দেয়াল অথবা অসুস্থতা

আফ্রি আয়েশা ২০ মার্চ ২০১৪, বৃহস্পতিবার, ১১:০০:২৫পূর্বাহ্ন গল্প ২৭ মন্তব্য

৮ আগস্ট
কয় দিন ধরে দেয়াল গুলি খুব বেয়াড়া আচরন করছে। আজ খুব বাড় বেড়েছে। কাপে চা ঢাল ছিলাম হটাত কানের কাছে আমার নাম ধরে এমন চিৎকার দিয়ে উঠলো … এখন আমি আমার নাম মনে করতে পারছি না, যতবার মনে করার চেষ্টা করছি ততোবার তারা অট্টহাসি দিয়ে উঠছে …

৯ আগস্ট
কবিতা পড়ছিলাম কিন্তু ক্ষুধার যন্ত্রনায় অস্থির হয়ে বই রেখে উঠতে বাধ্য হলাম। পুরো ঘর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোন খাবার পেলাম না। শেষে একটা ডিম চুলায় সিদ্ধ হতে দিয়ে আসলাম। কিছু ক্ষন পরে গিয়ে দেখি পাতিল খালি! ডিম নেই! ফিরে এসে দেখি কবিতার যে বইটা পড়ছিলাম , সেটাও কোথাও নেই! আমি নিশ্চিত দেয়াল গুলি এই কান্ড করছে।

১০ আগস্ট
একটু আগে ঘুম ভেঙ্গে গেলো অদ্ভুত খস খস শব্দে । দেখি দেয়ালরা আমার প্রিয় বইগুলি খাচ্ছে … দৌড়ে গিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করলাম, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো। ওরা একে একে সব গুলি বই খেয়ে ফেললো …

১১ আগস্ট
আজ প্রিয় মানুষগুলির কথা খুব মনে পড়ছে, তাদের মুখ আবছা আবছা মনে আসছে… দেয়ালরা মনে করতে দিচ্ছে না। তারা অনবরত ফিস ফিস করে কথা বলছে , থেকে থেকে অট্টহাসিও হাসছে … খুব বিরক্ত লাগছে। এখন আমি প্রিয়দের কাছে যাবো।

আমি যেতে পারছি না … ওরা আমাকে যেতে দিচ্ছে না। বাইরে যাবার দরজাটা কোথাও খুঁজে পেলাম না, ওরা দরজাটাও খেয়ে ফেলেছে … সব খেয়ে ফেলছে …

১২ আগস্ট
ওদের ফিসফিসানি আর থামছে না … ওরা আমার দিকে কিভাবে যেন তাকাচ্ছে! ওদের চোখের দৃস্টিকে খুব ভয় লাগছে … ওরা ভয়ংকর হয়ে উঠেছে , কি বীভৎস! কি নিষ্ঠুর ! তাদের চেহারা… ওরা আসছে … আমার চারপাশ থেকে তারা এগিয়ে আসছে …আমাকে এক্ষুনি কিছু করতে হবে… কিছুতেই আমি তাদের কাছে হেরে যাবো না …

ইন্সপেক্টর ডাইরীর শেষ পাতাটা বন্ধ করলেন। পুরো ঘরে একবার চোখ বুলিয়ে ফাঁকা বুক সেলফটার কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন । যেখানে যেখানে বই ছিলো সেই জায়গাগুলিতে ধুলি জমে নেই, তার মানে কিছু দিন আগেও বই ছিলো । ঘরের অন্য কিছু জায়গায়ও ধুলির কম ঘনত্ব দেখেও বোঝা যায় , সে জায়গা গুলিতেও কিছু আসবাব ছিলো … ডাইরীটা সহকারীর হাতে দিয়ে, মেঝেতে অদ্ভুত ভঙ্গীতে পড়ে থাকা লাশটার দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝে নেয়ার চেষ্টা করতে লাগলেন ।

৫৮৫জন ৫৮৫জন
0 Shares

২৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ