সাধারন মানুষ এভাবেই ঘৃণা প্রকাশ করেন এখানে। এটি একটি প্রতীকী রাজাকারদের ফাসির মঞ্চ। দর্শনার্থী সাধারন মানুষ ওটার পাশ দিয়ে যাবার সময় এমনি ছবি তুলে। রাজাকারদের গলায় শিকল , কান মলা , জুতার বাড়ি এভাবে চলে ছবি তোলা পর্ব। আমি মোট দুইবার গিয়েছি বাগেরহাট চন্দ্রমহল ইকো পার্কে। ইচ্ছে করেই এখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখেছি এসব। যারা ছবি তুলেন , তারা অধিকাংশই সাধারন মানুষ। কিছু আওয়ামী লীগের । বিএনপি করে এমন একজনকেও পাইনি। রাজাকারদের প্রতি সাধারন মানুষের এই ঘৃণা আশাবাদী করে আমাকে।
এই সুন্দর পার্কটির মালিকের সাথে কথা হয়েছে দ্বিতীয় বার যখন ওখানে গেলাম তখন। অমায়িক এক ভদ্রলোক । সদালাপী , আর্ট গ্যালারী করছেন একটি। ইকো পার্কে প্রেবেশ করেই বাম দিকে প্রথমে দেখা যাবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু ভাস্কর্য ।
জিজ্ঞেস করলাম এসব নিয়ে। কোনো দল করেন ?
উত্তর দিলেন ” এত বছরে আপনি ই প্রথম ব্যাক্তি যিনি জিজ্ঞেস করলেন , কোনো দল করি কিনা ? “
আমি জিজ্ঞেস করলাম ” সবাই কি জিজ্ঞেস করেন “ ?
উনি বললেন ” জিজ্ঞেস করেন- আপনি কি আওয়ামী লীগ করেন ? ” অথচ আমি কো্নো দল করিনা । কোনো দলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস করিনা । শুধু বিবেকের তাড়নায় এই সব ভাস্কর্য এখানে রেখেছি ।
আপ্যায়ন করলেন আমাদের । একসাথে ছবি তুলে বিদায় নিলাম ।
ব্লগে লিখতাম রাজাকারদের বিরুদ্ধে । ফেইসবুকেও চলছে একই ধারা । আমার রাজনৈতিক বিশ্বাস ‘ এন্টি রাজাকার ‘ । প্রিয় উক্তি ‘ তুই রাজাকার ‘। যা আমার ফেবু ইনফোতে আছে । আমার লেখা বা কথায় কিছু মানুষ যারা আমার শুভাকাংখি তারা ইনবক্সে মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করেন ” ভাই/মামা , আপনি কি আওয়ামী লীগ করেন ? ” । অনেকেই নিশ্চিত যে আমি আওয়ামী লীগ করি । আজ ৩ বছরের বেশী সময়- অনলাইনে এমন প্রশ্ন অনেকেই করেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত একজন মানুষও আমাকে জিজ্ঞেস করেন নি ” ভাইয়া/মামা আপনি কি বিএনপি করেন ? ” বা কেউ আজ পর্যন্ত ধারনা করেনি যে আমি বিএনপি করি।
সিদ্ধান্ত , সাধারন মানুষ , অনলাইন এ বিচরণকারী মানুষ , সবারই ধারনা- মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলা মানেই আওয়ামী লীগ করা । এখানেই আওয়ামী লীগের কাছে বিএনপির পরাজয় মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ।
এটি আমার ব্যাক্তিগত পর্যবেক্ষণ। হয়ত অন্যের ভিন্ন পর্যবেক্ষণ থাকতে পারে।
যারা ইতিমধ্যে ধারনা করেছেন , তাঁদের কাছে বিনিত ভাবে এবং দৃঢ় ভাবে বলতে চাই” আমি আওয়ামী লীগ করিনা “
৯টি মন্তব্য
লীলাবতী
আপনার অবজাবেশন সঠিক। আওয়ামী লীগ ব্যাতিত অন্য কোন দলের সাথে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়টি আসেনা। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সক্ষম।
জিসান শা ইকরাম
বিচার হোক এই সব ঘৃণ্য রাজাকারদের ।
প্রজন্ম ৭১
সাধারন মানুষের ধারনাই আসল রায়। সধারনরা সত্যি বলেন। জাতী রাজাকারদের ঘৃণা করে , এতে সামান্যতম সন্দেহ নাই।
জিসান শা ইকরাম
জাতী রাজাকারদের ঘৃণা করে , এতে সামান্যতম সন্দেহ নাই।
ঠিক বলেছেন।
নীহারিকা
সুন্দর পোস্ট, রাজাকারদের শাস্তি অবশ্যই হবে।
জিসান শা ইকরাম
শাস্তি অবশ্যই হতে হবে ।
জবরুল আলম সুমন
কোন যুক্তি তর্কে যাবো না দাদু তবে আমার স্বাধীন কিছু মত প্রকাশ করছি। ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি আমার ঘরে রাজনীতির চর্চা হচ্ছে। পারিবারিক ভাবে আমাদের ঘরের সবাই আওয়ামীলীগ করেন। আমার বড় চাচা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, সম্মুখ যুদ্ধ ছাড়াও তিনি ভারত ও রাশিয়া থেকে অস্ত্র সংগ্রাহক দলের সদস্য ছিলেন (বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্ক আওয়ামীলীগের সহসভাপতি)। আমার বাবা সরাসরি মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিলেও মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করেছেন সে সময়ে। এই কারণে পাক বাহিনী আমাদের বাড়ি সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেয়, পাকিস্থানী সেনাদের আগমনের খবর কোন না কোন ভাবে আগে থেকেই টের পেয়ে যাওয়ার কারণে বাড়ির সকল সদস্য সেদিন পালিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন নইলে তাদের ভাগ্যে আসলে কি ঘটতো তা সহজেই অনুমেয়।
যাহোক উপরের অংশগুলো যুক্তি তর্ক বা মতামতের অংশ নয়, হঠাৎ করে মনে পড়ে গেলো তাই বলা। আমি কোন দল করিনা, সত্যিই আমি কোন দলের নই। খুব সহজ ভাবে বললে বলবো বর্তমান সময়ে দুটো দলকেই আমি প্রচন্ড ঘৃণা করি সঙ্গত কারণেই। আওয়ামীলীগ এখন কেবল মাত্র টিকেই আছে মুক্তিযুদ্ধ বিক্রি করে, মুক্তিযুদ্ধের স্লোগানও তারা ছিনতাই করে তারা তাদের রাজনৈতিক স্লোগানে পরিণত করেছে। অথচ আওয়ামীলীগের মধ্যেও রাজাকার আছেন এটাও আমরা জানি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই-কেও রাজাকার বলা হয়, হয়তো অনেকের কাছে প্রমাণ আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও তার বেয়াই প্রসঙ্গে বলেছিলেন “আমার বেয়াই রাজাকার হলেও যুদ্ধাপরাধী নয়।” পক্ষান্তরে বি.এন.পি-র মধ্যেও কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা আছেন, পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আছেন।
আমার কাছে মনে হয় কি দাদু, আজকের এই সময়ে এসে আওয়ামীলীগ বা বি.এন.পি-র মধ্যে নীতিগত কোন পার্থক্য নেই, নামেই কেবল ভিন্নতা আছে। যে দলই ক্ষমতায় যায় তারাই ক্ষমতাকে ধর্ষণ করে।
রাজনীতি আজ আর জনগণের কল্যাণে করা হয়না, যারাই আজ রাজনীতিতে নামে তারাই কেবল ব্যক্তি স্বার্থে নামে, নিজের স্বার্থে নামে।
আমাদের আর মুক্তি নেই কোন ভাবেই। অথচ আমরাই প্রতি পাঁচ বছর পর পর আমাদের শাসক শোষক নির্ধারন করে ভোট নাম গণতান্ত্রিক(!) অধিকার প্রয়োগ করে…
জিসান শা ইকরাম
দুই দলের পার্থক্য টা আমার কাছে এমন ।
আওয়ামী লীগ = এদের মধ্যে রাকাকার থাকলেও সেই রাজাকারদের দিয়েও ব্লাতে পেরেছে ” রাজাকারদের বিচার চাই’
বিএনপি = এদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও , তাদের দিয়ে বলাতে পেরেছে । রাজাকারদের বিচার চাই না।
তৌহিদ
সাধারন মানুষ , অনলাইন এ বিচরণকারী মানুষ , সবারই ধারনা- মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলা মানেই আওয়ামী লীগ করা । এখানেই আওয়ামী লীগের কাছে বিএনপির পরাজয় মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ।
এই যুক্তি এখনো ধারণ করে অনেকেই। বিএনপির সাথে আওয়ামীলীগের পার্থক্য এখানেই।