উন্নয়নশীল হলেও বর্তমান বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এখানে বেশিরভাগ লোক দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। উপরন্তু মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নিরক্ষর। বাকি এক-তৃতীয়াংশ স্বাক্ষর জনসাধারণের মধ্যে খুব কমই উচ্চশিক্ষিত। তাছাড়া উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবী অংশ উচ্চশিক্ষা ও উন্নত জীবনযাপনের নামে পাড়ি জমাচ্ছে উন্নত দেশগুলোতে। ফলে শিক্ষিত যে অংশটি দেশে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আছে তাদের মধ্যে মেধাবীদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই প্রয়োজনের চেয়ে কম। উপরন্তু আমাদের শিক্ষার মান বর্তমানে অনেক অবমূল্যায়িত হয়েছে, একথা বলা হয়তো ভুল হবে না।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাকে এক কথায় আধা-সামন্তবাদী ও আধা-পুঁজিবাদী বলা যায়। তাই সামন্ত সমাজের নানা ধরনের কুসংস্কার ও গোঁড়ামি, ধর্মীয় আচরণে ও সসমাজমূলে আবদ্ধ হয়ে আছে। এছাড়া চরম অশিক্ষা-কুশিক্ষা, অপশিক্ষা ও দারিদ্রতা একসাথে সমাজকে এমন একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থার মধ্যে ধরে রেখেছে যেখানে জ্ঞান চর্চা ও বিকাশ অত্যন্ত মন্থরগতিতে চলছে। এরূপ একটি সামাজিক অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশের মানসিক রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি অত্যন্ত অবহেলায় এবং একান্ত অগোচরেই থেকে গেছে। সাধারণ শিক্ষা এবং সামাজিক পগ্রতির আন্দোলনে বর্তমানে শারীরিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা হচ্ছে। সরকারের কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি এনজিওদের কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ তথাপি এক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি এখন পর্যন্ত তেমন গুরুত্ব লাভ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য আন্দোলন কেবলমাত্র সেমিনার সিম্পোজিয়ামের মধ্যে আবদ্ধ আছে একথা বললে হয়তো অত্যুক্তি করা হবে না। মানসিক স্বাস্থ্য আন্দোলনের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাঈ চলছে বিশেষ করে শারীরিক রোগের ডাক্তার ও মনোচিকিৎসকদের মাধ্যমে। এখানে প্রকৃত মনোবিজ্ঞানী বা চিকিৎসামূলক মনোবিজ্ঞানীদের তেমন কোন অংশগ্রহণ কার্যত লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এসব প্রচেষ্টার সাথে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কোন সম্পর্কও গড়ে ওঠেনি অদ্যাবধি।
বাংলাদেশের মানসিক রোগ সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে নানা রকমের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। মানসিক রোগকে তারা জ্বীন-পরী ভূত ও নানা রকমের অশরীরী আত্মার দ্বারা ব্যাখ্যা করে থাকে। এসব রোগীদের চিকিৎসা হয় সাধারণত গ্রাম্য ওঝা-দরবেশ, পীর ফকিরদের মাধ্যমে। ফলে দেখা যায় রোগীরা মানবেতর জীবন-যাপন করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করে থাকে। এই সকল পদ্ধতিগুলো ক্ষেত্র বিশেষ মধ্যযুগীয় বর্বর ইউরোপের অনুরুপ। সামাজিক প্রচলিত ধারণা ও ধর্মীয় গোঁড়ামির সাথে এই চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে আছে। তাই খুব সহজে এর মূলোৎপাটন করা সম্ভব নয়।
১৮ কোটি মানুষের এই দেশে কেবলমাত্র পাবনাতে অবস্থিত একটি মানসিক হাসপাতাল নিতান্তই অপ্রতুল। তাছাড়া মেডিকেল কলেজগুলোতে যে একটি করে মানসিক ওয়ার্ড রয়েছে তার ধারণ ক্ষমতা ও ব্যবস্থাপনা চরম হাস্যকর। তাছাড়া এসব চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলোতে কেবলমাত্র মনোচিকিৎসগণ চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। যেখানে পাশাপাশি চিকিৎসামূলক মনোবিজ্ঞানীদের এবং থেরাপি প্রদানকারীদের কর্মকাণ্ড একান্তই প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে তা অনুপস্থিত। এছাড়া উক্ত হাসপাতালগুলোতে এখনো চিকিৎসার আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রেরও ঘাটতি রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে।
বাংলাদেশের মানসিক রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা করতে হলে এবং মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে ব্যাপক ভিত্তিক সরকারি ও বেসরকারি কর্মসূচি পালন করতে হবে। কেননা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) এর মতে জনস্বাস্থ্য বলতে জনসাধারণের কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যকেই বুঝায় না, বরং শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও সমান গুরুত্ব বহন করে। মানসিক রোগের চিকিৎসা করার পাশাপাশি মানসিক রোগ যাতে সৃষ্টি না হয় সেজন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর এজন্য বর্তমানে শক্তিশালী প্রচারমাধ্যমগুলোর দ্বারা ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। স্কুল-কলেজ এমনকি উচ্চ শিক্ষিত লোকদের মধ্যেও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টির কাজ করতে হবে।
শারীরিক স্বাস্থ্যকে নিশ্চিত করতে হলেও চাই মানসিক সুস্থতার নিশ্চয়তা। আত্মহত্যার প্রবনতা, মাদক গ্রহণসহ নানাধরনের সামাজিক সমস্যা, দ্বন্দ, সন্ত্রাস, বিবাহ বিচ্ছেদ ইত্যাদি নিরসনের জন্য চাই মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে ব্যবহারিক ও কার্যকরী জ্ঞান।
মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষার প্রসার ও প্রচারই পারে সমাজ থেকে নোংড়া ও কুসংস্কারগুলোকে দূর করতে এবং পাশাপাশি মানসিক রোগীদের মানসিক মুক্তি ঘটাতে। আজ বিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষের যুগে দাঁড়িয়ে আমরা তাই মানসিক রোগীদের মুক্তি কামনা করি। উন্নতি হোক মানসিক স্বাস্থ্যের, জয় হোক মানবতার। সমাজ হোক উদ্ভাসিত জ্ঞান ও সত্যের আলোকে আমাদের সমস্ত ধ্যানে চিন্তা-চেতনায় এবং কর্মে।
————
* লেখার তথ্য- কাজী সাইফুদ্দীন রচিত অস্বভাবী মনোবিজ্ঞান।
* The Inner World Of Mental Illness by Kalplan, Bert.
৩৯টি মন্তব্য
মাহবুবুল আলম
তৌহিদ ভাই!
বাংলাদেশে অনেক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিলেও মানসিক শিক্ষার দিকটি বরাবরই উপেক্ষিত।
জনগুরুত্বপূর্ণ এমন একটি পোস্ট দেয়ার জর্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!
ইঞ্জা
আমি সম্পূর্ণ একমত ভাইয়ের সাথে।
তৌহিদ
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই।
তৌহিদ
একদম ঠিক বলেছেন ভাই, আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা খুবই প্রয়োজন। এরফলে নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছে মানুষ। আত্মহত্যার প্রবণতাও বাড়ছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা রইলো ভাই।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সময়োপোযোগী এবং প্রয়োজনীয় একটা চমতকার লেখা লিখেছেন। অজ্ঞতা, কু সংস্কারের কারণে সাধারণ নিরীহ মানুষ যে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না তা আপনার লেখায় প্রকাশ পেয়েছে। ধন্যবাদ এমন একটা লেখার জন্য।
তৌহিদ
আসলে মানসিক শিক্ষায় শিক্ষিত না করলে দক্ষ জনবল তৈরি করা সম্ভব নয় ভাই। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সবসময়।
সুপায়ন বড়ুয়া
“উন্নতি হোক মানসিক স্বাস্থ্যের, জয় হোক মানবতার। সমাজ হোক উদ্ভাসিত জ্ঞান ও সত্যের আলোকে আমাদের সমস্ত ধ্যানে চিন্তা-চেতনায় এবং কর্মে। “
যেদেশে সদ্য স্বাধীন দেশে জাতীর পিতাকে খুন করে
কেক কেটে উৎসব করে। সে দেশে বিকলাঙ্গ এক প্রজন্ম গড়ে উঠে।
মহামারিতে যখন ঘরে থাকতে বলি
তখন বেড়ে যায় মানুষের চলাচল
নামাজে জানাযায় নামায় ঢল।
তবুও দেখি স্বপ্ন মানুষের হোক আবাস ভুমি
প্রিয়তম মাতৃভুমি।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
তৌহিদ
একদম ঠিক বলেছেন দাদা। আমাদের সবারই মানসিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে এদেশ কখনওই দক্ষ জনশক্তি পাবেনা। ফলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে। সমাজে অনাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে শুধুমাত্র মানসিক শিক্ষার অভাবে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।
ইঞ্জা
দুঃখজনক ভাবে আমাদের শিক্ষার হারের মান নির্ধারণ করা হয় নিজের নাম লেখার উপরে, সত্যিকারের শিক্ষা এবং মানবিক বিকাশে কোন ধরণের শিক্ষা এই দেশে আছে তা আমার জানা নেই।
সময় উপযোগী লেখাটির জন্য ধন্যবাদ ভাই।
তৌহিদ
এটাই হচ্ছে আসল কথা। স্বাক্ষর জ্ঞান আর শিক্ষিত এক্সে এক জিনিস নয় এটাই বুঝানো মুশকিল। অথচ সাধারণ স্বাস্থ্য জ্ঞান যে কত অপরিহার্য একটি বিষয় তা সবাইকে বোঝাতে হবে। স্কুল কলেজের পাঠ্যবিষয়ে মনোবিজ্ঞান থাকলেও জীবনে সেসবের প্রয়োগ কতজনাই বা করে? এরফলে আমাদের সমাজে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
ইঞ্জা
সম্পূর্ণ একমত ভাই, এ থেকে আমাদের অবশ্যই বেরিয়ে আসা উচিত।
প্রদীপ চক্রবর্তী
উন্নত শিক্ষাতে পদার্পণ করার পূর্বে আমাদের মানসিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
আমরা অনেকেই মানসিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হওয়াতে উন্নত শিক্ষায় উপনীত হতে পারিনা।
আর এ মানসিক শিক্ষা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী!
সময়োপযোগী লেখনী দাদা।
তৌহিদ
হ্যা দাদা, অন্যান্য শিক্ষার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষাও জরুরী।
ভালো থাকুন দাদা।
ফয়জুল মহী
সুচিন্তিত মনোভাবের প্রকাশ, ভালো হয়েছে।
তৌহিদ
ধন্যবাদ মহী ভাই।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এমন একটি অবহেলিত বিষয়টি তুলে ধরার জন্য। এই বিষয়ে কেউই মাথা ঘামায় না প্রশাসন থেকে শুরু করে পরিবার, ব্যক্তি কেউ না।অথচ এরা সুস্থ হলে আমাদের সবারই লাভ। এরা সুস্থ জীবনে ফিরে আসলে পরিবার, সমাজ,রাষ্ট্রের বিভিন্ন কাজেকর্মে লাগতে পারতো, জনশক্তি বাড়তো। আমাদের মতো নামকাওয়াস্তে উন্নয়নশীল দেশের জন্য সেটা অনেক বড় এ্যাচিভমেন্ট হতো। শুভ কামনা রইলো
তৌহিদ
দেশে যেভাবে সামাজিক অনাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সবার জন্যই অতীব জরুরী একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের জনগনকে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করার এটা অন্যতম মাধ্যম।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
ছাইরাছ হেলাল
মনো চিকিৎসা বিষয়টি আগাগোড়াই আমাদের এখানে উপেক্ষিত।
আর শিক্ষার বিষয়টি খুবই নাজুক, নীতি নির্ধারক পর্যায়ে কে কী ভাবছে আমরা জানি না।
অবহেলিত একটি ভাবনা তুলে এনেছেন দেখে ভাল লাগল।
তৌহিদ
নীতিনির্ধারকরা অবশ্যই জানে, সমস্যা হচ্ছে তিন মাথা একসাথে ঢুকে গেলে কাজের কাজ কিছুই হয়না ভাই। মানসিক স্বাস্থ্য জ্ঞান যে কত অপরিহার্য একটি বিষয় তা সবাইকে বোঝাতে হবে। স্কুল কলেজের পাঠ্যবিষয়ে মনোবিজ্ঞান থাকলেও জীবনে সেসবের প্রয়োগ কতজনাই বা করে? এরফলে আমাদের সমাজে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
জিসান শা ইকরাম
মানসিক স্বাস্থ্য্ আমাদের দেশে গুরুত্বই পায়না। যে কারনে আমাদের দেশে চিন্তায় অনেক অনগ্রসর। উন্নত দেশগুলোতে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করা নিজেরাই মনোবিজ্ঞানীদের কাছে জান পরামর্শের জন্য। আমাদের দেশে মনোবিজ্ঞানীদের কাছে যাওয়াটাকে খুব সহজ ভাবে নেয়া হয় না।
মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ ব্যাতীত আমাদের কাংখিত শারীরিক স্বাস্থেরও উন্নতি হবে না।
ভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখলেন। অত্যন্ত ভালো হয়েছে লেখা।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
এখানেই সমস্যা, লজ্জায় হোক কিংবা সামাজিক বাঁধাতেই হোক আমরা ডাক্তার কিংবা মনোবিজ্ঞানীদের কাছে যেতে চাইনা পাছে লোকে কিছু বলে। অন্যদিকে গার্ডিয়ানদের মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা না থাকায় তারাও সন্তানদের সম্পর্কে উদাসীন। সবার সহযোগীতাই পারে এই স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
বন্যা লিপি
প্রথমেই সাধু্বাদ জানাই এরকম জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপরে তথ্যমূলক পোষ্টের জন্য।
মানসিক সাস্থ্যের প্রতি মূলত প্রচন্ড অজ্ঞততার কারনেই পরিবার এবং সামাজিক অবস্থান থেকে কখনো তেমন ভাবে খেয়াল বা ভাবা হয়না। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বাচ্চাকে একটা ধমক দেবার বেলাতেও আমরা ভাবিনা ধমকটা বাচ্চার মনের ওপর কেমন প্রভাব ফেলতে পারে।ভাবিনা একটা চড় থাপ্পর দেবার সময়ও পরবর্তিতে সন্তানের মনে কিরুপ বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে।
অভিভাবক শ্রেনী থেকেই মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি না করতে পারলে নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠবে কিভাবে?
সার্বিক ভাবনায় অন্তত্য জরুরী পোষ্ট।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো থাকবেন, নিরাপদে সাবধানে থাকবেন।
তৌহিদ
ঠিকই বলেছেন আপু। সাধারণ মানসিক স্বাস্থ্যজ্ঞান না থাকার ফলেই এসব ঘটছে। শিশুদের উপর প্রভাবেএ ফলেই সে বড় হচ্ছে ভীন্নভাবে যা আমরা বুঝতেই চাইছিনা। এর ফলে আত্মহত্যার প্রবনতাও বাড়ছে।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমাদের দেশের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মান নির্ধারিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের নামে, আর স্বাস্থ্য-চিকিৎসার মান নির্ধারিত হয় প্রশ্ন ফাঁসের পর। আন্দোলন/পরিকল্পনা / পরিচালনা/ সেমিনার আর সংবাদ সম্মেলন গুলো এসি রুমেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবের সাথে খাতা-কলমের হিসাব মেলানো যাবে না। শারীরিক স্বাস্থ্যখাতে যত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় / হচ্ছে সেসবের জন্যে মানসিক অসুস্থতাই বেশি দায়ী। এইসব অসুস্থদের দিয়ে সব ঠিকঠাক করার আশা করাটা হলো বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাধার মতো কঠিন কাজ। চিন্তায়-সচেতনতায় সম্মৃদ্ধি পেতে হলে সব শ্রেণীর মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। শুরু করতে হবে নিজেদের ঘর থেকেই। নইলে অবক্ষয়ের চুড়ান্ত দেখতে হবে পুরো জাতিকেই।
ভিন্নভাবে অত্যন্ত জরুরী একটি পোস্ট দিয়েছেন তৌহিদ ভাই। ভালো লাগলো লেখাটি।
শুভ কামনা 🌹🌹
তৌহিদ
সমস্যাতো সেখানেই আপু, যারা এসব কার্যক্রম পরিচালনা করে তারা সবই জানেন কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তার প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায় না। অথচ মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি নামমাত্র পাঠ্যপুস্তকে একটি চ্যাপ্টার দিয়ে তারা খালাস। জীবনে এর প্রয়োগের গুরুত্ব যদি তারা বুঝতো তাহলে সামাজিক এত অনাচার হতোনা।
সুন্দর মন্তব্যের অনেক ভালোলাগা রইলো। আমার মনের কথাগুলিই বলেছেন। কিছুক্ষেত্রে মুখ বাঁধা থাকায় ইচ্ছে করলেও অনেক কিছি লিখতে বা বলতে পারিনা। চাকরি থাকপেনানে ☺
ভালো থাকুন আপু।
এস.জেড বাবু
\\\\\\চরম অশিক্ষা-কুশিক্ষা, অপশিক্ষা ও দারিদ্রতা একসাথে সমাজকে এমন একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থার মধ্যে ধরে রেখেছে যেখানে জ্ঞান চর্চা ও বিকাশ অত্যন্ত মন্থরগতিতে চলছে।
জ্ঞানচর্চা জ্ঞান আহোরনের জন্য হচ্ছে কি ?
আমিতো দেখি ক্লাশে / পরীক্ষায় বেশি নম্বরের আশায় চর্চা হচ্ছে। চর্চা করা হচ্ছে অধিক বেতনে চাকরির আশায়।
আসলেই শিক্ষাজীবনে / গার্ডিয়ান পর্যায়ে উভয়ের মানষিক স্বাস্থের যত্ন নেয়া প্রয়োজন।
উপযুক্ত পোষ্ট ।
তৌহিদ
সমস্যা হচ্ছে তিন মাথা একসাথে ঢুকে গেলে কাজের কাজ কিছুই হয়না ভাই। মানসিক স্বাস্থ্য জ্ঞান যে কত অপরিহার্য একটি বিষয় তা সবাইকে বোঝাতে হবে। স্কুল কলেজের পাঠ্যবিষয়ে মনোবিজ্ঞান থাকলেও জীবনে সেসবের প্রয়োগ কতজনাই বা করে? এরফলে আমাদের সমাজে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
নিতাই বাবু
খুব সুন্দর সময়োপযোগী আলোচনা নিয়ে হাজির হয়েছেন দাদা। বর্তমানে আমাদের দেশে এবিষয়ে অনেকেরই ধারণা নেই বললেই চলে। যে কারোর মানসিক ভারসাম্য দেখা দিলেই, গ্রাম্য ওঝা কবিরাজ খুঁজে বেড়ায়। হাসপাতে বা ডাক্তারের শরণাপন্ন হলেও অনেক সময় ডাক্তার নিজেই বলে কবিরাজ দেখাতে।
এই হলো আমাদের দেশের বর্তমান হালহকিকত।
শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দাদা।
তৌহিদ
একদম ঠিক বলেছেন দাদা। আমাদের সবারই মানসিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে এদেশ কখনওই দক্ষ জনশক্তি পাবেনা। ফলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে। সমাজে অনাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে শুধুমাত্র মানসিক শিক্ষার অভাবে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।
শবনম মোস্তারী
খুব শিক্ষণীয় একটি পোষ্ট।
এ জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষার দরকার।
আশে পাশে এমন অনেক মানুষ দেখা যায় যারা একবিংশ শতকে এসেও নানা রকম কুসংস্কার মনে লালন করে..
তাই মানুষিক স্বাস্থ্যের চর্চা করাটা অতীব জরুরী।
তৌহিদ
একদম ঠিক বলেছেন দাদা। আমাদের সবারই মানসিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে এদেশ কখনওই দক্ষ জনশক্তি পাবেনা। ফলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে। সমাজে অনাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে শুধুমাত্র মানসিক শিক্ষার অভাবে। কুসংস্কার থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
খাদিজাতুল কুবরা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে চমৎকার লিখেছেন।
শুভেচ্ছা রইলো ।
তৌহিদ
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভালো থাকুন সবসময়।
হালিম নজরুল
মানসিক স্বাস্থ্যশিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অথচ আমরা সত্যিই খুব উদাসীন। ধন্যবাদ এটি নিয়ে সুন্দর লেখার জন্য।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই, একদম ঠিক বলেছেন।
আরজু মুক্তা
প্রত্যেক স্কুলে মোরাল ক্লাস চালু করা উচিত। তাহলে মানসিক শিক্ষার ভিত ভালো হবে
তৌহিদ
সহমত পোষণ করছি আপু। ভালো থাকুন সবসময়।
সায়মা নুর নাতাশা
মানসিক সমস্যার উতপত্তি হয় মূলত কোনো চাপ থেকে। সেটা পারিবারিক হোক অথবা বাইরের অন্য কনো বিষয়ের সাথে জড়িতই হোক না কেনো…
আর মানসিক সমস্যাকে প্রায় সবাই লুকোতে চায়। অনেক বড় সমস্যা মনে করে। কিন্তু শরীরের অন্য কোনো অংঙের ক্ষতি হলে খুব প্রাউডলি ব্যাপারটা সবাইকে জানায়।
কিন্তু মানসিক কোনো সমস্যা হলে এটাকে অনেক লজ্জা মনে করে।
এবং, অনেকে নিজের আত্মসম্মান এ লাগবে বলে চিকিৎসা পর্যন্ত করান না।
আমার দেশ কে আগাতে হলে আগে আমাদের দেশের মানুষের মনমানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।
বাংলাদেশের সমস্যা না…বাংলাদেশের মানুষের সমস্যা। তাদের মন মানসিকতার সমস্যা।
আপনার লিখা পড়ে অনেক ভালো লাগলো।