দেশের সবচেয়ে আলোচিত টপিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি বা ভাস্কর্য।
এমনিতেও দেশের যেকোন ইস্যু ঘষামাজার ফলে ঘটনার চেয়ে কথা বেশ বড় হয়ে যায়…
ঠিক তেমনি ভাস্কর্য ইস্যু একশ্রেণীর মানুষের কাছে নাপাক-নাপাক হয়ে তা দ্রোহের মতো যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব তাদের আচরণে!
কিন্তু কেন?
কারণ, ভাস্কর্য তৈরী শির্কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আপনি যদি চিন্তা করে দেখেন পৃথিবীতে কিভাবে শির্কের সূচনা হয় তবে দেখবেন,
এর একমাত্র কারণ হলো নেককার লোকদের নিয়ে বাড়াবাড়ি-
তাদের যা মর্যাদা তার চাইতে বেশী তাদের সম্মান করা।
শুধু কি মূর্তি বা ভাস্কর্যই শির্ক আর কিছু নেই?
আছে, কবর ও মাজারের মাধ্যমে।
কবর পূজারীদের কেউ কেউ বলতে পারে,
তোমরা আমাদের উপর বেশী বাড়াবাড়ি করছ।
আমরা তো কোন মৃতের ইবাদত করিনা,
ভাস্কর্যকে সম্মান দেখাই না-
কবরে এ সমস্ত ওলী-আউলিয়া নেককার লোক।
আল্লাহর কাছে তাদের সম্মান রয়েছে, তারা আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করতে পারেন!
জবাবে আমরা বলব, এটাই ছিল কুরাইশ কাফেরদের কথা তাদের মূর্তি সম্পর্কে।
পাথর পূজা আর কবর পূজার মধ্যে কি পার্থক্য আছে?
কি পার্থক্য আছে সেই ব্যাক্তির মাঝে,
যে মূর্তির কাছে নিজ প্রয়োজনের কথা বলে আর যে গলিত মাঠি মিশ্রিত হাড্ডির কাছে যায়!
কোনই পার্থক্য নেই।
”আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা এমন বস্তুর উপাসনা করে যা তাদের কোন লাভ বা ক্ষতি করতে পারে না এবং বলে এরা আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশকারী।
তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহর এমন বিষয়ে অবহিত করছ;
যে সম্পর্কে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে?
তিনি পুত:পবিত্র ও মহান সে সমস্ত থেকে যাকে তোমরা শরীক করছো।”
(সূরা ইউনুস [১০]:১৮)
অতএব, শুধু ভাস্কর্য নয় একজন মুসলিম হিসেবে উচিৎ কবর বা মাজারের বিরোধিতা করা।
এখন আসা যাক বর্তমান সময়ের মূর্তি বিরোধী আলেমসমাজদের ব্যাপারে।
আলেমদের কাজ প্রথমে নিজের ধর্মের যাবতীয় অনাচার থেকে ধর্মকে সঠিক পর্যায়ে নিয়ে এসে তা অনুসারীদের কাছে সঠিক পথে পৌঁছে দেওয়া-
দেশে সেই শাহ জালাল (রহঃ) মৃত্যুর পর থেকে যে পরিমাণ শির্কের কারখানা মাজার প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা কি তারা চোখে দেখেনি?
তারা দেখেনি যে আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর পবিত্র নামের বিকৃত জিকির করে তালে তালে ছন্দে নারী-পুরুষের অবাধ যৌন উন্মুক্ত গাঁজা খোরের নাচন!!
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য হচ্ছে সম্প্রতি সময়ে,
আশার কথা হলো-
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সামনে কেউ পূজা দেয়নি সন্তানের জন্য উনার ভাস্কর্যের নিচে গড়াগড়িও খায়নি এমনকী সন্তান লাভের প্রলোভনে কেউ খাদেম বা পীর দ্বারা ধর্ষণ হওয়ার সুযোগ নেই।
কিন্তু ইসলামের নাম ভাঁঙিয়ে দরগাহ মাজারে বড়বড় ওয়াজ ও জিকিরের আয়োজন করা শির্কবাদীদের দ্বারা ধর্মের চরম ক্ষতি হচ্ছে –
সে বিষয়ে ভাস্কর্য বিরোধী আলেমসমাজ চুপচাপ-খামোশ।
ওসব ধর্মের কথা বলে তাই না!
ফাজলামির একটা সীমা থাকা উচিৎ-
নিজের ধর্মের ভিতর শির্কের কারখানা খোলা রেখে একজন মহান নেতার তর্জনী উঁচু হাতের ভাস্কর্যের বিরোধীতা কতটা যৌক্তিক?
ভাস্কর্য বিরোধীতার ফতোয়া দেওয়ার আগে ফতোয়া দিন মাজার নামক ভন্ডদের বিরুদ্ধে।
ভাঙতে হলে প্রথমে ভাঙুন মাজার গুলো,
বুল্ডুজার চালিয়ে গুড়িয়ে দিন প্রতারক ধোঁকাবাজ বাটপার গুলোর বেহায়াপনার আর্থিক উপার্জনের আস্তানা।
কিন্তু তা না করে আপনার হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নিচে!
একটা গনতান্ত্রিক দেশে কে আপনাদের ধর্মীয় নীতিমালা প্রয়োগ করতে প্রমোট করলো?
১১টি মন্তব্য
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
ঠিক বলেছেন
সত্যি আগে মাজার ও কবর পূজা বন্ধ করা প্রয়োজন।
শুভকামনা রইল সতত
নুরহোসেন
ধন্যবাদ ভাই।
তৌহিদ
সত্য তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। অনেকদিন পরে এলেন ভাই, কেমন আছেন?
শুভকামনা রইলো।
নুরহোসেন
ধন্যবাদ,
আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
আপনি কেমন আছেন?
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ভাইয়া কেমন আছেন? আপনার লেখায় এমন কঠিন সত্য, সৌন্দর্য খুঁজে পাই বলেই আপনার লেখার একজন ভক্ত আমি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সত্যটাকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য। মাজারে প্রতিনিয়ত এমন জিকির চলে যেখানে নেশার চাকাও পুরোদমে চলে।
একরাশ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন অবিরত
নুরহোসেন
আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।
আপনি কেমন আছেন আপুমনি?
–
যারা এক তরফা ভাস্কর্যের পিছনে লেগেছে, তারা সুবিধা ভোগী রাজাকার।
ধর্ম দিয়ে জাজ করতে হলে প্রথমে ধর্মের বিষয় গুলো জাজ করার প্রয়োজন-
তারপর তা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে।
আরজু মুক্তা
সত্য প্রকাশিত হোক
নুরহোসেন
সত্য প্রকাশিত হোক,
দুর হোক যত সভ্যতার জঞ্জাল।
মোঃ খুরশীদ আলম
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ’র লাল সালু পড়েছেন?
সামাজিক সমস্যাগুলোকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হয়। আর জাতীয় সমস্যাগুলোকে জাতীয়ভাবে সমাধান করতে হয়।
আপনার সমাজে যেসকল ইসলাম বিদ্বেষী কাজ কারবার চলে, ধর্মের নামে আপনার এলাকার মাজার টা কে পরিচালনা করে দেখেছেন? আশা করি সেখানে কোন আলেম খুজে পাবেন না। খোজ নিয়ে দেখুন এক শ্রেণীর স্থানীয় ধান্দাবাজেরা এগুলোকে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মতো ব্যবহার করে নিজেদের আর্থিক ফায়দা হাসিল করছে। মূল ধারার কোন আলেম মাজার কেন্দ্রিক কোন নোংরামিতে জড়িত নাই।
ভন্ড দেওয়ানবাগীর ভন্ডামির বিরুদ্ধে সারাদেশের আলেম সমাজ মাও: ফজলুল করিম (রহ.) এর নেতৃত্বে সারা দেশে আন্দোলন করেছিল। সেটা ছিল জাতীয় সমস্যা। এখন আপনার বা আমার এলাকায় যদি এরুপ সমস্যা থাকে তবে হুজুরদেরকে নিয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসলেইতো হলো। তাদের দোষ দিয়ে লাভ কি? আপনার আমার অবস্থান হতে আপনি আমি কি নিজের দায়িত্বটুকু পালন করি বা করছি?
নুরহোসেন
আমি বলিনি প্রকৃত হুজুরেরা মাজারে জড়িত।
ভাস্কর্য ইস্যুতে আজ যারা সরব এতদিন কি তারা তা চোখে দেখেনি?
দেওয়ানবাগীর বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন সফল হয়নি এখনো,
এমনকি চরমোনাই পীরের মাজারেও শির্ক আছে!
এখন তারাই হকের দাবিদার।
আপনি বলেছেন,
“ভন্ড দেওয়ানবাগীর ভন্ডামির বিরুদ্ধে সারাদেশের আলেম সমাজ মাও: ফজলুল করিম (রহ.) এর নেতৃত্বে সারা দেশে আন্দোলন করেছিল। সেটা ছিল জাতীয় সমস্যা। এখন আপনার বা আমার এলাকায় যদি এরুপ সমস্যা থাকে তবে হুজুরদেরকে নিয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসলেইতো হলো। তাদের দোষ দিয়ে লাভ কি? আপনার আমার অবস্থান হতে আপনি আমি কি নিজের দায়িত্বটুকু পালন করি বা করছি?”
আমার জানামতে দেওয়ানবাগী ইস্যু জাতীয় সমস্যা ছিলো না উহা ছিল,
মতবাদের কোন্দল।
আর মাজার সমস্যা গুলো ধর্মীয় কেন্দ্রিক জাতীয় সমস্যা,
আপনি আমি আর স্হানীয় হুজুরেরা মিলে আটরশীর মতো ভন্ডদের বিশাল ভ্রান্ততা দুর করা সম্ভব?
নাকি এর জন্য হেফাজতে ইসলামের বিশাল সামর্থক প্রয়োজন?
মোঃ খুরশীদ আলম
চরমোনাইতে কোন মাজার নেই। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। সবচে ভাল হবে তাদের কোন একটা মাহফিলে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। জীবনে কতো জায়গায়ইতো গিয়েছেন।
দেওয়ানবাগী ইস্যু জাতীয় ইস্যু ছিল না বলছেন-আপনার ধারণা পরিস্কার নয় রবং এটা জাতীয় ইস্যুর চেয়েও বড় ইস্যু ছিল। ঈমান-আক্বিদা বিধ্বংসি কোন অপতৎপরতা জাতীয় ইস্যুর চেয়ে কোন অংশে কম নয়। কারণ শিক্ষিত চোরেরা চুরি করে দেশের আর্থিক ক্ষতি সাধন করে আর বেআমল ভন্ডরা ভন্ডামী করে মানুষের আখেরাত নষ্ট করে।
মাজারে যে সকল শিরক ও বেদয়াতি কার্যকলাপ হয় এর বিরুদ্ধে আলেম সমাজ চিরদিনই সোচ্চার ছিলেন।
স্থানীয় লোকদের নিয়ে যান ভন্ডদের আখরা নষ্ট করতে, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পড়নের পায়জামাটাও খুজে পাবেন না। কেন ? কারণ এগুলোর আর্থিক ফায়দা লুটে স্থানীয় রাজনীতিকরা। ঠান্ডা মাথায় খোজ খবর নিয়ে দেখেন – এখানে মাদকের যে রমরমা ব্যবসা হয় তা এলাকার বড় ভাই, ছোট ভাই, মেঝ ভাই, সেজ ভাই, মন্টু, ঝন্টু, পন্টু, বল্টু, গিল্টু, বুলেট, মেরা, ধেরা’ রা শেল্টার দিয়ে থাকে।
হেফাজতের ত্রুটি অন্বেষণ না করে বরং নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে তাদের কর্মকান্ড পর্যালোচনা করে দেখতে পারেন। আমি অন্তত তাদের মধ্যে কোন ত্রুটি খুঁজে পাইনা।
ধন্যবাদ।