রোকেয়ার বাপের বাড়ি যাত্রা।
#ঘটনা একঃ
রোকেয়ার স্বামীর চাকরির হিসাবে বাপের বাড়ি যাওয়াটা হয় খুবই কম তার।দুই ছেলে রোকেয়ার। সাধারনত চারজনে এক সঙ্গেই যায়। বাপের বাড়ি বেশ দূরেই রোকেয়ার। শশুরবাড়ি বাপেরবাড়ি দেশের দুই প্রান্তে। তাই দীর্ঘ যাত্রাপথের একটা বেশ প্রস্তুতি থাকে রোকেয়ার।
সব প্রস্তুতি শেষে, খুব সকালে বাসা থেকে রওনা করলো বি আর টি সি বাসে করে ঈশ্বরদীর উদ্দেশ্যে। ওখানে একটা ছোটো কাজ শেষ করে দুপুরের ট্রেন ধরে খুলনা।
প্রচন্ড রোদ সেই সাথে তাপদাহ। ঈশ্বরদী যখন পৌছালো, তখন ১ঃ৩০। খুব তাড়াহুড়া করে টিকিট করে, ওভারব্রিজ পার হয়ে প্লাটফর্মে পৌছালো। হাতে ভারি ব্যাগ। কোনোরকম প্লাটফর্মে পৌছে দেখলো একটুকু বাতাস নেই, প্রচন্ড গরম। ওয়েটিংরুমে বিদ্যুৎ নেই। প্রচন্ড গরমে ভরা দুপুরে নাজেহাল অবস্থা।রোকেয়া ওভারব্রিজ থেকে আসার সময় খেয়াল করলো, ওভারব্রিজের উপর দারুন বাতাস। সাথে সাথে ব্যাগপত্র নিয়ে আবারো ওভারব্রিজের উপরে উঠে গেলো তারা। ও হ্যাঁ বলা হয়নি, ট্রেন একঘন্টা লেট। রোকেয়া তার ছেলেকে কাপড় রাখা ব্যাগের উপর বসালো। নিজে ব্যাগ থেকে একটা তোয়ালে বের করে তা বিছায়ে বসে পড়লো। আহা! এই গরমে যেনো একটুকরো শান্তি।
রোকেয়ার বর কিছুক্ষণ এদিক ওদিক হেঁটে এসে দেখে তার বউ ছেলে ওভাবে বসে আছে। তিনি কালবিলম্ব না করে পকেট থেকে একটা বিশটাকার নোট বের করে বলিলেন,”নিন ছেলেমেয়ে নিয়ে ইফতারিতে ভালোমন্দ কিছু কিনে খেয়ে নিয়েন!”😭
রাগে দুঃখে রোকেয়ার শরীর ছুটে আরো ঘাম ঝরতে লাগলো।
বাংলাদেশের সবগুলো ওভারব্রিজের উপরে কারা ওরকম গামছা বিছায়ে বসে থাকে, তা নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন।
এখন ভাবুন, ঐ মুহূর্তে রোকেয়ার অবস্থাটা!
#ঘটনা দুইঃ
রোকেয়া বাপেরবাড়ি যাবে আর সুন্দরবনে যাবে না, এটা কোনোমতেই সম্ভব না। কারণ, রোকেয়াদের বাড়ি থেকে সুন্দরবন যেতে সময় লাগে আধাঘন্টা। দুই ছেলে, স্বামী, বোন, বোনের বাচ্চাদের নিয়ে ছোটো বোর্ড নিয়ে রওনা করলো সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে। পশুর নদী পার হলেই সুন্দরবন। ওদের বোর্ডটি নদি পার হয়ে সুন্দরবনে পৌছাতে না, পৌছাতেই বানর এসে হামলা করলো। কারন, ওদের বোর্ডে ছিলো চিপস্ এর প্যাকেট। আর সেই প্যাকেটগুলো নিতেই দলবেঁধে বানরের হামলা।
মাঝি কেবলি ওদের বলছে, শিগ্গির নেমে হাতে লাঠি নেন।” মাঝির বলা শেষও হয়নি, বানরের দল এসে হাজির। চোখের পলকে চিপস্এর প্যাকেটগুলো নিয়ে নিলো। ওরা বোর্ড থেকে নামার পরপরই ওদেরও তাড়া করলো। বানরের কোলে, পিঠে বাচ্চাও আছে। এক বানর রোকেয়াকে এক তাড়া দিলো। বেচারির জুতাটাই ছিঁড়ে গেলো।
# এরপরেও শেষ হয়নি, চোখে প্রচন্ড এ্যালার্জির আক্রমনের কারনে রোকেয়া চোখে সানগ্লাস পরে রাতে দিনে ঘুরতে লাগলো। মার্কেটে ঘোরার সময় তো কয়েকটা ছেলেপুলে আড়েভাবে রোকেয়াকে শুনায়ে ফেলল, কালা চশমার গানটি😭। রোকেয়া মনে মনে বলল,’ আল্লাহ্ তোদেরও যেনো চোখে এ্যালার্জি আক্রমন করে। তখন গান শুনিস,’কালা চশমা’।
বিঃদ্রঃ
ব্লগে কয়েকদিন আসতে পারিনি। একটু বেড়াচ্ছি। তবু ঘটনাগুলো সময় করে লিখে ফেললাম। কারো পোষ্টে যেতেও পারিনি। আমি এ ঘটনাগুলো খুলনা প্লাটফর্মে বসে বসে লিখছি। সবাই ভালো থাকুন। সবার জন্য শুভকামনা।
,,,,রিতু,,,,,
১/০৬/১৮.
১১টি মন্তব্য
ইঞ্জা
আহা বেচারি রোকেয়া ;(
রোকেয়া ;? আপু আপনার নাম নাতো?
আহারে কি কষ্ট, বান্দর গুলাও বড় শয়তান, চিপসের প্যাকেট গুলো নিলো নিলো আবার ধাবড়ানিও দিলো। :@
মৌনতা রিতু
হ, এডা আমি ;( সে কি দাবড়ানি ভাইজু
ইঞ্জা
:D)
জিসান শা ইকরাম
আহারে কি অবস্থা !
ভিক্ষুক, বানরের হামলা শেষ পর্যন্ত কালো চশমা গান 🙁
রোকেয়ার দিনটা তো খুবই খারাপ গেলো,
ঘটনাগুলো কষ্টের হলেও খুব হেসেছি সব কিছু পড়ে , হা হা হা হা ।
মৌনতা রিতু
হাসেন হাসেন, প্রানখুলে হাসেন। ;(
জিসান শা ইকরাম
চোখের কি অবস্থা এখন? দ্রুত সুস্থ্য হয়ে ওঠো।
মোঃ মজিবর রহমান
হুম! কি কষ্ট বাংলাদেশে রেল ভ্রমন তা বোঝাই যাচ্ছে রোকেয়া আপুর অবস্থা দেখে। আপনি সুস্থতা নিয়ে ঘুরুন।
রোগ সোক বাধায়েন না।
হুম সব ভাল থাকেন।
মৌনতা রিতু
চোখ উঠছে। এখনো ভুগছি ;(
খসড়া
২০টাকাটা নিলি না কেন?? ওটা নিয়ে তিন প্যাকেট কাচ্চির দাম চাইতি। না দিলে যেতেই দিতি না।
মৌনতা রিতু
হ, তাই তো ;? এরপর চামুনে।
নীলাঞ্জনা নীলা
বাঁদর বেচারারও তো ক্ষিধে পায়!
আপু বিশ টাকার নোটটা নিয়ে নেয়া উচিৎ ছিলো রোকেয়ার। আমি হলে নিয়ে টাকাটা ছিঁড়ে তরুণের হাতে ধরিয়ে দিতাম। 😀