গ্রামে চিৎকার চেচামেচি! ইসলাম বাচাঁও, ইসলামকে বাচাঁও, বাচাঁও ইসলাম……এতটুকু শুনেই
সবাই লাঠিসোটা নিয়ে দৌড়ে আসল।
এসে দেখে নুরুল ইসলাম কূয়াতে পড়ে ডুবে মরছে আর তা দেখে তার ভাই ‘নুরুল ইসলাম’ মানে ইসলাম বাচাঁও, ইসলামকে বাচাঁও বলে চিৎকার করছিল!
তার আগে কি ঘটছিল?
মুসুলমানরা সব বিষয়ে পিছিয়ে, ইংরেজদের ইংরেজি শিখে হিন্দুরা হয়ে যাচ্ছে অনেক স্মার্ট, চাকরি করছে ইংরেজদের সৃষ্ট কোর্ট-কাচারি থেকে শুরু করে পাবলিক সাভির্সে।
হিন্দু রাজা, জমিদাররাও ইংরেজদের সিস্টেমে ঢুকে যেতে থাকলো।
মুসুলমানরা পরলো মহা ফ্যাসাদে, ইংরেজি ভাষা না জানার কারণে সবজায়গায় নিজেদের পিছিয়ে পরা, একেবারে না খেয়ে মরার দশা!
ওদিকে মুন্সি মৌলানারা একের পর এক ফতোয়া দিতে থাকলেন। ইংরেজি ভাষা শিখলে বউ তালাক হয়ে যাবে এই ফতোয়া জারি করা হল মুসুলমানদের উপর। প্রাণপ্রিয় বউকে কেইবা হারাতে চায়? তাই তারাও তা মেনে নিল, এদিকে ইসলাম যায় তো ওদিকে করুণ দশা মোল্লাদের ফতোয়া শুনে মুসুলমানদের।
বাঘের বাচ্চা একটাই ছিল তিনি স্যার সৈয়দ আহামদ। মুসুলমানদের এহেন পিছিয়ে পড়া দেখে নিরব থাকলেন না। ফতোয়াকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রতিষ্ঠা করলেন ইংরেজি শেখার বিদ্যালয় পরে বিশ্ববিদ্যালয়।
তার বউকে অন্যেরা বলতে লাগল তোমাদের তো তালাক হয়ে গেল! বউ বললেন, হাজারবার তালাক হলেও আমি উনাকে ছাড়বো না। যায় হোক, এভাবে ধীরে ধীরে মুসুলমানরাও স্মার্ট হয়ে সরকারি চাকরিতে ঢুকতে লাগলেন। কিন্তু ইসলাম! সে তো ধ্বংস হল বলে?
ইংরেজরা যতটা না দ্বন্ধ তৈরি করেছিল হিন্দু-মুসুলমানদের মাঝে তার থেকে বেশি করে চলছিল, পুরুহিত, মৌলানারা।
তো তেমনই একদিন,
গ্রামে চিৎকার চেচামেচি: ইসলাম বাচাঁও, ইসলামকে বাচাঁও, বাচাঁও ইসলাম……এতটুকু শুনেই
সবাই লাঠিসোটা নিয়ে দৌড়ে আসল। কি ইসলামের উপর আঘাত.. ধর ধর চল চল…
এসে দেখে এলাকার নুরুল ইসলাম কূয়াতে পড়ে ডুবে মরছে আর তা দেখে তার ভাই ‘নুরুল ইসলাম’ মানে ইসলাম বাচাঁও, ইসলামকে বাচাঁও বলে চিৎকার করছিল!
সবাই আসলটা দেখে নুরুল ইসলামকে উদ্ধার করে নিজেদের গালি দিতে দিতে চলে গেল।
তারপর ধীরে ধীরে মুসুলমানরা আরও সজাগ হল, নিজেদের অধিকার, কর্তব্য, ধর্ম বিষয়ে সচেতন হয়ে জানতে, পড়তে লাগল আর তার সাথে নিজেদের প্রশিক্ষিত করে নিজেদের সংগঠিত করে ব্রিটিশদের তাড়িয়ে মুসলিম দেশ পেল পকিস্থান। আর বাংলাদেশ অর্জনও কিন্তু ধর্ম দিয়ে নয়, বাঙালীআনা দিয়ে।
বর্তমান প্রেক্ষাপট কেমন যেন মিল মিল লাগে তখনকার সাথে। কোথাও ইসলাম বাচাঁও ইসলামকে বাচাঁও শুনে দৌড়ে যাওয়ার আগে ভাল করে শুনুন তার পর সামনে যান। ইসলাম কোন ঢুনকো ধর্মনা যে ভেঙে যাবে এত সহজে। এই চিৎকার শুনে আজকাল দৌড়ে গিয়ে দেখবেন, বলা হচ্ছে ইসলাম নয়, হেফাজতে ইসলামকে বাচাঁও হেফাজত ইসলামকে বাচাঁও!
তখন আমরা হেফাজতকে বাচাঁবো আর নিজেদের গালি দিতে দিতে চলে আসবো।
যায় হোক, বেশি কথা না বলায় ভাল ধর্ম নিয়ে। যত কম কচলাইবেন তত ধর্ম শান্তিতে থাকবে মানুষের অন্তরে, বিশ্বাসে।
১২টি মন্তব্য
রিমি রুম্মান
আর বাংলাদেশ অর্জনও কিন্তু ধর্ম দিয়ে নয়, বাঙালীআনা দিয়ে___ খুব সত্যি কথা। ভালোলাগা রইল।
আমার মন
🙂 হুম বাস্তবতা বুঝতে হবে।
মোঃ মজিবর রহমান
এই কিছু ধর্ম ব্যাবসায়ী নিয়ে যত গণ্ডগোল,
খুব ভালো লিখেছেন।
আমার মন
🙂 হ্যা ঠিক।
মা মাটি দেশ
মাঝে মাঝে সোনেলায় আসেন আর চমক দেন ভাল লাগল -{@ (y)
আমার মন
এই আর কি :v
লীলাবতী
ভালো লিখেছেন ।
আমার মন
-{@
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা হা হা , ইসলাম বাঁচাও মানে জামাত ইসলাম বা হেফাজত ইসলাম না 🙂
দারুন লেখা ।
আমার মন
সেটাই। :v
শুন্য শুন্যালয়
দারুন লিখেছেন ভাইয়া… নিয়মিত লেখেন না কেনো? মিস করি তো 🙂
আমার মন
সত্যি কথা বলতে মাঝে মাঝে মনে পরে সোনেলার কথা। :p