আজ সন্ধ্যায় বিরাট দাঁও মেরেছে পিন্টু। রেল স্টেশনে ভীড়ের মাঝে একজনের পকেট সাফ করেছে। বেশ মোটা অংকের টাকা। বহুদিন পর আজ কপাল ফিরেছে। ভাগ-বাটোয়ারা শেষে সব টাকায় ফুর্তি করে গভীর রাতে ফুরফুরে মেজাজে বাড়ি ফিরলো সে। বাড়িতে ঢুকে দেখলো সবাই জেগে আছে। পরিবেশ থমথমে। অন্ত:সত্ত্বা বোনের ঘর থেকে চাঁপা কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। আর কয়েকদিন বাদেই ওর ডেলিভারির ডেট। কি হয়েছে, পিন্টু কিছু বুঝতে পারলো না। ভাবছে, বোনের হঠাৎ শরীর খারাপ হলো না তো? মা’কে জিজ্ঞেস করেই জানলো, আজ সন্ধ্যায় দুলাভাই এসেছেন। স্টেশনে তার পকেটমার হয়েছে। তাতে বোনের ডেলিভারির সমস্ত টাকা রাখা ছিলো।
১৯টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
বেশ ভালো লিখেছেন আপু। কতো মানুষের কান্না রয়েছে এসব টাকায়, অথচ পকেটমাররা খুব ধনী হয়েছে বলেও তো শুনিনি কখনো।
গল্প লেখার হাত বেশ পাঁকা। আমি এদিকে খুবই কাঁচা।
নীহারিকা
এরা কখনো মানুষের অভিশাপ নিয়ে বড় হতে পারে না। আর লেখায় পাঁকা কি বলছো? কেবলই তো হাতেখড়ি হলো, পাঁকার পথ তো বহুত দুর।
ইঞ্জা
মন ভিজে গেল, আসলেই আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ বুঝতে চাইনা যে তাদের অকর্মের কারণে অন্য মানুষের বড় ক্ষতি হয়ে যায়। 🙁
নীহারিকা
তা তো এরা বুঝেই না। তবে এখানে বুঝাতে চেয়েছি যে অন্যের ক্ষতি করতে গেলে যে নিজের অজান্তে নিজেরই ক্ষতি হতে পারে তা আমরা ভাবি না। পিন্টু কিন্ত নিজেই ভীড়ের ভেতর না জেনে ওর দুলাভাইয়েরই পকেট কেটেছে।
ইঞ্জা
সহমত। (y)
ছাইরাছ হেলাল
সুন্দর লেখা, আপনি কি আগে এখানে আরও বড় করে দিয়েছিলেন!!
পড়া পড়া মনে হচ্ছে কেন বুঝতে পারছি না।
নীহারিকা
না তো। আমি লেখাই শুরু করলাম আপনাদের সামনে, বড় করে লিখবো কী? পারিই তো না। তবে জানিনা এমন কোনো গল্প আগে কেউ লিখেছিলেন কি না।
আমি মাঝে এই ছিনতাইকারী এবং যারা খাবারে ফরমালিন বা ভেজাল দেন তাদের কথা ভাবি। ভাবি, তাদের আত্নীয়দেরওতো এমন বিপদ ঘটতে পারে, তাদের বাড়ির লোকজনও তো এই ভেজাল খাবার খেয়ে কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাহলে কেন তারা এসব করে?
ইলিয়াস মাসুদ
খুব সুন্দর
নীহারিকা
ধন্যবাদ ভাই।
জিসান শা ইকরাম
বুমেরাং টা দারুন হয়েছে,
সফল একটি অনুগল্প।
নীহারিকা
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
মৌনতা রিতু
খুবই ভাল একটা বাস্তব গল্প পড়ে ফেললাম ছোট কিছু শব্দে।
শুভকামনা ম্যাডাম আফা।
-{@ (3
নীহারিকা
অনেক ধন্যবাদ আপা।
নীলাঞ্জনা নীলা
“ছোট প্রাণ ছোট ব্যথা, ছোট ছোট দুঃখ কথা
নিতান্তই সহজ সরল,
সহস্র বিস্মৃতিরাশি প্রত্যহ যেতেছে ভাসি
তারি দু-চারটি অশ্রু জল।
নাহি বর্ণনার ছটা ঘটনার ঘনঘটা,
নাহি তত্ত্ব নাহি উপদেশ।
অন্তরে অতৃপ্তি রবে সাঙ্গ করি মনে হবে
শেষ হয়ে হইল না শেষ।”—–একেবারে পারফেক্ট। আপনার এমন গল্পগুলো আমার খুব ভালো লাগে আপু।
নীহারিকা
ছোটগল্প নিয়ে এ কথামালা আমারও খুউব প্রিয়। দিদি অনেক ধন্যবাদ পাশে থাকবার জন্য।।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনি এসব অনুগল্পগুলোকে একসাথে করে একটা বই বের করে ফেলুন আপু।
নীহারিকা
ওরে বাবা বলেন কি? সে দু:সাহস আমি কোনোদিনই দেখাতে পারবো না।
লীলাবতী
শেষ পর্যন্ত নিজের দুলাভাইয়ের পকেট মারা! বুঝতেই পারিনি প্রথমে এমন ভাবে সমাপ্ত হবে লেখার। এমন অণুগল্প আরো চাই।
নীহারিকা
বাস্তবে এমন হয় কি না কখনো আমার জানা নেই কিন্ত আমি চাই কখনো এমন হোক। কোনো খাবারে ভ্যাজাল মেশানো দোকানির কাছের কেউ এমন রোগে আক্রান্ত হোক যার জন্য তারা নিজেরা দায়ী। ২০০৯ সালে আমি আমার বাসার ১০০ গজ এলাকার মধ্যে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ি। আমার প্রথম মোবাইল নোকিয়া ৭২৬০ যার মুল্য ছিলো ২১৫০০ টাকা, আরেকটা মটোরোলা মোবাইল, নিজের টাকায় প্রথম কেনা সোনার চেইন সহ কিছু টাকা ওরা নিয়ে যায়। আমি এ কষ্ট ভুলতে পারি না। একজন শিক্ষকের কষ্টার্জিত টাকায় কেনা জিনিস এভাবে কেউ চাইলেই নিয়ে নিতে পারে এটা মানতেই পারছিলাম না আমি। তখন থেকেই এমনটা হোক চাই আমি।