: ভোলায় পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের ভোলা পৌর মেয়র মনিরের শপথ ভঙ্গ। চলছে নৈরাজ্য চলছে। শাসক দল আ’লীগ নেতা বনে গিয়ে আধিপত্য বিস্তারে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য বহাল রাখার টার্গেটে তিনি অন্যায় অপকর্মের ফিরিস্তি রচনা করছেন। ভোলা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহীনের ভগ্নিপতির লাশবাহী গাড়িতে হামলার মদতদাতা পৌর মেয়র মনির। মেয়রের নেতৃত্বে তার পালিত ক্যাডাররা চালাচ্ছে পাড়া মহল্লায় বোমাবাজী। মিথ্যা মামলা ঠুঁকে দিয়ে বাসায় বাসায় পুলিশী তল্লাশীর নামে নারী পুরুষদের করা হচ্ছে হেনস্থা। আতংকের জনপদ ভোলা ! কতটা বেপরোয় হলে এহেন ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে পারে জনপ্রতিনিধির দায়িত্বে বিরাজমান থাকা পৌর মেয়র। অত:পর  বিক্ষুদ্ধ জনগন নেমে পড়ে রাজপথে। জনপ্রতিনিধির নামে সন্ত্রাসের আশ্রয় প্রশয়কারী মেয়রের দৃষ্টান্তমুলক শস্তির দাবীতে প্রতিবাদী ভুমিকায় অবতীর্ন হন সেখানকার ছাত্রলীগ,যুবলীগসহ সাধারন মানুষ।
মোস্তাক আহমেদ শাহিনের সহধমির্নী ফাতেমা আহমেদ শীলা সাংবাদিকদের বলেন , ৪ দলীয় জোট সরকার এমনকি জরুরী অবস্থার সরকারের আমলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এমন রুঢ় আচরণ করেনি। মেয়রের মনিরুজ্জামানের পক্ষের লোক সঙ্গে নিয়ে পুলিশ গভীর রাতে বাসায় আসে আমার স্বামীকে খুঁজতে। তাকে না পেয়ে ছেলেকে নিয়ে টানা হেঁচড়া করে। আমার বোনের স্বামীর লাশ দেখতে আসা ননদের স্বামীকে হাতকড়া পড়িয়ে পুলিশ গাড়িতে তুলে। পরে এজাহারে নাম না থাকায় তাদের ছেড়ে দেয়।
নেপথ্যে : ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহিনের ভগ্নিপতির লাশবাহী গাড়িতে হামলা চালায় হরতাল সমর্থক একদল পিকেটার। এই ঘটনায় উত্তেজিত ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতা কর্মীরা পিকেটারদের ধাওয়া করে। পরবর্তীতে ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা লাশবাহী গাড়িতে হামলার ঘটনায় মোস্তাক শাহিনের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলে ঘটনার শান্তিপুর্ণ সমাপ্তি ঘটে। কিন্তু লাশবাহী গাড়িতে হামলাকারী পিকেটারদের একজনকে নিজের আত্মীয় দাবী করে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরে আলম স্বপন একই দিন দুপুরে মোস্তাক শাহিনের এলাকা মুসলিম পাড়ায় সশস্ত্র হামলা চালালে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও এলাকাবাসী স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা স্বপনসহ তার ক্যাডারদের গণধোলাই দেয়। পরে পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের নেতৃত্বে একদল যুবক পুনরায় মুসলিম পাড়ায় হামলা চালিয়ে গুলি বর্ষন, দোকান ভাংচুরসহ বেশ কয়েকজন নীরিহ মানুষকে মারধর করে। বিকেলে মেয়রের পক্ষে ভোলা থানায় ছাত্রলীগের সাবেক জেলা সভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহিন, উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাওসার হোসেন টুয়েল, ভোলা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক হাসান লিটনসহ এলাকার নীরিহ জনগনকে আসামী করে ভোলা থানায় মামলা করে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন পৌর মেয়র মনির। সংবাদ সন্মেলনে মেয়র ২৪ ঘন্টায় আসামী গ্রেপ্তার অন্যথায় পৌর এলাকায় নাগরিক সুবিধা বন্ধ করার হুমকি দেন। ওই রাতে পুলিশ একাধিক বাড়িতে রেইড করে কাউকে না পেয়ে ছাত্রলীগ নেতা আরিফ রহমান রিজভীর বড় ভাই তাসভীকে আটক করে নিয়ে যায়। তাসভী এজাহারভুক্ত আসামী না হলেও তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়। ছাত্রলীগ যুবলীগের নীরিহ নেতা কর্মীদের নামে মামলা ও বাসা বাড়িতে পুলিশী তল্লাশীর নামে স্ত্রী সন্তানদের সাথে খারাপ আচরনের প্রতিবাদে ২৯ মার্চ  শুক্রবার মিছিল সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা কর্মীসহ মুসলিম পাড়ার জনগন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় পৌর এলাকার মুসলিম পাড়া থেকে মেয়র বিরোধী মিছিলটি শুরু হয়ে বরিশালীয়া দালানের কাছে গিয়ে সমাবেশ করে। মিছিল থেকে পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়া হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহিন বলেন, ভোলায় আমাদের রক্তের বিনিময়ে আওয়ামীলীগ দাড়িয়েছে। পৌর মেয়র মনিরুজ্জামানসহ একটি স্বার্থান্বেষী মহল লাশবাহী গাড়িতে হামলাকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা করেছে তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নাই। বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে মেয়রের ২৪ ঘন্টায় আসামী গ্রেপ্তার অন্যথায় পৌর এলাকায় নাগরিক সুবিধা বন্ধ করার হুমকিতে বক্তারা বলেন, ভোলার মেয়র নিজের আগ্রাসী মনোভাবকে আড়াল করতে পৌরবাসীকে নিয়ে রীতিমতো তামাশা করছেন। দলের মধ্যে মেয়র বিরোধী বলয়কে রাজনৈতিক মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে পৌরবাসীকে জিম্মী করার ঘোষনায় তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। অবিলম্বে এ বক্তব্যের কারনে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী তুলেন। প্রতিবাদ সভায় উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাওছার হোসেন টুয়েল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি হাসান লিটনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সাবেক তুখোর ছাত্রনেতা মোস্তাক শাহিনসহ যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভুমিকা রাখার আহবান জানানো হয়েছে । অন্যথায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে সমাবেশে বক্তারা।
পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান কর্তৃক সাবেক জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহিনকে গ্রেফতারে প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টা আল্টিমেটাম ঘোষনা, শুক্রবারে শহরে মেয়র বিরোধী মিছিল সমাবেশকে কেন্দ্র করে যে কোন মুহুর্তে পুনরায় পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে এমন আশংকায় দেখা দিয়েছে জনমনে। পুলিশ প্রশাসন থেকে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি থাকার কথা বলা হলেও এক পক্ষ পুলিশকে পক্ষপাতদুষ্ট ভুমিকার জন্য দায়ী করেছে। পৌর এলাকার বিভিন্ন গুরত্বপুর্ণ পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে,২৯ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাওছার হোসেন টুয়েল বাদী হয়ে পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান মনির, তার ছোট ভাই আশ্রাফুজ্জামান রাজিবসহ ১৫জনকে আসামী করে ভোলা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-২৮। মেয়রের বিরুদ্ধে মামলার হওয়ার পরে কিছুটা অশান্ত হয়ে ওঠে মেয়র সমর্থক ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডাররা। ৩০ মার্চ শনিবার গভীর রাতে পৌর এলাকার উকিল পাড়া, পুরাতন যোগীরঘোল ও কাঁঠালী এলাকায় ৬/৭ টি বোমার আওয়াজ’র খবর মিলছে। মুলত মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তার সমর্থকরা বিক্ষিপ্ত বোমাবাজী করে প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। অপরদিকে মেয়র মনিরুজ্জামান শুক্রবার সন্ধ্যায় যোগীরঘোল এলাকায় তার ব্যবসায়ীক কার্যালয়ে পৌরসভার কাউন্সিলর, মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার সহ তার সমর্থক ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি করেছেন। সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি মানে আধিপত্যের রাজনীতিতে মত্ত পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরে সন্ত্রাসের স্বর্গ রাজ্য বহাল রাখার মিশনে প্রতিপক্ষ ঘায়েলের নীল নকশা।

৭০৬জন ৭০৬জন
0 Shares

৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ