জানিনা আপনারা কতটুকু শংকিত করোনা নিয়ে, কিন্তু করোনা আসবে রা নিশ্চিত থাকুন, অনেকে মনে করছেন আমাদের দেশে গরম পড়া শুরু হলেই করোনা থেকে মুক্তি।
আরেহ না না কোন মুক্তি নেই, করোনা ভাইরাস ৭০° সেলসিয়াসের উপরে গরম পেলে ধ্বংস হয়, আর এই পৃথীবিতে কোথাও ৭০° গরম পড়েনা, তাহলে নিশ্চয় বুঝে গেছেন কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হতে বেশি হয়ত সময় লাগবেনা।
কিন্তু গোঁদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে আরেক মৃত্যুদূত অলরেডি ছোবল হানা শুরু করেছে এই দেশে, কি অবাক হলেন?
আমি ডেঙ্গুর কথা বলছি, যে ডেঙ্গু গত বছর সবাইকে পাগল বানিয়ে দিয়ে ঘরে ঘরে মৃত্যুর ছোবল দিচ্ছিলো, সেই ডেঙ্গু এইবার আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসছে।
নিশ্চয় মনে আছে আপনাদের, এডিস মশা থেকে মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়, যে ডেঙ্গু ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র খোকন সাহেবকে পর্যন্ত পরাস্ত করে দিয়েছে, সেই ডেঙ্গু আবার ফিরে আসছে এবং গতবারের চাইতে আরও পরাক্রমশালী হয়ে ফিরে আসছে।
ইতিমধ্যে গবেষকগণ এলার্ট করেছেন বিষয়টি নিয়ে কিন্তু সরকার এবং দেশের সিটি কর্পোরেশন, জেলা উপজেলার মেয়র, চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্টরা কতটুকু বিষয়টা সিরিয়াস ভাবে নিচ্ছেন তা ভবিষ্যত বলে দেবে।
আমার মতে সরকারের সংশ্লিষ্টরা যতটুকুই সিরিয়াস হোননা কেন, আপনারা আগে সিরিয়াস হোন, জানেন তো “নিজে বাঁচলে বাপের নাম”?
তাহলে আপনার এবং আমাদের কি করা যায় তা নিয়ে আগে কথা বলি।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে করণীয়ঃ
১) প্রথমেই নিজের আশেপাশের নালা নর্দমা পরিস্কার রাখুন সবসময়, খেয়াল রাখবেন এইসবে যেন কোন মতেই পানি জমে না থাকতে পারে।
২) নিজের ছাদ, কার্নিশ, ফুলের টব, ছোট খাটো পট বা টিনের কৌটো, ভাঙ্গা বালতি, পুরাতন টায়ার, ডাবের খোসা ইত্যাদিতে যেন পানি জমে না থাকে সেই ব্যবস্থা করুন।
৩) কারো ছাদ, কার্নিশ বা পানি জমে আছে এমন কোন জায়গা দেখলে দ্রুত সিটি কর্পোরেশনকে জানান।
৪) সিটি কর্পোরেশনের মানুষ ঔষধ ছিটাতে আসলে নিজে সাথে থেকে নিজের আশে পাশের জায়গা গুলোতে ভালোভাবে ঔষধ ছিটানোর ব্যবস্থা করুন।
৫) নিজের ঘরদোর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন, ঘরে যেন মশা থাকতে না পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
৬) নিজেরা প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি আছে এমন খাদ্য গ্রহণ করুন।
৭) কেউ যদি ডেঙ্গু আক্রান্ত হোন দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখান, সাথে প্রচুর পরিমানে কমলা, লেবু জাতীয় ফলের ফ্রেস জুস পান করতে দিন আক্রান্তকে।
৮) আরেকটা বিষয় জরুরী ভাবে মনে রাখবেন, ডেঙ্গু ভাইরাস গতবার তার চরিত্র বদল করেছিলো, যেমন ১০০° জ্বর হলেও ডেঙ্গু দেখা দিচ্ছিলো, সুতরাং জ্বর যায় আসুক প্রুচুর পরিমানে জুস, ডাবের পানি খেতে হবে, নাপা জাতীয় ঔষশ এড়িয়ে চলুন, জ্বর হলেই ডাক্তার মাস্ট দেখাবেন।
৯) আরেকটি সিরিয়াস বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, এইবার গুজবে কোনভাবেই কান দেওয়া যাবেনা, খবরদার।
খেয়াল রাখবেন গতবারের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এইবার বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকবেন, সুতরাং এমন ব্যক্তিদের বিশেষ ব্যবস্থার মধ্যে থাকতে হবে।
ডেঙ্গুকে কোনভাবেই হেলাফেলা করা যাবেনা এইবার, সুতরাং সাবধানতা অবলম্বন এখনই করুন।
সমাপ্ত।
ছবিঃ Google
১৮টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
ডেঙ্গু কিন্তু নির্মুল হয় না, এই কথাটি আমরা মনে রাখি না,
ভয়াবহতার জন্য আমরা কতটা প্রস্তুত সেটাই চিন্তার বিষয়।
আপনার লেখায় আমরা সচেতন হব এ আশা রাখি।
আপনাকে এ লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
সত্যি তাই ভাইজান, আমাদের সকলের সচেতনতায় পারে এই ডেঙ্গু থেকে মুক্তি।
আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ ভাইজান।
রেহানা বীথি
গতবারের তথৈবচ অবস্থা এবার যেন না থাকে। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি কি হতে পারে, সেটা সহজেই অনুমেয়।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ইঞ্জা
সম্পূর্ণ একমত আপু, আমাদের সকলের সচেতনতায় পারে আমাদের রক্ষা করতে, ধন্যবাদ নিরন্তর।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এটা সত্যিই যে এর জন্য আমরা সাধারণ জনগণ ই দায়ী। আমাদের বেখেয়ালিপনা , অসচেতনতা দিয়ে আমাদেরকে আমরাই ধ্বংস করছি, পরিবেশের চরম বিপর্যয় ডেকে আনছি। আমার মনে হয় না অর্ধেক লোক ও গতবারের থেকে শিক্ষা নিয়েছে বা নিবে। অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ কামনা
ইঞ্জা
দুঃখজনক ভাবে আপনার কথা গুলো অতিব সত্য, আমি সম্পূর্ণ একমত আপু, ধন্যবাদ অফুরান।
সাবিনা ইয়াসমিন
গত বছরের ভয়াবহ স্মৃতি গুলো এখনো মনে ভয় ধরায়। খুব কাছের মানুষ, চেনা-জানা স্বজন, নিকট আত্মীয়দের দেখেছি ডেঙ্গুর সাথে লড়াই করতে। তাদের প্রতিদিন / প্রতিক্ষণের কষ্ট গুলো মনে করিয়ে দেয়, কতটা দুঃসহ্য যাতনায় আক্রান্ত ছিলেন। যেকোনো ক্ষতিকর ভাইরাসের মতোই এই রোগের প্রধান প্রতিকার হলো নিজেকে এবং নিজের চারপাশের পরিবেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। পাশাপাশি উর্ধতন কতৃপক্ষ থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের কার্যকরী ভূমিকা রাখা খুব দরকার।
আল্লাহ তায়ালা সকলকে রক্ষা করুন। আমিন।
শুভ কামনা রইলো ভাইজান 🌹🌹
ইঞ্জা
সবকিছুর মূলে রয়েছে সচেতনতা, যা সরকার এবং জনগণ দুপক্ষকেই সচেতন হতে হবে, ধন্যবাদ অনিঃশেষ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
জিসান শা ইকরাম
গতবার এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আমার শরীরই এলোমেলো হয়ে গিয়েছে।
সর্বোচ্চ শতর্কতা গ্রহন করতে হবে এ বিষয়ে।
ইঞ্জা
অবশ্যই ভাইজান, এইবার গায়ে মাখার মেডিসিন আগে ভাগেই কিনে রাখবেন কয়েক প্যাকেট, তাহলেই বাঁচা।
সুপায়ন বড়ুয়া
একদিন সময়োপযোগী লেখা।
গতবারের মতো তিক্ত অভিজ্ঞতা যাতে না হয়
যারা জেগে ঘুমায়।
এবার উঠুক জেগে।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
সত্যি এই কামনা আমাদের, ধন্যবাদ দাদা।
কামাল উদ্দিন
এসব শুনলে তো খালি ডর লাগে, এখন করোনা নিয়ে যেমন ভয়ে আছি, গত বছ ডেঙ্গু নিয়া এমন ভয়ে ছিলাম। মশা মারার ব্যাট কিনে নিয়েছি, আশা করছি ডেঙ্গু ঠেকিয়ে দেবো। আর ঠেকাতে না পারলে আমার সাড়ে তিনশত টাকাই জলে…..
ইঞ্জা
ভাই আপনি মস্কিউটো রেপলিকেন্ট কিনেন, গায়ে মেখে ঘুরুন, মশার বাপও আসতে পারবেনা।
কামাল উদ্দিন
ওটা গায়ে মাখলে প্রচন্ড গরম লাগে, পাহাড়ের ট্যুরগুলোতে এসব ব্যবহার করি, কিন্তু বাড়িতে সম্ভব নয়।
ইঞ্জা
ভাই বাঁচতে হলে লাগাতে হবে, বাকি আপনার ইচ্ছা।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ সচেতনামূলক লেখে ইঞ্জা দা
অনেক শুভেচ্ছা রইল—————-
ইঞ্জা
নিরন্তর ধন্যবাদ ভাই