আশা করছি আপনারা শিরোনাম দেখেই বুঝে ফেলেছেন আজকে কি বিষয় নিয়ে বলতে এসেছি। তাই বেশি ভুমিকা না দিয়ে সরাসরি কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। বিয়ে নিয়ে সমাজে অনেক কথাই প্রচলিত আছে। বর্তমান সময়ের বিয়ে আর আগেকার জমানার বিয়ে যেন এখন আকাশ পাতাল তফাৎ। ছোট একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে। বছর বিশেক আগেও বিয়েতে দেনমোহর ধরা হত ৫০ হাজার টাকা কিংবা ১ লাখ টাকা। আর এখন? ১০ (!) লাখের উপর না গেলে নাকি মান সম্মান থাকে না। ^:^
আবার যেমন ধরেন, লাভ মেরেজ আর অ্যারেঞ্জ মেরেজ আগেও যেমন ছিল এখনও আছে। তবে বর্তমানে লাভ মেরেজটার চল বহুগুণে বেড়েছে। এটার অনেক ভাল দিক যেমন আছে তেমনি খারাপ দিকও আছে। ৩ বছর প্রেম করে যাকে আপনি যাকে বিয়ে করলেন তার সাথে হয়তো আপনার সংসার ৩ মাসও টিকলো না। এমন নজির এখন ভুরি ভুরি। তবে অ্যারেঞ্জ মেরেজের বিয়ে অবহেলা করার মত বিষয় নয় মোটেই। অনেক রক্ষণশীল কিংবা মধ্য রক্ষণশীল পরিবার আজও অ্যারেঞ্জ মেরেজকে গুরুত্বের সাথে দেখেন। কারণ আমাদের সমাজে কিছু কিছু ধ্যান ধারণা আজও পুরনো। চেষ্টা করেও হয়তো আপনি সেটা কমাতে পারবেন না। হাজার হোক, আমরা বাঙ্গালী। (y)
এবার আসুন জেনে নেই বিয়ে করার আগে কি কি বিষয় আপনার জানা জরুরি –
১। পরিবারঃ গুরুজনেরা বলেন, কোন পাত্র কিংবা পাত্রী ভাল কি মন্দ সেটা বোঝার প্রাথমিক উপায় পরিবার কেমন, কে কি করে সেটা আগে দেখা। বিয়ে করার আগে পাত্রী কিংবা পাত্রের পরিবার সম্পর্ক এ আদ্য প্যান্ত খোজখবর করুন। তারপর যাচাই বাছাই করে সঠিক পথেই আগান।
২। সহায় সম্পত্তিঃ এ বিষয়টা নিয়ে অনেকেরই দ্বিমত থাকতে পারে। নিজেকে তাই প্রশ্ন করুন আপনি কি চান। টাকা পয়সা আপনাকে সাময়িক সচ্ছলতা দিবে কিন্তু মনের দিক থেকে কি আপনি আসলেই সুখী? মোদ্দা কথা, কাড়ি কাড়ি টাকাই আপনাকে প্রকৃতরূপে সুখী নাও করতে পারে।
৩। পারিবারিক স্ট্যাটাসঃ এই বিষয়টি এড়িয়ে গেলে হয়তো আপনাকে পস্তাতেই হবে; সেটা হোক লাভ মেরেজ আর অ্যারেঞ্জ মেরেজ। উন্নত দেশগুলোতে তারা এসব নিয়ে একদমই চিন্তা করে না। পাত্র যদি প্লাম্বার হয় তার স্ত্রী হয়ত কোন এক প্রতিষ্ঠান ভাল বেতনে কর্মরত।আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে এটা বেশ গুরুত্ব বহন করে। একবার ভাবুন তো, আপনি উচ্চ মধ্যবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন হয়ে পারবেন কোন কৃ্ষকের মেয়েকে বা ছেলেকে বিয়ে করতে? বাস্তবতা আসলে অনেক কঠিন। নাটক সিনেমার মত না – গরীবের ছেলে আর কোটিপতির মেয়ে!
৪। পাত্রী পাত্রীর রিলেশনশীপ স্ট্যাটাসঃ বিয়ের আগে অবশ্যই জেনে নিন আপনি যার সাথে বাকি জীবনটা কাটাতে চান, তার অন্য কারো সাথে রিলেশন আছে কি না। আর এই বিষয়টা আপনি নিজে থেকেই বের করুন। সরাসরি জিজ্ঞেস করুন উনাকে। কারণ মেয়েদের রিলেশন আছে এই ব্যপারটা অনেক পরিবার মেনে নেয় না। আর ছেলে যদি পছন্দ না করে তাহলে তো আরো খারাপ অবস্থা হয়। তখন মেয়ের পরিবার চাইবে অন্যত্র বিয়ে দিতে।
*** মনে রাখুন, পাত্রীর সাথে আলাদা কথা বলুন এই বিষয় নিয়ে। কারণ অনেক সময় পরিবারের চাপে পরে মেয়েরা তাদের ভালবাসার মানুষের কথা মুখ ফুটে বলতে পারে না। পরিণতি যা হবার তাই হয়।
৫। পাত্রী সুন্দরী নাকি কম সুন্দরীঃ আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করেন, আমি কেমন পাত্রী চাই। এই প্রশ্ন এখন এতটাই কমন যে এর উত্তর দিতে দিতে আমি ক্লান্ত। অনেকে হয়ত আমাকে পরীক্ষা করেন এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে। আমার এক স্কুল বন্ধুকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম “তোর কেমন মেয়ে পছন্দ?” উত্তরে সে শুধু একটাই কথা বলেছিল – মেয়ে হতে হবে সুন্দরী! আমাকে এই প্রশ্ন করা হলে আমার উত্তর হয় – সুন্দরী হওয়াটা আমার কাছে কোন বড় বিষয় না। একটা সময় পর কে কেমন সুন্দরী সেটা কোন কাজেই আসবে না। আমার কাছে মেয়েটার মনটাই আসল। সে উপযুক্ত কি না আমার জন্য সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
** বিজ্ঞানীরা বলেছেন সুন্দরী মেয়েরা নাকি পুরুষের স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর! :p
আরো অনেক কথাই বলার ছিল। কিন্তু এক পোস্টে এতকিছু বলা সম্ভব নয়। সামনে আরো কথা হবে। আজকে এতটুকুই।
যদি এই পোস্ট পড়ে আপনাদের বিন্দুমাত্র মনে কষ্ট লেগে থাকে তাহলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃক্ষিত। আমি শুধু আমাদের সমাজের চিত্রটি উপস্থাপন করতে চেয়েছি মাত্র।
বিঃদ্রঃ একটি ঘুমের ঘোরের পরিবেশনা।
১৫টি মন্তব্য
শামীম আনোয়ার আল- বেপারী
না একটুও কষ্ট লাগেনি বরং ভালো লেগেছে।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
ধন্যবাদ
শুন্য শুন্যালয়
এরেঞ্জ ম্যারেজ শুনলে যেন আমার কেমন লাগে!! তবে আপনার পোস্ট বাস্তবতার আলোকেই করা, তাই আপনি ভালো বলতে পারবেন। তা ভাই পাত্রি কি পেলেন? কবে দাওয়াত পাচ্ছি আমরা?
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
শুভ সংবাদ এখন দিতে পারছি না। সময় লাগবে আর একটু। :p
দাওয়াত আসবে, অপেক্ষা করেন আপু। 🙂
মৌনতা রিতু
সুন্দরী মেয়েরা পুরুষের স্বাস্থ্যের জন্র ক্ষতিকর হইলে হগ্গোল পোলা ক্যা সুন্দরী মাইয়া খোঁজে।
পারিবারিক ভাবে মেয়েরর গুনাগুন দেখার বিষয়ে আগে আমার নানি দাদিরা বলত, মেয়ে কিংবা ছেলের মাতৃকুল দেখ। মা ভালো না হলে ঐ ছেলেমেয়ে কখনোই ভালো হবে না।
সম্পত্তির ব্যাপারে আগে হিসেব করত, পাতত্র কিংবা পাত্রীর বাড়িতে চাল ডাল কিনে খায় নাকি, যদি কিনে খেত তবে ঐ বাড়ির মেয়ে আনা ও যাবে না, মেয়ে বিয়ে দেওয়া ও যাবে না। আর কইয়া রাখি, মোর কিন্তু নিজের পছন্দের বিয়ে পরে এ্যারেন্জ। আঠারো বছর ঘাড়ে উঠে আছি।
ঘুমের ঘরে তো তাই পোষ্টখান ভালোই হইছে।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
বিয়েটা বড়ই জটিল এক বিষয়। অনেক হিসেব কষে আগাতে হয়।
শুভকামনা আপনার জন্য।
ব্লগার সজীব
জেনে রাখলাম, কাজে দেবে 🙂
” ** বিজ্ঞানীরা বলেছেন সুন্দরী মেয়েরা নাকি পুরুষের স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর!” মানে কি? বুঝিনি আসলে। যাদের স্ত্রী সুন্দরী তারা সবাই কি ভগ্ন স্বাস্থের? ^:^ না তো।
(y)
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
;? ;?
জিসান শা ইকরাম
উপকারী পোষ্ট, সবার কাজে লাগবে মনে হয় 🙂
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
ধন্যবাদ
আবু খায়ের আনিছ
মেয়ে দেখার আগে মা দেখ, ছেলে দেখার আগে বাপ। প্রচলিত একটা প্রবাদ মনে হয় আছে এমন। এমনিতেই ত আর কথাটা প্রচলিত হয়নি।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
সেই।
নীলাঞ্জনা নীলা
যাক ছেলেকে বলবো, ও যখন বিয়ে করবে। 😀
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
😀
নীরা সাদীয়া
আপনার কাছে মেয়েটার মনই আসল। এমন একটা কথা ও রুচিশীল লেখনীর জন্য একরাশ শুভকামনা ও ভাল লাগা রেখে গেলাম।