নয়, নাগরিকরাও বাঙালীদের প্রতি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ প্রকাশ করেই যাচ্ছে। তবুও জারজ পাকিপ্রেমিকদের প্রেম যেনো কমেই না।
আর প্রজন্ম তার মাতৃভুমির জন্ম ইতিহাস জানে না বলেই, তারাও আজ এ বিচারটুকু করতে পারে না।
২২টি মন্তব্য
সঞ্জয় কুমার
পাকিস্তান কে আমৃত্যু ঘৃণা করবোই
মারজানা ফেরদৌস রুবা
যে ক্ষত তারা তৈরী করে গিয়েছে, রক্তে বিশুদ্ধতা থাকলে তা কোনভাবেই ভুলার নয়।
মামুন
তথ্য সমৃদ্ধ লিখাটি পড়লাম। অনেক নতুন কিছু জানতে পারলাম। নিজের জ্ঞানভান্ডার আরো সমৃদ্ধ হলো।
শুভেচ্ছা জানবেন।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
লিখতে গিয়ে আমিও অনেক নতুন কিছু জেনেছি। নিজে জানার সাথেসাথে জানানোর তাড়না অনুভব করেই লিখাটা এখানে তুলে আনা।
শুভেচ্ছা রইলো।
খেয়ালী মেয়ে
পাকিস্তানের জন্য ঘৃনা সেটা কখনো বোধ হয় কমবে না…
মারজানা ফেরদৌস রুবা
কমার নয় রে আপু।
ঘেন্না, ঘেন্না আর ঘেন্না। কিন্তু কষ্ট হয় যখন দেখি পাকিজারজরা এই বাঙলার বুকে দাপটের সাথে ঘুরে বেড়ায়।
জিসান শা ইকরাম
‘পৃথিবীর ইতিহাসে এত কম সময়ে এত বেশী শরণার্থী হবার ঘটনা বিরল।’
শরনার্থীদের প্রচন্ড কষ্ট,বিভিন্ন কারনে মৃত্যু বরন করা এসব ইতিহাস আমাদের সামনে নেই বললেই চলে।
এই অংশটুকু শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
খেলা নিয়ে ভারত পাকিস্থানকে এক পাল্লায় মাপামাপি করে রাজাকার ও তাদের সমর্থকরা
জীবন থাকতে পাকিদের সাপোর্ট করা হবে না ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ইতিহাসগুলো আমাদের সামনে নেই বলেই আজ পাকিপ্রেম এতো তুঙ্গে।
ব্লগার সজীব
এদেশের কিছু মানুষের পাকি প্রেম যাবেনা কোনদিন,এরা এখনো এদের জাতীর পিতা মনে করে কায়দে আজমকে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
তো! মনে যদি করেই তাহলে বেহায়ার মতো মাটি আকড়ে পড়ে আছে কেনো?
ছাইরাছ হেলাল
ইতিহাস বিমুখতা আমাদের নূতন কিছু নয়।
উত্তরণ অজানা।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
উত্তরন অজানা। কিন্তু দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, ঘুরে দাড়ঁতে হবেই।
লীলাবতী
বাঙ্গালীর পাকি প্রেম ইদানিং বৃদ্ধি পেয়েছে খুব।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
পাকিজারজরা চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়েছে যে!
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
পাকিদের ঘৃণা করা যেন কম হয়ে যায় এ সব ঘটনা পড়লে মন চায় পাকি রাষ্ট্রকে উড়িয়ে দেই।সুন্দর বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
কি বলছেন আপনি? পাকিপ্রেমে বাঙালী এখন দিওয়ানা!!
প্রজন্মকে এসব জানতে দেয়া হয়নি। তাই ওরা ‘আফ্রিদি ম্যারী মি’ বলে দিওয়ানা হয়।
রোমহর্ষক ঘটনা কতোটা জানে ওরা?
শুন্য শুন্যালয়
ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা কোনদিন কমবেনা। সাময়িক অভিমানে তাদের গালাগালি করছি, তারাও আমাদের কম ছোট করেনি এই ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে, কিন্তু পাকিদের সাথে এটার কিসের তুলনা চলে বুঝলাম না। ঘৃনা হয় পাকিদের সমর্থনে কেউ কথা বললে। আমার নিজের দেশের মানুষরাই যদি ইতিহাস ভুলে যায়, তাহলে কাদের জন্য এতোকিছু।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অন্যায়ের জবাব দিতে হবে, গঠনমূলক ভুমিকা রেখে।
অন্যায় আর অপরাধকে এক করে দেখা যাবে না।
খেলার মাঠের ছক্কা/চার আর যুদ্ধের ময়দানে মায়ের বুক থেকে দুগ্ধশিশু কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলা এক নয়।
কিশোর ছেলেকে সামনে রেখে মাকে ধর্ষণ আর খেলার মাঠের অপমান এক নয়।
খেলার মাঠের ধুলো ঝেড়ে ফেলা যায় কিন্তু স্বাধীনতা অর্জন করতে যেয়ে যে রক্তঋন বাঙালীর, তা শোধ করার নয়।
কৃন্তনিকা
খুবই তথ্যবহুল পোস্ট। এরকম পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। মুখে মুখে শুনে খুব বেশি আইডিয়া করা যায় না ভয়াবহতা। এতদিন শরণার্থী শিবিরের কথা মুখেই শুনেছি, আমাদের সমাজ বইগুলোতেই তেমন কিছু পড়িনি। এসব যখন পড়ি তখন মনে হয় কেন আমাদের সমাজ বইগুলোতে এসবের উল্লেখ নেই? আমরা কতটা অন্ধকারে আছি? নিজেদের ইতিহাস নিজেরাই জানি না।
“আজকের দিনে এসে তারা ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে যখন ভারতের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে, বিরুদ্ধবাদিরা তখন এই সুযোগকে লুপে নিতে একটুও দেরী করে না। প্রতিবেশি দেশ ভারতের প্রতি বাঙালী জাতির বিদ্বেষ বাড়াতে ভারত এবং পাকিস্তানকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়। তারা এটি করে মুলতঃ তাদের পূর্বেকার অপকর্মকে আড়াল করতে।” আপনার প্রতিটি লেখা খুবই যুক্তিযুক্ত। আমি আপনার সাথে সহমত প্রতিটি শব্দে, প্রতিটি অক্ষরে।
আপনার লেখা দেখলে আমি কখনো সাথে সাথে পড়ি না। কারন আমি জানি, অনেক তথ্য থাকবে, যা আমার মাথায় নিতে হবে। তাই আপনার লেখা পড়ার জন্য সময় নিয়ে পড়ি…
এরকম আরো লেখার জন্য অপেক্ষা করবো। ভাল থাকবেন।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ভালো লাগলো জেনে যে আপনি তা মাথায় নেয়ার জন্য সময় নিয়ে পড়েন। তারমানে আমি নিশ্চিতভাবে জানলাম আপনার থেকে আরো এবং আরো থেকে আরো মানুষের মননে এই তথ্যগুলো ছড়িয়ে পড়বে।
সময় আমাদের শেষ হয়ে যায়নি। খুঁজেখুঁজে ইতিহাসের সত্যগুলোকে বের করে আনতে হবে আর তা যতোদুর সম্ভব ছড়িয়ে দিতে হবে।
ভালো থাকুন। হাতে সময় নেই তাই আর লিখতে পারলাম না।
নুসরাত মৌরিন
পাকিদের সাথে ভারতের তুলনা কখনোই হতে পারে না।১৯৭১ এ ভারতের সহায়তার কথা আমরা ভুলে যাইনি যাব না।তাই বলে আমাদের অর্জনকে যদি কেউ ছোটো করে দেখায় তখন কষ্ট হয়।
কিন্তু তা বলে কুকুর,হায়েনা পাকিদের প্রতি ঘৃনা কখনোই একবিন্দু কমে না,কমবে না।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
পাকি মানেই আমাদের কাছে সাক্ষাত যম, দানব, হিংস্র প্রাণী হায়েনা স্বরুপ।
অন্য কারো সাথে এদের তুলনা কোনভাবেই চলে না।
আমাদের অর্জন কে ছোট করতে গিয়ে আইসিসি এখন নিজেই বিশ্বব্যাপী সমালোচিত।