একটি মাটির হাড়ি বা পাতিল তৈরি করতে হলে অনেক কাঁদার প্রয়োজন। আর এই কাঁদাকে মন্থন করতে হলে জলের প্রয়োজন।
যখন মন্থন শেষ হয়ে যাবে তখন তাকে চাকতিতে তুলে হাড়ি বা পাতিলের সম্পূর্ণরূপে কাঠামো গড়ে তোলা হয়। তারপর এই হাড়ি বা পাতিল গুলোকে অগ্নিকুণ্ডে পুড়তে পুড়তে তৈরি করা হয় একখানা মাটির কলস বা পাতিল। এসব হাড়ি পাতিল তৈরি করার জন্য প্রয়োজন এটেল মাটি। যদি এই এটেল মাটিতে অন্য মাটি প্রতিফলিত হয় তাহলে এই হাড়ি পাতিল গুলো রূপ নিবে বিকলাঙ্গভাবে।
তাই হাড়ি পাতিলের জন্মদাতা (কাঠামোদাতা) হচ্ছে কুমার।
কুমার যদি এই এটেল মাটিতে অন্য মাটি মিশিয়ে দেয় তাহলে এই হাড়ি পাতিলের স্থায়িত্ব থাকবে না বেশিদিন।তাই হাড়ি পাতিলের ভালো মন্দ নির্ভর করবে কুমারে (কুম্ভকার) উপর।
তেমনি আমাদের মানবজীবন অনেক বিকলাঙ্গতা রয়েছে। যেইদিন মাতৃগর্ভ হইতে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলাম তখন আধু আধুভাবে হুয়া হুয়া করে ডেকেছিলাম তারপর মা যখন মা ডাক শিখালেন মা মা বলে। তারপরও কথায় থেকে গেলো বিকলাঙ্গতারভাব।
যাই হউক একদিন শিখে গেলা মা মা বলে ডাকতে।ধীরে শিশুকাল হইতে প্রত্যাবর্তন করে কৈশোরকালে প্রবেশ করছি। আর এই শিশুকাল হইতে আমাদের পিতামাতা আমাদেরকে সঠিকভাবে লালন পালন করা এমন কি পরিবার,সমাজ এবং রাষ্ট্রের সাথে কিভাবে আচরণ করতে হবে এই শিক্ষাতে যদি আমাদের পিতামাতারা সঠিকভাবে না শেখান তাহলে আমাদের জীবনপথ বিকলাঙ্গে পরিণত হবে।
তাই আমাদের জীবন সাজানোর কারিগর হচ্ছেন আমাদের পিতামাতা। কেননা একটা শিশুর প্রথম বিদ্যাপীঠ হচ্ছে তার পরিবার আর এই পরিবারের শিক্ষক হচ্ছেন আমাদের পিতামাতা।
উনারা আমাদের যা শিক্ষা দিবেন তা দ্বারা নির্ধারণ করবে সমাজ কাঠামোর উপর। আমি এই সমাজের সকলের সাথে কেমন আচরণ করব।
আমাদের এই শিক্ষাতে পিতামাতার মত যদি দ্বিমত থেকে যায় তাহলে আমাদের জীবন শিক্ষার আচরণে থেকে যাবে বিকলাঙ্গতা। কেননা আগেই বলেছিলাম মাটির কলস তৈরিকরণ করা নির্ভর করবে মাটি এবং কুমারের উপর। কুমার যদি এঁটেল মাটি না দিয়ে অন্যমাটি মিশিয়ে মাটির কলস তৈরি করে তাহলে এই মাটির কলস অগ্নিকুণ্ডে যখন পুড়তে দেওয়া হবে তখন এই মাটির কলসের বিভিন্ন রূপের বিকলাঙ্গতা দেখা দিবে।
তাই বলি মাটির কলস কেমন ভালো হবে ইহার রূপ কেমন সৌন্দর্যময় হবে তাহা নির্ভর করে তাকে মাটি এবং কুমারের উপর।
তেমনি আমাদের পিতামাতা শিশুকাল হইতে আমাদেরকে যে শিক্ষা দিবেন যেভাবে গড়ে তুলবেন তেমনি আমাদের শিক্ষাজীবন রপ্ত হয়ে চলবে।
তাই আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে শিক্ষতে হবে এবং জানতে হবে।
গাছ হচ্ছে আমাদের পিতামাতা তাহার ডালপালা হচ্ছি আমরা। আর এই গাছের ডালপালার বিস্তার ঘটে চারদিকে। এই গাছের মূল অবকাঠামো যদি মজবুত না তাকে তাহলে (পিতামাতা) অবশ্যই ডালপালার (সন্তান) বিকলাঙ্গতা দেখা দিবে।
বীজ হইতে চারা উৎপন্ন তাই বীজ পরিপক্ব হতে হবে।
.
সাধু ও চলিত ভাষা সংমিশ্রণ।
সর্বস্বসত্ব সংরক্ষিত।
১৮টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
খুব সুন্দর,
কিন্তু গাছদের তো প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে,
তাহলেই না গাছের সঠিক বিস্তার হবে।
প্রদীপ চক্রবর্তী
একদম,
অজস্র ধন্যবাদ দাদা।
জিসান শা ইকরাম
তুলনা খুব পারফেক্ট হয়েছে।
সন্তানরা মাটির মতই, সঠিক কাদা দিয়ে সঠিক ভাবেই সন্তানকে তৈরী করতে হয় পিতা মস্তাকে৷ পিতা মাতারও তেমন গুন থাকতে হবে যেমন থাকে একজন ভালো কুমারের৷
মাতা পিতা ও সন্তানের সাথে গাছের তুলনাও যথার্থ হয়েছে৷ গাছটি মজবুত এবং নিখুত হতে হবে। তবেই এর ডালপালা নিখুত হবে৷
ভালো পোস্ট, সাধু চলিত ভাষার মিশ্রন কেনো?
শুভ কামনা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
অজস্র ধন্যবাদ দাদা
যথার্থ মতামতের জন্য।
শুভকামনা অহর্নিশ।
লিখতে গিয়ে দু এক শব্দ চলিত ও সাধু ভাষা সংমিশ্রণ হয়ে গিয়েছি যদিও তা দোষণীয়।
শিরিন হক
খুব সুন্দর পোস্ট।মানুষ গড়ার প্রথম কারিগর বাবা মা। সন্তনদের যেভাবে তৈরি করবেন সন্তান তেমন ই হবে।
আনেক শুভকামনা।
শিরিন হক
সন্তনদের না সন্তানদের হবে
প্রদীপ চক্রবর্তী
মানুষ গড়ার প্রথম কারিগর বাবা মা। সন্তানদের যেভাবে তৈরি করবেন সন্তান তেমন ই হবে।
একদম দিদি।
অজস্র ধন্যবাদ দিদি।
প্রদীপ চক্রবর্তী
অজস্র ধন্যবাদ দিদি..
সাবিনা ইয়াসমিন
সন্তানকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হলে পিতামাতার ভুমিকা অসীম। সত্যি কথা। একপাশ থেকে দেখলে একদম ঠিকই আছে। তবে সন্তানের কুকর্মের অংশীদার হিসেবে পিতামাতাকে দায়ী করা নির্বুদ্ধিতা ছাড়া কিছুই না। যে সন্তান পিতামাতার সার্বক্ষণিক ছত্রছায়ায় বড় হয়েও বৃদ্ধ পিতামাতাকে বৃদ্ধাশ্রম বা রাস্তায় দিয়ে আসে সেক্ষেত্রে দোষ কার? যারা এতিম অবস্থায় বড় হয় তারাও অনেকেই মনে/ মানে সুসভ্য মানুষ হিসেবে সমাজে বাস করে, সমাজ গঠনে নিজের দায়িত্ব পালন করে। সেক্ষেত্রে তাদের কারিগর কে ছিলো? একটা সময় সবাইকে নিজের কারিগরিতে মন দিতে হয়। সন্তানের ভালো-খারাপ অবস্থার সাথে বাবা মার শিক্ষা-দীক্ষার সমম্বয় করা ঠিক না। জগতে যত খারাপ মানুষ থাকুক, কেউই তার সন্তানকে খারাপ হতে শেখায় না
শুভ কামনা 🌹🌹
প্রদীপ চক্রবর্তী
সন্তানের কুকর্মের অংশীদার হিসেবে পিতামাতাকে দায়ী করা নির্বুদ্ধিতা ছাড়া কিছুই নয় এই কথার সাথে সহমত পোষণ করছি দিদি।
প্রাথমিক শিক্ষা দীক্ষা আমাদের পরিবারকে ঘিরে তাই পরিবার যা শিক্ষা দিবে সে শিক্ষায় আমরা চালিত হয়ে থাকি।
যে সন্তান পিতামাতার সার্বক্ষণিক ছত্রছায়ায় বড় হয়েও বৃদ্ধ পিতামাতাকে বৃদ্ধাশ্রম বা রাস্তায় দিয়ে আসে সেক্ষেত্রে দোষ কার? এই দোষটা সন্তানদের।
সন্তানের ভালো-খারাপ অবস্থার সাথে বাবা মার শিক্ষা-দীক্ষার সমম্বয় করা ঠিক না। আমার লেখায় হয়তো এই কথা ফুটে উঠেনি।
সেই কথা মনে রাখতে হবে পিতামাতা আমাদের প্রথম শিক্ষাদাতার কারিগর। পিতামাতার অবশ্যই উচিত সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখা।
যখন সন্তান বড় হয়ে যাবে তখন দায়িত্বটা কে নিবে? হয় তো নিজে সঠিক দায়িত্ব পালন করে পিতামাতাকে নিয়ে চলা।
কোন বাবা মা চায় না যে তার সন্তান খারাপ হোক।
বাবা মা এত কষ্টকরে লেখাপড়া করিয়ে সন্তানকে সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত করে তোলে অবশেষে বাবা মা কে এই সন্তান বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়!
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন আমাকে শিক্ষিত মা দাও আমি শিক্ষিত জাতি দিব।
একথা বলতে গিয়ে একটা কথা মনে পড়ে গেলে আজ থেকে কয়েকমাস আগে শ্রমিক এবং পুলিশের নামে প্লে কার্ডের লিখাছিল বিশ্রী ভাষা আর এই বিশ্রী ভাষার প্লে কার্ড টা ছিলো অধিকাংশ কোমলতি শিশুর কাছে!
দশটা বাবা মায়ের মত এদেরও বাবা মা ছিলো শিক্ষিত।
যথার্থ মতামত দিদি।
প্রতিটি সন্তান সুশিক্ষায় শিক্ষিত হোক।
প্রতিটি সন্তান তার বাবা মাকে ভালোবাসুক।
.
শুভকামনা..
মনির হোসেন মমি
বাববাহ্ লেখা কই থেকে কই নিয়া গেলেন।একেই বলে লেখকের লেখার মুন্সিয়ানা।সহমত ভাইয়া- যেমন গাছ তেমনি ফল।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সহমতের জন্য অজস্র ধন্যবাদ দাদা।
শুভকামনা অহর্নিশ।
রেহানা বীথি
সবাই অনেক সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
আমি একটি কথাই বলবো, যথাযথ উপমায় চমৎকার পোস্ট।
কিন্তু ওই গুরুচণ্ডালী দোষটা না রাখাই ভালো। এতে লেখার সৌন্দর্য নষ্ট হয়, পাঠকের পড়তেও অসুবিধে হয়।
ভালো থাকবেন।
প্রদীপ চক্রবর্তী
একান্ত অনুভূতিতে মাঝেমধ্যে গুরুচণ্ডালী দোষ থাকবে দিদি!
অজস্র ধন্যবাদ আপনাকে।
শাহরিন
চমৎকার লিখেছেন ভাইয়া। অনেক সুন্দর করে বর্ননা করেছেন। অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
প্রদীপ চক্রবর্তী
শুভকামনা অহর্নিশ দিদি।
রাফি আরাফাত
হাতেখড়ি বাবা মার কাছেই। আর সেখান থেকেই তার পথ চলা। ভালো লিখেছেন ভাই। ধধন্যবাদ
প্রদীপ চক্রবর্তী
অজস্র ধন্যবাদ ভাই।
শুভকামনা অহর্নিশ।