অনেককাল আগে-
আমি মানচিত্রে চুমুক দিয়ে স্বাধীনতা পান করতাম,
ওরা আমায় বিপ্লবী বলত।
আমি ছিলাম অরণ্য, ভ্রম
ছিলাম বিমুর্ত জ্যোৎস্না,
অগ্নিময় সন্ধ্যা, একা পথশিশুর হাসি-ছিলাম অশুভ অবক্ষয়, বিরল প্রণয়
লবনজলের রাশি।
ওরা আমায় উন্মাদ বলত।
এতো সেই আমি –
দেখেছি পদ্মা,
কান পেতে শুনেছি আকাশের বুকে যমুনার গল্প
দেখেছি অলস মায়ের বুক।
আমি দেখিনি একাত্তর
সোনামাখা রোদ্দুর।
দেখেছি হাহাকার, তান্ডব,
বোকা বুদ্ধিজীবী, উত্তাল অথচ স্বাধীন রাজপথ
দেখেছি বখে যাওয়া অন্ধ সন্তান,
অবোধ্য ক্ষমতার লোভ,
দেখিনি মানচিত্রে ভালবাসা মাখা অল্পখানি ক্ষোভ।
ওরা আমায় দুর্ভাগা বলত।
ওরা দেখেনা-
ওই যে সবুজ, রক্তমাখা,
ওই যে পথের বাঁক,
ওইতো-
ওইতো সভ্যতার অসভ্য কান্না
ওই তো সিংহাসনের ডাক,
আমি দেখি-
দলদলে কিছু আটকে পরা বোকা তরুণের ঝাক
ওরাই ওইতো রাজপথ জুড়ে
স্বাধীনতা নির্বাক।
প্রশ্ন তুলি সমাজপতির কাছে।
ওরা এখন আমায় দেশোদ্রোহী বলে।
অথচ আমি মানচিত্রে চুমুক দিয়ে স্বাধীনতা পান করি,
অথচ আমি অন্ধ ভিক্ষুকের গায়ে শীতের রাতে জাতীয় পতাকা পেঁচিয়ে দেই,
অথচ আমি সয়ং একাত্তর,
সেই সোনা সোনা রোদ্দুর।
যে রোদে এক সময় ভিজেছিলে তুমি- অথবা তোমরা
ভিজেছিলো রফিক, জব্বর, ভাষাণী, বঙ্গবন্ধু,মেজর জিয়া -সাথে ত্রিশ লক্ষ বাঙালী।
মৃত্যুর পাঁজরে মৃত্যু নিয়ে যে রোদে ভিজেছিল প্রসব যন্ত্রণা কাতর আমাদের মা-
আমি সেই সোনা সোনা রোদ।
অথচ ওরা আমায় দেশদ্রোহী বলে।
তবুও- আমি মানচিত্রে চুমুক দিয়ে স্বাধীনতা পান করি।
৫টি মন্তব্য
গাজী বুরহান
ওয়াও!
আবু জাঈদ
🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
অসাধারণ!
দারুণ একটি কবিতা। স্বাধীনতার সাথে মানচিত্রের কথোপকথন। ভৌগলিক সীমা বেধে দিয়েছে স্বাধীনতা, অথচ স্বাধীনতা আশ্রয় পায়নি কোথাও।
আবু জাঈদ
যাক, সমালচনা ছাড়াই কবি’র ভাল লাগলো। (অবশ্য আমিও জানি আমার এই কবিতা সমালচনার উর্ধ্বে)
ভাললাগা জানবেন কবি
নীলাঞ্জনা নীলা
বুঝলাম না আপনি কি নিজের প্রশংসা নিজেই করছেন? ;?