ভালোবাসার রদবদল

জুলিয়াস সিজার ২১ আগস্ট ২০১৪, বৃহস্পতিবার, ০৪:১০:৩৩অপরাহ্ন বিবিধ ৮ মন্তব্য

অনার্স ফোর্থ ইয়ারে পড়ি। আমার ভার্সিটির সবচেয়ে কাছের বন্ধুটি আমাদের ডিপার্টমেন্টের এক মেয়ের উপরে পুরোপুরি ক্রাশ খেয়ে বসে আছে। মেয়ে ডিপার্টমেন্টের পরিচিত মুখ। চলনে বলনে একটা কিছু। সিনিয়র, জুনিয়র এবং আমার অনেক ব্যাচমেট তার উপর ফিদা। মেয়ে আমার বন্ধুর কাছ থেকে নোট নিত, পড়া বুঝিয়ে নিত। আমরা ব্যালকনিতে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় মেয়েটি তাদের ক্লাসে যাওয়ার সময় ঘাড় বাঁকিয়ে তাকিয়ে অমন হাসি দিত। আর এমন সুরেলা কন্ঠে ভাইইইইইইইয়া বলে ডাকতো আমরাও ভাবতাম এই পোলার কপাল বুঝি খুলেই গেল! অনেকেই যারা আমাদের খুব ঘনিষ্ট না, তারা ভাবতো তাদের দুইজনের রিলেশন আছে।
—————
ফাইনালি আড্ডায় সিদ্ধান্ত হলো সে গিয়ে মেয়েকে প্রপোজ করবে। কিন্তু সাহসে কুলায় না।
আমি বললাম, যা তুই প্রস্তাব দিয়ে দেখ।
– সে বলে যদি না বলে?
না বললে কি? তোকে হ্যাঁ বলতেই হবে এমন কোন কথা নেই।

– না দোস্ত, ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র মেয়ে। বুঝিস তো। আর প্রথমবারই না শুনলে আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা লাগবে।

আরে যা বলে আয়। সাহসে লক্ষী, ভোজনে শ্রী(চেহারা)। বীরভাগ্য বসুন্ধরা। সাহস না করলে কিছুই হয় না। এইসব কথা বলে তাকে উস্কিয়ে দিলাম। আমি বলছি হবে।

– তুই বলছিস হবে?
হ্যাঁ হ্যাঁ হবে। তুই বলে দেখ। দেখিস না তোর দিকে কিভাবে তাকায়? আমাদের থেকে তো নোট নেয় না। তোর থেকে কেন নেয়? তোর চেয়ে আরও অনেক ভালো স্টুডেন্ট আছে। তাদের নোট তো নেয় না। বুঝিস না? যা, তুই একবার বলে দেখ।

অবশেষে একদিন সে মেয়েকে জানাল। মেয়ে উত্তরে বলল,
“আসলে ভাইয়া আমি তো আপনাকে বড় ভাইয়ের মতো দেখি। অন্য কিছু ভাবিই নি।
————–
মাস চারেক পরে একদিন ঝুপড়িতে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র একজন ভাইয়াও ছিলেন। হঠাৎ তিনি তাকে বললেন,
– তারপর সোহাগ, তোমার গার্লফ্রেন্ড নাসরিনের খবর কি?
আরে ভাইয়া। কি যে বলেন। সে আমার গার্লফ্রেন্ড হবে কেন? আমাদের তো ফ্রেন্ডলি ভাইবোন সম্পর্ক।

তার মুখে এটা শোনার পর হাসি চেপে রাখা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। মূল ঘটনাও সবাইকে বলা সম্ভব ছিল না। তাই আসছি বলে আড্ডা থেকে উঠে বাইরে হেসে নিলাম।
প্রপোজ করে ভালোই ভালোই চান্স পেলেই হয়। না পেলে ভাইবোন সম্পর্ক আর কি।

৭৫২জন ৭৫২জন
0 Shares

৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ