ভাবছি এবার রাতের কাছেই যাব, যে রাতে আমাকে নিশি পেয়েছিল, গা ছম্ছমে ঘর্মাক্ত রুদ্ধশ্বাস রাত, বিষণ্ণ অচৈতন্যের লণ্ডভণ্ড অনিঃশেষ নিশি পাওয়া রাত। না, নয়ানজুলি রাত নয়।
নিঃশব্দ কাকজ্যোৎস্নায় নীলরঙা হাসি হেসে ডেকেছিল অস্থির স্তব্ধতার মূর্তিমতী রাত, ভিজে অন্ধকারের খোলা চুল ছড়িয়ে। বিকেলের পাতা-ঝরা অরণ্যে মসৃণ সোনা পায়ে শুঁকনো পাতা ভাঙ্গার মৃদু শব্দ তুলে যেতে যেতে পলকহীন গাঢ় চোখে ফিরে তাকিয়ে লাল জবা সরু ঠোঁটে ফিসফিস করে কাছে আসতে বলেছিল খুনসুটির লোভ দেখিয়ে।
আধারের ঝিলিকে ঝলসে যাওয়া চোখে আধারের ঝর্নাটিকে মুঠোয় পুড়ে আধারের পল-অনুপলে লিখে রাখি যন্ত্রণার স্বপ্ন যাত্রার ইতি কথা।
আধারের বুকে বনজ্যোৎস্নার ছলকানো গন্ধ শুঁকে ঘুমিয়ে পড়ি, জেগেও উঠি ছটফটিয়ে।
থমকে দাঁড়িয়ে
মিথ্যুক হীরক-দ্যুতির চুপচাপ আলো খুঁজিই না এখন আধারের যৌবনে।
৫৫টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
এক রাতেই দেখি সব সর্বনাশ করে ছাড়লো? পুরো আলো বিমুখ ???
ছাইরাছ হেলাল
অনুগ্রহ করে আরও একবার পড়ুন ।
শুন্য শুন্যালয়
যদি ভুল না বুঝে থাকি এটা স্বপ্ন ছিলো। ভাবছি এবার রাতের কাছেই যাব, যে রাতে আমাকে নিশি পেয়েছিল।
ছাইরাছ হেলাল
নিশি পাওয়া কী ? আগে তাই বলুন ।
শুন্য শুন্যালয়
কেউ ঘোরে চলে গেলে নিশি পাওয়া বলে, আমি এটা জানি। নয়ানজুলি শব্দটার মানে আমার জানা নেই।
ছাইরাছ হেলাল
এই তো এতক্ষণে ঠিক জায়গায় এসেছেন । সহজ কথায় ভুতে পাওয়া বলে ।
নয়ানজুলি হল সরু নর্দমা ।
শুন্য শুন্যালয়
আধারের ঝিলিক, আধারের ঝর্না মুঠোয় পূরে, আধারের পল-অলুপলে? আমার কিন্তু কেমন ভয় ভয় করছে…
ছাইরাছ হেলাল
অস্থির উচ্চকিত হয়ে পড়লে হবে না । মনকে মনের জায়গায় রেখে পড়তে হবে ।
না ,ভয়ের কিছু নেই । সুন্দর জায়গাও আছে এখানে । আমি এখনই বলে দিতে চাই না । পড়ুন তাই চাই ।
চাইলে আপনি পরে আবার পড়ে দেখবেন ।
শুন্য শুন্যালয়
অসুন্দর বলিনি কিন্তু, সুন্দরের বর্ণনাতেই কেমন একটা ভয় আছে। আমার কাছে মায়াবিনীর মতো লেগেছে তার কাছে ডাকা, তার অন্ধকারের চুল ছড়ানো, তার হাঁটা শোব কিছুই।
শুন্য শুন্যালয়
কিছু লেখা আমি একবার পড়িনা… জানেন আপনি।
ছাইরাছ হেলাল
আমি জানি আপনি মন দিয়েই পড়েন । তার পরেও বলছি । আপনাকে চঞ্চল মনে হচ্ছিল ।
সুন্দর অসুন্দরের প্রশ্ন নয় । প্রশ্ন নয় ভাল কিংবা মন্দের ।
এক ধরনের মায়াবিনী আবহাওয়া তৈরি করা হয়েছে । আবার সূক্ষ্ম ভালোবাসার বাতাস ছড়ানো হয়েছে ।
আপনি ঠিক ধরেছেন ।
শুন্য শুন্যালয়
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, ছিলাম মনে হয়।
পল-অনুপলে যে স্বপ্নযাত্রার ইতিকথা লিখতে চেয়েছেন, এটা আসলে তার পিছু সেই যাত্রার কথা বলতে চেয়েছেন, এটা আমার বোঝার ভুল ছিলো।
শেষ লাইনটায় একটা প্রশ্ন ।
খুঁজিই না বলতে কি, আর খোঁজেন না? নাকি খুঁজে দেখতে চান?
ছাইরাছ হেলাল
এখানে রাতের সাথে গভীর সখ্যতার কথা বলা কৌশলে ।
যাক ,অবশেষে তরী তীরে এলো ।
শুন্য শুন্যালয়
কৌশলে? অর্থাৎ টাইম টূ সার্চ দ্যাট লাইট ইন ডার্ক —-। গট ইট 🙂
আমি এতো কম বুঝি কেনো?
ছাইরাছ হেলাল
যাক , এতক্ষণে অরিন্দম ………………………………………
শুন্য শুন্যালয়
হুম, তার জন্য পুরা মুখস্থের দশা হয়েছে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
তত্ত্ব কথার অর্থ মনে ধরা বড় কষ্ট তবুও পাই কিছু আনন্দ।
ছাইরাছ হেলাল
আনন্দ পাওয়াই আসল কথা । পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
নুসরাত মৌরিন
রাতের রুপে তো মাথা খারাপ হওয়ার দশা।
এত আলো যদি অন্ধকারের থাকে তাহলে তো অন্ধকারই ভালো…।
ছাইরাছ হেলাল
নিশি পেলেই এমন রূপ দেখা সম্ভব। তাছাড়া অন্ধকারেরও আলো অবশ্যই আচ্ছে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ । আমরাও যে একটু পড়তে চাই।
স্বপ্ন নীলা
আধারের বুকে বনজ্যোৎস্নার ছলকানো গন্ধ শুঁকে ঘুমিয়ে পড়ি,জেগেও উঠি ছটফটিয়ে।’’—— অসম্ভব সুন্দর লাইনটা
পুরো কবিতাটি দুইবার পড়লাম। ব্যতিক্রমী একটি কবিতা যা আমার মনকে শীতল করে দিয়েছে —
কবিকে আন্তরিক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি কবিতা উপহার দেয়ার জন্য ————
ছাইরাছ হেলাল
আমি আনন্দিত আপনি আপনারা নিয়মিত পড়ছেন মন দিয়ে ্তা দেখে ।
সত্যি সত্যি কবিতা হচ্ছে কীনা এ সন্দেহ নিয়েই লিখি ।
আপনাকেও ধন্যবাদ পড়ার জন্য কিন্তু পড়তে দিচ্ছেন না দেখে অধন্যবাদ ।
চাকরিটা এবারে ছেড়ে দিন ।
খসড়া
সে কি আলেয়া? নাকি উর্বষী নন্দনবাসিনী সর্বনাশী?
ছাইরাছ হেলাল
সে যে কী তা এখন ও পুরো জানা হয়নি,তবে সে এক নিশি পাওয়া রাত সেটুকু ই বুঝতে পেরেছি ।
উর্বষী বা মেনোকা নয় তা নিশ্চিত ।
পুষ্পবতী
নিঃশব্দ কাকজ্যোৎস্নায় নীলরঙা হাসি হেসে ডেকেছিল অস্থির স্তব্ধতার মূর্তিমতী রাত,ভিজে অন্ধকারের খোলা চুল ছড়িয়ে। বিকেলের পাতা-ঝরা অরণ্যে মসৃণ সোনা পায়ে শুকনো পাতা ভাঙ্গার মৃদু শব্দ তুলে যেতে যেতে পলকহীন গাঢ় চোখে ফিরে তাকিয়ে লাল জবা সরু ঠোঁটে ফিসফিস করে কাছে আসতে বলেছিল খুনসুটির লোভ দেখিয়ে। -{@
খুব দারুন হয়েছে লিখাটা। -{@
ছাইরাছ হেলাল
নিয়মিত পড়ছেন দেখে ধন্যবাদ দিচ্ছি ।
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
এমন রাত আমাকেও যে লোভ দেখায়। ভালো লেগেছে কবি।
ছাইরাছ হেলাল
ভালই বলেছেন । কিন্তু আপনার লেখা পাচ্ছিনে কেন ?
আবার ছবক দিতে শুরু করুন ।
মিসু
মন্তব্য না পড়লে বুঝতে সমস্যা হতো। ভালো লেগেছে ।
ছাইরাছ হেলাল
বুঝলেই হল , মন্তব্য পড়ে হোক বা যে ভাবেই হোক । সত্যি বলছেন ভাল লেগেছে ।
এবারে ছবি ঠিক আছে ।
স্বপ্ন
আপনি আমার প্রিয় কবি হয়ে উঠছেন।
ছাইরাছ হেলাল
সেতো আমার বিশাল ভাগ্য , কিন্তু কথা হল যা লিখি তা কিন্তু কবিতা হয় না ।
নিয়মিত পড়ছেন দেখে ভালই লাগে ।
মিথুন
বর্ননাতে এমন একটা মায়া ভাব আছে আপনার সেই নিশিকে দেখতে পাচ্ছি আমি। মিথ্যুক হিরক দুত্যির চুপচাপ আলো অনেক সুন্দর উপমা। এমন ভাব জমে থাক আপনার আর সেই নিশি রাতের সাথে।
ছাইরাছ হেলাল
তা ভাব একটু হয়েছে কিন্তু এই ভাব কতক্ষণ টিকিয়ে রাখতে পারি কে জানে ।
যা হাসাহাসি শুরু হয়েছে তাতে ভাই গয় পাচ্ছি, ভরসা পাচ্ছি না ।
বনলতা সেন
বাহ্ বাহ্ । অবশেষে নিশি রাত ! কেউ কাৎ হয়েছে দেখতে মন্দ লাগছে না । হতে পারে তা সাময়িক।তবুও ।
বহুৎ কাঁদিয়েছেন। এবারে চাঁদু (সরি)! শুধু ঘুঘু নয় ফাঁদ ও দেখতে হতে পারে । হি হি ।
ছাইরাছ হেলাল
যতই হি হি করেন ঘটনা কিন্তু তেমন কিছু না। ভূতে পেলে কত কিছুই না হয়।
বনলতা সেন
“নিঃশব্দ কাকজ্যোৎস্নায় নীলরঙা হাসি হেসে ডেকেছিল অস্থির স্তব্ধতার মূর্তিমতী রাত,ভিজে অন্ধকারের খোলা চুল ছড়িয়ে। বিকেলের পাতা-ঝরা অরণ্যে মসৃণ সোনা পায়ে শুকনো পাতা ভাঙ্গার মৃদু শব্দ তুলে যেতে যেতে পলকহীন গাঢ় চোখে ফিরে তাকিয়ে লাল জবা সরু ঠোঁটে ফিসফিস করে কাছে আসতে বলেছিল খুনসুটির লোভ দেখিয়ে।”
কী দারুণ স্বীকারোক্তি ! আমারই তো ভাব জমাতে ইচ্ছে করে । আমি এক মহা মায়াবিনী কে দেখতে পাচ্ছি ।
দেখতে পাচ্ছি নাকের দড়িটিকেও।হো হো ।
ছাইরাছ হেলাল
মজা দেখা ঠিক না ,আবার টিসু নিয়ে আপনাকেই দৌড়ুতে হবে। মনে রাখবেন।
ব্লগার সজীব
মায়াবিনী রাত, ভয়ের কিছু নাই তো ?
ছাইরাছ হেলাল
না আপাততঃ ভয়ের কিছু নেই তবে সাবধানে থাকা ভাল ।
ব্লগার সজীব
সাব্ধানেই থাকা অভ্যাস করছি ।
ছাইরাছ হেলাল
সেই ভাল , তবে তাবিজ নিলে আরও মঙ্গল ।
আগুন রঙের শিমুল
এই সৌরতারা ছাওয়া অন্ধকার রাত্রি
বিছানায় সুক্ষ্মজাল মশারির
আমার ম্লান স্বপ্নহীন চোখে .. দুরন্ত স্বপ্ন
– এমত অস্থির উল্লাসে জেগে থাকা ছিলোনা কখনো এর আগে
ছাইরাছ হেলাল
জেগে থেকে স্বপ্নহীন চোখে স্বপ্ন দেখা মন্দ নয় , যদি তা হয় সৌরতারার অন্ধকার রাত্রে ।
আগুন রঙের শিমুল
স্বপ্নহীন চোখে স্বপ্ন দেখা মন্দ নয়
বাহ , দারুন বলেছেন
স্বপ্নের ব্যাবচ্ছেদ আসলেই মন্দ নয়
ছাইরাছ হেলাল
ব্যবচ্ছেদের ধারালো যন্ত্রপাতি নাই । ভোঁতা চাক্কুই সম্বল ।
জিসান শা ইকরাম
একবারে বোঝার কথা নয় আমার
আরো পড়তে হবে মন্তব্য সহ ।
তবে নিশি পাওয়া রাতে আমার ভয় খুব।
ছাইরাছ হেলাল
ভুতের ভয় সবারই থাকে ।
জিসান শা ইকরাম
বুঝলাম অবশেষে ।
মন্তব্য না পড়লে বুঝতে আরো কষ্ট হতো।
পাঠক সৃষ্টি করা গেলো না ।
ছাইরাছ হেলাল
কোন দুঃখে পাঠক হতে যাবে ? সবাই আমরা লেখক হব , পণ করেছি যে ।
লীলাবতী
কিছুদিন আসা হয়নি ব্লগে, আপনার কত লেখা মিস করেছি কে জানে ? রাত নিয়ে বেশ কাব্য রচিত হচ্ছে সোনেলায় 😛
ছাইরাছ হেলাল
না না ,কিছুই আপনি মিস করেননি। খুবই কম লিখি আমি ।
হ্যা ,রাত নিয়ে কিছুটা টানা হেচড়া চলছে।
আপনার ওদিক কেমন যাচ্ছে ? আপডেট দিচ্ছেন না অনেকদিন ।
অপরাজিতা সারাহ
অসাধারন!
“থমকে দাঁড়িয়ে
মিথ্যুক হীরক-দ্যুতির চুপচাপ আলো খুঁজিই না এখন আধারের যৌবনে।”
অসম্ভব ভালো লাগল।
ছাইরাছ হেলাল
শান্তনা এটুকুই, ভুলে যান নি সোনেলাকে।
ভাল থাকুন ফুলে-চন্দনে।
নীলাঞ্জনা নীলা
মায়াবীনি নীল রাত!
সাধে কি আর বলি শুন্য আপু আর আপনি দুজনেই অসাধারণ লেখেন।
মন্তব্য না পড়লে বোঝার ক্ষমতা ছিলোনা। কয়েকবার পড়েছি মন্তব্য না দেখে। শুধু এই কথাটিই মাথায় এলো, “মায়াবীনি নীল রাত!”——-মনে হয় এ নিয়েই লেখা। তারপর মন্তব্যে গেলাম, অবশেষে কিছু বুঝিতে সক্ষম হইলাম।
প্রণাম জানাই কবিভাই। 🙂