এমন নয় যে এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটেছে আমার জীবনে । মনে মনে কোন ইচ্ছে পোষন করি , দেখা যায় দু একদিনের মধ্যেই তা পূরণ হয়ে যায় । বহু বছর কোন প্রিয় বন্ধু বা আত্মীয়ের সাথে দেখা নেই যোগাযোগ নেই । হঠাৎ তাঁর কথা মনে পরে গেলো । দেখা গেলো ওইদিন বা দু একদিন পরেই সে এসে হাজির সামনে । অবাক এবং বিস্ময়ের সাথে তাঁকে বলিও তাঁকে মনে পরার কথা । হাসি ঠাট্টায় উড়িয়ে দেয়া হয় এমন মনে পরার কথা ।
হেঁটে বা কোন বাহনে যাচ্ছি কোথাও । একটি পরিচিত বাড়ি দেখে কেমন যেনো গা শিরশিরে অনুভুতি । কেমন এক অমঙ্গল আশংকা । দু – একদিনের মধ্যেই শুনি , ঐ বাড়িতে অগ্নিকান্ড / কারো মৃত্যু / দুর্ঘটনার সংবাদ শুনি । এমন হয়েছে অনেক বার ।
নেপালের পোখরা গিয়েছি । থাকবো ছয় দিন । চতুর্থ দিনেই কেমন অস্থিরতা । পরদিন ফিরতেই হবে । মনের মধ্যে কেমন তাগাদা । প্রচন্ড অস্থিরতা । টিকেটের দিন পরিবর্তন করে পঞ্চম দিনেই ফিরলাম কাঠমান্ডু । ভ্রমন সঙ্গীরা বেশ বিরক্ত । আমি কিছু বলিনা । পরের দিন যে প্লেনে যে সময়ে আমাদের ফেরার কথা সেটি দুর্ঘটনায় পতিত হোল । ছোট প্লেনটির কেউ বেঁচে রইল না । ভ্রমণ সঙ্গীরা এবার আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না কাটি । মনের মাঝে কে এই অস্থিরতা সৃষ্টি করলো ? কোন সেই বাঁশিওয়ালা যে আমাকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাঁশি বাজিয়েছিলেন ?
ছোট বেলাতেও এমন হয়েছে । দুষ্প্রাপ্য কোন কিছু পেতে বা খেতে ইচ্ছে করলো । অবাক হয়ে দেখতাম , আব্বা বা অন্য কোন আত্মীয় নিয়ে এসেছেন তা । কুমিল্লার নুরু কাকা আমার খুব প্রিয় মানুষ ছিলেন । খুব স্মার্ট থাকতেন । আব্বাকে ধর্ম ভাই বানিয়েছিলেন । আব্বাও তাঁকে ছোট ভাই হিসেবে দেখতেন । আমাকে খুব আদর করতেন । বাইরে বেড়াতে নিয়ে যেতেন । এটা সেটা কিনে দিতেন । সেই নুরু কাকার সাথে আব্বার কি এক মনোমালিন্য । কয়েকবছর তিনি আসেন না । সবাই ধরে নিলেন তিনি আর আসবেন না । একদিন তাঁকে এত বেশী ফিল করছিলাম আর মনে মনে বলছিলাম , কাকা খুব দেখতে ইচ্ছে করে তোমাকে , তুমি তো আমার আদর্শ মানুষ । পরদিন বিকেলে নুরু কাকা বাসায় উপস্থিত । আমার মাথায় হাত দিয়ে বলেন ‘ এত মনে করো কেনো ? এত ডাকো কেনো ? ” আমি কেঁদে ফেলেছিলাম এই কথায় । ব্যাখ্যা নেই আসলে এর ।
এত কিছু মনে পরে গেলো আজকের এক ঘটনায় । গতরাতে তাড়াহুড়ো করে সেহেরি খাবার সময় মনে পরলো , ইলিশ মাছ আর কচু তরকারি দিয়ে ডিস এর কথা । খুব লাইক করি আমি এটা । আজ ভোরে ঘুম থেকে জেগে দেখি , বাসায় ৫ টি তাজা ইলিশ মাছ দিয়ে গিয়েছে মাছ বিক্রেতা , ড্রাইভার তাঁর বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছে বিশাল সাইজের ৩ টি কচু । কাউকে বলিনি আমার ইচ্ছের কথা । অথচ চলে এলো ৬ – ৭ ঘন্টার মধ্যেই ।
ইচ্ছে পুরন হয় বেহেস্তে । মনে হয় বেহেস্তে ই আছি 🙂
২৪টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
ব্যাখ্যাতীত কিছু ঘটনা আমদের জীবনে প্রতিনিয়ত ঘটে , হয়ত আমারা তা বুঝতেও পারিনা ।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , অনেকেই তা আমরা বুঝিনা আসলে ।
পুষ্পবতী
আপনার চাওয়া গুলো খুব তাড়াতাড়ি পূরণ হয়ে যায়। খুব গুড লাক আপনার।ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার চাওয়া পাওয়া পূরণ হবার কথা শুনে। ভালো থাকবেন সবসময়।
জিসান শা ইকরাম
আপনারও কি এমন হয়নি কোনদিন ?
ভালো থাকুন আপনিও ।
মা মাটি দেশ
যদি ফাইনাল ডেসটিনেশন ছবির সিরিজগুলো দেখেন বুঝতে অনেক ঘটনাই ব্যাখ্যাতীত ঘটে।হয়তো এর কোন উত্তর নেই এটা বিধাতার খেলা মনে হয়। -{@ (y)
জিসান শা ইকরাম
হুম ঠিক , এর অনেক কিছুরই ব্যাখ্যা নেই ।
সঞ্জয় কুমার
অনেকের চিন্তা শক্তি অতি বাস্তব সম্মত । তাই এদের মনের ইচ্ছা দ্রুত পূরণ হয় । টেলিপ্যাথির একটা ব্যাপারও আছে । এমন অনেক বারই হয়েছে আমি যার সাথে দেখা করতে যাব সে নিজেই আমার বাড়ি চলে এসেছে । সন্তানের বিপদে অনেক মা ই আগেই টের পান । স্বপ্নে কারও মৃত্যু দেখার পর বাস্তবে ও সেটা দ্রুত ঘটে । এগুলো সবই আসলে মানুষের একটা সুপার ন্যাচারাল পাওয়ার । কারও বেশী থাকে আবার কারও থাকলেও হয়ত বুঝতে পারে না ।
জিসান শা ইকরাম
হতে পারে এটি সুপার ন্যাচারাল পাওয়ার । ভালো বিশ্লেষন করেছেন।
বনলতা সেন
এক কাজ করুণ , চাঁদ ! না না মঙ্গলে যাওয়ার কথা সাহস করে ভেবে ফেলুন ।
তাতে আমাদেরও সুবিধে হবে । কোন ভাবে একটি দড়ি ফেলে দেবেন । আমরা বেয়ে ওঠার কাজ নিজেরা নিজ গুনেই
করে ফেলতে পারব । শুভস্য শীঘ্রম । ওখানে বসে কড়িকাঠ গুনতে গুনতে ব্লগিং করা যাবে ।
জিসান শা ইকরাম
নিজে ইচ্ছে করে ইচ্ছে প্রকাশ করলে হবে না।
এমন হয়েছে তখনই , যখন ইচ্ছে গুলো হঠাৎ এসে যায় ।
স্বপ্ন নীলা
কচু তরকারী দিয়ে ইলিশ —!!! ওহ খেতে হবে তো —– ইলিশ ঘরেই আছে — এখন কচু আনতে হবে এই যা —–। জীবন্ত হয়েছে লেখাটা —— অসাধারণ
জিসান শা ইকরাম
এনে রান্না করে খাবেন , ভালোই লাগবে আশাকরি ।
ঘটনাগুলো যে সব জীবন্ত এবং বাস্তব ।
শুন্য শুন্যালয়
বিপদের আশংকা আগে টের পেয়ে গিয়েছিলেন, আপনি অনেক ভাগ্যবান। এখানে বসেই বেহেস্তের স্বাদ পাচ্ছেন, তাহলে তো মহা ভাগ্যবান।
এই অস্থিরতা আপনার সব ইচ্ছে পুরন করুক, আপনাকে হেফাজতে রাখুক। শুভ কামনা।
কিন্তু ইলিশ আর কচু কই পাবো এখন? 🙁
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , অবশ্যই ভাগ্যবান আমি ।
আল্লাহ অনেক কিছু দিয়ে জীবনকে পুর্ন করেছেন।
ইলিশ তো পাবার কথা আপনাত্র
কিন্তু কচু পাবেন কিনা জানিনা ।
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
আমারও এমন হয়েছে , তবে দু একটা ঘটনা । আপনার তো দেখি প্রচুর ঘটনা আছে । কেমন ভয় ভয় লাগছে আপনাকে আব্বা ।
ইলিস আর কচু দিয়ে তো এমন খাইনি কোনদিন , দেখতেই হবে এবার । খাবািরের ফটো দেখেছিলাম আজ ভোরেও , ডিলেট হলো কেন ?
আপনি একটু বেশী বেশী লিখতে পারেন না ? আমাদের বঞ্চিত করা হয় কেনো ?
জিসান শা ইকরাম
আরে ভয়ের কি আছে ?
ইলিশ আর কচু কি খাওয়া হয়েছে ?
ধুর আমার আবার লেখা !
কিছু লিখতে হয় একারনে লেখা ।
আগুন রঙের শিমুল
ইউশফুল থিংকিং 🙂
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ শিমুল ভাই ।
খসড়া
আপনি বেহেশতেই থাকুন সব সময় এই দোয়া করি।
জিসান শা ইকরাম
🙂 ধন্যবাদ খসড়া ।
মিসু
এমন উদাহারন আমারো আছে । হয়ত সবারই আছে । আমরা এসব নিয়ে আসলে ভাবিনা । কেন এসব হয় তার ব্যাখ্যা কি কে জানে ?
জিসান শা ইকরাম
এর কোনো ব্যাখ্যা আসলে নেই ।
আমার আছে নীল
যাক একটি চান্স আছে আপনার সাথে দেখা হবার। কোন একদিন যেন মনে পরে যায় আমার কথা। তাহলেই দেখা হতে পারে।
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা হা , আচ্ছা দেখা যাক 🙂