“লুঙ্গি” আহ! এমন আরাম দায়ক পোশাক মনে হয় এই পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। আমরা বাঙ্গালিরা ৯৯.৫% লোক এটি পরিধান করি অন্তত রাত্রি যাপনের পোশাক হিসেবে এবং ৭৫% মানুষ সবসময় এই আরামদায়ক পোশাকটি পরে। বাঙ্গালিদের মধ্যে এমন লোক চিরনি অভিযানেও পাওয়া খুব দুষ্কর যে জীবনে অন্তত একবার লুঙ্গি পরে নাই। মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ভারতের তামিলাডু থাইল্যান্ড ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের মানুষ আমাদের এই জাতিও পোশাকটি পরে তাদের ঐতিহ্য হিসেবে।
বাংলা, হিন্দি, তামিল সহ বিভিন্ন ছিনে-মায় দেখি এই লুঙ্গির মহাত্নন । কদিন ধরে লুঙ্গির একটা জোশ অ্যাড দেখছি দেশী চ্যানেল গুলিতে,আমার বেশ ভাল লেগেছে।
লুঙ্গি নিয়ে প্রচলিত একটা গল্প না বললেই নয়। গল্প টা এরকম:
>> গ্রামের এক অশিক্ষিত বাবা তার ছেলে কে শহরে রেখে অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা শিখিয়েছে, ছেলে পড়ালেখা শেষ করে বেশ বড় চাকরিও পেয়েছে। এখন ছেলে বাবাকে বেশ মোটা অংকের টাঁকাও পাঠান। অনেকদিন পর ছেলে গেছে গ্রামের বাড়িতে। বাবা মা বেশ খুশি। বেশ কদিন পর ছেলে যাবে ঢাকা শহরে, বাবা গরুর গাড়ীতে টপর( নৌকার ছই আর মত) সাজিয়ে ছেলেকে এগিয়ে দিতে নিয়ে যাচ্ছেন থানা শহরে বাসে তুলেদিতে। নিজেই হয়েছেন গাড়ির গাড়োয়ান। বাস স্ট্যান্ডে গাড়ি রেখে ছেলেকে গাড়ি হতে নামাচ্ছেন বাবা, এমন সময় ছেলের সঙ্গে দেখা ছেলের ঢাকার এক ডাক্তার বন্ধুর যে সম্প্রতি পোস্টিং পেয়েছে তার থানাতে। বেশ কিছুদিন পর দেখা দুই বন্ধুর অনেক কথা জমা, এদিকে বাস এর সময় হয়ে এসেছে। হঠাৎ এতক্ষণ পাশে জড় সড় হয়ে দাঁড়ানো বৃদ্ধকে দেখিয়ে ডাক্তার বন্ধু প্রশ্ন করল ইনি কে ? (লুঙ্গি পরা এই বৃদ্ধ কে আমার বাবা বলে পরিচয় দিলে তার মান সম্মান থাকেনা বন্ধুর কাছে, মনে এ ভাবনা আসতেই)ছেলে বেশ অপ্রস্তুত হয়ে ইংলিশে বন্ধুকে বলল “MY SERVENT”।
ছেলে কে পাঠিয়ে বাবা গাড়ী নিয়ে বাড়ী ফিরছিল, হঠাৎ গ্রামের স্কুল পড়ুয়া একজনকে দেখে তাকে ডেকে প্রশ্ন করল … তার ছেলের বলা “মাই সারভেণ্ট” মাণে কি? উত্তর শুনে বাবার মনের অবস্থা কেমন হয়েছিল চিন্তা করুন।
ভাইরে লুঙ্গি পরেছি বলে এত অবহেলা করিয়েন না। এই লুঙ্গি পরা মানুষ গুলির শ্রমে আজ আপনি আমি শহরে বাবু গিরি করছি।
এই লুঙ্গি পড়া মানুষ গুলির শ্রমে মাঠে ফলছে সোনার ফসল।এদের শ্রমেই গড়ে উঠে বিশাল অট্টালিকা। আধুনিক সভ্যতার কারিগর এই লুঙ্গি ওয়ালারা। তাই লুঙ্গি পরা দেখে নাক সিটকিয়ে গল্পের যুবকের মত আবার হয়ে যান যেন?
সব শেষে শেখ শাদি (র) এর পোশাকের গল্পের মত যেন না হয়ে যায় আমাদের আচরণ। তাই সাবধান পোশাক নয় মানুষটাই বিবেচনায় নিন।
গোলাম মাওলা, সাপাহার, নওগাঁ
৬টি মন্তব্য
গুরুমিয়া
ভাল লাগলো।
নীলকন্ঠ জয়
লুঙ্গি আবিষ্কারের হাস্যকার একটি কাহিনী শুনেছিলাম কিছুদিন আগে। বার্মা রাজারা তখনকার সময়ে চেইনওয়ালা ট্রাওজার পড়ত নাকি। একদিন রাজার প্রাকৃতিক কর্ম সাধনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো ঐ ট্রাওজার। রাজার দর্জি তখন লুঙ্গি নামক আরামদায়ক এই পরিধেয় বস্তুটি আবিষ্কার করেন।
ভালো লেগেছে।
শুভেচ্ছা।
জিসান শা ইকরাম
লুঙ্গির অনেক গুন 🙂
লীলাবতী
বাবাকে সার্ভেন্ট বলা ? এমন সন্তান যেন বেচে না থাকে ।
ব্লগার সজীব
লুঙ্গী পরে ঘুমালে রাতে একা এক রুমে ঘুমানো উচিৎ 😛
খসড়া
এমন সন্তানের পিতামাতা হতে আমি রাজি না। লুংগী একটি ঐতিহ্য বাহী পোষাক।এটা খুব স্বাভাবিক ভারত উপমহাদেশের পোষাক।