অবশেষে বৃষ্টি এলো অসম্ভব বাঁধার গিরি চাঙর ডিঙ্গিয়ে
সুস্থির শ্বাস ফেলে ফেলে, ক্ষিপ্রতার ঝড় ঝেরে মুছে,
দিগন্ত ধনুকের মত নিটোল পাখা মেলে
ভিড় ঠেলে/ভেঙ্গে মুঠোমুঠো মুক্তো ছড়িয়ে/বিছিয়ে,
ছল ছলে পূর্ণিমা তিথিতে, সবুজের গা ঘেঁসে
পাতাদের ছুঁয়ে ছুঁয়ে টুপটুপ টুপটাপ করে করে
স্বপ্নে দেখা জিপসি মেয়েটির বেশে।
এখানে এই এখানে সোনা-মাটিতে (সোনেলায়)
দু’পায়ে দাঁড়িয়ে আছি অনেক অনেক কাল ধরে,
ঝড়ে ঝঞ্ঝায় অকুতোভয় সাথীদের সাথে;
হেঁটে/দৌড়ে বেড়িয়েছি গলি থেকে রাজপথে
বই-মেলা থেকে নানা উদ্যানে, পথ থেকে প্রান্তরে।
মেঘ বারান্দায় দাঁড়িয়ে সবাই মিলে গল্পচ্ছলে
চাঁদের দেশে যাওয়ার ছক মিলিয়েছি।
রক্তাক্ত হোঁচটের সাথে যূথ বেঁধে করেছি সম্মুখ যুদ্ধ,
সহসা কুৎসিত দুধ-সাপ-ঝড় এঁকে-বেঁকে সুযোগের
সন্ধানে উন্মুক্ত ছুড়ি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, শয়তানের উষ্ণ-অন্ধ নিঃশ্বাসে,
আহ্, ব্রুটাস প্রাণের বন্ধু আমার, তুমি!! তুমিও!! পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে!
অব্যর্থ নিশানায়!!
পাথর বুকে অপরীক্ষিত বন্ধুরা পূণ্য-বন্ধুত্বে পথ আগলে দাঁড়ায়!!
বাঁচিয়ে দেয়, বেঁচে যাই।
হায়, ব্রুটাস এই রক্ত লোলুপতা লুকিয়ে ছদ্ম-বেশে
এত কাল পাশে ছিলে!! ধিক বন্ধু-রূপী নর-ঘাতক!
তার থেকে এই ভাল, খোলা বুকে এই রাজপথে দাঁড়াই,
মা-কালীর সংহার বেশে এক হাতে খড়গ অন্য হাতে
পাখির খাঁচাটি নিয়ে মুণ্ডু কেটে নাও, এই মাথা বাড়িয়ে দিচ্ছি,
নাহ্, আমি শিব নই।
রক্ত-স্বাদে তৃষ্ণা মেটাও, শ্মশান-কালীর নূতন ঠিকানায়
দিব্যি বেঁচে থেকে;
প্রবল-প্রতাপে-সিংহ এবার নেংটি-ইঁদুরের ছোহবতে!!
বেদনা-ব্যথা-উত্তাল বন্ধ্যা-যন্ত্রণা চেপে!
তাও বলি ব্রুটাস, বন্ধু আমার, উলঙ্গতায় বড্ড বেমানান তুমি।
যেমন ছিলে আগেও।
বৃষ্টির দীর্ঘ ছায়া/মায়ায় উল্কারা বেঘোরে পা মচকায়,
ঠোঁটে শিস তুলে জিপসি মেয়েটি সবুজের ডানায়
ছলকে ছলকে যায় দুলকি চালে।
বৃষ্টি-বারান্দার জানলায় দাঁড়িয়ে, জিপসি মেয়েটি
শিশির-রোদে হাসে, সবুজের উষ্ণ চোখ মেলে।
৩৮টি মন্তব্য
মাছুম হাবিবী
ওয়াও অসাধারণ একটি কবিতা ভাই। বৃষ্টি নিয়ে দারুন লিখেছেন, বেশ ভালো লাগলো
শুভ কামনা
ছাইরাছ হেলাল
ধন্যবাদ দিচ্ছি।
শাহরিন
আট দশ বার পড়ে তারপরে কমেন্ট করবো।
ছাইরাছ হেলাল
যতি চিহ্ন ধরে ধরে ধীরে ধীরে পড়লেই সব ফক ফকা!!
নাজমুল হুদা
জিপসি মেয়েটি কে?? এতো উপমার শুধুই কী ঐ মেয়েটির জন্য।
ছাইরাছ হেলাল
এটি আসলে প্রতীকী চরিত্র।
সে স্বস্তি-সম্ভবনার প্রতীক হিশেবে এই লেখায় এসেছে।
মনির হোসেন মমি
সময়ের কাছে সব উত্তর জানা যায়।সময়ই বলে দেয় কে শত্রু কে মিত্র।
সব মুশকিল আসানে রক্তাক্ত আশাহত হৃদয়ে বৃষ্টি এসে সব শীতল করে যায়।
খুব চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করলেন কবিতায় ভন্ড লেখকদের ভন্ডামীর অবসান।আবারো আসবো কমেন্টস করতে।
ছাইরাছ হেলাল
সময় সব কিছুর নিয়ামক, সেই বলে দেয় কে আসল কে নকল।
অপেক্ষার স্বস্তি-বৃষ্টি পূণ্য-বন্ধুদের হাত ধরেই আসে।
মন দিয়ে পড়েছেন দেখে ভাল লাগল।
সময় পেলে অবশ্যই আসবেন।
শবনম মোস্তারী
বৃষ্টিতে সকল জরা -গ্লানি দুর হবে।
খুব সুন্দর লিখেছেন।
ছাইরাছ হেলাল
জ্বি, সব কিছু ধুয়ে মুছে যাবে অবশ্যই।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
বন্যা লিপি
আরো কয়েকবার পড়তে হবে। যতটা বুঝেছি তাতেই ফকফকা সব। অভিবাদন, সেল্যুট,কম হয়ে যাবে এমন লেখায়। দুর্দান্ত বর্ননা, বৃষ্টি বন্দনা।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্য অবশ্যই আপনি পড়বেন এবং তা অনেক বার।
আপনারা পড়েন/পড়বেন বলেই তো এখানে লিখি!
বৃষ্টি আছে বলেই আমরা বারে বারে বেঁচে উঠি।
সাবিনা ইয়াসমিন
বৃষ্টি এসেছে জিপসি মেয়ের অনাম্বড় আহ্বানে,
ধুধু মরুর রুক্ষতা ঝেড়ে, উর্বর সোনালী স্বপ্ন নিয়ে।
ছাইরাছ হেলাল
জিপসি মেয়েটির ডাকেই বৃষ্টি এসেছে, হয়ত বৃষ্টিই জিপসি মেয়েটির আর একটি রূপ।
অবশ্যই সোনালী স্বপ্নের ডালি উজার করেই আমাদের দিচ্ছে।
আচ্ছা এই জিপসি মাইয়াডা কিডা!! বোঝতারলাম না।
এত অল্পে গুটিয়ে নিলেন!!
সাবিনা ইয়াসমিন
জিপসি মেয়ে মাইয়্যাডা হতে যাবে কেন ? সবুজের প্রতীক বা টলমলে বৃষ্টির প্রতীকও হতে পারে। এতো প্রশ্ন করছেন কেন ? এখানে পাঠক আপনি না আমি !!
ছাইরাছ হেলাল
নবারুণের পাঠক আমি, তাই করি বিচিত্র প্রশ্ন!
কত কিছুই হইতারে, মুলে কিচ্ছু না।
জিসান শা ইকরাম
” আহ্, ব্রুটাস প্রাণের বন্ধু আমার, তুমি!! তুমিও!! পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে!
অব্যর্থ নিশানায়!! ”
অবিশ্বাস্য এখনো আমার কাছে সেসব।
” বেদনা-ব্যথা-উত্তাল বন্ধ্যা-যন্ত্রণা চেপে!
তাও বলি ব্রুটাস, বন্ধু আমার, উলঙ্গতায় বড্ড বেমানান তুমি।
যেমন ছিলে আগেও।”
কি বলব আমি আর, আপনিই সব বলে দিয়েছেন।
অপরীক্ষিত বন্ধুদের আমরা এতদিন চিনতে পারিনি, এই ভুল দ্বায় আমাদেরই। আলোর পথের যাত্রী আমরা, আলো আসবেই।
স্নিগ্ধ হবেই ধরনী।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি আন্তাজি-মান্তাজি এই সব কী লেখেন!!
ল্যাহা পড়া তো করলেন না, এস বুঝে আপনার কাজ নেই!!
আলো আসবে কেন!!
আলো এসেছে প্রকৃতজনদের হাত ধরেই। ব্রুটাসদের ল্যাং মেড়ে।
তৌহিদ
সব ঠিক আছে, তবে রোমান ব্রুটাসকে কেন বাংলায় টেনে নিয়ে আসলেন তাই বুঝছিনা। আবার পড়তে হবে। মাথা আউল বাউল হয়ে আছে।
জিপসি মেয়েটি কেমন আছে? আপনার মাঠ থেকে কি তার বারান্দা দেখা যায়??
ছাইরাছ হেলাল
এই রোমান ব্রুটাস বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক হিশেবে সারা বিশ্বে প্রচারিত।
এর ভিত্তিতেই শেক্সপিয়র পৃথিবী বিখ্যাত নাটক হ্যামলেট রচনা করেছেন।
এখন-ই আউলা হলে তো হবে না, টাইট হয়ে বসেন। কত কী পড়তে হবে তার ঠিক ঠিকানা নেই।
খবর পেলাম জিপসি মেয়েটি আপনার অপেক্ষায় উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে!
রেহানা বীথি
বাহ্, খুব ভালো লাগলো
ছাইরাছ হেলাল
পড়ার জন্য ধন্যবাদ!
রাফি আরাফাত
লেখাটা একবার পড়ে কিছু বুজলাম না। কাল সকালে আবার৷ পড়তে হবে। বেশ কঠিন মনে হচ্ছে। 😶
ছাইরাছ হেলাল
লেখার সাথে মন্তব্য ও তার উত্তর পড়ে দেখতে পারেন।
নাহ্, কঠিন কিছু না।
রাফি আরাফাত
হুম বুজলাম। কিন্তু একটা কথা বলেন তো এতোকিছু কি শুধু এই মেয়েটার জন্যই ভাই। বেশ শক্তিশালী শব্দশৈলী লিখছেন ভাই। ধন্যবাদ ভালো লাগছে
ছাইরাছ হেলাল
আসলে এখানে কোন মেয়ে নেই,
জিপসি মেয়েটি বৃষ্টির প্রতিনিধিত্ব করছে মাত্র।
শব্দদের প্রতি আলাদা টান অনুভব করি বলেই এ সব ব্যবহার করি।
এ এমন কিছুনা।
রাফি আরাফাত
বাহ বাহ ভাবনার শেকড় কত উচ্চ। ভালো লাগলো ভাই। শেখার আছে অনেক কিছু আপনাদের কাছে। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন
ছাইরাছ হেলাল
আমরা সবাই ছাত্র মাত্র।
সাবিনা ইয়াসমিন
ব্রুটাস তুমিও !! কত মর্মান্তিক দৃশ্য ! কত মর্মান্তিক সংলাপ ! আজও পাঠক বেদনাহত হয়ে যায়।
ব্রুটাস তার সেনাবাহিনীকে উদ্বুদ্ধ আর অনুপ্রেরণা দিতে কোনো কমতি রাখেননি। তারপরেও তার অনুচর আর অনুসারীরা মরিয়া প্রমান করেছিলো বিশ্বাসঘাতক দের অনুপ্রেরণা কোনো কাজে আসে না। অত:পর ব্রুটাস আত্মহত্যার পূর্বক্ষনে দিয়েছিলেন ঐতিহাসিক বানী _
** সীজার, যতখানি ইচ্ছে নিয়ে আমি আত্মহত্যা করছি, তার অর্ধেক ইচ্ছেও তোমাকে হত্যার সময় আমার ছিলো না **
নব কালের সীজার কে নব্য ব্রুটাস হত্যা করতে পারেনি। সীজার এখনো দাঁড়িয়ে আছে শক্ত দু-পা নিয়ে নিজের সোনা-মাটির অঙ্গনে। কিন্তু ব্রুটাস!! সে এখন কি করবে….?
ছাইরাছ হেলাল
বাহ্, দারুণ খাটুনি নিয়েছেন দেখছি।
হ্যাঁ, ব্রুটাস বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক হয়ে অনন্তকাল বেঁচে থাকবে।
যদিও সিজার ধোয়া তুলসী পাতাটি নয়।
ব্রুটাস এখন নেংটি ইঁদুর ছোহবতে সময় কাটাচ্ছে।
সাবিনা ইয়াসমিন
সীজার যেমন ধোয়া তুলসী পাতা ছিলেন না, তেমনি ব্রুটাসের জনপ্রিয়তাও কম ছিলো না। কিন্তু রাজনীতি কোনো নীতির ধার ধারে না। এন্টোনিও ঠিকই নিজের আখের গুছিয়ে নিয়েছিলেন এসবের মধ্য থেকেই। 😁😁
খাটুনির কিছুইনাই। অনেকদিন পর জুলিয়াস সীজার কে নিয়ে কিছু লেখার সুযোগ পেলাম।শেক্সপিয়র না পড়লে জীবনটাই লবনাক্ত হয়ে থাকতো মহারাজ। ☺😁
ছাইরাছ হেলাল
আপনি জানেন, ব্রুটাসের নানান আকাম সত্ত্বেও (জেল থেকে মুক্তি)
সবাইকে বাদ দিয়ে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী করার ঘোষনাও ছিল।
যোগ্যদের কাচা-পাকা কলা দেখিয়ে।
ভয় দেখানো ঠিক না।
চুপি চুপি একটি কথা বলি, ভুত-প্রেত্নী এই খনি থেকেই তুলে নিয়েছি, নিজের লেখায়, নিজের মত।
শামীম চৌধুরী
বৃষ্টির দীর্ঘ ছায়া/মায়ায় উল্কারা বেঘোরে পা মচকায়,
ঠোঁটে শিস তুলে জিপসি মেয়েটি সবুজের ডানায়
ছলকে ছলকে যায় দুলকি চালে।
বাহ। ছলকে ছলকে যায় দুলকি চলে বৃষ্টির তালে নৃত্য করে।
ছাইরাছ হেলাল
বৃষ্টির নান্দনিক ঢং বলে মনে করতে পারেন।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আরজু মুক্তা
আপনার বৃষ্টি হচ্ছে এ্যাবস্ট্রাক্ট সেন্স এ ব্যবহৃত হয়েছে।।এই বৃষ্টি শ্রাবণ ধারার মতো সবকিছু ধুয়ে নিয়ে যাক।জিপসি মেয়েটিও দুলকি চালে অবগাহিত হোক।।নির্মল হোক।আমরা যেনো হ্যামলেটের মতো দ্বিধা দ্বন্দ্বে না ভুগি।কাটিয়ে উঠি দেখি যেনো এক নতুন ভোর।বানানের ঢ়ত্ন নিবেন।শুভকামনা
ছাইরাছ হেলাল
আমরা নূতন সকালের প্রত্যাশায় থাকি সবটুকু আনন্দ নিয়ে।
কোন দ্বিধা-দ্বন্ধ আমাদের পথ আগলাবে- না এ কামনা করি।
ধন্যবাদ, মন দিয়ে পড়ার জন্য।
আরজু মুক্তা
যত্ন
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা।