আমরা আমাদের নিকটাত্মীয়দের হত্যাকাণ্ডের বিচার খুব দ্রুত চাই । আর নিকটাত্মীয় যদি বাবা মা ভাই বোন হয় , চেষ্টা থাকে যত দ্রুত সম্ভব এই হত্যাকাণ্ডের বিচার। ইচ্ছে করে নিজেই আইন হাতে নিয়ে প্রতিশোধ নেই । তা সম্ভব নয় বলে আদালতে এর বিচার প্রার্থনা করে সর্বাত্মক চেষ্টা করি যাতে বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ হয়।
প্রশ্ন উঠছে শেখ হাসিনা ইচ্ছে করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করেছেন – আর একবার ক্ষমতায় গেলে বিচারের রায় কার্যকর করবেন – এই মুলা ঝুলিয়ে রেখেছেন জনগনের সামনে। যারা এমন ভাবছেন তাঁদের জন্যই এই লেখা ।
নিজের বাবা মা ভাই ভাবি এবং অন্যান্য হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চয়ই শেখ হাসিনা আন্তরিক ভাবে চেয়েছেন । না চাওয়ার কোন কারণ নেই । তিনি নিশ্চয়ই চেয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব এই বিচার প্রক্রিয়া শেষ হোক । কিন্তু প্রবল ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা দ্রুত বিচার পাননি। নিজের সবচেয়ে আপনজনদের হত্যাকাণ্ডের বিচার পেতে শেখ হাসিনাকে দুইবার ক্ষমতায় আসতে হয়েছে। দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষ হয়েও তিনি অতি দ্রুত বিচার পাননি। ১৯৯৭ সনে ১৫ জানুয়ারী শুরু হওয়া মামলার চুড়ান্ত রায় হয়েছে ২০০৯ এর ১৯ নভেম্বর। প্রায় ১২ বছর । শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই জাতির সামনে তিনি নিজের বাবা মা ভাই হত্যাকাণ্ডের বিচার পরের বার ক্ষমতায় এসে করবেন – এই মুলা ঝুলিয়ে রাখেননি । যদি কেউ এমন ভেবে থাকেন তবে অতিদ্রুত তাঁর মানসিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ ।
১৯৭৫ এর পর থমকে যাওয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার সামনে বিশাল বাঁধা ছিল এটা কে না জানে ? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এই বাংলায় সম্ভব , আর প্রতিষ্ঠিত বড় বড় রাজাকার গুলোকে জেলে নিয়ে বিচার করা সম্ভব হবে এসব কি কেউ কল্পনা করেছেন পূর্বে ? হিমালয়সম বাঁধা অপসারন করে , যুদ্ধাপরাধী আসামীদের বিভিন্ন কূটকৌশল অবলম্বনে সময় নষ্ট করা , একটি বড় দল যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেয়া – ইত্যাদি সব কিছু বিবেচনায় বিচারপ্রক্রিয়া ভালো ভাবেই এগিয়েছে ।
শেখ হাসিনা বিচারপ্রক্রিয়াকে বেশী স্বচ্ছতা দিতে গিয়ে হয়ত ভুল করেছেন , যেমন স্বচ্ছতা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারে ।
আমরা লিখি কবিতা , বিক্রি করি আলূ ( প্রতীকী ব্যবসায়ী ) , হয়ত বা কেউ নাট্যশিল্পী , বা ম্যানেজমেন্টের ছাত্র কিন্তু বিশেষজ্ঞ বনে যাই চিকিৎসা , আইন , অর্থনীতি ইত্যাদি বিভাগে। আইনের ধারা উপধারা সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান না নিয়েই বলে ফেলি অনেক কিছু । সমস্যাটি আমাদের মাঝেই ।
১৬টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
বিচার করার অংগীকার করে তা রক্ষা করা দুরূহ ছিল অবশ্যই ।
অংগীকার রক্ষা হয়েছে , আমরা রায়ের প্রতিফলন দেখার অপেক্ষায় ।
জিসান শা ইকরাম
সময় একটি বড় ফ্যাক্টর , ইচ্ছে করলেই আইনের গতিকে দ্রুত করা যায় না । করা গেলে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারে ১২ বছর লাগতো না ।
নীলাঞ্জনা নীলা
এত কিছু করার পরেও যখন শেখ হাসিনা এদের মন পাচ্ছেননা , তখন একদলীয় ভাবেই দেশ চালানো উচিৎ। বিএনপি ক্ষমতায় এসে তো রাজাকারদের ক্ষমা করে দিবে। রাজাকারদের ফাঁসী দিয়েই ক্ষমতা ছাড়া উচিৎ শেখ হাসিনার।
জিসান শা ইকরাম
প্রস্তাবটা খারাপ না , অবুঝ শিশু অবাধ্য হলে জোর করতেই হয় বাবা মাকে ।
নীলকন্ঠ জয়
এখন রায় কার্যকরের অপেক্ষায়।
জয় বাংলা।
জিসান শা ইকরাম
জয় বাংলা
প্রজন্ম ৭১
রাজাকারদের বিচার একমাত্র শেখ হাসিনাই করবেন । অন্য কেউ করবেন না । জিয়া , এরশাদ , খালেদা জিয়া এরাই তো বেশীরভাগ সময়ে দেশ শাসন করেছেন । রাজাকারদের শুধু প্রতিষ্ঠিতই করে গেছেন এরা। বিচার যদি চাই আমরা , তা হলে শেখ হাসিনার কাছেই চাইতে হবে। অন্যরা একাকার হয়ে গিয়েছে রাজাকারদের সাথে ।
জিসান শা ইকরাম
ভালো বলেছেন ।
মা মাটি দেশ
শুনা কথায় কান দিতে নেই তারপরও বলি শুনেছি আওয়ামিলীগেও নাকি যুদ্ধপরাধী আছে যদি না থাকে তবে কি আওয়ামিলীগের উচিত নয় কি এ অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমান করা।আর যদি থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে মনে হয় জনতা আওয়ামিলীগকে আরো বেশী পছন্দ করত ট্রাবুনালের গ্রহন যোগ্যতা বৃদ্ধি পেত।
ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
রাজাকারদের কোন দল নেই , তারা বিভিন্ন দলেই আশ্রয় নিয়েছে । আওয়ামী লীগেও আছে । তবে রাজাকারদের আইকন হচ্ছে এখন যারা জেলে আছে । যাদের বিচার চলছে । একজন গোলাম আজমের বিচার আর একজন খুচরা রাজাকার যাদের পরিচিতি নেই , তাদের বিচার এক কথা নয়। সব রাজাকারের বিচার চাই আমরা । যাদের বিচার হচ্ছে এরা রাজাকারদের লীডার । একে একে ধরুক সব। নইলে তো জেলখানায় স্থান সংকুলান হবে না ।
প্রিন্স মাহমুদ
একমত ।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ একমত পোষণ করার জন্য ।
বনলতা সেন
অনেকটা পথ পেরোতে হবে ।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , যেতে হবে অনেক দূর —-
খসড়া
জিশান শা বিচার হচ্ছে, অনভিজ্ঞ আমাদের সকল বিচারিক রা অভিজ্ঞ হচ্ছে। তারা ঠেকে শিখছে কিন্তু পিছু হটছে না তাই তো আমি আনন্দিত। ভাল লাগল। একথা ভুললে চলবে না প্রতিপক্ষ খুব শক্তিশালী কিন্তু অপ্রতিরোধ্য আমি বিশ্বাস করিনা। তারা ৪২ বছবে মহিরুহ হয়েছে উপড়ে ফেলতে কষ্ট হবেই তবু উপড়াতেই হবে।
মর্তুজা হাসান সৈকত
আমাদের সমস্যা হলো যথার্থতা যাচাই করে অনেক কিছু শুনেই বিশ্বাস করে ফেলি। এ স্বভাবটা পরিবর্তন করতে পারলেই অনেক সমস্যার সমাধান এমনিতেই হয়ে যাবে। নিজেদের সার্থ হাসিলের অভিপ্রায়ে যারা যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করছে ইতিহাস এদের বিচার এমনিতেই করবে।