প্রায়ই মা ছেলের কথা জমে উঠে পাল্টা পাল্টি।মা শুধু স্বাধীনতার সংগ্রামের পক্ষে ছেলে স্বাধীনতার গৌরবময় অর্জনকে মেনে সকল দল মতের উর্ধে নতুন প্রজম্মনের মত প্রকাশ করছেন।
-দেশ স্বাধীন হয়েছে আজ বহু বছর হলো এখনও এ দেশের মানুষ অকৃজ্ঞই রয়ে গেল।সর্বস্তরের জনগণ এখনও বঙ্গ বন্ধুকে জাতির পিতা হিসাবে মানতে নারাজ।এর জন্য আইন করতে হয়েছে।
ছেলে এবার নড়েচড়ে উঠেন।
-মা এইতো এখানেই আমাদের সমস্যা,কেউ কি প্রকাশ্যে বলেছে যে বঙ্গ বন্ধুকে জাতির পিতা মানি না বলেনি আর বলবেও না কারন ভারতের ইতিহাস লিখতে হলে যেমন মহাত্ত্বা গান্ধী ছাড়া ইতিহাস লিখা ভূল হবে তেমনি বঙ্গবন্ধুকেও বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস লিখা যায় না।কেউ প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুকে মানুক আর নাই মানুক অন্তরে তাদের বঙ্গ বন্ধুর মহৎ কাজের শ্রদ্ধাবোধ থাকবেই।এটাকে জোরে প্রতিষ্ঠিত করার দরকার নেই তাতে হিতে বিপরীত হবে।
মায়ের চোখেঁ হঠাৎ পানি দেখে সূর্য্য অবাক হন তবে কি তার কোন কথায় মা কষ্ট পেলো!
-মা তুমি কাদছঁ,আমি কি কোন কষ্টকর কথা বলেছি?
-না,
-তবে!
-তখন তুমি অনেক ছোট ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ ইং এক দল বর্বর স্বার্থবাদী সেনা সদস্য কে বা কার ইশারায় যেন বঙ্গবন্ধুর বাস ভবনে অতর্কিত আক্রমন করে বঙ্গবন্ধু সহ তার পুরো পরিবারটিকে বুলেটের আঘাতে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয় এমন কি ছোট শিশু রাসেলকেও ওরা বাচতে দেয়নি।ক’দিন পরইতো বঙ্গবন্ধুর শাহদৎ বার্ষিকী বঙ্গবন্ধুর কথা মনে আসতে এবং আগষ্ট মাসের কথা ভাবতেই বিভীষিকাময় দৃশ্যগুলো চোখেঁ ভেসে উঠে।যেটাকে আমরা প্রতি বছর শুধু কালো দিবস বলে থাকি।অনেক বছর পর হলেও ঘাতকদের বিচার করতে পেরেছে বাংলার জনগণ কিন্তু এর ক্ষতি পূষিয়ে উঠা সম্ভব নয়।
-সত্যিই বড় বেদনাকর কিন্তু কেনো করল এমন জগণ্য কাজটি তারই সহযোদ্ধারা বলতে পারবে মা?
মায়ের মুখে কোন উত্তর নেই কেবল চোখের জল ফেলা ছাড়া।তবে তার স্পষ্টতই ফুটে উঠেছে বঙ্গ বন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় গঠিত কিছু নিয়ম কানুন এবং স্বার্থহীন ভাবে দেশ পরিচালনা করা কিছু সেনাদের অপছন্দ ছিল।
-শোন সূর্য্য তোমাদের অনেক কিছুই জানার বাকী আছে….ঐ সব চক্রান্তকারীরা ছিল এক জোট তারা বিভিন্ন সময়ে ইতিহাসকে বিকৃত করে চলেছে তবে সত্য হলো ১০ এপ্রিল ১৯৭২ শেখ মুজিব পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।
সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে ভিত্তি করে সংবিধান প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী রাষ্ট্র চালনার চেষ্টা সত্ত্বেও তীব্র দারিদ্র্য, বেকারত্ব, সর্বব্যাপী অরাজকতা এবং সেই সাথে ব্যাপক দুর্নীতি মোকাবেলায় তিনি কঠিন সময় অতিবাহিত করেন। ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতা দমনের লক্ষ্যে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি সকল দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে নিজেকে আজীবনের জন্য রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন।
এর পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রত্যূষে একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা ট্যাঙ্ক দিয়ে রাষ্ট্রপতির ধানমণ্ডিস্থ বাসভবন ঘিরে ফেলে এবং শেখ মুজিব, তাঁর পরিবার এবং তাঁর ব্যক্তিগত কর্মচারীদের হত্যা করে।কেবল তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করার কারণে বেঁচে যান। পরবর্তীতে তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।সেনা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেন বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সামরিক কর্মকর্তারা।
এদের মধ্যে ছিলেন শেখ মুজিবের প্রাক্তন সহকর্মী খন্দকার মোশতাক আহমেদ, যিনি তাঁর স্থলা ভিষিক্ত হন, এবং ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫ তারিখে মুজিব হত্যাকাণ্ডের বিচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে খন্দকার মোশতাক সরকার ইমডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করেন এবং জেনারেল জিয়াউর রহমান ও পাকিস্তানপন্থী প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে তার বৈধতা দেয়া হয়। যা ১২ অগাস্ট, ১৯৯৬ তারিখে সংসদে রহিত করা হয় তখন সংবাদ মাধ্যমে এ হত্যা কান্ডের ইন্ধনদাতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সেণ্ট্রাল ইণ্টেলিজেন্স এজেন্সি সিআইএ-কে দায়ী করা হয়।বঙ্গ বন্ধুর মরদেহ তাঁর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সামরিক তত্ত্বাবধানে দাফন করা হয়। অন্যান্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মায়ের দুচোখে পানি ঝড়ে পড়তে মাটিতে ঠিক সেই সময় সূর্য্য তার ডান হাতের কব্জির তালুতে নয়নের জল জমা করেন আর মাকে শান্তনা দেন।
-মা…আর কেদোঁ না তোমাদের কান্নার জলের এক বিন্দু ফুটাও পবিত্র বাংলার মাটিতে আর পড়তে দেবো না।
মা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে….তাই যেন হয় বাবা আমরাতো তোমাদের জন্য বেচে আছি তোমরাই আমাদের ভবিষৎ বঙ্গের স্বাধীন চেতনার ধারক বাহক।
-আমি যখন পড়তে ভারতে গিয়েছিলাম সেখানে এক বোন আমাকে কিছু প্রশ্ন করেছিল যার উত্তর আমি দিতে পারিনি……সে প্রশ্ন করেছিল তার বাবা কে?’৭১ এ যুদ্ধের সময় তার বাবা হিন্দু বলে পাকিদের সাথে স্হানীয় রজাকাররা তার বাবাকে গুলি করে মায়ের উপর অত্যাচার চালায় সেই অত্যাচারের ফসল সে। সমাজের কাছে সে দিতে পারে না কি তার জম্ম পরিচয় কে তার বাবা।আমি একজন ভিকটিম দেশের নাগরিক হয়ে মেয়েটিকে আমি কি বলে শান্তনা দিবো…. বলো মা।পরাজিত সৈনিকের ন্যায় মাথা নত করে আসতে হয়েছিল।রাজাকার আল বদরদের নিয়ে ঐসব মা বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীন দেশে রাজনিতী করছি।
প্রতি বারইতো ঘুড়ে ফিরে আসে এই সব বীর শহীদদের স্বরণ সভা…স্বরণ করি ডাক ঢোল পিটিয়ে ওয়াদা করি স্বাধীনতার চেতনায় দেশ গড়ব অথচ যাদের আত্ত্ব ত্যাগে এই বঙ্গে স্বাধীন বসবাস পরক্ষণে তাদের কথা ভূলে যাই।
মা ছেলের কথায় আকাশ ভারী হয়ে যায়…..ঝিড় ঝিড় বৃষ্টি পড়তে শুরু করে।মা রোজী জানালায় বৃষ্টির দৃশ্যে সেই পুরোন স্মৃতি হৃদয়ে জেগে উঠে…পাকিরা হুব স্বামীকে জঙ্গলের ভিতর গর্তে ফেলে দেয় সেখান থেকে রোজী আর তার যুদ্ধে শহীদ ছোট ভাই ধরাধরি করে ঘরে নিয়ে সেবা দিয়ে সুস্হ্য করে তোলেন তার পর একটা সময় যুদ্ধের মাঝেই তারা বিবাহে বন্ধনে আবদ্ধ হন।এ সব ভাবতে ভাবতে মা জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।সূর্য্য মাকে ধরাধরি করে একটি হাসপাতালে ভর্তি করান মা অপারেশন রুমে।একুশে আগষ্ট হাসপাতালে করিডোরের টিভিতে লাইভ দেখছে সূর্য্য বঙ্গ বন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেট হামলা।……………?????
চলবে….
আসছে ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আত্ত্বার মাগফেরাত কামনা এবং স্বাধীনতার চেতনায় দেশ গড়ার প্রত্যয়ের অপেক্ষায়।…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
সহযোগিতায়:উইকিপিয়া এবং অনলাইন।
২০টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
শ্রদ্ধা জানাই জাতির জনক এবং তার পরিবারবর্গকে ।
১৫ আগষ্ট নিহত সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
** বঙ্গবন্ধুর নীচের ফটোটা প্রথমে এবং মাঝে সব ছোট ফটো গুলো বাদ দিলে, পোষ্টের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতো বলে আমার মনে হয়। জাস্ট পরামর্শ। না নিলেও সমস্যা নেই ।
মা মাটি দেশ
ধন্যবাদ পরামস্শের জন্য।
প্রহেলিকা
আসছে ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আত্ত্বার মাগফেরাত কামনা এবং স্বাধীনতার চেতনায় দেশ গড়ার প্রত্যয়ের অপেক্ষায়। শ্রদ্ধা জানাই জাতির জনক এবং তার পরিবারবর্গকে ।
মা মাটি দেশ
ধন্যবাদ আপনাকে -{@
পুষ্পবতী
জাতির পিতা বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতি জানাই শ্রদ্ধা ও সম্মান।তিনি এবং তার পরিবারের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
মা মাটি দেশ
ধন্যবাদ আপু -{@ (y)
নীলাঞ্জনা নীলা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতি জানাই শ্রদ্ধা । তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
মা মাটি দেশ
সে এমনি ধন যা ছাড়া বাংলাদেশ অচল ধন্যবাদ। -{@
লীলাবতী
শ্রদ্ধা ও সবার আত্মার মাগফেরত কামনা করছি।
মা মাটি দেশ
ধন্যবাদ বতী আপু -{@ (y)
ছাইরাছ হেলাল
শ্রদ্ধা জনকের প্রতি । তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি ।
মা মাটি দেশ
শ্রদ্ধা জাতির জনকের প্রতি (y)
স্বপ্ন
আপনি খুব ভালো লেখেন ভাইয়া। আগষ্ট মাসে এমন লেখাই সাজে। (y)
মা মাটি দেশ
ধন্যবাদ আপু সাথেই থাকুন -{@ (y)
অলিভার
ভারতের ইতিহাস লিখতে হলে যেমন মহাত্ত্বা গান্ধী ছাড়া ইতিহাস লিখা ভুল হবে তেমনি বঙ্গবন্ধুকেও বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস লিখা যায় না (y)
মতাদর্শের পার্থক্য থাকতেই পারে, তাই বলে যারা মেধা এবং শ্রম দিয়ে দেশটাকে তৈরি করে গেছেন আমাদের জন্যে তাদের ভুলে গেলে চলবে না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সহ পরিবারের বাকি সকল সদস্য যারা শহীদ হয়েছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
পোষ্টের জন্যে ভালোলাগা -{@
মা মাটি দেশ
ধন্যবাদ অলিভার ভাইয়া -{@ (y)
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ
গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি ————- এ বুকে !!
মা মাটি দেশ
গভীর শ্রদ্ধা….ধন্যবাদ। -{@ (y)
ব্লগার সজীব
ভালো পোষ্ট মাটি ভাইয়া। জাতির পিতা এবং তাঁর পরিবারের আত্মার মাগফেরত কামনা করছি।
মা মাটি দেশ
ধন্যবাদ সজীব ভাইয়া -{@