তমসা : আচ্ছা! তুমি আমার নাম তমসা দিলে কেন? তমসা মানে তো অন্ধকার।
লিখন : তমসা তো একটি নদীর নামও। কেন তুমি অভিধান দেখ নি?
তমসা : না, দেখিনি! আমি তো তোমার মতো কবি নই, যে সারাদিন শুধু অভিধান
আর কবিতা নিয়ে বসে থাকবো আর প্রেয়সীকে দেব নতুন নতুন নাম।
আচ্ছা, তুমি নদীর নামই বা কেন দিলে?
লিখন : বারে! যে নদীর বুকে আমি নাইবো, যে নদীর ধারে বসে আমি গাইবো,
যে নদীর স্নিগ্ধ জল পান করে আমার তৃষ্ণার্ত হৃদয়কে শান্ত করবো,
তাকে নদীর নাম দেব না তো কি দেবো?
তমসা : ও, তাই বুঝি? তুমি আমাকে এত ভালবাসো, এত কাছে চাও?
কিন্ত যদি হারিয়ে যাই, দূর অন্ধকারে।
লিখন : তাই তো বড্ড ভয় হয়। যদি হারিয়ে যাও।
তাই তো অভিধান ঘেটে ঘেটে তোমার নাম দিয়েছি তমসা।
তমসা : আবার অভিধান কেন? কথায় কথায় শুধু পান্ডিত্য।
লিখন : পান্ডিত্য নয়। তুমিই তো বললে তমসার আরেক অর্থ অন্ধকার।
আর এই অর্থেও তুমি আমার তমসা।
তমসা : এর অর্থও আমি বুঝি না। কী নামে বিশেষিত কর তাও জানি না। শুধু তোমার ভনিতা।
লিখন : ভণিতা নয়। যদি কখনও তুমি তমিস্রের আহ্বানে হারিয়ে যাও ঐ দূরনীলিমায়,
প্রকৃতি যদি বিচ্ছেদ রচনা করে তোমার আামর কোন ভুলে।
তবে যে তুমি আমার কাছে তমসা নামে প্রতিফলিত হবে।
তাই তো তোমার নাম দিয়েছি তমসা।
তমসা : ও, তাই বুঝি? এত কিছু বুঝি না। আমি শুধু তোমাকে ভালবাসি।
লিখন : ঐ তো আরেক নামে বিশেষিত করে দিলে?
তমসা : কেন? এ নামের কি আরও বিশেষণ আছে?
লিখন : আছে, ঐ যে বললে ভালবাসি। তোমার ভালবাসাও বড্ড বিচিত্র।
তোমায় ঠিক ভাবে যেন আমি বুঝি না? তোমার প্রতিটি লোমকূপে জমে থাকা
আমার প্রতি ভালবাসাও কখনও কখনও আমার কাছে গোধূলী লগ্ন মনে হয়।
তাই তো তোমাকে তমসাই বলতে হয়।
তমসা : বারে, তমসাকে এত অবিশ্বাস।
লিখন : অবিশ্বাস নয়। ভালবাসা তো জন্ম হয় বিশ্বাসে। তোমাকে আমি বিশ্বাস করি।
কিন্তু ঠিক যেন বুঝে উঠতে পারি না।
তমসা : না বোঝাটাই তো কবির সার্থকতা। সেখান থেকেই শুরু হয় কবিতার পর কবিতা।
তুমি আমাকে নিয়ে লিখবে অজস্র কবিতা। সে জন্যই তো তোমার নাম দিয়েছি লিখন।
লিখন : লিখন! এ নামের আবার বিশেষণ কী? তুমিও কী কবি হয়ে উঠলে।
তমসা : পাগল, আমি কেন কবি হবো। তবে তোমাকে এ নামে বিশেষিত করেছি দু’টি অথে।
প্রথমত, তুমি আমার হৃদয়ে লেখা রয়েছ।
দ্বিতীয়ত আমাকে নিয়ে যে অজস্র কবিতা লেখা হচ্ছে সেটাও তো লেখা।
সেখানেও তো তুমি আমার লিখন।
লিখন : ও, তাই বুঝি। তুমি শুধু আমার কবিতারই অবলম্বন।
তমসা : না। শুধু তাই নয়।
আমি আছি তোমার হৃদয়ে
তোমাতেই মোর বাস
তোমার মাঝেই ঘটে যাক
আমার সর্বনাশ।
লিখন : এসেছ তুমি হৃদয় মাঝে
দিলে প্রণয় দোল
এমন খেলায় মাতালে তুমি
হলাম আমি আকুল।
তমসা+লিখন: জাগিল প্রেম জাগিল হৃদয়
প্রাণের মাঝে দিলরে দোল
দিলরে দোল দিলরে দোল
প্রাণের মাঝে প্রণয় রোল
একই রোল প্রণয় রোল
দিলরে দোল দিলরে দোল
দিলরে দোল
==== ০ ====
২টি মন্তব্য
ইমন
বাহ! সেই হইছে 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালোই কথোপকথন।