একবার আমার শখ হইল সাপ পালনের। একটা মাইট্টা সাপ ধইরা, সেই টারে পালছিলাম ৩/৪ দিন মাটির হাড়িতে কইরা। শালার সাপ। কইত্থে যে কই গেলো গা আর খুইজাই পাইলাম না।
আচ্ছা মাইয়ারা তেইল্লাচুরারে এত ডরায় কেন? এইটায় কামরায় ও না কিচ্ছু কয় ওনা, তাও কি চিক্কুর যে দেয় মাইয়াগুলা। তখন ক্লাস ৬ কি ৭ এ পরি, বাংলা ক্লাস নিত তৈয়ব আলি স্যার, হের ক্লাসে খালি রোল কল এর ১ ২ ৩ এই বুঝতাম, আর সব ভ্যাদর ভ্যাদর ভ্যাদর ভ্যাদর…… উনি যে কি কইতাছে সেইটা মনে হয় নিজেও বুঝতনা। যাক, একদিন স্কুলে যাওয়ার আগে দিয়া দেহি আম্মু লাকড়ির ঘর সাফ করাইতাসে আর দুন্নাইর তেইল্লাচুরা উড়তাসে। উইড়া আইসা যেই একটা আরতিদির গায় পরসে অম্নে আরতি চিক্কুর।
আমি তো থ, খাইসে, আরতিদির মতো ডাকাইতে (আরতি দিদিরে ছোট বেলার থন দেইখা আস্তাসি আম্মুরে হেল্প করে, হের হাতের থায় থাবর কম খাই নাই ছোট কালে)যদি চিক্কুর দেয় তাইলে আমগো ক্লাসের মাইয়া গুলায়…………….. আমার মুখ চাইপ্পা হাসন দেইখাই মায় কয়, আইজকা যদি কোন বিচার আইছে, তাইলে ……………..
প্ল্যান মতো পকেটে কইরা সিগেরেটের প্যাকেটের এক প্যাকেট তেইল্লাচুরা নিয়া গেছি স্কুলে। তৈয়ব আলী স্যারে আইসা রোল কল শেষে শুরু হইছে ভ্যাদর ভ্যাদর। আমি দিছি তেইল্লাচুরা ছাইরা। যতক্ষণ দ্যাখে নাই ততক্ষণ সুরসুরি লাগলে হাত দিয়া সরাই দিছে। যেই দেখছে অম্নেই চিক্কুর দিয়া ফিট। ফিট তো ফিট। মাথায় পানি,বাতাস হাউকাউ।স্কুল ছুটি।
আরেকদিন স্কুলে যাইতেছি খাল পার দিয়া, দেখি পুলাপাইনে মাছ ধরে ফেনি জাল(তিন কোনা বাসের এঙ্গেলে আটকানো মশারির কাপড়) দিয়া। উঠছে একটা মাইট্যা সাপ। নিয়া গেলাম ঠোঙায় কইরা পকেটে ভইরা স্কুলে। টিফিনের সময় যে মেয়ের গায় ছুইরা মারসিলাম ওইটাও ফিট স্কুল ও ছুটি, আর হুজুর স্যারের ডবল বেতের বাড়ি ফ্রি। ৪ দিন লাগছিল জ্বর কমতে।
মাইয়ারা এত ডরাইল্লা হইয়া বাচ্চা জন্ম দেওনের মতো একটা সাহসের কাম কেমনে করে?
হুজুর স্যারে টিফিনের সময় লাইব্রেরির বারান্দায় অজু করে রোজ। জ্বর ভাল হওয়নের কয়েকদিন পর একদিন বড় একটা কুইন্না ব্যাঙ নিয়া গেসি কাগজে পেচাইয়া, স্যারে যেই টুপি খুইলা অজু করতাসে আমি আস্তে কইরা টুপির নিচে ব্যাঙ টারে থুইয়া আসছি। ব্যাঙেও চালু আছে যেই স্যারে টুপি ধরতে গেসে অম্নে দিসে লাফ। স্যারে কয় লা হাওলা অলা কুয়াতা…………….. আমার টুপি লাফায় ক্যা? ২য় লাফে টুপি গেসে পইড়া, ব্যাঙ দেইখা পুলাপাইনে দিছে হাইসা। আমি আইজও বুঝি না স্যারে কেমনে বুঝল কামডা আমার। কাউরে কিছু না কইয়া সোজা বেত নিয়া আইসা ধরল আমারে। পিডানির কথা থাকুক…………….. টি সি র থন বাঁচছিলাম খালি আম্মায় ও হেডস্যারের ছাত্রী আছিল তাই।
২৫টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
আপনি তো বান্দরের হেড স্যার ছিলেন দেখতে পাচ্ছি। বান্দর না বলে গরিলা বললেই মানানসই হবে। আপনার বাবা আম্মাকে বলতো না? কি একটা আনলা দুইন্যায় 😀
সাইদ মিলটন
তারচে কিং কং বলেন্না কেনু ? :/
আব্বা আসলে এগুলো বলার বা দেখার সময় পাননি 🙂 উনি সেলফ মেড স্ট্রাগলার। হয়তো ভাবতেন পুলাপানের লগে এতো খাতিরের কি আছে… তাই একটু দূূরত্ব ছিলো যেটা এখন পোষায়ে যাচ্ছে 🙂
রিমি রুম্মান
তেইল্লাচুরা ! অনেকদিন পর শব্দটা মনে পড়লো 🙂 🙂
সাইদ মিলটন
🙂 🙂
মিথুন
:D) জংগী পিচ্চি ছিলেন———–
সাইদ মিলটন
\|/ \|/ 😀
মরুভূমির জলদস্যু
আমরা একবার প্যাকটিকাল ক্লাসের জন্য আনা ব্যাঙ ছাইড়া দিছিলাম কেলাশে, দেখার মত দৃশ্য হইছিলো :D)
সাইদ মিলটন
আপ্নেও বান্দরাছিলেন 😀
নুসরাত মৌরিন
ভাই আপনি তো দেখি ড্যাঞ্জারাস পিচ্চি আছিলেন!!
সাপ-খোপ, তেইল্যাচোরা,ব্যাঙ সব দেখি আপনের বন্ধু গোত্রীয় আছিল!! 😀
পিচ্চিকালে আপনি তাইলে “বান্দর দ্য গ্রেট” আছিলেন দেখা যাইতেছে…। :p
সাইদ মিলটন
একনো আছি – খ্যাকজ
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা হা হা , হাসতে হাসতে শেষ হইয়া যাইতাছি :D)
উপাস্থাপনার গুনে ঘটনাগুলো যেন দেখতে পাইছি চোখের সামনে।
চলুক পিচ্চি বান্দরের বাঁদরামি 🙂
সাইদ মিলটন
:p
লীলাবতী
টুপি দিছে লাফ :D) :D) পিচ্চিটা তো বান্দরের গুরু আছিলো :p
সাইদ মিলটন
\|/
প্রহেলিকা
পিচ্ছিতাই এমন বান্দর আছিল!!
এখন কি এক্তু কমছে বান্দরামি নাকি বয়সের সাথে সাথে বারছে? যদি বেড়ে থাকে তাইলে বর্তমানের কথা কিছু কন।
সাইদ মিলটন
😀 😀 এগুলা বলেনা
স্বপ্ন
ভাইয়া কিছুটা দুষ্ট আমিও ছিলাম,কিন্তু আপনি তো দেখছি দুষ্ট সম্রাট :D) তবে তেলাপোকাকে মেয়েরা এত ভয় কেন পায় এ প্রশ্নের কোন উত্তর আমিও পাইনি।
সাইদ মিলটন
খ্যাক খ্যাক খ্যাক
নওশিন মিশু
আমারো সাপ পুষার শখ। ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই শখ পূরন করবো। তখন আপনার অভিজ্ঞতা আমার কাজে দিবে 🙂
সাইদ মিলটন
😀 গ্রেট তয় সাপে কিন্ত দুধ কলা কোনটাই খায়না , খালি ব্যাঙ আর ইন্দুর খায়। সিরিয়াসলি সাপ পালতে চাইলে পেট শপ গুলায় খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন, আমি এনসো নামে একজনরে চিনি সে একটা পেরুভিয়ান সাপ পোষে – এবং সেইটারে গলায় জড়ায়ে ঘোরে 😀
স্বপ্ন নীলা
ওরে বাবারে সাপ !! সাপ শুনলেই ভয় পাই— ঐসব তেলাপোকাকে আমি ভয় করি না —’’ যারা ওটাকে ভয় পায় তারা আসলে কিসে যে ভয় পাওয়া উচিত সেটাই মনে হয় জানে না-এটা আমার ব্যক্তিগত ফিলিংস——
আপনার উপস্থাপনা চমৎকার হয়েছে—- অতি মুগ্ধ হলাম
সাইদ মিলটন
হাহাহাহাহাআহা প্লাস্টিকের সাপ দেইখা অজ্ঞান হওয়া মিয়েদেরও চিনি আমি 😀
ছাইরাছ হেলাল
এখন কি ওখানে এগুলো পাওয়া যায়? এখন কী দিয়ে কাজ সারতেছেন?
সাইদ মিলটন
খুঁজলে হয়তো পাওয়া যায় দাদা , খোজার মনটাই নাই আর 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
বড় রশিক আপনি।বাস্তব জীবনেও কি তাই?পোষ্টে আনন্দ পেলাম। -{@