পাঁচঃ 

পরদিন সকালে অফিসে এসে ডেস্কে পেলাম ফাইলটা। ওসি মজিদ যে বেশ করিৎকর্মা লোক তা বুঝা যায়। সাত-সকালেই ফাইল পাঠিয়ে দিয়েছে। ভালোই হয়েছে আমার জন্য। সময় বাঁচবে অনেক।

তদন্তের রিপোর্টটা উল্টাতে লাগলাম। প্রথমেই আছে প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি, নামঃ মঈনুল ইসলাম তালুকদার। সন্দেহের কারণ হচ্ছে, ইনি আশরাফ সাহেবের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী।

দ্বিতীয় সন্দেহভাজন ব্যক্তি হলেন রমযান আলী। ইনি আগে আশরাফ সাহেবের একান্ত লোক ছিলেন। কিন্তু কয়েকবছর আগে তিনি সেই দল ত্যাগ করে আশরাফ সাহেবের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেন। নরসিংদীর স্থানীয় হওয়াতে বেশ কিছু এলাকায় তার প্রচণ্ড প্রভাব রয়েছে।

তৃতীয় সন্দেহভাজন ব্যক্তি হলেন মোঃ জালালউদ্দিন। ইনি বিশষ্ট ব্যবসায়ী। নরসিংদীর পৌর মেয়র হওয়ার পরে আশরাফ সাহেবের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে তার অনুসারী ব্যবসায়ীদের লাভবান করতে গিয়ে এনার ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছেন।

যদিও তাদের জবানবন্দি ও অন্যান্য পর্যালোচনা সাপেক্ষে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের সবাইকে সন্দেহের তালিকা থেকে মুক্ত করেছেন। এছাড়াও তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজ দায়িত্বে আরো বেশ কিছু লোকের ব্যাপারে তদন্ত করে দেখেছেন যাদের কোন না কোন ভাবে মোটিভ থাকতে পারে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। সবশেষে সবাইকেই সন্দেহ থেকে মুক্তি দিয়েছেন।

এ মূহুর্তে আসরাফ সাহেবের কথাটাই মনে পড়ছে। এ রাস্তায় গিয়ে আসলেও লাভ হবে না। তাও ইচ্ছা করলাম প্রধান তিন সন্দেহভাজনের সাথে কথা বলার।

প্রথমেই গেলাম মঈনুল সাহেবের কাছে। উনি থাকেন নরসিংদী শহরে। বেশ আলিসান বাড়ি।

আশরাফ সাহেবের মেয়ের কথা তুলতেই বললেন,

অফিসার আমরা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী মতাদর্শে ভিন্ন বলে, তাই বলে ওনার মেয়েকে অপহরণ করে আমার কি লাভ? আমারও তো নিজের মেয়ে আছে। আজকে ওনার মেয়েকে যদি অপরহণ করি তাহলে আগামীকাল যে উনি আমার মেয়েকে অপহরণ করবে না এটার নিশ্চয়তা কোথায় !

এই কথার পরে আর কথা চলে না। এরপরে গেলাম রমযান আলীর কাছে। ইনি থাকেন মনোহরদীতে। এনার জবাব ছিল,

  • ভাই, আশরাফ সাহেব আমার পিতার মত। আমি ওনার দল ত্যাগ করেছি সত্য। কিন্তু ওনাকে আমি এখনো আগের মতই সম্মান করি। আর ওনার মেয়েকে অপহরণ করার কথা ভাবাও আমার পক্ষে সম্ভব না।

আর সবশেষে গেলাম ব্যবসায়ী জালাল সাহেবের কাছে। উনি থাকেন নরসিংদী মূল শহর থেকে একটু দূরে।
আশরাফ সাহেবের মেয়ের কথা জানতেই বললেন,

  • স্যার, আমাকে রেহাই দেন একটু। আমি ভদ্রঘরের সন্তান, তাদের মত ক্রিমিনাল না। তিনি আমার ক্ষতি করেছেন দেখে আমিও তার ক্ষতি করবো কেন? কুকুর আপনাকে কামড় দিলে কি আপনিও কামড়াবেন নাকি?

আগেও বুঝেছিলাম এভাবে আসলেই কোন লাভ নেই। তাও একটু পরীক্ষা করে দেখা। এবার অন্য উপায়ে এগুতে হবে। শুরুতে হবে যতটা অর্ডিনারী ভেবেছিলাম ঘটনা আসলে তার চেয়েও জটিল হয়ে যাচ্ছে।

কিভাবে কি করা যায়, ভাবছি। মগজের স্টিয়ারিংগুলো বনবন করে ঘুরছে।

ছয়ঃ

অফিসে এসে আবার দেখতে শুরু করলাম রিপোর্টটা। আশরাফ সাহেবের মেয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে সেখানে।

মেয়ের নাম হচ্ছে জান্নাতুন নাহার। ডাক নামঃ রূপন্তী।
নারায়ণগঞ্জ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ালেখা করেছে। আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগে সেখান থেকে পাশ করে বের হয়েছে। একটু খটকা লাগলো।

এইচএসসি পাশ করেছে আজ থেকে ১০ বছর আগে। মানে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে তার ৭ বছর লেগেছে। যেখানে সেশনজটের কারণে সর্বোচ্চ ৫ বছর লাগতে পারে !
এমনও হতে পারে ফেল করেছে। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে ভর্তি হতে পারাটা, তাও সিএসইর মত বিষয়ে, অনেক বড় ব্যাপার। যথেষ্ট মেধা আছে বলেই পেরেছে। তাহলে ফেলের তো প্রশ্নই উঠে না।

আরেকটা কথা লিখা আছে রিপোর্টে। মাস সাতেক আগে তার স্বামী সোবহান ও একবছর বয়সী সন্তানকে গুলি করে মারা হয়েছিল নরসিংদী ব্যাংককের সামনে থেকে। সেদিন সোবহান ও তার ভাই ব্যবসায়ের জন্য ব্যাংক থেকে ৫০ লক্ষ টাকা তুলেছিল। সোবহানের ভাই যদিও বেঁচে আছে কিন্তু চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছে।

ডাকাতির কেস বলে ধারণা করছে পুলিশ। যদিও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এমনকি টাকাও উদ্ধার করতে পারেনি। এরপরে রূপন্তীর মানসিক অবস্থা ভালো না থাকায় তাকে একজন মনোবিজ্ঞানীর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রায় তিন মাস চিকিৎসার পরে সে আবার সুস্থ-স্বাভাবিক হয়ে বাড়িতে ফিরে। এরপর থেকে সাধারণভাবেই সে জীবন কাটাচ্ছিল।
আবারো একটা খটকা লাগলো। এই সাধারণ ব্যাপারেই তিন মাস লাগে !

মানসিক চিকিৎসার ব্যাপারে অল্পবিস্তর ধারণা আছে। সুতরাং মোটামুটি জানি যে বিশেষ কোন কারণ না থাকলে এধরণের পরিস্থিতিতে এত বেশি সময় লাগার কথা না।

তারমানে কি রূপন্তীর ক্ষেত্রে বিশেষ কোন কারণ ছিল ? আর থাকলেই বা সেটা কি ?
জানতে হবে এটা আমাকে। হতে পারে এটাই কেসের টার্নিং পয়েন্ট। মন বলছে আসল রাস্তা পেয়ে গেছি।

কিন্তু জানবো কিভাবে ? তার বাবাকে জিজ্ঞেস করবো ?
কিন্তু আরো একবার ওই রূঢ় আচরণের মুখোমুখি হওয়ার ইচ্ছে নেই। ওসি মজিদ বা এসপি মোতালেবও এই এলাকাতে এসেছেন বেশিদিন হয়নি, তাদের ও জানার কথা না। তাহলে ? উপায় না থাকলে তার বাবাকে গিয়েই জিজ্ঞেস করতে হবে।

ফোনের শব্দে চমকে উঠলাম। মনের ভাবনায় এতটাই ডুবে গিয়েছিলাম যে সকাল সাড়ে ১০ টা বাজে তার খেয়ালও নেই আমার।

ফোন এসেছে ঢাকার র‍্যাবের সদর দপ্তর থেকে। আজকে সেখানে এক লাঞ্চ পার্টিতে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
সময়মত পৌঁছতে হলে এখনই রওনা দিতে হবে। কেসের চিন্তাভাবনা স্থগিত রেখে রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।

সাতঃ

যত যাই হোক, কেসের চিন্তা তো আর মাথা থেকে ফেলে দেওয়া যায় না। পুরোটা সময় কেসটা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগলো। তখনই হটাত মনে পড়লো যে মনোবিজ্ঞানী থেকে রূপন্তী চিকিৎসা নিয়েছে উনি ঢাকাতেই থাকেন। নামটা মনে আছে কেবল, ড. পারভীন আখতার।

ওনার ঠিকানা বের করতে হবে। অবশ্য এটা ব্যাপার নয়। কারণ অনেক পরিচিতি আছে তার।

ঠিক করলাম ওনার সাথেই দেখা করে জেনে নিবো ব্যাপারটা। আর উনি বিস্তারিত বলতেও পারবেন যে আসলে রূপন্তীর সমস্যাটা কি ছিল।

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ওনার সাথে দেখা করতে গেলাম। রূপন্তীর কথা জিজ্ঞেস করতেই সাফ জানিয়ে দিলেন যে রোগীর কথা কাউকে জানাবেন না।

আমার পরিচয় দিয়ে আর রূপন্তীর বর্তমান অবস্থা জানাতেই অবশ্য মুখের ভাব বদলে গেলো। রূপন্তীকে উনি চিনেন ভালো করেই। নিজের বাড়িতে রেখে তিনমাস চিকিৎসা করিয়েছেন। নিজের মেয়ের মত আদর করেন রূপন্তীকে।

এত দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসার কারণ জানতে চাইলে আমাকে অবাক করে দিয়ে বলেন,

  • ” ছয় বছর আগে যখন রূপন্তী ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষ শেষে চতুর্থ বর্ষে উঠে তখন হটাত করেই তার সমস্যা দেখা দেয়। অনেকটা বিকারগ্রস্তের মত হয়ে যায় সে। সে সময় প্রায় চার মাস চিকিৎসার পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠে রূপন্তী। এরপরে টানা ছয়মাস তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এরপরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে সে। “

ও এই তাহলে রূপন্তীর ইঞ্জিনিয়ারিং পাশে এত সময় লাগার কারণ। মনে মনে ভাবলাম আমি। বললাম,

  • – রূপন্তীর বিয়ে হয় কবে ?
  • – সুস্থ হওয়ার পর পরই। বিয়ের পরেই সে পাশ করেছে।
  • – আচ্ছা রূপন্তীর আগের সমস্যাটার কারণ কি ছিল ?
  • – সেটা বলতে পারি না। তবে সে বয়সে প্রেমঘটিত সমস্যা বেশি হয়। রূপন্তীকেও দেখে আমার তাই মনে হয়েছে। যদিও তার বাবা সমস্যার কথা চেপে গেছেন। আর এবার যখন আসলো আমি সন্দিহান ছিলাম যে আদৌ তার পূর্ণ সুস্থতা সম্ভব কিনা।
  • – সে সময়টায় কি হয়েছিল সেটা কি ভাবে জানতে পারি বলতে পারেন ?
  • – সেটা কি করে বলবো ?
  • – তাও ঠিক।
  • – রূপন্তীর কোন ফ্রেন্ডকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। তারা হয়তো জানবে।
  • – তাই করতে হবে। আচ্ছা আজ তাহলে আসি। অনেক সময় নষ্ট করলাম আপনার।
  • – না না। রূপন্তী আমার মেয়ের মত। ওর ভালোর জন্য যা করা আমার পক্ষে আমার জন্য সম্ভব আমি সব করবো।
  • – ধন্যবাদ।

চলে আসছি, এমন সময় উনি আমাকে ডেকে বললেন,

  • ” অফিসার ! একটা কথা মনে পড়লো। “

দাঁড়িয়ে থেকেই বললাম,

  • – জ্বি বলেন।
  • – রূপন্তীর ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল। আপনি ওর ডায়েরি থেকেও জানতে পারেন ঘটনাটা কি। ডায়েরি থেকে মনে হয় ফ্রেন্ডদের থেকেও বেশি জানতে পারবেন।
  • – অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ডক্টর। অনেক উপকার করলেন আমার।

খুশি মনে বের হয়ে এলাম। পরবর্তী পদক্ষেপ রূপন্তীর ডায়েরি চেক করা। সেটার জন্য ওর বাবার সাথে কথা বলতে হবে আমার।

আটঃ

নারায়ণগঞ্জ এসেই ফোন দিলাম আশরাফ সাহেবকে। জানতে চাইলাম রূপন্তীর ডায়েরির কথা।
বেশ অবাক হলেও জানালেন ওটা তাদের নরসিংদী সদরের বাড়িতে গেলে পাবো।

বললাম যে আমি তাদের বাড়ি যাচ্ছি। উনি যেন দারোয়ানকে বলে রাখেন।
উনি জানালেন যে উনি বলে দিবেন।

রাত প্রায় সাড়ে ৯টা বাজে। তখনই বের হয়ে পড়লাম।
রূপন্তীদের বাড়ি যেতে প্রায় ঘন্টাখানেক লেগে গেলো।

দারোয়ানক গাড়ি দেখেই গেট খুলে দিলো। বেশ সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো ডুপ্লেক্স বাড়ি। উপরের একেবারে কোণার ঘরটা রূপন্তীর।

ডায়েরিগুলো কোথায় আছে কে জানে। সময় কম। তাই দেরি না করে ঘাটতে শুরু করলাম।
রূপন্তীর টেবিলের নিচের ড্রয়ারেই পেয়ে গেলাম ডায়েরিগুলো।

অনেকগুলো ডায়েরি আছে এখানে। আজ থেকে ১৬ বছর আগের সনের ডায়েরি থেকে শুরু হয়েছে। শেষ ডায়েরিটা আজ থেকে ছয় বছর আগের।
তারমানে ওর বিয়ের আগের সব ঘটনা এই ডায়েরিগুলোতেই পাওয়া যাবে।

ডায়েরিগুলো নিয়ে গাড়িতে উঠে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় বসেই পড়বো এগুলো।

প্রথম ডায়েরিটা রূপন্তীর সপ্তম শ্রেণিতে থাকতে লেখা। এরপর থেকে নিয়মিত প্রতিবছর সে ডায়েরি লিখে যাচ্ছে।
আমি ঠিক ছয় বছর আগে, তার লেখা শেষ ডায়েরিটা পড়তে শুরু করলাম।

প্রাত্যহিক ঘটনাগুলোই খুব সুন্দরভাবে সংক্ষিপ্ত ভাষায় গুছিয়ে লেখা। হাতের লেখাও চমৎকার।

প্রথম দিকে কেবল তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা রয়েছে। বেশ কিছু পাতা উল্টানোর পরে একটা নাম এলো, হৃদয় !
ডায়েরির অংশগুলো পড়লে বুঝা যায় এই হৃদয়কে প্রচণ্ড ভালোবাসতো রূপন্তী।

পাতা উল্টাতে উল্টাতে এক জায়গায় এসে থেমে গেলাম ……

২৯শে মার্চ ২০০৯

আজ আমার জন্মদিন। দুপুরে বাসায় বাবা বিরাট এক পার্টি দিয়েছে। কিন্তু আমার মনটা পড়ে আছে হৃদয়ের জন্য। ইশ ! কখন যে পার্টিটা শেষ হবে আর আমি হাতে বানানো ছোট্ট কেকটা নিয়ে যাবো তার কাছে। আজকে আমার জন্মদিন বলে মা নিজ হাতে রান্না করছে। মায়ের হাতের রান্না করা খাবারও ওর জন্য নিয়ে হবে। মায়ের রান্না খেলে পুরা পাগল হয়ে যাবে সে। ব্যাচেলর ছেলেটা, কি খায় না খায় কিছুই ঠিক নাই। আজ যদি একটু ভালো খাওয়াতে পারি তাহলে নিজের জন্মটাকে স্বার্থক মনে হবে।

এরপরে তাদের নিত্য নৈমিত্তিক প্রেমের ঘটনা ছাড়া। হটাত এক জায়গায় এসে থেমে গেলাম …

১ এপ্রিল ২০০৯

আজ আমাদের রিলেশনের দ্বিতীয় অ্যানিভার্সারি। ভাবছি কি গিফট দেওয়া যায়। একটু আগেই ফোন দিয়ে বললো ওর নাকি জরুরি কথা আছে। কি এমন হতে পারে ! যাই দেখা করে আসি। ধুর ! গিফটটাও কেনার টাইম দিলো না।

২ এপ্রিল ২০০৯

কালকে অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিল ও। বাবা নাকি ওর মেসে গিয়ে ওকে আমার থেকে দূরে থাকতে বলে এসেছে। এরপর থেকেই বাবার গুণ্ডাগুলো ওর উপর রাত-দিন নজর রাখছে। আমি ওকে বলেছি, ” ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আমি আছি না। ” কিন্তু বাবা জানলো কি করে ? আচ্ছা আমি তো ওকে বড় বড় কথা বলে এসেছি। কিন্তু এখন কি করবো ?

উমমম ! ওর সাথে পালিয়েই যাবো নাকি ভাবছি। এছাড়া আর কোন রাস্তা দেখছি না। আম্মু বলছে কালকে নাকি বাবার দলের কোন নেতার পরিবার আসবে আমাকে দেখতে। তার আগেই ভেগে যাওয়া ভালো। তাহলে আগে হৃদয়কে ফোন দিয়ে নেই।

হৃদয়কে বলেছি শহরের ডিসির পার্কটার গেটের সামনে থাকতে। আমি যাচ্ছি …

এরপরে আর কোন লেখা পেলাম না। তারমানে এই দিনেই রূপন্তীর জীবনে ঘটে গেছিলো চরম ঘটনা যার জন্য একেবারে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল সে।

কি হয়েছিল সেদিন ? হৃদয় কি পার্কে যায়নি। কাপুরুষের মত ঘরে বসে ছিল ? নাকি ধোঁকা দিতে চেয়েছিল রূপন্তীকে। কিন্তু রূপন্তীর বর্ণনায় মনে হয়নি হৃদয় ওরকম ছেলে। আচ্ছা এই হৃদয়ের ব্যাপারে জানা দরকার। কি হয়েছিল আসলে ছেলেটার ? আর এই ছেলেই বা এখন কোথায় ?

( চলবে )

৫১৭জন ৫১৭জন
0 Shares

২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ