মোবাইলটি চোখের সামনে এনেই চমকে উঠলাম । ছোট একটি মেইল ‘ আমি এখন ৩০ মিনিট দূরে । ‘ মেসেঞ্জারে মেইলটি দেয়া হয়েছে ১২ মিনিট পুর্বে । এর অর্থ তুমি পৌছাবে আর ১৮ মিনিটের মধ্যেই । স্টেশন থেকে খুব দূরে নই আমি । যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করারও সময় নেই । পথচারীকে জিজ্ঞেস করায় সহজ রাস্তাটি পেয়ে গেলাম । হেটে যেতে লাগবে ২০ মিনিট , এরপর প্লাট ফরম খুঁজে নেয়া , আরো কিছু সময় চলে যাবে । আমার পুর্বে তুমি পৌছে অপেক্ষা করবে আমার জন্য ? এ হতে পারেনা । তুমি কেনো অপেক্ষা করবে ? আমি এসেছি তোমাকে রিসিভ করার জন্য । সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করিনি আর । দৌড় লাগালাম । সোজা রাস্তা , ডান দিকে ঘুরেই উচু এক ব্রীজ । ব্রীজে উঠেই স্টেশন দেখা যায় । ব্রীজে দৌড়ে উঠতে বেশ কষ্টই হচ্ছিল । যত কষ্টই হোক , পৌছাতে হবেই নির্দিষ্ট প্লাট ফরম এ ২:২৫ মিনিটের পুর্বে । হাঁপাচ্ছি বেশ , এক নাগারে এতক্ষন দোউড়াইনি যে অনেক দিন । চলে এসেছি স্টেশনের মুল গেটে , মোবাইল বের করলাম আবার , প্রত্যাশিত সময়ের পুর্বেই চলে এসেছি । প্লাট ফরম নাম্বার খুঁজে অপেক্ষা করছি ট্রেনের । আমার স্বপ্নের ট্রেন , যাতে চড়ে আসছে আমার স্বপ্নের দেবী ।
ষ্টেশনের ঘড়ির কাটায় ২:৩০ মিনিট । একদম সঠিক সময়ে স্বপ্নের ট্রেন প্রবেশ করলো ষ্টেশনে । ট্রেনের শব্দ , যাত্রীদের কোলাহল কিছুই কানে আসছে না । বুকের মাঝের হার্ট বিটের শব্দ শুনতে পাচ্ছি কেবল । ট্রেনটি যেন তখন এক যাদুকর । সম্মোহিতের মত তাকিয়ে আছি তার দিকে । যাত্রীদের নামা দেখছি । ট্রেনের যাত্রীদের মাঝে খুজছি তোমায় । কাছের বের হবার গেটে দাঁড়িয়ে আছি । কিন্তু তুমি কোথায় ? এটিই সঠিক ট্রেন তো ? দৌড়ে এসে আবার প্লাট ফরম নাম্বার দেখি । না ঠিকই তো আছে । আবার দ্রুত ট্রেনের কাছে ।
ঐ যে , ঐ তো আমার মিথুন । আমার স্বপ্নের দেবী । একা হেটে যাচ্ছে ডান হাতে ট্রলির ব্যাগ টেনে । মুল গেটের দিকে । চোখের সামনে থেকে সমস্ত দৃশ্য অপসারিত । দেখছি শুধু মিথুনকে , আমার মিথুন , আজ আমাদের প্রথম দেখা । একটু পিছনে আমিও হাটা শুরু করলাম । আগে দেখে নেই কতক্ষন মিথুনকে । ছবিও তুলি একটি । এরপর ভুলে যাই ছবি তুলতেও । হয়ত তোমার সিক্সথ সেন্স কাজ করছিলো , বুঝতে কি পেরেছিলে আমি দেখছি তোমাকে ? পিছন ফিরলে তুমি , দেখে ফেললে । হাসিতে উজ্জ্বল মুখ । গেট থেকে বেরিয়ে এসেই হাত ধরলে আমার । আমিও । কেপে উঠি প্রথম স্পর্শে । জগতের সবচেয়ে সুখি মানুষ আমি তখন (3
দৌড়ে স্টেশনে আসার কথা কিন্তু আজ তোমাকে জানালাম 🙂
৩২টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
এটি সত্যি ঘটনা নাকি ? ঘড়িতে তো দেখি সত্যি ২:৩০মিনিট ।
স্বপ্ন
হ্যাঁ সত্যি , নীলাদি । স্বপ্ন মাঝে মাঝে সত্যি হয়ে যায় ।
ছাইরাছ হেলাল
সাত মাস পর লিখলেন ! ব্যস্ততার কথা বলবেন! তাও জানি ।
ভাগ্যিস দৌড়ুতে গিয়ে আছাড় খেতে হয়নি ।
স্বপ্ন
আসলে লেখার অক্ষমতা আমাকে দমিয়ে রাখে । নিয়মিত হবো আশা করছি । আছাড় খেলে যে মিথুন স্টেশনে আমার আগে পৌছে অপেক্ষা করতো ।
মা মাটি দেশ
অনেক দিন পর লেখা পেলাম আপনার ভাল লাগল অনুভূতিগুলো।
স্বপ্ন
এখন হতে নিয়মিত থাকবো সোনেলায় , লেখাও আসবে মাঝে মাঝে । ধন্যবাদ আপনাকে ।
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
দৌড়ে আসার কথা তখন বলেননি কেন? মিথুনের কত ভালো লাগতো শুনে, প্রাপ্তিটা বেশী হতো আপনার।
স্বপ্ন
তখন বলিনি সংকোচে , যদি মনে মনে রাগ করে সে । যদি ভেবে বসে এত কাটায় কাটায় কেন আসবো আমি ? আগে এসে বসে কেনো থাকিনি ? প্রাপ্তি যে অনেক অনেক হয়েছে আমার আপু । এর বেশী তো আমি চাইনি 🙂
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
আরে পাগল , এসব বলতে হয় । মেয়েরা খুশি হয় এতে । দুঃখ আমার জন্য কেউ এমন করে দৌড়ে এলোনা 🙁
স্বপ্ন
আচ্ছা এরপর থেকে বলবো আপু । আপনার কাছ থেকে বিনামূল্যে টিপস নেবো 🙂
দুঃখ করবেন না আপু , পাবেন পাবেন , দৌড়ানোর লোক পাবেন , সবুরে মেওয়া ফলে ।
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
বিনামূল্যে টিপস হপেনা । মূল্য দিতে হপে 🙂 আমি দাতা হাতেম তাই হতে চাই না :p
স্বপ্ন
কি মুল্য দেবো আপু ? 🙂
জিসান শা ইকরাম
ভালো ভালো, দোড়ানো খুবই ভালো। চর্বি কমে শরীরের 🙂
যাক শেষ পর্যন্ত দেখা হবার কাহিনী শুনলাম।
এরপরের কাহিনী জানতে মঞ্চায়।
স্বপ্ন
হ্যাঁ জিসান ভাই , দৌড়ানো যে কত ভালো তা এবার বুঝেছি । আপনার মনোকামনা পুরন করা হবে 🙂
স্বপ্ন
প্রথম দেখার সুখ স্মৃতি এখনো রয়ে গিয়েছে । পরের কথা অবশ্যই লিখবো জিসান ভাই ।
শুন্য শুন্যালয়
দারুন, যেনো রূপকথার গল্পের মতো। সত্যিই তো দৌড়াতে কেনো গেলেন? যদি আছাড় খেতেন 🙂
মিথুন অনেক লাকি …
স্বপ্ন
রূপকথা থেকেই জেগে উঠেছে আমার মিথুন , তাঁর কাছে যে আমার জীবন কাঠি । আমিও খুব লাকি আপু , মিথুনকে পেয়েছি 🙂
মশাই
ইশ কি রোমান্টিক রোমান্টিক লেখা চলছে এখানে আমার চোখ কিভাবে এড়ালো বুঝতে পারিনি। বিরহের লেখা লিখতে লিখতে পড়তে পড়তে রোমান্টিক লেখার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। তা এরপর কি আর কিছু ঘটে নি ??? বুঝতে পেরেছি সেটা নিশ্চই আরেক পোষ্টে বলবেন? ঠিক আছে দিয়ে ফেলুন তাহলে পরবর্তী পোষ্ট।
স্বপ্ন
শুধু বিরহের লেখা কেনো লিখবেন আপনি ? আনন্দের লেখাও লিখুন মশাই 🙂 লেখা চলবে আশাকরি ।
মিথুন
কেমন একটা কাকতালীয় ব্যাপার জানেন? আমিও একদিন ঠিক এমন করে একজনের জন্য স্টেশনে এসেছিলাম। যার কাছে গেলাম তার নাম স্বপ্ন । 🙂
স্বপ্ন
বলেন কি ? আমি তো অবাক হচ্ছি খুবই , আমার সাথে যার প্রথম দেখা হয়েছিলো , তাঁর নামও যে মিথুন । একটি ট্রেন ষ্টেশন একই সময় । 🙂
মিথুন
হুম তাইতো বলি, আপনাকে চেনা চেনা লাগছে। :I-m-in-love:
স্বপ্ন
আপনাকেও খুব চেনা চেনা লাগছে । আচ্ছা কোথায় দেখেছি আপনাকে ? (3
ব্লগার সজীব
ও তাহলে এই ব্যাপার 🙂 বাসায় জানে ? :p
লীলাবতী
আমারও এমন একজন স্বপ্ন চাই , গুগলে সার্চ দিলে পাবো ভাইয়া ? আপনার লেখা পড়লাম , এখন পড়বো মিথুন আপুর লেখা -{@ -{@
স্বপ্ন
দিন দিন , গুগলে সার্চ দিন , প্রচুর স্বপ্ন পেয়ে যাবেন 🙂
ব্লগার সজীব
মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়ে গেলাম শুধু । প্রথম দেখার আবেগ অনুভুতি ভালো ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন ।
স্বপ্ন
এই আবেগ এবং অনুভুতি থাকবে আজীবন । ধন্যবাদ আপনাকে ।
অনিকেত নন্দিনী
অন্য কোথাও এই একই ঘটনা উল্টোটি হয়েছিলো।
প্রথম দেখার প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আপডেট চাই।
স্বপ্ন
কোথায় আবার উল্টো হলো? মানে সেখানে কি কোন মেয়ে দৌড়ে গিয়েছিলো?কোনো ছেলে এসেছিলো ট্রেনে?
এই পোষ্টই একটি আপডেট।তবে আরো লেখা হবে।
অরুনি মায়া
মিথুন মানে আমাদের মিথুন? 🙂
স্বপ্ন
আপনাদেরই মিথুন।তবে আমারো 🙂