এই যে অন্তরাত্মার আত্মাহুতি ঘটছে প্রতি মুহূর্তে ক্ষণে ক্ষণে, নিঃস্পৃহ হয়ে যাচ্ছে অনুভুতির তীক্ষ্ণ ধারালো কোষগুলো। সময়ের কাঁটা ঘুরে চলছে অবিরত, হারাচ্ছে দিগন্তের অতল গহ্বরে। হারাচ্ছে দিন দিনান্তের কাছে মিশে যাচ্ছে গোধূলি লগনের লগ্নিমায়, রক্তাক্ত গোধূলি লগন। নদী কল-কাকালিত হয়ে বয়ে যাচ্ছে, কিন্তু মন থেমে গেছে অপেক্ষায়। আমার সিক্ত সকাল থেকে শুরু হয়ে গগন নীলাম্বরী রশ্মিরেখা মিলিয়ে গিয়ে বিলীন হচ্ছে কোন কুঞ্জ ঝোপের ওপারে তা কবি নিজেও অজ্ঞাত।
হাঁটছি আমি প্রস্তর যুগ থেকে মহাকালের সীমারেখা পেরিয়ে নিরুদ্দেশ মহাপ্রলয়ের ভবিষ্যৎ গন্তব্য। অবিশ্বাস এর ছোঁয়ায় হিয়া, দিয়া অনলে অশনিত হয়ে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ধোঁয়া উঠছেনা, হচ্ছে ধোঁয়াবিহীন। হৃদপিণ্ড কুঁড়ে খাবলে রক্ত সঞ্চালন আর জীবনীশক্তি দুটোই কমিয়ে দিচ্ছে এক মোহময়ই ,ঘাতকিনী কীট। আমি দিঘীর বিশালতা ,তোমার মত শিশির বিন্দু কনা নই। মহাতান্ডবের ক্ষিপ্র, বিক্ষিপ্ত, উম্মাদ নাচনে শামিল হয়ে আজ ক্ষয়ে যেতে চাইছে আত্মা, হতে চাইছে কালো গোলাপ। তুমি এসেছিলে সরু চলনে, রক্তাক্ত করেছ তোমার বহুমূল্য সুউচ্চ হাই হিলের আঘাতে। সাথে করে নিয়ে গেছো আত্মার স্বাধীনতা। কবিতা লিখতে চাইলে পারিনা, কলমের ডগায় ঝরে আগুন,ক্ষোভ,ক্রোধ আর বিদ্রোহ।
আলো কমে আসছে, দিগ-দিগন্ত হয়ে যাচ্ছে ঝাপসা। জীবনের সমান্তরাল রেখাগুলো হয়ে যাচ্ছে বক্র ,বিপ্রতীপ। ঝাপসা গুমোট অন্ধকারে আলো-আধারের খেলায় তোমার ছায়ার প্রতিবিম্বের সাথে প্রতিনিয়ত চলছে ভুল বোঝাবুঝি, দৃষ্টিভ্রম। হে শুভ্রতার দেবী তুলে নাও এই কলিজাহীনাদের ধরণি থেকে। যে বোঝেনি পুষ্প কে ভালবেসে সেই গাছের গোঁড়ায় পানি দেওয়া আর ছিঁড়ে নিয়ে গিয়ে ফুলদানীতে সযতনে মৃত্যুর কোলে সোপে দেওয়া এক জিনিস নয়। আমায় যোজন যোজন দূরে নিয়ে চলো দেবী, যেন আমার আঁখিতে নিদ্রা ভর করে, যেন নেমে আসে নিঝুম পুরীর নিস্তব্ধতা। মিথ্যা সব ওয়াদা গুলোর সাথে আমার নাফরাত থাকবে সারাজীবন। সযত্নে ঘৃণা করব সব স্মৃতিগুলোকে।
আমি মুক্তি চাই তোমার জিঞ্জির বন্ধনি থেকে, আমি মুক্তিকামী।
৯টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
লেখায় ভরপুর উপমা লেখকের দক্ষতার প্রমাণ দিচ্ছে। ক্ষোভের স্পষ্ট উচ্চারণ। ভালো লেগেছে ভাইয়া। দীঘির বিশালতাই এক মুক্তি। এক কণা শিশির বিন্দুর প্রতি এত ক্ষোভ কি তার থাকা ভালো?
মাসুদ আলম
কিন্তু শিশির বিন্দু কনা যে চমকায়, হাসির ঝিলিক দেয়। স্মৃতির রোমন্থন গুলোই হয়ে দারায় ক্রোধ। ভাল থাকবেন আপনি শুন্য শুন্যালয় ।
অরণ্য
যদি বলি লেখা, সে অসাধারণ আমার কাছে। (y)
যদি ভাবি আপনি আমাকে পড়ে শোনালেন, তাহলে সাথেসাথে আমি বলে উঠতাম। “নো ব্রাদার, ঘৃণাকে এতো যত্ন করতে নাই”।
স্মৃতিকে সযত্নে ঘৃণা করতে গিয়ে যে কেউ বেনজিন রিং-এর ইলেক্ট্রনের দশায় পড়ে যাবে নিশ্চিত। মুক্তি আছে লিনিয়ার চেইনে। আমি তাই মনে করি। আপনার লাইফের ডেস্কটপ উইন্ডোর স্মৃতির শর্টকাট ফোল্ডার ডিলিট করে দিন। হার্ডডিস্ক থেকে আপনি তা ডিলিট করতে চাইবেন না, আমি জানি। নতুন নানা ফোল্ডার খুলুন; ফাইলে কাজ করুন – বর্তমানের। ভাল থাকুন। 🙂
মাসুদ আলম
হার্ডডিস্ক এ বেশি জায়গা নেই ভাই। নতুন উইন্ডোজ ১০ এর প্রতিও আগ্রহ কম। I/O ডিভাইস নষ্ট হয়ে গেছে।
ভাল থাকবেন ভাই অরণ্য। পড়ে দেখা জন্য ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
আমি দিঘীর বিশালতা ,তোমার মত শিশির বিন্দু কনা নই। মহাতান্ডবের ক্ষিপ্র, বিক্ষিপ্ত, উম্মাদ নাচনে শামিল হয়ে আজ ক্ষয়ে যেতে চাইছে আত্মা, হতে চাইছে কালো গোলাপ।
কলমের ডগায় লেখা আর বাস্তব সংগ্রাম এক সঙ্গে চালাতে পারলে খুব ভাল হত ভাই।
অনেক সুন্দর লিখেছেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা।
মাসুদ আলম
দোয়া করবেন যেন তাই চালাতে পারি।
নীলাঞ্জনা নীলা
কেমন ঘৃণা ঘৃণা গন্ধ পাই!
একটা কথা মুক্তি চাইলেই পাওয়া যায়না। এড়িয়ে যেতে যে পারে, সে মুক্তিও পেতে পারে।
কবিতা (y)
মাসুদ আলম
বাগানের বেড়াজালে আটকে গেছি আপু, বের হতে পারিনি। তবে কোন মোহও নেই। কিছু একটা নিয়ে তো থাকতে হবে। তাই ক্ষোভ ই সই।
আপনার লেখা গুলো খুব ভাল লাগে আপু। আমি পড়ি। ভাল থাকবেন।
মাসুদ আলম
আগে তো দেখছি অনেক কিছু লিখতাম