
আবারও ডাকে কুকিল,
ভাঙ্গা সুরে, উড়ে উড়ে, দুরে দুরে।
কুহুতানে- নিবিড় আলিঙ্গনে, ভাঙ্গে স্বপ্ন ভাঙ্গা ঘোর।
কনকনে উষ্ণতায়, ভেজা বকুলের কাঁচা গন্ধ,
ক্লান্ত ভোরের বাহুডোরে নিদ্রাভাঙ্গা চিরন্তন ষোড়ষী সকাল,
আপন তিক্ষ্মতায় ঘনঘোর কুয়াশার বস্ত্র হরণ শেষে
মুচকি পরশ বুলিয়ে, একুশের হাসি হাসে সোনালী কিরণ-
যৌবনের বলিষ্ঠ, সুমিষ্ট স্বর্ণালী ইশারায়।
কানামাছি খেলে নিস্তব্ধ ভেজা হাওয়া,
দৈবাৎ দোলে উঠে-
শিক্ত শিহরিত ভারী সবুজের আবেগ।
বেলকনিতে ঝুলতে ঝুলতে
নিজের শুভ্র রং ফিরে পায়,
গেল রাতে স্নান শেষে লটকে দেয়া
পুরুষালী বর্ণালী হাল্কা পরিধেয়।
সে সমারোহে গাঢ় নীল ওড়নাটা উড়ে না স্বাধীন-
সটান রশি কামড়ে ধরে শূণ্যতায় ঝুলছে দুই জোড়া প্লাষ্টিকের ক্লিপ-
পতপত করে দুলছে না-
উল্টে দেয়া মিষ্টি গোলাপি কামিজের থ্রী কোয়াটার হাতা।
ঘুমটা মতো টেনে খানিক সরিয়ে দিলে একেলা পাঞ্জাবির কোনা-
খুউব করে কাছে ডাকে,
ঝুলন্ত বেলকনির কর্নিশে রাখা,
ভুল করে ফেলে আসা, ধোঁয়া উঠা ব্যাচেলর চায়ের কাপ।
শেষ হয়েও হয় না শেষ,
তলানির শেষ চুমুক স্বীয় উষ্ণতায় বরণ করে বাসন্তি ঢং
উদাসী ঋতূ বৈচিত্র্যে- উসখুস মন, উদাসী ক্ষণ
অপেক্ষা আর অপেক্ষায়, কড়া নড়েনি দরজায়
এখনও আসেনি খবরওয়ালা-
সখি ! তুমি কই ! কতদুরে ?
ভেজা বিনুনীর জল ছাড়াতে ছাড়াতে
ডান হাতে খবর ঢেলে দিয়ে,
শূণ্য কাপটা উঠিয়ে নিতে যদি আসতে-
শিউলি আঁচলে জড়ানো ভেজা বাসন্তি কোমরে
আলতো করে ছুঁইয়ে দিতাম ভাদ্রের খরাচ্ছন্ন অনামিকা।
তুমি হাসতে, রাগতে, চোখ রাঙাতে, ছিটকে যেতে,
আমি দেখতাম, ভাবতাম, ভয় পেতাম কালবৈশাখী মতো।
তবুও আর একটি বার জড়িয়ে ধরে,
হাসনাহেনার গন্ধ নিতাম- বন্ধ চোখে।
কম্পিত ঝড়ো বদনের কোনায় কোনায়, ভাঁজে, লাজে-
সাজিয়ে দিতাম; গেল রাতের নিদ্রাহীনতার সমস্ত জড়তা।
প্রত্যাশিত লিকলিকে সদ্য ভেজা আঙ্গুলের পরশে-
আর একটি বাসন্তি সকাল দেখতাম দুচোখ মেলে।
-০-
১৪টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
নিপুন হাতের কারুকার্যে ও
ভালবাসা প্রকাশ করা যায়
প্রমান পেলাম আপনার কবিতায়
শুভ কামনায়।
এস.জেড বাবু
মন্তব্যে প্রাণ খুলে সুবিচার পেলাম- মুগ্ধ হলাম।
এবং সীমাহীন কৃতজ্ঞতা রেখে গেলাম দাদা।
ভালো থাকবেন সবসময়।
ছাইরাছ হেলাল
সখি বেশি দূরে না, কোকিলের ডাকে,
ঐ তো ঝুলে আছে মিষ্টি গোলাপি
কামিজের ভাঁজে, বারান্দার প্রান্ত ঘেসে!
এস.জেড বাবু
জামগাছের ডালে সত্যি সত্যি কোকিল ডাকছে এখন- এফবি হলে রেকর্ড করে পাঠাতাম।
সখি রা কল্পনাতেই ভালো থাকে / মিষ্টি থাকে-
বাস্তবে কেমন টক ঝাল।
শুভেচ্ছা অশেষ ভাইজান,
ভালো থাকবেন সবসময়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
মিষ্টি মিষ্টি রোমাঞ্চ পেলাম। ভেজা বিনুনি, গোলাপি কামিজ, ভেজা আঙ্গুলের পরশে প্রতিটি ভাঁজে খাঁজে রোমাঞ্চ জড়িয়ে আছে। ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য
এস.জেড বাবু
মিষ্টি আপুর মিষ্টি মন্তব্য।
মুগ্ধতা লেগে আছে কথার জাদুতে।
অনেক অনেক শুভেচ্ছায় কৃতজ্ঞতা রইলো
শুভকামনা আপনার জন্য
সুরাইয়া পারভীন
আহা!
চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কল্পনায় ভেসে এমন রোমাঞ্চকর মুহূর্তের সৃষ্টি!
যদি বাস্তবে হতো সত্যিই দুর্দান্ত হতো ভাইয়া।
জাস্ট অনবদ্য সৃষ্টি
এস.জেড বাবু
বাস্তবতা
হয়তো এমনি সুন্দর বা তার চাইতেও অধিক।
চমৎকার মন্তব্য – অনুপ্রাণীত।
শুভেচ্ছা আপু
জিসান শা ইকরাম
ব্যাচেলর ভাবনা এমনই হয়,
স্বপ্নেরা উড়ে যায় দূরে,
তারপরেও স্বপ্ন দেখা চলে অবিরাম।
ভালো লেগেছে বাবু ভাই।
শুভ কামনা।
এস.জেড বাবু
যাক
ভাবনা মিলে গেছে তাহলে।
চিন্তা নেই- লিখা সার্থকতা পেয়েছে।
কৃতজ্ঞতা সহ ধন্যবাদ ভাইজান
ভালো থাকবেন
ফয়জুল মহী
সাবলীল সুন্দর উপস্থাপন ।
এস.জেড বাবু
অনেক শুভেচ্ছা আর কৃতজ্ঞতা ভাইজান
সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন
দীর্ঘায়ূ কামনা করছি।
হালিম নজরুল
“ক্লান্ত ভোরের বাহুডোরে নিদ্রাভাঙ্গা চিরন্তন ষোড়ষী সকাল”
—————চমৎকার চরণ।
এস.জেড বাবু
শুভেচ্ছা প্রিয় ভাই