করোনা ভাইরাসের কারণে ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্য ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে। এর আগে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ও পরে ২৭ ও ২৮ মার্চের সাপ্তাহিক ছুটিও যোগ হবে। এ ছাড়া ৩ ও ৪ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি এ ছুটির সঙ্গে যোগ হবে।
তবে এ ছুটি কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং জরুরি সেবার জন্য প্রযোজ্য হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ দফার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ১০ সিদ্ধান্তের মধ্য রয়েছে গণপরিবহন চলাচল সীমিত রাখা, সব রকম সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দশদিনের ছুটি পেলো সবাই ভালো কথা। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমনণের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমবে। তবে হয়েছে কিন্তু উল্টোটা। ছুটি পেয়ে সবাই ছুটছে নিজ গ্রামে, শহরে আর এটাই স্বাভাবিক। কারন- সরকার ছুটি দিয়েতো আর বলেনি শহর থেকে বের হওয়া যাবেনা। ছুটি দিয়েতো বলেনি ঘরেই থাকুন। বাইরে বের হলে বা এই ছুটিতে গ্রামে গেলে কি ভয়ংকরতম দিন আসতে পারে! এসব বিষয়ে কোন এওয়ারনেস প্রোগ্রামও করেননি। হুট করে ছুটি দিয়ে দিলেন!
সরকারের এই দশদিনের ছুটির সংজ্ঞাতে অনেক কিছুর ঘাটতি ছিলো বলেই সাধারণ মানুষ তা বুঝতে পারেনি। ফলে ছুটি পেয়ে গ্রামে কিংবা নিজের শহরে ফিরে আসা ব্যক্তিরা আজ নিজেরাই হয়তো একেকজন একেকটি করোনা বারুদ হয়ে আপন শহরে ফিরছে।
অথচ উচিত ছিলো লকডাউন করে তারপর ছুটি দেয়া। আদতে ছুটি দিয়ে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে সহযোগীতাই করা হলো না কি?
আরও অনেক কিছু সমাধানও করা উচিত। এখানে আমি আমার মতামত দিলাম।
✔ এই দশদিন যাতে ছুটি পেয়ে কেউ বেড়াতে না যায় সেটি কার্যকরের ব্যবস্থা করা উচিত। যেখানে সাধারণ কোয়ারেন্টাইন কেউ মানতে চাইছেনা সেখানে ছুটিতে যাতে কেউ ঘরবিমূখ না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
✔ নিম্ন আয়ের এবং শ্রমজীবী মানুষের দৈনন্দিন নির্দিষ্ট ভাতার সু-ব্যবস্থা করা উচিত, না হলে আয়রোজগার করতে তারা বাইরে যাবেই।
✔ সব অফিস যেহেতু ছুটি তাই যারা করোনা সংক্রান্ত সেবা দেবেন সরকার তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ভাতা দেবেন কি?
✔ বাসায় বসে দাপ্তরিক কাজ করার কথা বলা হয়েছে। থানা পর্যায়ে অনেক অফিস এখনো ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আসেনি। তাহলে তারা কি করে দাপ্তরিক কাজ করবেন?
✔ আগামী চার এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি তাহলে অগ্রীম বেতনের ব্যবস্থা করা হলে ভালো হতোনা কি? যারা মাসের এক থেকে তিন তারিখ বেতন তুলে মাসিক বাজেট নির্ধারণ করেন তাদের জন্য এটি একটি সমস্যাই বটে! অবশ্য আতিপাতিদের টুপাইস কামানো বন্ধ হলো অনেকের।
✔ সর্বোপরি এই দশদিন সুনির্দিষ্ট কিছু এলাকা লকডাউনই করা যেতোনা কি? বিমানবন্দর এখনো চালু। চারটি রুট বন্ধ করেননি। তারমানে হচ্ছে যেসব দেশ আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট বন্ধ করেছে তাই আপনারাও বাধ্য হয়েছেন ফ্লাইট বন্ধ করতে। তাহলে বাকী চারটি চালু রাখলেন কেন? জীবনের থেকে কি ব্যবসাবাণিজ্যই কি বড় হয়ে গেলো?
✔ অন্যদিকে দেশের সব স্থল বন্দর দিয়ে বিদেশীদের প্রবেশ বন্ধ দিয়েছেন। তাহলে কি দাঁড়ালো? এদেশের মানুষ করোনার জীবাণু নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে? থার্মাল স্ক্যানারই কি সমাধান? দেশের অনেকেই আন্তর্জাতিক রুটের ট্রানজিটের সময় নাপা ট্যাবলেট খেয়েছেন যাতে বিমানবন্দর এবং স্থলবন্দরে শরীরের তাপমাত্রা ধরা না পড়ে তা কি জানেন?
মানবিকতা দেখাতে গিয়ে ক্ষতিই টেনে আনা হলোনা কি? এসবের আসু সমাধান জরুরী।
সবাই নিজেদের জায়গায় সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন। দেশকে ভালোবাসুন। প্রিয় মাতৃভূমির এখন তার সন্তানদের বড্ড প্রয়োজন।
২৫টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আমি ও সহমত আপনার সাথে। সংক্রমণ কিছুটা কমানো গেলেও কাজের কাজ তেমন একটা হবেনা বলেই মনে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইলো
তৌহিদ
আমাদের আসলে সমন্বয়হীণতা প্রখর!! আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর করোনাভাইরাস সতর্কতা জনসাধারণকে এক অদ্ভুত সমস্যায় ফেলে দিয়েছে যার কারনে জীবনযাপনে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে সময়েই ঠিক হয়ে যাবে।
ভালো থাকবেন।
নীরা সাদীয়া
অনেক অনেক টেস্টকীট দরকার। পিপিআই দরকার। সরকার কবে নড়েচড়ে বসবে? আসলে তাদেরকে সঠিক আইডিয়া দেবার মত কেউ নেই।
তৌহিদ
সমস্যাতো সেখানেই, আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেই। শুধু নাম ফাট করছি।
ছাইরাছ হেলাল
আমাদের সবার আন্তরিক সতর্কতা এ সময়ে খুব দরকার।
আল্লাহ আমাদের হেফাজতে রাখুন এ দোয়ায় যেন আমরা থাকি।
তৌহিদ
একমাত্র আল্লাহই ভরসা। আমরাতো শুধু চেষ্টা করতে পারি।
হালিম নজরুল
কানে পানি গেছে এটা অন্তত বোঝা গেল। বাকিটা দেখা যাক।
তৌহিদ
হ্যা ভাই, দেখা যাক কি হয়।
সুপায়ন বড়ুয়া
ধন্যবাদ। আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য।
নিজে বাঁচুন, অন্যকে বাচাঁন।
সাস্থ্য বিধি মেনে চলি।
শুভ কামনা। ভাল থাকবেন।
তৌহিদ
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই সর্বোত্তম পন্থা এখন। ভালো থাকবেন দাদা।
জিসান শা ইকরাম
এই ছুটিতে গ্রাম গুলো লোকে লোকারন্য হয়ে যাবে। ছুটির মুডে থাকবে সবাই। চায়ের দোকানে আড্ডা হবে।
আপনার মতামতের সাথে একমত।
ভালো থাকুন তৌহিদ ভাই।
তৌহিদ
এটাই বড় সমস্যা হয়ে দেখা দেবে দিচ্ছে। কিছুতেই মানুষকে বোঝানো যাচ্ছেনা যে ঘরই সবচেয়ে সেফ জায়গা।
ভালো থাকবেন ভাইজান।
রুমন আশরাফ
সময়োপযোগী দারুণ পোস্ট।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই।
ফয়জুল মহী
গ্রাম কিংবা শহরের খেটে খাওয়া মানুষ না খেয়ে মরবে। হে দুনিয়ার মালিক তুমি ক্ষমা করো। বাঁচতে দাও সবাইকে তোমার সুন্দর পৃথিবীতে।
তৌহিদ
সরকার যদিও বলছে তাদের জন্য ত্রাণ সাহায্য রাখা হয়েছে এবং তা পৌঁছে দেয়া হবে। তবে কতজন পাবে সেটাই ভাবনার বিষয়। ভালো থাকবেন ভাই।
নাজমুল হুদা
লেখাটি বিবেচনা করলে বলতে পারি
করোনা ভাইরাস আমাদের মতো দেশের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এবং এর ফলে একটি বিশেষ শ্রেণীর ব্যর্থতার গোঁমর ফাঁস হয়ে যাচ্ছে।
মানুষের সচেতনতার উপর নির্ভর করছে আগামীর ভাগ্য। কিন্তু সেই মানুষ সচেতনতার ভিত্তিটা নড়বড়ে খুঁটির উপর দাঁড়িয়ে আছে, মানুষও অপারগ ভাগ্যের কাছে।
তৌহিদ
আমাদের আসলে সমন্বয়হীণতা প্রখর!! আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর করোনাভাইরাস সতর্কতা জনসাধারণকে এক অদ্ভুত সমস্যায় ফেলে দিয়েছে যার কারনে জীবনযাপনে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে সময়েই ঠিক হয়ে যাবে আশাকরি।
ভালো থাকবেন।
ইঞ্জা
সরকারের অবিবেচক সিদ্ধান্তের কারণে দেশ আজ করোনা আক্রান্ত, সাথে সাথে গোঁদের উপর বিষফোঁড়া এই ছুটি, কেন বাবা এমন ছুটি দেওয়া, লক ডাউন করলে কি সমস্যা হতো?
আমি সত্যি হতাশ।
তৌহিদ
লক ডাউন অথবা কার্ফিউ এটাই এখন উৎকৃষ্ট পন্থা হতে পারে দাদা। তবে সরকারের সমন্বয়হীনতার প্রমান দুঃখজনক ভাবে পরিলক্ষিত।
ভালো থাকবেন ভাই।
ইঞ্জা
সত্যি দুঃখজনক, এমন সিরিয়াস অবস্থাতে সরকারে কিভাবে সমন্বয়হীনতা থাকে তা আমাকে অবাক করছে।
ভালো থাকবেন ভাই।
নিতাই বাবু
✔ “নিম্ন আয়ের এবং শ্রমজীবী মানুষের দৈনন্দিন নির্দিষ্ট ভাতার সু-ব্যবস্থা করা উচিত, না হলে আয়রোজগার করতে তারা বাইরে যাবেই।”
অন্য কোনও আলোচনায় না গিয়ে আমি আপনার লেখায় ভক্তি রেখে এখানেই থেকে গেলাম। কারণ আমি নিজের একজন দিনদুখী। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের মধ্যে লকডাউন হলো একরকম গরিব মানুষ মারার তীর-ধনুক! আমি এবং আমরা মনে হয়ে করোনা আক্রমণের মরবো না, মরবো এই বিষাক্ত তীরের আঘাতেই। আর কিছুই লিখতে পারছি না দাদা। মাথায় খেলছে না। আশীর্বাদ প্রার্থী। আপনাদের জন্যও শুভকামনা থাকলো।
তৌহিদ
আমাদের আসলে সমন্বয়হীণতা প্রখর!! আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর করোনাভাইরাস সতর্কতা জনসাধারণকে এক অদ্ভুত সমস্যায় ফেলে দিয়েছে যার কারনে জীবনযাপনে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে সময়েই ঠিক হয়ে যাবে আশাকরি।
ভালো থাকবেন দাদা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
এভাবে সমাধান হবে না।
গোঁড়ায় ভুল প্রথম থেকে।
সময়োপযোগী লেখনী দাদা।
তৌহিদ
ধন্যবাদ দাদা, ভালো থাকবেন সবসময়।