তিস্তা এবং তিস্তা পাড়ের কাঁন্না (পর্ব
০১)
তিস্তা মরলেও কাঁন্না..মারলেও কাঁন্না…
(প্লিজ একটু সময় নিয়ে পড়ুন তিস্তা ও
তিস্তা পাড়ের মানুষের প্রেরণা ও কাঁন্না)
ভারতের আসাম প্রদেশের লুসাই পাহাড়
থেকে উত্পন্ন হওয়া তিস্তা নদী।
যাহা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চঁল
থেকে এসে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার
সাথে মিলিত হয়ে বঙ্গপসাগরে পতিত
হয়েছে।
সেই ছোট বেলা থেকেই আমার তিস্তা নদীর
কূলেই বাস।কিশর যৌবন তার কাছেই
থেকে এসেছি। দেখেছি সেই তিস্তার ভয়াল
রুপ,অপরুপ সৌন্দর্য,হৃদয় জরিত
কাঁন্না,সর্বনাশ সব কিছুই।
সবার কাছে তিস্তা ছোট নদী হলে হবে কি ,
এর আছে বিশাক্ত ছোঁবল ও ভয়াভহতা।
আমি যখন ছোট তখন সেই নদী ছিল বাড়ীর
১.৫কিঃমিঃ দূরে। ছোট কালে সবার
সাথে দেখতে যেতাম সেই নদীর কূঁলের রুপ।
তখন জানিনা বাংলার কোন মাসে এটাই
হয়,এখন হারে হারে জানি।
মাঁঘ ও ফাল্গুন মাস…!
সবাই বলা-বলি করত অমুকের
বাড়ী নদীতে ভাংতেছে….আমরা মঁজা পেতাম।
এবং সবাই দৌড়ে যেতাম
যে সেখানে গেলে সুপারির কঁচি অঁঙ্গুর
পাওয়া যাবে,পাওয়া যাবে নাঁরিকেলের ছোট
ছোট
গোঁটা গুলি যাহা দিয়ে আমরা খেলনা হিসেবে খেলতে পারব।
তখন বুঝতাম না যে যাদের
এইগুলী নিতেছি তাদের মনে কত দূঃখ বইছে ।
যাই হোক একবার দেখতে গেলাম
একটি বাড়ি ভাঁঙ্গার দৃশ্য, সবাই
গিয়া দেখলাম । বাড়ির মালিক আমার দাদু
হয়।
তাদের বাড়ীটি এমন
ভাবে ভেঁঙ্গেছিলো যে গ্রামেয় অর্ধশত
লোক ঘর,ঘটি,বাটি,হাঁড়ি,পাতিল,গরু,ছাঁগল
সহ সকল পন্য নিরাপদে না নিয়ে আসতেই
চোঁখের সামনেই সব কিছুই গ্রাঁস
করে নিয়ে গেলো সেই ভয়াল তিস্তা নদী।
আরো দেখেছি এই অর্তনাদের বেহুশ
হয়ে পড়ে থাকা,কাঁন্না এমন কি ভিঁটা ছাড়ার
মোহে পাঁগল ও।
কত লাঁশ দেখেছি নদীতে ভেঁসে যেতে,কত লাঁশ
দেখেছি কবর ভেঁঙ্গে নদীতে বিলীন হতে।
যে কথা না বললেই নয়ঃ আমার গ্রামের
একজন হাজ্বী সম্পর্কে বড়বাবা।
আমি দেখিনি জন্মের আগেই আল্লাহ
ওনাকে বেহেস্তবাসি করেছেন। হজ্ব
করে বাড়ী ফেড়ার পথে তিনি মারা গিয়েছিলেন
১৯৮৯ সালে আর তার বাড়ীতেই তাকে দাফন
করা হয়েছিল।
২০০৫ সালে তাহার
কবরটি নদীতে ভেঁঙ্গে যায়।কি একটা দৃশ্য
আল্লার অসীম রহমতে তাহাকে সেই
অবস্হায় পাওয়া যায়।
যাই হোক, যখন চৈঁত্র ও বৈশাখ মাস
আসে তখন নদীতে হাঁটু কিংবা কোমড়
পর্যন্ত পানি থাকে।
তখন আমরা আরো আন্দিত হই যে-মাঁছ
ধরতে পারব,এবং ধরতাম।
আমাদের চেয়ে আরো আন্দিত হতো যাদের
ঘর ও ভিটা টুকু নদীতে বিলিন
হয়ে গিয়েছিলো।
তখন তাদের মাঝে একটু আশা জাগে যে_ ঐ
চরের জমিটুকু একটু কাজে লাগিয়ে কিছু
একটা আবাদ করে সংসার টুকুকে একটু সচল
করতে পারবো।
তখন তিস্তা পাড়ের সবার
কাছে থাকে আন্দের ছোয়া,
ঘরবাড়ি পুরে গেলে জমি টুকু পাওয়া যায়
কিন্তু আমাদের
যেটি হয়েছে সেটি কখনো পাওয়া যায় না।
তাদের বাড়িগুলি স্হা্ন্তর করে কেউ অনেক
দূরে কেউ বা নদীর কাছা কাছিতেই।
যখন নদীতে পানি না থাকে তখন
তিস্তা পাড়ের লোকজনের মনে থাকে সুখ
এবং দেশের মানুষের কাছে হয় চরম দূঃখ।
সবাই হয়েছে ভিটা পরিবার পরিজন
এবং আত্নীয়তা ছাড়া।আর উত্তর-বঙ্গের
দারিদ্রতা হওয়ার একটিই মাত্র নাম
যেটি হলো “তিস্তা”তিস্তা”তিস্তা”
আবারো……..
…. বলতেছি……তিস্তা পাড়ের
লোকদের সুখের চেয়ে কাঁন্নার পাল্লাটাই
অনেক ভারী।
যদি তিস্তার সবটুকু কথা লেখা যেত
তাহলে বুঝতেই পারতেন কতটুকু
ব্যাথা তিস্তা ও তিস্তা পাড়ের লোকেদের।
চলবে….সাইদুর
৭টি মন্তব্য
আজিম
বর্ননা গুলো সব ভয়াবহ। খুব কাছে থেকে না হলেও দেখা হয়েছে কিছুটা এবং লেখকের তুলনায় খুবই কম।
তিস্তা পাড়ের মানুষগুলোর দুঃখ গাঁথার কোন শেষ নাই।
আপনার মতো করে বর্ননার জন্য ধন্যবাদ।
সাইদুর রহমান সিদ্দিক
আনাকেও ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
নদী ভাঙ্গা পরিবারের দুঃখ কষ্ট সীমাহীন —
আপনার লেখায় ছোট বেলার দেখা তিস্তাকে দেখলাম ।
লেখাটি এমন কবিতার মত কি ইচ্ছে করে করেছেন ?
লেখা এখানে সরাসরি লিখেন ? নাকি কপি করে পেষ্ট করেন ?
যে কোন লেখা কপি করে এখানে পেষ্ট করার পুর্বে এইচটিএমএল এ ক্লীক করে পেষ্ট করুন।
এরপরে দৃষ্যমানে ক্লীক করে প্রকাশ করুন। অবিকল কপি হবে ।
সাইদুর রহমান সিদ্দিক
ধন্যবাদ আপনার ছোটবেলার কথা স্বরণ করার জন্য দাদা।আসলে টুডে ব্লগে অনেক আগে লিখেছিলাম।ওখান থেকে কপি করে এনেছি ।আমি ফোনে ব্লগিং করি এত কিছু অফশন জানি না।
ছাইরাছ হেলাল
উজানে পানি প্রত্যাহার শক্তিধর দেশেরা হরহামেশা করিয়াই থাকে ।
ভাটির মানুষের কথা তাহারা থোরাই কেয়ার করে ।
আউল ফাউল বাদ দিয়ে লিখছেন ,তাও ভাল ।
উত্তর-ফুত্তর না দেওয়াও মন্দ না ।
সাইদুর রহমান সিদ্দিক
ধন্যবাদ ভাইয়া, আমি অল্প শিক্ষিত,আপনার মতামত একটু সহজ করে বলুন।
সাইদুর রহমান সিদ্দিক
সাবাইকে ধন্যবাদ,আজিম ভাই আসলেই আমরা নদী ভাঙ্গা এলাকার মানুষ,তাই দুঃখগুলি তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। জিসান ভাই@আসলে কপি করা পোস্ট টুডে ব্লগে অনেক আগে লিখেছিলাম,আর ফোনে ব্লগিং করতেছি তাই এত কিছু বুঝি না। হেলাল ভাই আপনার মতামত একটু সহজ করে বলুন